![যুক্তরাজ্যে জ্বালানির দাম কমেছে](uploads/2024/07/02/Diesel-1719899936.jpg)
যুক্তরাজ্যে জ্বালানির দাম কমেছে। দেশটিতে গৃহস্থালির গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে, তবে অক্টোবরে আবার খরচ বাড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। খবর বিবিসির।
ব্রিটিশ সম্প্রচার মাধ্যমটির খবরে বলা হয়, নিয়ন্ত্রক সংস্থা অফজেমের নতুন নির্ধারিত এই দাম, ইংল্যান্ড, ওয়েলস ও স্কটল্যান্ডের জন্য গতকাল সোমবার থেকে কার্যকর হয়েছে। এই পদক্ষেপের অর্থ হলো, এর মধ্য দিয়ে একটি সাধারণ পরিবারের জ্বালানি বিল বছরে ১২২ পাউন্ড কমবে। সেই সঙ্গে সাধারণ পরিমাণে গ্যাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহার করে- এমন একটি পরিবারের জন্য বছরে ১ হাজার ৫৬৮ ডলার বিল সাশ্রয় করতে সক্ষম হবে, যা দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে নেমে আসবে।
তবে পূর্বাভাসকারীরা প্রত্যাশা করছেন যে, শীতের মৌসুমে জ্বালানির দাম আবার বাড়বে। এই সময়ে জ্বালানির দাম সর্বশেষ হ্রাস হওয়ার হারের চেয়েও বেশি হবে।
শীর্ষস্থানীয় পরামর্শদাতা কর্নওয়াল ইনসাইট ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেছেন, একটি সাধারণ পরিবারের বার্ষিক জ্বালানির বিল আগামী অক্টোবর মাসে বেড়ে ১ হাজার ৭২৩ পাউন্ডে দাঁড়াবে, যা এখনকার বিলের থেকেও ১৫৫ পাউন্ড বা ১০ শতাংশ বেশি।
দাতব্য সংস্থা ন্যাশনাল এনার্জি অ্যাকশনের প্রধান নির্বাহী অ্যাডাম স্কোরার বলেছেন, গ্রীষ্মকালে বিদ্যুৎ বিলের হ্রাস শীতকালে বেশি পরিমাণে বৃদ্ধির দ্বারা মিলিয়ে যাবে। তখন, গরমে লোকরা বেশি পরিমাণে বিদ্যুৎ ব্যবহার করায় বিল বাড়বে।
অ্যাডাম স্কোরার আরও বলেন, জ্বালানির খরচ একটি সাধ্যাতীত বিলাসিতা হিসেবে রয়ে গেছে, যেটির ব্যয় বহন করা অনেক দরিদ্র পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়।
যদিও দাম প্রতি তিন মাস পরপর পরিবর্তিত হয়। তবে এই পরিসংখ্যানটি অফজেমের দ্বারা একটি সাধারণ পরিমাণ গ্যাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী পরিবারের বার্ষিক বিলের পরিপ্রেক্ষিতে করা হয়েছে।
কারণ, অঢেল সম্পত্তির মালিকরা অধিক পরিমাণে জ্বালানি ব্যবহারের কারণে সামগ্রিকভাবে তারা বেশি বিল দেবে এবং এর বিপরীতে ছোট সম্পত্তির মালিকরা জ্বালানি বাবদ কম বিল পরিশোধ করবে।
যুক্তরাজ্যের গ্যাস ও বিদ্যুতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা অফজেম নির্ধারিত এই মূল্যসীমা, প্রতি ইউনিট গ্যাস ও বিদ্যুতের জন্য সর্বোচ্চ দামকে নিয়ন্ত্রণ করবে, তবে এটি গ্রাহকের সম্পূর্ণ ব্যবহারের ওপর যে বিল আসবে সেটি কমাবে না।
খবরে বলা হয়, এই পদক্ষেপটি ২৮ মিলিয়ন গৃহস্থের গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিলকে প্রভাবিত করে। তবে উত্তর আয়ারল্যান্ডের গ্রাহকদের প্রভাবিত করে না। কারণ সেখানে এই খাতটি ভিন্নভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। তবে সেখানেও জ্বালানির দাম কমছে।
খবরে বলা হয়, সর্বশেষ এই জ্বালানির দাম কমানোর হারটি, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর, সরকার যখন বিল বৃদ্ধি সীমাবদ্ধ করতে পদক্ষেপ নেয়, তখন জ্বালানির বিল যতটা শীর্ষে পৗঁছায়, সে তুলনায় এটি যথেষ্ট কম। এই পদক্ষেপটি মূল্যবৃদ্ধির সাধারণ হার, যা মুদ্রাস্ফীতি নামে পরিচিত, সেই হার কমানোর ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছে।
তবে, সাধারণ পরিবারের বিদ্যুৎ বিল গত তিন বছর আগের তুলনায় এখনো প্রায় ৪০০ পাউন্ড বেশি রয়ে গেছে, যা যুক্তরাজ্যের নির্বাচনি প্রচারণায় বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সর্বোপরি পরিবারগুলো উচ্চ মূল্যের চাপের কারণে, সরবরাহকারীদের কাছ থেকে প্রায় ৩০০ কোটি (৩ বিলিয়ন) পাউন্ডে সম্মিলিত ঋণ করেছে।
বিবিসি বলছে, যারা প্রিপেইড মিটার ব্যবহার করেন তারা সাধারণত শীতকালে, যখন দিনের আলো কম থাকে এবং তাপমাত্রাও কম থাকে, তখন তাদের মিটার রিচার্জ করেন। এ ছাড়া এই গ্রাহকগুলো প্রায়ই আর্থিক চাপের মধ্যে থাকে। তাই, গ্রীষ্মকালে জ্বালানির এই দাম কমানোর প্রভাব তাদের ক্ষেত্রে ততটা দ্রুত অনুভূত হবে না।
বেশির ভাগ পরিবার সরাসরি ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে বিল পরিশোধ করে এবং তাদের পেমেন্ট সারা বছর ধরে সমানভাবে ভাগ করা হয়। এ কারণে সর্বশেষ দাম পরিবর্তন সম্পর্কে সরবরাহকারীদের উচিত, তাদের গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন মিটার রিডিং নেওয়া একটি ভালো ধারণা, যাতে গ্রাহকদের সঠিক হারে চার্জ করা হয়।
এদিকে অফজেম মূল্যসীমা নির্ধারণের পদ্ধতি পর্যালোচনা করছে, যার মধ্যে রয়েছে স্থায়ী চার্জের বিষয়ে পাওয়া প্রতিক্রিয়াগুলো বিশ্লেষণ করা।