![গ্রুপ পর্ব শেষে বিশ্বকাপের টুকিটাকি...](uploads/2024/06/18/ICC-T20-WORLD-CUP-1718700858.jpg)
বিশ্বকাপ মানেই সেখানে কিছু না কিছু চমক থাকবেই। বড় দলকে হারতে হবে ছোট দলের কাছে। দুয়েকটা অঘটন না ঘটলে যেন বিশ্বকাপটা বিশ্বকাপের অনুভূতি দেয় না। যদিও, অঘটন শব্দটা ব্যবহার করতে নারাজ অনেকেই। এক্ষেত্রে নাকি খাটো করে দেখা হয় সেই দলের অর্জনকে। যেমনটা সাকিব আল হাসান বলে থাকেন টি-টোয়েন্টিতে ছোট দল, বড় দল বলে কিছু নেই। সাকিবের কথা পুরোপুরি মিলে গেছে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসরে। বিশ দলের এই আসর দেখিয়েছে নবাগতরাও চাইলে সম্ভব বড় দলের বিপক্ষে বড়কিছু করা।
যুক্তরাষ্ট্রের চমক
গতকাল শেষ হয়েছে চলমান আসরের গ্রুপপর্ব। যেখানে সুপার এইটে জায়গা করে নিয়েছে টুর্নামেন্টের সহ-আয়োজক যুক্তরাষ্ট্র। ডালাসে সুপার ওভারে পাকিস্তানকে পরাজিত করে দিয়ে সুপার এইটের পথে এগিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র। পাকিস্তানকে হারানোর আগে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে অ্যারন জোন্সের ৪০ বলে অপরাজিত ৯৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে কানাডাকে হারিয়ে শুভসূচনা করার পর সুপার এইটে প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলতে আসা দলটা। অন্যদিকে, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হলেও ৫ পয়েন্ট নিয়ে জায়গা হয় তাদের সুপার এইটে। হেরেছে কেবল ভারতের কাছে।
পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার বিদায়
যুক্তরাষ্ট্র দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে কানাডাকে হারানোর পর সুপার ওভারে হারায় পাকিস্তানকেও। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে ৬ রানে পরাজিত হওয়ার পর স্বাগতিকদের বিপক্ষেও হার বিশ্বকাপ থেকে তাদের বিদায় হয়ে যায় সময়ের ব্যাপার মাত্র। সেই বিদায়ঘন্টা পুরোপুরি বেজে ওঠে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে গেলে।
সাদা বলের সবশেষ তিন ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও দুই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পাঁচ আসরের মধ্যে তিনটিতে ফাইনাল ও একটিতে ফাইনালে পা রেখেছিল নিউজিল্যান্ড। কিন্তু, এবার গ্রুপপর্ব থেকেই হতাশ হয়ে দেশে ফিরতে হচ্ছে ব্ল্যাকক্যাপসদের। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৮৪ রানের বড় পরাজয় দিয়ে আসর শুরু করা নিউজিল্যান্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছেও হেরেছে ১৩ রানের ব্যবধানে। এই দুই প্রতিপক্ষ ৪ ও ৩টি করে ম্যাচ জেতায় কিউইদের জন্য বন্ধ হয়ে যায় সুপার এইটের দ্বার। দলটির দুটি জয় এসেছে উগান্ডা ও পাপুয়া নিউ গিনির বিপক্ষে।
নিউইয়র্কে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছ নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাত্র ৭৭ রানে অলআউট হয়ে ৬ উইকেটে ম্যাচ হারে শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় ম্যাচে ডালাসে বাংলাদেশের কাছে তাদের হারতে হয়। সেই ম্যাচে তাদের পরজয় ছিল ২ উইকেটে। নেপালের বিপক্ষে তাদের ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে গেলে শেষ হয়ে যায় তাদের আশা। শেষ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে তারা হারিয়েছে ৮৩ রানের বড় ব্যবধানে। একটিমাত্র জয়ই এই বিশ্বকাপে তাদের প্রাপ্তি দেশে ফেরার আগে।
সুপার এইটে বাংলাদেশ
প্রথম আসরের পর দ্বিতীয়বারে মতো এই সংস্করণের বিশ্বকাপে সুপার এইটে পা রেখেছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২ উইকেটের জয় দিয়ে শুরুর পর, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জিততে জিততে হোঁচট খেতে হয় ৪ রানে। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সাকিব আল হাসানের নৈপুণ্যে ২৫ রানের জয় আর নেপালের বিপক্ষে লো-স্কোরিং ম্যাচে তানজিম হাসান সাকিবের অসাধারণ স্পেলে বাংলাদেশের ২১ রানে জয়ে সুপার এইট নিশ্চিতের খবরে দেশবাসী পেয়েছে ঈদের উপহার।
ডট বলের বিশ্বকাপ
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ জিতেছে ২১ রানে। সে ম্যাচে বাংলাদেশের পেসার তানজিম হাসান সাকিব একাই ধসিয়ে দেন নেপালের ব্যাটিং লাইনআপ। ৪ ওভারে ৭ রান দিয়ে তিনি শিকার করেন ৪ উইকেট। যার মধ্যে ২১টি বলই ছিল ডট। যা কিনা ছেলেদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ইতিহাসে সর্বোচ্চ ডট বলের রেকর্ড কোনো বোলারের। সেই রেকর্ডের ১৪ ঘন্টা না পেরোতেই ভেঙে দেন নিউজিল্যান্ডের লকি ফার্গুসন। পিএনজির বিপক্ষে অবিশ্বাস্য এক চার ওভারের স্পেল করেন তিনি। যেখানে তিনি চারটি ওভারই মেডেন। শিকার করেন ৩ উইকেট। বিশ্বকাপে প্রথম বোলার হিসেবে সবকটি ওভার মেডেন করার রেকর্ডটি এখন তার দখলে।
ব্যাটে-বলে শীর্ষে আফগানিস্তান
উগান্ডাকে উড়িয়ে আফগানিস্তান শুরু করেছিল তাদের বিশ্বকাপ যাত্রা। ১২৫ রানের বিশাল জয় পেয়েছিল। এরপর নিউজিল্যান্ডকেও হারায় রশিদ খানরা ৮৪ রানের বড় ব্যবধানে। সেই জয়েই তারা বার্তা দেন এবারের বিশ্বকাপে দারুণ কিছুর। সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকে পরের ম্যাচেও। পাপুয়া নিউ গিনিকে হারায় ৭ উইকেটে। শেষ ম্যাচে আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ১০৪ রানে হারলেও সুপার এইটে জায়গা নিশ্চিত হয়ে গেছে তাদের।
চলমান আসরে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকদের তালিকায় দুইজন আফগানিস্তানের। সবার ওপরে রহমানউল্লাহ গুরবাজ ৪ ইনিংসে ১৬৭ আর ১৫২ রান করে চতুর্থ স্থানে ইব্রাহীম জাদরান। একইভাবে বোলিংয়েও ৪ ম্যাচে ১২ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে অবস্থান করছেন আফগানিস্তানের পেসার ফজলহক ফারুকী।