![মদিনার দর্শনীয় স্থান](uploads/2023/12/20/1703045513.20-december-UG-01.jpg)
মসজিদে নববি
সৌদি আরবের মদিনা নবির (সা.) শহর। মদিনার প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে ‘মসজিদে নববি’। এটি রাসুলুল্লাহ (সা.) নির্মাণ করেন। এখানে রওজায়ে আতহারসহ রয়েছে বাবে জিবরাইল, সবুজ গম্বুজ, আসহাবে সুফফা, দৃষ্টিনন্দন মিম্বার ও রিয়াজুল জান্নাহ।
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর রওজা
মসজিদে নববিতে আয়েশা (রা.)-এর হুজরায় রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর রওজা মোবারক অবস্থিত। মসজিদে নববির বাবুস সালাম গেট দিয়ে প্রবেশ করলে রওজা মোবারক। রওজার সামনে সোনালি গ্রিলের বেষ্টনী রয়েছে।
জান্নাতুল বাকি
মদিনায় অবস্থিত ঐতিহাসিক কবরস্থান জান্নাতুল বাকি। এটি মসজিদে নববির পূর্ব দিকে অবস্থিত।
মসজিদে কুবা
মসজিদে নববি থেকে প্রায় ৪ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে মসজিদে কুবা অবস্থিত। এটি ইসলামের ইতিহাসে প্রথম মসজিদ। রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনায় গিয়ে সর্বপ্রথম এ মসজিদ নির্মাণ করেন।
মসজিদে কিবলাতাইন
মসজিদ আল কিবলাতাইন বা দুই কিবলার মসজিদ মদিনায় অবস্থিত। নামাজ চলাকালে আল্লাহর নির্দেশে রাসুলুল্লাহ (সা.) এই মসজিদে কিবলা পরিবর্তন করেছিলেন।
ওহুদ পাহাড় ও প্রান্তর
মসজিদে নববির প্রায় পাঁচ কি.মি. উত্তরে ওহুদ পাহাড় অবস্থিত। ঐতিহাসিক এ পাহাড়ের পাদদেশে ওহুদ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ পাহাড়ের কাছেই শুহাদায়ে উহুদ আরাম করছেন।
মসজিদে জুমা
মসজিদে কুবা থেকে ৯০০ মিটার উত্তরে এবং মসজিদে নববির ৬ কিলোমিটার দক্ষিণে মসজিদে জুমার অবস্থান। মদিনায় হিজরতের পর রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রথম এই স্থানে জুমার নামাজ আদায় করেন।
মসজিদে জিরার
মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জন্য মদিনার মুনাফিকরা মসজিদে কুবার কাছে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিল। ইতিহাসে মসজিদটি ‘মসজিদে জিরার’ নামে পরিচিত।
মসজিদে গামামা
মসজিদে নববির ৫০০ মিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এই মসজিদটি অবস্থিত। রাসুল (সা.) ও তার সাহাবিরা এই স্থানে ঈদের নামাজ আদায় করতেন বলে বিভিন্ন বর্ণনায় এসেছে। বৃষ্টির নামাজও পড়েছিলেন।
মসজিদে আবু বকর
এটি মসজিদে গামামার কাছে অবস্থিত। আবু বকর (রা.)-এর সম্মানে খলিফা উমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.)-এর শাসনামলে এটি নির্মাণ করা হয়।
মসজিদে আলি
এটি মসজিদে আবু বকরের কাছে অবস্থিত। আলি (রা.)-এর স্মরণে খলিফা উমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.)-এর সময়ে এটি নির্মিত হয়।
মসজিদে বিলাল
বিলাল ইবনে রাবাহ (রা.)-এর স্মরণে নির্মিত এই মসজিদ। মসজিদে নববির কাছে খানিকটা দক্ষিণ-পূর্বে এটি অবস্থিত।
খন্দকের যুদ্ধক্ষেত্র
পঞ্চম হিজরিতে আরবের সম্মিলিত মুশরিক বাহিনীর আক্রমণের প্রেক্ষিতে রাসুলুল্লাহ (সা.) সালমান ফারসি (রা.)-এর পরামর্শে মদিনার প্রতিরক্ষায় মদিনার উত্তর সীমান্তের উন্মুক্ত স্থানে খন্দক খনন করেন। বর্তমানে খন্দকের কোনো চিহ্ন না থাকলেও এখানে খন্দক যুদ্ধের স্মৃতিস্বরূপ সাতটি মসজিদ নির্মাণ করে রাখা হয়েছে।
ওয়াদিয়ে জিন
মদিনা থেকে ৩০-৪০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত একটি ঢালু উপত্যকা। মূলত কিছু অতিলৌকিক কারণে এই স্থানটি ভ্রমণার্থীদের কাছে পরিচিতি পেয়েছে।
বিরে শিফা
মদিনার একটি দূষিত ও বিষাক্ত পানির কূপ ছিল বিরে শিফা। পরবর্তীতে রাসুলুল্লাহ (সা.) এখানে থুথু নিক্ষেপ করে আল্লাহর কাছে দোয়া করলে এর পানি সুপেয় হয়ে যায়।
বিরে উসমান
মদিনার অন্যতম সুপেয় পানির উৎস ছিল বিরে উসমান। শুরুতে এই কূপটি মদিনার এক ইহুদির মালিকানাধীন ছিল। পরে উসমান (রা.) এটি কিনে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেন। এখানে উমরাযাত্রীরা ভিড় করেন।
বাদশাহ ফাহাদ কোরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
মদিনা শহরের তাবুক সড়কে বাদশাহ ফাহাদ কোরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স। এখানে প্রতিবছর লাখো কপি কোরআন ছাপা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় পবিত্র কোরআনের অর্থ ও তাফসির মুদ্রণ, ভিডিও, সিডি, ক্যাসেট প্রকাশ করা হয়। এখানে রয়েছে কোরআন গবেষণা কেন্দ্র ও পাঠাগার। প্রতি বছর লাখো কপি কোরআন ছাপা হয়ে সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিতরণ করা হয়।
বদর প্রান্তর
মদিনা থেকে ৮০ মাইল দক্ষিণে বদর প্রান্তরের অবস্থান। দ্বিতীয় হিজরির ১৭ রমজান ঐতিহাসিক বদর প্রান্তরে অবিশ্বাসী বাহিনীর সঙ্গে ইসলামের প্রথম যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ যুদ্ধ ছিল মুসলমানদের অস্তিত্ব রক্ষার প্রথম যুদ্ধ। এ যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর সৈন্য সংখ্যা ছিল মাত্র ৩১৩ জন। আর শত্রু বাহিনীর সৈন্য সংখ্যা ছিল ১ হাজার। এতে মুসলমানরা বিজয়ী হয়
বিরে গারস
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অসিয়ত অনুযায়ী এই কূপের পানি দিয়ে ইন্তেকালের পরে গোসল দেওয়া হয়।
সানিয়াতুল ওয়াদা
রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনায় প্রবেশের সময় এখানে অভ্যর্থনা জানানো হয়। স্থানটি মসজিদে কুবার পাশে অবস্থিত।
জাবালে বারকান
কিয়ামতের আলামত হিসেবে এই পাহাড়ের ভেতর থেকে আগুন বের হবে। কুখ্যাত ইহুদি কাব বিন আশরাফের আবাসস্থল এটি।
কোরআন মিউজিয়াম
মসজিদে নববির দক্ষিণ পাশের ৫ নম্বর গেট সংলগ্ন ৩ এবং এবং ৪ নম্বর কার পার্কিংয়ের পেছনে কোরআন জাদুঘরের অবস্থান।
লেখক: প্রধান নির্বাহী, আওয়ার ক্যানভাস