সাবেক সেনাপ্রধান (অব.) আজিজ আহমেদ ও সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির অংশীদার সরকারও বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
তিনি বলেন, ‘ডাইরেক্টলি না হলেও ইন্ডাইরেক্টলি এই সরকারও তাদের সঙ্গে জড়িত। সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ বর্তমানে সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হয়েছে। তার মাধ্যমে ২০১৮ সালে আপনারা নদী পার হয়েছিলেন। পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদের সম্পদ এবং ব্যাংক হিসাব জব্দ করার জন্য বলেছে কোর্ট। সে শুধু আপনাদের সমর্থকই ছিলেন না, তার ঘাড়ে চেপে পুলিশের সমর্থনে আপনারা সরকার গঠন করেছেন।’
শুক্রবার (২৪ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র ফোরামের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনসহ রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে এক প্রতিবাদ অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
দুদু বলেন, ‘সরকার বড় বিপদে আছে। গতকাল বর্তমান এই দখলদার প্রধানমন্ত্রী সাদা চামড়া প্রসঙ্গে যে কথা বলেছেন সেটি অত্যন্ত মারাত্মক। আজকে প্রধানমন্ত্রীকে জাতির সামনে এই কথাকে স্পষ্ট করে বিবৃতি দেওয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি। সাদা চামড়া বলতে আপনি (শেখ হাসিনা) কাদেরকে বুঝিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘আজকে আপনি দেশের রাস্তাঘাট, বন্দর পার্শ্ববর্তী দেশকে দিয়ে দিয়েছেন। আপনি নিজেও স্বীকার করেছেন ভারতকে আপনি এমন কিছু দিয়েছেন যেটি ভারত কখনোই ভুলতে পারবে না। সাদা চামড়া বলতে আপনি কাদেরকে বুঝিয়েছেন? যে আপনার কাছে দাবি করেছে যে সাদা চামড়ারা নতুন রাষ্ট্র বানাতে চাচ্ছে- এই কথাটি আপনাকে পরিষ্কার করতে হবে। কারণ এই কথার মধ্যে আমাদের জাতীয় স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন আছে। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব থাকবে কি না সেটা দেখা দিয়েছে।’
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের প্রসঙ্গ টেনে দুদু আরও বলেন, ‘আনার স্বর্ণ চোরাচালানসহ অনেক অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল।’
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘৭ জানুয়ারি আপনি একটি নির্বাচন দেখিয়ে ক্ষমতায় আসার তিন মাসের অবস্থায় আপনি অস্থির হয়ে গেছেন। বাকি সময় এখনো পড়ে আছে। চারদিকের যে পরিস্থিতি, এখন সরকারের অস্তিত্ব নিয়ে টান পড়েছে। সরকার থাকবে কি না, কবে যাবে, কত তারিখে পদত্যাগ করবে এই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এরপরও আমি শেখ হাসিনাকে বলব, আপনি পদত্যাগ করে বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সুস্থ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশ রক্ষা করার জন্য জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে দিয়ে দেন। তা হলে হয়তো রেহাই পেলে পেতেও পারেন।’
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘এই দেশে বেগম খালেদা জিয়াকে যারা মিথ্যা মামলায় তথাকথিত বিচারের নামে ছয়টি বছর জেলখানায় বন্দি রেখেছে, তাদের আগামী দিনে জনতার কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। এ দেশের ব্যাংকগুলো লোপাট করে দেশটাকে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। তাদেরকে একদিন বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। দেশকে রক্ষা করার জন্য হলেও সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নেমে আসতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’
আয়োজক ফোরামের সভাপতি ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ্ প্রিন্স, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাছের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, ওলামা দলের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাওলানা আবুল হোসেন, তাঁতী দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির, কৃষকদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী, যুব জাগপার সভাপতি মীর আমির হোসেন আমু প্রমুখ।
শফিকুল ইসলাম/জোবাইদা/