![পণ্য সরবরাহ বন্ধ করলে কারখানার গেট বন্ধ: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী](uploads/2024/02/15/1708003453.Ahsanul_Islam_Titu.jpg)
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, রমজানে ভোগ্যপণ্য নিয়ে কারসাজি চলবে না। আমি সুস্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, রমজানকে ঘিরে যথেষ্ট পরিমাণে ভোগ্যপণ্য আমদানি হয়েছে। কোনো মিলমালিক যদি ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ বন্ধ রাখে সে ব্যাপারে আমাকে জানাবেন। আমি ওই কারখানা বন্ধ করে দেব।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাকক্ষে ব্যবসায়ী ও অংশীজনদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রমজানকে কেন্দ্র করে ভোগ্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখার আহ্বান জানিয়ে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘রমজানকে কেন্দ্র করে ভোগ্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখবেন। অন্তত এই একটা মাস একটু ছাড় দিয়ে ব্যবসা করেন। আমি জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে বলে দিয়েছি, রোজার মাসে খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার হবেন না। কিন্তু আপনাদের একটা কাজ করতে হবে। তা হলো, আপনারা আমাকে সঠিক তথ্য জানাবেন, সমস্যার কথা জানাবেন। চোরাই পণ্য কার কাছে আছে, কে পণ্য মজুত করছে এসব তথ্য আমাকে দিতে হবে। পাশাপাশি আপনাদের প্রতিদিনের মূল্যতালিকা দোকানে রাখতে হবে। তা হলে আর কেউ কোনো প্রশ্ন তুলতে পারবে না। আপনারা মূল্যতালিকা না দিলে মানুষ স্বাভাবিকভাবেই ভাববে দামে কারচুপি হচ্ছে। তাই আমি আপনাদের সহযোগিতা চাই। আমি চাই আপনারা খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়িক ঐতিহ্য ধরে রাখুন।’
খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘ব্যবসা বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র খাতুনগঞ্জে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছেন আপনারা। আপনাদের দাবি হলো, খাতুনগঞ্জে কোনো সিন্ডিকেট নেই। আপনারা পণ্যের সরবরাহ সংকটের জন্য দায়ী নন। এটা মিলমালিক ও আমদানিকারকরা করে। কিন্তু মিলমালিক বা আমদানিকারকরা যদি সরবরাহ বন্ধ করে, সে তথ্য আপনারা আমাকে জানান না কেন? কোনো ব্যবসায়ী আমাকে আজ পর্যন্ত ফোন করে সমস্যার কথা জানাননি।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশ দিয়ে, ম্যাজিস্ট্রেট বা ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তাদের দিয়ে অভিযান চালিয়ে কোনো দিন বাজার নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়। বাজার দর নিয়ন্ত্রিত হবে যথাযথ পণ্য সরবরাহের মাধ্যমে, পণ্যের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের মধ্য দিয়ে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) যাতে কিছু পরিমাণে পণ্য মজুত করতে পারে আমরা সেভাবে কাজ করছি। তবে এটা অবশ্যই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমন্বয় করেই করা হবে।’
ব্যবসায়ীরা জানান, ওজন স্কেল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বারবার বলার পরও আজ পর্যন্ত সমস্যাটি সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তার উপর শতভাগ মার্জিন দিয়ে ব্যাংকে এলসি খুলতে ঝামেলা, ডলার রেটে তারতম্য, সরু সড়ক হওয়ার কারণে খাতুনগঞ্জে তীব্র যানজট তৈরি হওয়া, বর্ষাকালে জলাবদ্ধতাসহ বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে যা ভোগান্তি বাড়াচ্ছে। এরপর বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী এসব সমস্যা সমাধানে কাজ করার আশ্বাস দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ছগির আহমদ, খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিসসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক, প্লাবন কুমার বিশ্বাস, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক ফয়েজ উল্যাহ, সহকারী পরিচালক নাসরিন আক্তার, মোহাম্মদ আনিছুর রহমান, রানা দেব নাথ ও খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা।