নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্ট ও যুবলীগকর্মী শহিদুজ্জামান পলাশ অজিকে (৩৫) কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় তার তিন বন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। পরে সাতদিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন, নাটেশ্বর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব মির্জানগর গ্রামের মো. আহসান উল্যাহ প্রকাশ কল্লা হাসান (৩৮), আকবর হোসেন সোহেল (৩৬) ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মিরাজ (২১)। রবিবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে নাটেশ্বর ইউনিয়ন থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে সোনাইমুড়ী থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
এর আগে গত শনিবার রাত ৯টার দিকে নাটেশ্বর ইউনিয়নের মির্জানগর গ্রামে শহিদুজ্জামান পলাশকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নিহতের বাড়ির পাশ থেকে মাথা থ্যাঁতলানো মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত পলাশ ওই গ্রামের মৃত জামাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-২ আসনের কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান ভুঁইয়া মানিকের কর্মী ছিলেন এবং ভোটোর দিন ওই প্রার্থীর পক্ষে মির্জানগর কেন্দ্রে এজেন্টও ছিলেন।
গত রবিবার এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শারমিন আক্তার বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘শনিবার রাতে ঘটনার সময় আমি দুই শিশুসন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে ছিলাম। রাত সাড়ে ৮টার দিকে পলাশ ইমুতে ভিডিও কলে আমাদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে সন্ত্রাসীরা তাকে বাড়ির পাশে গুলি করে হত্যা করে।’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনাইমুড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাসুদ রানা খবরের কাগজকে বলেন, ‘তিন আসামি নিহতের সহপাঠী-বন্ধু। আটকের পর তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বলে স্বীকার করেছেন। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।’
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী খবরের কাগজকে বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে অনেক বিষয় নিয়ে পুলিশ তদন্ত অব্যাহত রেখেছে। আশা করছি শিগগিরই খুনের রহস্য উন্মোচিত হবে।’
এদিকে নোয়াখালী-২ আসনের কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান ভুঁইয়া মানিক বলেন, ‘ভোটের দিন জাল ভোটে বাধা দেওয়ায় নৌকার লোকজন পলাশকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে আসছিলেন। তারা ভোট-পরবর্তী সহিংসতায় আমার শতাধিক নেতা-কর্মীর বাড়িঘরে আক্রমণ করেছে। তাদের হাত থেকে আমিও নিরাপদ নই। আমি পলাশ হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচার চাই।’
অন্যদিকে এ হত্যার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে নৌকা প্রতীকের জয়ী সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে কেউ তাকে হত্যা করেছে বলে আমি মনে করি না। সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।’