![ইউনিক্রেডিটের ৪৬ কোটি ইউরোর সম্পদ জব্দ রাশিয়ার](uploads/2024/05/20/unicredit-1716197612.jpg)
ইউরোপীয় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং কোম্পানি ইউনিক্রেডিটের ৪৬ কোটি ৩০ লাখ ইউরো মূল্যের সম্পদ জব্দ করেছে রাশিয়া। সম্প্রতি সেন্ট পিটার্সবার্গের একটি আদালত সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের।
আদালতের নথির বরাত দিয়ে ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাগুলোর অনেকেই রাশিয়া থেকে নিজেদের বাণিজ্যিক কার্যক্রম সরিয়ে নিতে শুরু করে। এরপর থেকে পশ্চিমা ব্যাংক ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে মস্কো।
সম্প্রতি ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংক জানায়, ইউরোজোনের ঋণদাতা সংস্থাগুলোর উচিত রাশিয়া থেকে দ্রুত তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়া। ইসিবির এমন ঘোষণার পরই ইতালির মিলানভিত্তিক ব্যাংকটির বিরুদ্ধে এমন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের খবর সামনে এল।
ইউনিক্রেডিটের প্রধান রাশিয়ান সাবসিডিয়ারির সর্বশেষ আর্থিক বিবরণ অনুসারে, জব্দ করা অর্থ দেশটিতে ইউনিক্রেডিটের মোট সম্পদের প্রায় ৪ দশমিক ৫ শতাংশ। জব্দকৃত সম্পদের মধ্যে রাশিয়ার ইউনিক্রেডিটের সহযোগী সংস্থাগুলোর মালিকানাধীন শেয়ার ও তহবিল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
গত শুক্রবার রাশিয়ান তেল ও গ্যাস খাতের বড় কোম্পানি গ্যাজপ্রমের একটি সহযোগী সংস্থা রুস্কিম্যালিয়েন্সের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ইউনিক্রেডিট রাশিয়ার বৃহত্তম ইউরোপীয় ঋণদাতাদের একটি। দেশটিতে তাদের সহায়ক সংস্থার মাধ্যমে তিন হাজারের বেশি মানুষ কাজ করে। চলতি মাসের শুরুর দিকে ইতালীয় ব্যাংকটির প্রতিবেদন অনুসারে, তাদের রাশিয়ান ইউনিট প্রথম প্রান্তিকে ২০ কোটি ৩০ লাখ ইউরো নিট মুনাফা করেছে, যা এক বছর আগে ছিল ৯ কোটি ৯০ লাখ ইউরো।
প্রসঙ্গত, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ গোটা বিশ্বকে ভোগান্তিতে ফেলেছে। ইউরোপেও এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। রাশিয়া ইউরোপের প্রধান প্রাকৃতিক গ্যাস ও তেল সরবরাহকারী। যুদ্ধের কারণে এই সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে, যার ফলে জ্বালানির দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া রাশিয়া ও ইউক্রেন বিশ্বের দুটি প্রধান শস্য উৎপাদনকারী ও রপ্তানিকারী দেশ। যুদ্ধের কারণে শস্য উৎপাদন ও রপ্তানি ব্যাহত হয়েছে, যার ফলে বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি ইউরোপের জন্য বিশেষভাবে উদ্বেগজনক, কারণ এটি খাদ্য আমদানির জন্য অনেকাংশে রাশিয়া ও ইউক্রেনের ওপর নির্ভরশীল।
জ্বালানি ও খাদ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে ইউরোপের অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিচ্ছে। ব্যবসাগুলো উৎপাদন কমিয়ে দিচ্ছে এবং ভোক্তারা কম খরচ করছে। এটি বেকারত্ব বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের ক্ষতির দিকে ধাবিত করছে। এ ছাড়া যুদ্ধের কারণে ইউরোপে অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা বেড়েছে। এটি বিনিয়োগ হ্রাস করছে এবং ব্যবসায়িক আস্থা কমিয়ে দিচ্ছে।