১১০ রানের ক্ষুদ্র লক্ষ্যের ম্যাচও যে সুপার ওভারে যেতে পারে তা কে জানত! এই কারণেই বোধ করি ক্রিকেটকে গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা বলা হয়। ওমানের এই ক্ষুদ্র লক্ষ্য অনায়াসেই টপকে যাওয়ার কথা নামিবিয়ার। ধীরগতিতে রান তুলতে থাকলেও জয়ের পথেই ছিল তারা। খেলা শেষ ওভারে গেলেও হাতে ৬ উইকেট থাকায় কেউই ভাবেনি এমনটাও হতে পারে। অথচ ম্যাচ গড়িয়েছে সুপার ওভারে আর সেখানে অবশ্য আর আটকে রাখা যায়নি নামিবিয়াকে। ওমানকে হারিয়ে তারা জিতেছে ১১ রানে।
মূল ম্যাচে শেষ ওভারে মেহরান খানের প্রথম ৩ বলে ২ উইকেট ও একটি ডট বলে ম্যাচের মোড় ঘুরে চলে আসে ওমানের দিকে। পরের তিন বলে কোনো উইকেট না হারালেও জয়ের জন্য জরুরি ৫ রানের জায়গায় ৪ রান সংগ্রহ করে ম্যাচ ড্র করতে সক্ষম হয় নামিবিয়ার দুই ব্যাটার ডেভিড ভিইসে ও ক্রুগার। যদিও শেষ বলে ওমানের উইকেটকিপার নাসিম খুশির হাত থেকে বল ছুটে না গেলে সেখানেই ম্যাচ জিতে যেতে পারতো তারা। হাত ফসকে যাওয়া সেই বল থেকেই ১ রান নিয়ে ম্যাচ ড্র করে ফেলে নামিবিয়া। আর সেই ভুলেই শেষমেশ ম্যাচ হারতে হয় আকিব ইলিয়াসদের নামিবিয়ার কাছে।
সুপার ওভারে ওমানের বিলাল খানের হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক আকিব ইলিয়াস। মূল ম্যাচে দ্বিতীয় বলে উইকেট নিলেও ওখানে প্রথম বলেই হজম করেছেন ৪, পরের বলে ৬ এবং শেষ দুই বলে পরপর দুই চারের মারের পাশাপাশি মাঝের দুই বলে দেন ৩ রান। সুপার ওভার তার ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে ডেভিড ভিইসে ও গেরহার্ড এরাসমাস করেন ২১ রান। পাওয়ার হিটার না থাকায় জবাব দিতে নেমে ভিইসের বোলিংয়ের কাছে পরাস্ত হন ওমানের ব্যাটাররা। শেষ বলে জিসান মাকসুদের ৬ ছাড়া বাকি বলগুলোয় প্রান্ত বদল করে নেন তারা ৪ রান। একটি বল ডট ও এক বলে আউট হন নাসিম খুশি। ভিইসের দৃঢ়তায় সুপার ওভারে ১১ রানে জয় লাভ করে নামিবিয়া।
অথচ ১১০ রানের এই লক্ষ্য তারা টপকে যাওয়ার কথা থাকলেও,ওমানের বোলারদের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে এই রানেও তারা নামিবিয়াকে শেষ ওভার পর্যন্ত আটকে রাখে। নামিবিয়ার ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই তাদের ওপেনার মাইকেল ফন লিঙ্গেনকে বোল্ড করেন বিলাল খান। শেষ ওভারে মেহরান খানের ঝলকে ম্যাচ চলে যায় সুপার ওভারে। নামিবিয়ার হয়ে ফ্রাইলিঙ্ক ৪৫ ও নিকোলাস ডেভিন করেন ২৪ রান। ওমানের হয়ে নামিবিয়ার ৩টি উইকেট নেন মেহরান খান, ১টি করে উইকেট নেন বিলাল খান, আকিব ইলিয়াস ও আয়ান খান।
এর আগে, টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নামা নামিবিয়ার প্রথম ওভার করতে আসেন রুবেল ট্রাম্পেলমান। এসেই প্রথম দুই বলে দারুণ ইয়র্কারে ফেরান দুই ব্যাটার কেশব প্রজাপতি ও অধিনায়ক আকিব ইলিয়াসকে। সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ওমান। নিয়মিত বিরতিতে হারাতে থাকে একের পর এক উইকেট। ভেঙে যেতে থাকে তাদের ব্যাটিং স্তম্ভ। ১০ রাতে ৩ উইকেট হারানোর পর ৬৮ রানের মধ্যেই হারিয়ে বসে ৫ উইকেট। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৪ রান করেন খালিদ কাইল। যদিও, সেই ইনিংসটি মোটেও টি-টোয়েন্টিসুলভ ছিল না। ৩৫ রান করতে তিনি খেলেন ৩৯ বল।
নামিবিয়ার হয়ে ট্রাম্পেলমান সবমিলিয়ে ৪টি, ম্যাচসেরা হওয়া ভিইসে ৩টি, অধিনায়ক এরাসমাস ২টি ও এবং বের্নার্ড স্কল্টজ নেন ১টি উইকেট।