ঢাকা ২১ আষাঢ় ১৪৩১, শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪

মৃত প্রাণী খাওয়া হারাম কেন?

প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:২৩ এএম
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:০৭ এএম
মৃত প্রাণী খাওয়া হারাম কেন?
ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত মৃত হরিণের ছবি

যেসব খাদ্য ইসলামের ‍দৃষ্টিতে খাওয়া বা গ্রহণ করা হারাম, তার প্রথমটি হলোমৃত জন্তু বা প্রাণী। যে কোনো ধরনের মৃত জন্তু বা প্রাণী অথবা পশু-পাখি খাওয়া হারাম বা নিষিদ্ধ। আর মৃত বলতে, শিকার করা, জবাই দেওয়া তথা মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়া স্বাভাবিকভাবে মারা যাওয়াকে বোঝানো হয়েছে। (হালাল-হারামের বিধান, ড. ইউসুফ আল-কারজাভি, অনুবাদ : আসাদুল্লাহ ফুআদ, সমকালীন প্রকাশন, পৃষ্ঠা : ৯২)

 

আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয় তিনি তোমাদের ওপর হারাম করেছেন মৃত জন্তু, রক্ত, শূকরের গোশত এবং যা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও নামে জবেহ করা হয়েছে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৭৩)

 

পবিত্র কোরআনে আরও এরশাদ হেয়েছে, ‘তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত প্রাণী, রক্ত ও শূকরের গোশত এবং যা আল্লাহ ছাড়া ভিন্ন কারও নামে জবেহ করা হয়েছে; গলা চিপে মারা জন্তু, প্রহারে মরা জন্তু, উঁচু থেকে পড়ে মরা জন্তু, অন্য প্রাণীর শিংয়ের আঘাতে মরা জন্তু এবং যে জন্তুকে হিংস্র প্রাণী খেয়েছে (এগুলো খাওয়া হারাম); তবে যা তোমরা জবেহ করে নিয়েছ (তা বৈধ)। আর যা মূর্তিপূজার বেদিতে বলি দেওয়া হয়েছে এবং জুয়ার তীর দ্বারা বণ্টন করা হয়, এগুলো গুনাহ।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ৩)

 

মৃত জন্তু বা পশু নিষিদ্ধ বা হারাম হওয়ার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে; সেগুলো হলো

১. সুস্থ রুচিসম্পন্ন মানুষের কাছে মৃত জন্তু বা প্রাণী ঘৃণ্য ও অপছন্দনীয়। এজন্য প্রায় সব আসমানি গ্রন্থেই মৃত জন্তু বা পশুকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

 

২. ইসলামে নিয়তের গুরুত্ব অপরিসীম। পশু বা প্রাণী জবাই করার ক্ষেত্রে ইসলামের নিয়ত অস্তিত্ব পাওয়া যায় কিন্তু মৃত পশু বা প্রাণীর ক্ষেত্রে নিয়তের বিষয়টি অনুপস্থিত থাকায় একে হারাম ঘোষণা করেছে ইসলাম।

 

৩. মৃত পশু বা জন্তুটির মৃত্যুর কারণ নানাবিধ হতে পারে। শঙ্কা থেকে যায়- মৃত জন্তু বা পশুটি মানুষের জন্য বিপজ্জনক বা ক্ষতিকর হতে পারে, তাই এটিকে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে।

 

৪. মৃত পশু বা জন্তু সাধারণত অন্য প্রাণী বা পশুর খাদ্য হিসেবে পরিগণিত হয়। মানুষ এটা খেয়ে ফেললে তারা খাবে কি? এই বিবেচনা থেকেও মৃত জন্তুকে মানুষের জন্য হারাম করা হতে পারে। (হালাল-হারামের বিধান, ড. ইউসুফ আল-কারজাভি, অনুবাদ : আসাদুল্লাহ ফুআদ, সমকালীন প্রকাশন, পৃষ্ঠা : ৯২)

 

মৃত জীবজন্তুর দেহে ক্ষতিকারক রোগজীবাণু থাকা স্বাভাবিক এবং ভক্ষণকারীর দেহে এসব রোগজীবাণুর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন অনেক মারাত্মক জীবাণু রয়েছে, মৃত্যুর পর তা প্রাণীর রক্ত মিশ্রিত হয়ে যায়। সুতরাং এসব জীবাণু মানুষের দেহে সংক্রমিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া মৃত প্রাণীর মাংস হজমে খুব বিঘ্ন ঘটে ফলে পাকস্থলীতে সমস্যা সৃষ্টি হয়। যদি কোনও ঘাতক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে কোনও জীবজন্তু মারা যায়; তাহলে ওই প্রাণীর মাংস খেলে মানুষের মধ্যে মারাত্মক রোগের সংক্রমণ ঘটতে পারে এবং তা মহামারি আকার ধারণ করতে পারে।’ (লামাহাত মিনাত তিব্বিল ইসলামী, ড. হায়াত মুহাম্মাদ আলী খাফাজি, পৃষ্ঠা : ৫৮)

 

যখন কোনও প্রাণী মারা যায়, তখন তার শরীরে প্রতিরোধ শক্তি হারিয়ে যায়। ফলে ধ্বংসাত্মক ক্ষুদ্র জীবাণু শরীরের অভ্যন্তর থেকে শরীরের সর্বস্থলে ছড়িয়ে পরে; এমনকি রক্তেও মিশে যায় এবং অসংখ্য জীবাণুর জন্ম দেয়- যা মানুষের স্বাস্থ্যের বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে। (ইসলামী বিধান ও আধুনিক বিজ্ঞান, পৃষ্ঠা : ৫৪-৫৫)

 

সুতরাং সামাজিক, মানবিক ও শারীরিক বিভিন্ন কারণ বিবেচনায় ইসলামে মৃত জীবজন্তু বা প্রাণী খাওয়াকে হারাম বা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমাদের দুই ধরনের মৃত জীব ও দুই ধরনের রক্ত হালাল করা হয়েছে। মৃত জীব দুটি হলো মাছ ও টিড্ডি এবং দুই ধরনের রক্ত হলো কলিজা ও প্লীহা।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৩১৪; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৫৬৯০)

 

লেখক : আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক

অজুর ফরজ কয়টি

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৭:৪২ পিএম
অজুর ফরজ কয়টি
অজু করছেন এক মুসল্লি। ছবি : ইন্টারনেট

আল্লাহ পবিত্র। তিনি পবিত্রতা অর্জনকারীকে ভালোবাসেন। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারীকে ভালোবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরও ভালোবাসেন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২২২)

ইসলামে পবিত্রতা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম অজু। নামাজের জন্য অজু করা আবশ্যক। অজু করা ছাড়া নামাজ শুদ্ধ হবে না। আল্লাহ বলেন, ‘হে বিশ্বাসীরা, যখন তোমরা নামাজের জন্য দাঁড়াও, তখন তোমাদের মুখ হাত কনুই পর্যন্ত ধোবে ও তোমাদের মাথায় হাত বুলিয়ে নেবে, আর গিট পর্যন্ত ধোবে। যদি তোমরা অপবিত্র থাকো, তবে বিশেষভাবে পবিত্র হবে। যদি তোমরা অসুস্থ থাকো বা সফরে থাকো বা তোমাদের কেউ পায়খানা থেকে আসো কিংবা স্ত্রীর সঙ্গে সঙ্গত হও, আর পানি না পাও, তবে তাইয়াম্মুম করবে। পরিষ্কার মাটি দিয়ে এবং তা মুখে ও হাতে বুলিয়ে নেবে। আল্লাহ্ তোমাদেরকে কষ্ট দিতে চান না এবং তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে চান ও তোমাদের ওপর তাঁর অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করতে চান- যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জানাতে পারো।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত: ৬)

অজুর ফরজ
অজুতে চারটি ফরজ কাজ রয়েছে। কেউ যদি তা পরিপূর্ণভাবে পালন না করে, তা হলে তার অজু সঠিক হবে না। অজুর চার ফরজ হলো—

  • সমস্ত মুখমণ্ডল ধৌত করা।
  • দুই হাতের কনুই পর্যন্ত ধৌত করা।
  • মাথার চার ভাগের এক ভাগ মাসেহ করা।
  • দুই পা টাখনুসহ ধৌত করা।

অজুর ফজিলত
নুআইম মুজমির (রহ.) বলেন, ‘আমি আবু হুরায়রা (রা.)-এর সঙ্গে মসজিদের ছাদে উঠলাম। অতঃপর তিনি অজু করে বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন আমার উম্মতকে এমন অবস্থায় আহ্বান করা হবে, যে অজুর প্রভাবে তাদের হাত-পা ও মুখমণ্ডল উজ্জ্বল থাকবে। তাই তোমাদের মধ্যে যে এ উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে নিতে পারে, সে যেন তা করে।’ (বুখারি, হাদিস: ১৩৬)

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক

 

‌আত্তাহিয়াতু কি, কখন পড়তে হয়?

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৯:০০ এএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৫ এএম
‌আত্তাহিয়াতু কি, কখন পড়তে হয়?
নামাজের বৈঠকে দোয়া পড়ছেন মুসল্লি। ছবি: ইন্টারনেট

তাশাহুদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দোয়া, যা নামাজের প্রত্যেক বৈঠকে পড়তে হয়। তাশাহুদকে অনেকে আত্তাহিয়াতু বলেন। আত্তাহিয়াতু হচ্ছে আল্লাহতায়ালা এবং মুহাম্মাদ (সা.)-এর একটি কথোপকথন। নামাজের ভেতরে যেসব কাজ ফরজ তার একটি নামাজে বৈঠকে বসা। আর বৈঠকে আত্তাহিয়াতু বা তাশাহুদ পড়া ওয়াজিব (আবশ্যক)।

তাশাহুদের আরবি

التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ

বাংলা উচ্চারণ: আত্তাহিয়াতু লিল্লাহি ওয়াস সালা ওয়াতু, ওয়াত তাইয়িবাতু, আসসালামু আলাইকা আইয়ু হান নাবিইয়ু, ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।

বাংলা অর্থ: সমস্ত মৌখিক, শারীরিক ও আর্থিক ইবাদত আল্লাহর জন্য। হে নবি, আপনার প্রতি সালাম এবং আল্লাহর রহমত ও বরকত নাজিল হোক। সালাম আমাদের প্রতি এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের প্রতি। আমি সাক্ষ্য প্রদান করছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর বান্দা এবং রাসুল।

তিন বা চার রাকাতবিশিষ্ট নামাজের দুই রাকাতের পর বৈঠক করা ওয়াজিব। (বুখারি, ১/১১৪) এবং প্রথম ও শেষ উভয় বৈঠকে আত্তাহিয়াতু পড়া আবশ্যক। (বুখারি ১/১১৫: ৮৩০, ৮৩১)

লেখক: আলেম ও অনুবাদক

 

ঘুম থেকে ওঠার দোয়া

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১১:১০ পিএম
ঘুম থেকে ওঠার দোয়া
শিল্পীর তুলিতে আঁকা ঘুমন্ত বালকের ছবি। ফ্রিপিক

ঘুম আল্লাহর পক্ষ থেকে নেয়ামত ও অনুগ্রহ। মানুষ চাইলেই ঘুমাতে পারে না। কেউ কেউ সামান্য একটু শান্তির ঘুমের জন্য হাজারো টাকার ওষুধ খায়। আবার কেউ কেউ ঘুম দূর করার জন্যও ওষুধ খায়। তবে পরিমিত ঘুম মানবদেহের জন্য উপকারী। মানুষের ক্লান্তি-অবসাদ দূর করতে ঘুমের অবদান অসামান্য। আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের ঘুম বা নিদ্রাকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী। রাতকে করেছি আবরণ। দিনকে করেছি জীবিকা অর্জনের সময়।’ (সুরা নাবা, আয়াত: ৯-১১) 

একজন মুসলমানের কোনো কাজ যখন আল্লাহর হুকুম ও রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাত অনুযায়ী হয়, তখন তা ইবাদতে পরিণত হয়। প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ঘুম থেকে জেগে আবার ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত পূর্ণ সময়ই ইসলামি বিধিবিধান রয়েছে। এ বিধানগুলো পালনে আল্লাহর পক্ষ থেকে রয়েছে অগণিত সওয়াব।  

ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার দোয়া
হুজাইফা (রা.) বলেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন ঘুম থেকে উঠে বলতেন, 

الحمدُ لله الذي أحيَانَا بَعْدَ مَا أماتَنَا وإليه النُّشُوْر

বাংলা উচ্চারণ: আলহামদুলিল্লা হিল্লাজি আহইয়া না বাদা মা আমাতানা ওয়া ইলাইহিন নুশুর। 

বাংলা অর্থ: প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি (নিদ্রারূপ) মৃত্যুর পর আমাদের জীবিত করলেন, আর তারই কাছেই সবার পুনরুত্থান। (মুসলিম, হাদিস: ২৭১১)

মানুষ যখন আল্লাহর নেয়ামত পেয়ে নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে, আল্লাহ নেয়ামতকে বৃদ্ধি করে দেন। তার থেকে দূর করবেন ক্লান্তিভাব। সে শরীরে ফিরে পাবে এক নতুন উদ্যমতা।

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক

বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম ও দোয়া

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:০০ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৬ এএম
বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম ও দোয়া
নামাজরত এক ব্যক্তির ছবি। ইন্টারনেট

ইশার নামাজের পর থেকে শেষ রাতের আগপর্যন্ত যেকোনো সময় বিতর নামাজ পড়া যায়। বিতর নামাজ তিন রাকাত। অন্যান্য ফরজ নামাজের মতো দুই রাকাত নামাজ পড়ে প্রথম বৈঠকে বসে তাশাহহুদ পড়া। তারপর তৃতীয় রাকাত পড়ার জন্য উঠে সুরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য কোনো সুরা বা আয়াত মেলানো। কিরাত (সুরা বা অন্য আয়াত মেলানোর পর) শেষ করার পর তাকবির বলে দুহাত কান পর্যন্ত উঠাবে এবং তাকবিরে তাহরিমার মতো হাত বাঁধবে। তারপর নিঃশব্দে (অনুচ্চ স্বরে) দোয়া কুনুত পড়বে। দোয়া কুনুত পড়ে আগের মতো রুকু-সিজদা করবে। তারপর শেষ তাশাহহুদ, দরুদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবে।

দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ
আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতায়িনুকা ওয়া নাসতাগ ফিরুকা, ওয়ানুমিনু বিকা ওয়া নাতাওয়াক্কালু আলাইকা, ওয়া নুসনি আলাইকাল খাইর। ওয়া নাসকুরুকা ওয়ালা নাক ফুরুকা, ওয়া নাখলাউ উয়ানাত রুকু মাইয়াফ জুরুকা। আল্লাহুম্মা ইইয়াকানা বুদু ওয়ালাকা নুসল্লি, ওয়ানাস জুদু ওয়া ইলাইকা নাসয়া; ওয়া নাহফিদু ওয়া নারজু রাহমাতাকা, ওয়া নাখশা আজাবাকা; ইন্না আজাবাকা বিলকুফফারি মুলহিক।


দোয়া কুনুতের বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ, আমরা তোমারই সাহায্য চাই। তোমারই কাছে ক্ষমা চাই, তোমারই প্রতি ইমান রাখি, তোমারই ওপর ভরসা করি এবং সব মঙ্গল তোমারই দিকে ন্যস্ত করি। আমরা তোমার কৃতজ্ঞ হয়ে চলি, অকৃতজ্ঞ হই না। হে আল্লাহ, আমরা তোমারই দাসত্ব করি, তোমারই জন্য নামাজ পড়ি এবং তোমাকেই সিজদাহ করি। আমরা তোমারই দিকে দৌড়াই ও এগিয়ে চলি। আমরা তোমারই রহমত আশা করি এবং তোমার আজাবকে ভয় করি। আর তোমার আজাব তো কাফেরদের জন্যই নির্ধারিত।

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক

সন্তানের ভালোর জন্য দোয়া

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৭:২০ পিএম
সন্তানের ভালোর জন্য দোয়া
পিতা-মাতার সঙ্গে সন্তান। কার্টুন ছবি

সন্তান আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ নেয়ামত। নেক সন্তান আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার প্রতি মহান দান। আর সন্তান জন্মদানে পিতা-মাতার ভূমিকাই মুখ্য। তাই সন্তান লালন-পালন ও তাদের জন্য কল্যাণ কামনায় দোয়া করার দায়িত্বও পিতা-মাতার। সন্তান যদি নেককার হয়, তা হলে পিতা-মাতার রয়েছে অপরিসীম সদকায়ে জারিয়ার সওয়াব। এক আয়াতে সন্তানকে পার্থিব জীবনের অলংকারও বলা হয়েছে, ‘ধন, সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের অলংকার।’ (সুরা কাহাফ, আয়াত: ৪৬)

সন্তানের জন্য পিতা-মাতার দোয়া আল্লাহ অবশ্যই কবুল করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তিনটি দোয়া অবশ্যই কবুল হয়, এতে কোনো সন্দেহ নাই। ১. নির্যাতিতের দোয়া, ২. মুসাফিরের দোয়া এবং (৩) সন্তানের জন্য পিতা-মাতার দোয়া।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ১৫৩৬)  

সন্তানের জন্য পিতা-মাতা কী দোয়া করবে
পিতা-মাতার কাছে সন্তান সব সময় দোয়ার হকদার। তাদের উচিত সন্তানের জন্য সব সময় কল্যাণের দোয়া করা। সন্তান পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে পিতা-মাতার বেশি বেশি এই দোয়া করা উচিত—

বাংলা উচ্চারণ: ‘রাব্বি হাবলি মিল্লাদুনকা জুররিয়াতান তাইয়িবাহ, ইন্নাকা সামিউদ দোয়া।’

বাংলা অর্থ: হে আমাদের প্রতিপালক, তোমার পক্ষ থেকে আমাকে পূতপবিত্র সন্তান দান করো। নিশ্চয়ই তুমি প্রার্থনা কবুলকারী।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ৩৮) 

সন্তান যখন ভূমিষ্ঠ হবে তখন প্রত্যহ এই দোয়া পাঠ করা উচিত—

বাংলা উচ্চারণ: ‘রাব্বিজ আলনি মুকিমাস সালাতি, ওয়া মিন জুররিয়াতি, রাব্বানা ওয়া তাকাব্বাল দোয়া।’

বাংলা অর্থ: হে আমার প্রতিপালক, আমাকে নামাজ আদায়কারী করুন এবং আমার বংশধরদের মধ্য থেকেও। হে আমার প্রতিপালক, আমার প্রার্থনা কবুল করুন।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত: ৪০) 

সন্তান যখন প্রাপ্তবয়ষ্ক হবে তখন তার কল্যাণ কামনার্থে এই দোয়া বেশি বেশি  পাঠ করা যেতে পারে—

বাংলা উচ্চারণ: ‘রাব্বানা লিয়ুকিমুস সালাতা, ফাজআল আফইদাতাম মিনান নাসি, তাহওয়ি ইলাইহিম ওয়ারজুকহুম মিনাস সামারাতি, লা আল্লাহুম ইয়াশকুরুন।’

বাংলা অর্থ: হে আমার প্রতিপালক, তারা (সন্তান-সন্ততি) যাতে নামাজ প্রতিষ্ঠা করে। কাজেই তুমি মানুষের অন্তরকে তাদের প্রতি অনুরাগী করে দাও। আর ফল-ফলাদি দিয়ে তাদের জীবিকার ব্যবস্থা করো; যাতে তারা (আল্লাহতায়ালার) শুকরিয়া আদায় করতে পারে।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত: ৩৭)

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক