![ফরিদপুরে লালমী বাঙ্গির চাষ: দাম না পেয়ে হতাশ কৃষক](uploads/2024/04/02/1712041354.cucumber.jpg)
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় বাঙ্গির আদলে দেখতে লালমী চাষ হয়ে থাকে। রমজানে যার ব্যাপক চাহিদা থাকে। সেই চাহিদাকে মাথায় রেখে কৃষকরা লালমীর চাষ করে থাকেন।
রোজাদারের প্রতিদিনের ইফতারিতে বাহারি রসাল ফলের জুড়ি নেই। কারণ এই গরমে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার ফলে শরীর একদিকে যেমন দুর্বল হয়ে যায় অন্যদিকে পানিশূন্যতাও দেখা দেয়। তাই শরীরে পানি শূন্যতা পূরণের লক্ষ্যে ইফতারিতে লালমী-বাঙ্গি রোজাদারের বিশেষ পছন্দের তালিকায় থাকে।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ভাষানচর, কৃষ্ণপুর, চরবিষ্ণুপুর ইউনিয়নে ব্যাপকভাবে লালমী-বাঙ্গির আবাদ করা হয়েছে। রমজানের ৪৫ থেকে ৫০ দিন আগে লালমী-বাঙ্গির আবাদ করে থাকেন এই উপজেলার কৃষকরা।
কৃষকরা জানান, লালমী-বাঙ্গি চাষ বেশ লাভজনক। প্রতি বিঘা জমি আবাদ করতে খরচ হয় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।
রোজা শুরুর সপ্তাহখানেক আগে থেকেই মাসব্যাপী স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়ে থাকে এখানকার লালমী-বাঙ্গি।
প্রতি বছর রমজানের শুরুতেই কৃষকরা তাদের উৎপাদিত লালমী-বাঙ্গি বিক্রি করেন। তবে এবার রোজার শুরুতে কোথাও লালমী-বাঙ্গির দেখা মেলেনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাষিরা এ বছর সময়মতো বীজ, সার ও কীটনাশক দিলেও বৃষ্টির কারণে সেগুলো নষ্ট হয়ে যায়। যে কারণে তাদের পুনরায় আবার আবাদ করতে হয়। এ জন্য রমজানের শুরুতে ফলন না পাওয়া ও রমজানের মাঝামাঝি ফলন হওয়ার কারণে সঠিক দাম পাচ্ছে না তারা। তা ছাড়া আশানুরূপ ফলন হয়নি বলে হতাশ চাষিরা।
উপজেলার মটুকচর এলাকার চাষি গনি ফকির বলেন, ‘এবার বীজ বপনের পরে বৃষ্টি হয়ে বীজ পচে যায়, পরে পুনরায় আবাদ করছি। এতে উৎপাদন খরচ দ্বিগুণ পড়েছে। কিন্তু ফলন ভালো হয়নি, আবার সময়মতো ফলন না হওয়ায় ভালো দামও পাচ্ছি না। এ বছর আবাদের খরচ ওঠাতে পারব কি না তাই নিয়ে চিন্তায় আছি।’
অপর কৃষক শৌলডুবি গ্রামের মকিব মাতুব্বর জানান, রমজানের শুরুর দিকে লালমীর চাহিদা বেশি থাকে, দামও ভালো পাওয়া যায়। ১০০টি বাঙ্গি ৫ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতো। এ বছর আবহাওয়ার কারণে দেরিতে ফলন হয়েছে। এতে প্রত্যাশা অনুযায়ী ফলন হয়নি। দাম পাচ্ছেন অন্যবারের চেয়ে অর্ধেক।
সদরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিটল রায় জানান, এবার উপজেলায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে লালমী বাঙ্গির আবাদ করা হয়েছে। তবে অসময়ে বৃষ্টি কারণে কৃষকদের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। সময়মতো ফলন না পাওয়া ও বাজারজাত করতে না পারায় ভালো দাম পাওয়া নিয়ে কিছুটা শঙ্কা রয়েছে।