![অধ্যক্ষের আশ্বাসে আন্দোলন থেকে সরে গেলেন এসআরটিইসির শিক্ষার্থীরা](uploads/2024/02/01/1706772236.gopalgong-college-photo.jpg)
গোপালগঞ্জের শেখ রেহানা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের (এসআরটিইসি) ৯ দফা দাবিতে একাডেমিক ভবনের তালা বন্ধ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর আন্দোলন থেকে সরে গেছেন।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। পরে ফটক তালা বন্ধ করে আন্দোলন শুরু করে।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো-
১) ক্যাম্পাসের সকল শিক্ষার্থীর যেকোনো ধরনের সমস্যার নিষ্পত্তি শিক্ষকদের উপস্থিত হয়ে করতে হবে। শিক্ষক ব্যতীত অন্য কেউ সেখানে উপস্থিত থাকতে পারবে না।
২) হল ও ক্যাম্পাসকেন্দ্রিক সকল বাজেটের সঠিক বণ্টন এবং সুস্পষ্ট হিসাব দিতে হবে।
৩) আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে ক্যাম্পাসের চলমান ক্যান্টিন দিতে হবে, ক্যাম্পাসে সব ক্লাব-স্পোর্টস, ক্যারিয়ার, ডিবেটিং, রিসার্স ইত্যাদি সব ক্লাবের কার্যক্রম চলমান করতে হবে।
৪) ক্যাম্পাসের যথার্থ বিশুদ্ধ খাবার পানির চিরস্থায়ী সুষ্ঠু সমাধান দিতে হবে।
৫) আগামী এক দিনের মধ্যে ক্যাম্পাসের সম্বোধনবিষয়ক চার্ট নোটিশ আকারে প্রকাশ করতে হবে।
৬) ছাত্র হোস্টেলের কেচি গেট সার্বক্ষণিক খোলা রাখতে হবে।
৭) প্রত্যয়নপত্রসহ শিক্ষার্থীদের নিকট হতে নেওয়া সকল অর্থের রসিদ প্রদান করতে হবে।
৮) সব ধরনের একাডেমিক চার্জের পরিমাণ উল্লেখ করতে হবে।
৯) উপরোক্ত ৮ দফা দাবির সব দাবি যতদিন না পূরণ হবে, ততদিন পর্যন্ত ক্যাম্পাসের সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম সব সাধারণ শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে বর্জন করা হবে।
আন্দোলনের কথা জানতে পেরে কলেজের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী নয়ন চন্দ্র ঘোষ বরিশাল থেকে তাৎক্ষণিক গোপালগঞ্জে আসেন এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিকেল ৩টায় আলোচনায় বসেন।
পরে শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহ মেনে নিলে তারা আন্দোলন থেকে সরে যায়।
কলেজসূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে শেখ রেহানা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ কার্যক্রম শুরু হয়। ওই বছর প্রথম ব্যাচে ১১৪ জন, দ্বিতীয় ব্যাচে ১২০ জন ও তৃতীয় ব্যাচে ১২৩ জনসহ মোট ওই প্রতিষ্ঠানে বর্তমান ৩৫৭ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। ওই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক পদে অনুমোদিত পদ রয়েছে ৩৮টি; কিন্তু সেখানে শিক্ষক রয়েছেন আটজন। এর মধ্যে তিনজন বিসিএস (বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তারা অন্যত্র চলে যাবেন।
অফিস সহায়ক ও অফিস সহকারী অনুমোদিত পদ ৩৬টি থাকলেও রয়েছেন আটজন এবং আউটসোর্সিংয়ে রয়েছেন ১১ জন; যেখানে থাকার কথা ১৪ জন। জনবল সংকট থাকায় কলেজটি নানামুখী সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
শেখ রেহানা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রথম ব্যাচের ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে শিক্ষার্থী হাসিবুল ইসলাম বলেন, ‘কলেজের দুই-একজন স্টাফ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। মূলত এ থেকেই সৃষ্টি হয় শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ। অধ্যক্ষ এসে আমাদের দাবিসমূহ মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। তাই আমরা আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।’
অধ্যক্ষ নয়ন চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ভবনের তালা বন্ধ করে আন্দোলন শুরু করে। তবে তারা যে নয়টি দফা দিয়েছে কিছু যৌক্তিক এবং কিছু অযৌক্তিক। তাদের দেওয়া যৌক্তিক দাবিগুলো আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যেই সমাধান করব।’
বাদল সাহা/জোবাইদা/অমিয়/