রাজশাহীতে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া তিন পুলিশ সদস্যসহ চারজনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪-এর বিচারক ফয়সাল তারিক আসামিদের এক দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) আদালত পরিদর্শক আবদুর রফিক এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘আসামিদের পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেছিলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নুরুন্নবী হোসেন। তবে শুনানি শেষে আদালতের বিচারক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সবার এক দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।’
আসামিরা হলেন দিনাজপুরের পার্বতীপুর থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) গোলাম রাব্বানী (৩৩), আরএমপি সদর দপ্তরের পুলিশ কনস্টেবল আবদুর রহমান (৩২), কনস্টেবল শাহরিয়ার পারভেজ শিমুল (৩১) এবং দিনাজপুরের পার্বতীপুর থানার পূর্ব দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা মেহেদী হাসান (৩৭)।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) সদর দপ্তরের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) জামিরুল ইসলাম জানান, গত শনিবার নগরীর রাজপাড়া থানায় মোসা. কারিমা খাতুন নামে এক ভুক্তভোগী চাকরিপ্রত্যাশী পরীক্ষার্থীর দায়ের করা প্রতারণা মামলায় পুলিশের এই চারজনসহ মোট পাঁচজনকে আসামি করা হয়। পরে সেদিন সন্ধ্যায় তিন পুলিশ সদস্যকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। আর মেহেদীকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল সোমবার কারাগারে পাঠানো হয়। সবার রিমান্ডের আবেদনে আদালত এক দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার আগে গ্রেপ্তার হওয়া পুলিশ সদস্যরা ভুক্তভোগী চাকরিপ্রার্থী কারিমা খাতুনকে পরীক্ষায় পাস করিয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে মোট ১৪ লাখ টাকার চুক্তি করেছিলেন। ভুক্তভোগীর কাছ থেকে নেওয়া হয়েছিল চেক ও স্ট্যাম্প। এ জন্য পরীক্ষার্থীদের প্রত্যেককে খুবই ছোট আকারের হেডফোন ও ইলেকট্রনিকস যন্ত্রপাতি সরবরাহের মাধ্যমে বাইরে থেকে পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নের সব উত্তর বলে দেওয়া হবে বলে চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়। এ জন্য ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে নগদ তিন লাখ টাকাও নেওয়া হয়।
কারিমা খাতুনের অভিযোগের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার আসামি শাহরিয়ার পারভেজের ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে ডিবি পুলিশ ইলেকট্রনিকস ডিভাইস সংযুক্ত ১৬টি গেঞ্জি, ১৩টি চুম্বক দণ্ড, ক্ষুদ্র গোলাকৃত্রির চুম্বকযুক্ত ২৬টি ইলেকট্রনিকস ডিভাইস, ১৫টি মোবাইল ফোনের চার্জার, ২টি স্ট্যাম্প, ২টি চেক, টাকা পাঠানোর দুটি রসিদ এবং নগদ ৮ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।