![প্রত্যাবর্তনে অনন্য কিংস](uploads/2023/11/28/1701156791.Kngs-Mazia 000.jpg)
এএফসি কাপে ফিরে আসার আরেকটি দারুণ গল্প লিখল বসুন্ধরা কিংস। শুরুতে পিছিয়ে পড়েও এবার তারা হারাল মালদ্বীপের ক্লাব মাজিয়া স্পোর্টস অ্যান্ড রিক্রিয়েশন ক্লাবকে। কিংস অ্যারেনায় গতকাল সোমবার ২-১ গোলের জয় তুলে নেয় অস্কার ব্রুজনের দল।
যদিও ম্যাচের ৭৯ মিনিট পর্যন্ত ০-১ গোলে পিছিয়ে ছিল স্বাগতিকরা। এমনকি ম্যাচের প্রথমার্ধে একেবারেই কোণঠাসা ছিল দলটি। চেনাই যাচ্ছিল না এই প্রতিযোগিতায় আগের ম্যাচে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস ক্লাবকে হারানো দলটিকে। তবে দ্বিতীয়ার্ধে কিংস হাজির হয় ভিন্নরূপে। একের পর এক আক্রমণে তটস্থ রাখে মাজিয়ার রক্ষণকে। তবে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা মেলে শেষের দিকে। উজবেকিস্তানের সেন্টারব্যাক বরুরবেক ইউলদাশভ ও ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড দোরিয়েলটন নাসিমেন্তো কিংসের পক্ষে গোল দুটি করেন।
এই মাজিয়ার মাঠেই ৩-১ গোলে হেরে প্রতিযোগিতা শুরু করেছিল কিংস। পরে ঘরের মাঠে কিংস ৩-২ গোলে হারায় উড়িষা এফসিকে। মোহনবাগানের মাঠ থেকে ২-২ গোলে ড্র করা কিংস ঘরের মাঠে পায় ২-১ গোলের জয়। এই সবগুলো ম্যাচেই বসুন্ধরা প্রথমে গোল হজম করেছিল। কিন্তু পরে লিখেছে দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প।
চোটের কারণে এদিন নিয়মিত অধিনায়ক রবসন রবিনিয়োকে পায়নি কিংস। তার অভাবটা বেশ ফুটে উঠছিল কিংসের খেলায়। মিগুয়েল ও এমফন উদোহকে বেশ কার্যকর লাগলেও দোরিয়েলটন নাসিমান্তে ম্যাচে সেভাবে প্রভাব রাখতে পারছিলেন না। ম্যাচের সপ্তম মিনিটে তো বেশ ভালো একটি সুযোগ পেয়ে যান তিনি। কিন্তু নিজে বেশি কারিকুরি করতে গিয়ে সুযোগ হারান। না হলে কিংসই তো এগিয়ে যায় ম্যাচে।
শুরু থেকেই গোছানো ফুটবল খেলতে থাকা মাজিয়া সাফল্য পায় ১০তম মিনিটে। বক্সের ভেতর ডান পায়ের শটে গোলটি করেন রেগান ওবেং। পিছিয়ে পড়ে ঢিমেতালে চলে কিংসের খেলা। সেভাবে প্রভাবই রাখতে পারছিল না স্বাগতিকরা। ২৭তম মিনিটে মাজিয়া ফের বল জালে জড়ায় কিংসের। তবে হ্যান্ডবলের কারণে গোল হয়নি। প্রথমার্ধের শেষ দিকে এমফন উদোহ ও সোহেল রানার দুটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই দেখা মেলে বদলে যাওয়া কিংসকে। একের পর এক আক্রমণে প্রতিপক্ষ তটস্থ করতে থাকে তারা। তবে মাজিয়ার গোলরক্ষক হুসাইন শরিফ ছিলেন আস্থার প্রতীক হয়ে। ৪৬তম মিনিটে এমফন উদোহর প্রচেষ্টা রুখে দেন তিনি। ৪৮ ও ৫১তম মিনিটে বিশ্বনাথ ঘোষের দুটি দারুণ প্রয়াস ব্যর্থ হয়। ৫৩তম মিনিটে বিশ্বনাথের বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট পোস্টে ছিল না।
৬৯তম মিনিটে দুটি বদল আনেন কিংস কোচ অস্কার ব্রুজন। রাকিব হোসেনকে তুলে নামান রফিকুল ইসলামকে। আর সোহেল রানার জায়গায় নামানো হয় শেখ মোরসালিনকে। ৭৭তম মিনিটে বক্সের ভেতরে বল পেয়ে যান মোরসালিন। কিন্তু তার দুর্বল শট রুখতে কষ্ট হয়নি মাজিয়া গোলরক্ষকের। অবশেষে ৮০তম মিনিটে কিংস শিবিরকে উচ্ছ্বাসে মাতান বরুরবেক ইউলদাশভ। মোরসালিনের নেওয়া কর্নার কিকে ৬ গজ বৃত্তের ডানপ্রান্ত থেকে হেডে বল জালে জড়ান ৩০ বছর বয়সী ফুটবলার। এরপর ৮৮তম মিনিটে মিগুয়েল দামাসেনোর অসাধারণ সেই গোলটি আসে।বক্সের বেশ বাইরে দোরিয়েলটন নাসিমেন্তোর বাড়ানো বল থেকে বাঁ বায়ের জোড়ালো শটে জাল খুঁজে নেন তিনি। একই সঙ্গে বসুন্ধরা প্রায় প্রাণ।
এই ম্যাচে ড্র বা হেরে গেলে কিংসের জন্য সেটা হতো বড় ধাক্কা। ৫ ম্যাচে ৩ জয় ও ১ ড্রয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষেই থাকল বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নরা। আগামী ১১ ডিসেম্বর উড়িষা এফসির বিপক্ষে গ্রুপের শেষ ম্যাচে জিতলেই ইন্টোর জোন প্লে অফ সেমিফাইনালের ছাড়পত্র মিলে যাবে বাংলাদেশের ক্লাবটির।