ঢাকা ২১ আষাঢ় ১৪৩১, শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪

কোন কোন নেশাজাতীয় দ্রব্য হারাম, কতটুকু হারাম?

প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৩, ০৬:৩০ পিএম
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৫:১৭ এএম
কোন কোন নেশাজাতীয় দ্রব্য হারাম, কতটুকু হারাম?
বিভিন্ন প্রকার নেশাজাতীয় দ্রব্যের ছবি। ইন্টারনেট

মাদক হলো নেশা উদ্রেককারী বস্তু, যা মানুষের মস্তিষ্কের স্বাভাবিকতাকে নষ্ট করে দেয়, যার প্রভাবে মস্তিষ্ক ঠিকভাবে কাজ করে না। গাঁজা, ফেনসিডিল, চরস, ভাং, গুল, জর্দা, হেরোইন, প্যাথেড্রিন, মদ, ইয়াবাসহ সবই মাদকের অন্তর্ভুক্ত। যখন কেউ এসব দ্রব্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে, তখনই তাকে ‘মাদকাসক্ত’ বলা হয়।

 

মাদক সব অপরাধের আকর। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসসহ বহু অপরাধের জন্ম দেয় মাদকাসক্তি। যা মানুষের জীবন, পরিবার ও সভ্যতার ক্ষতি করে। সমাজ ও সম্পদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে। আল্লাহতায়ালা যেসব জিনিস কঠোরভাবে নিষিদ্ধ বা হারাম করেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো মাদক

 

ইসলামপূর্ব যুগে আরবরা মাদক গ্রহণে তীব্রভাবে আসক্ত ও অভ্যস্ত ছিল। মদের জন্য তারা শত শত নাম রেখেছিল। তাদের কবিতায় মদ, মদের পেয়ালা ও মদ্যপানের আসরের বর্ণনা স্থান করে নিয়েছিল বিপুলভাবে। ইসলাম এসে তাদের মাদক গ্রহণের দরজায় তালা লাগিয়ে দিয়েছে। (দৈনন্দিন জীবনে হালাল-হারাম, ড. ইউসুফ আল-কারযাবি, অনুবাদ : আসাদুল্লাহ ফুয়াদ, পৃষ্ঠা: ১৩৪)

 

মাদকদ্রব্য নিষিদ্ধ করে আল্লাহতায়ালা বলেন, হে মুমিনরা! মদ, জুয়া ও মূর্তিপূজার বেদী ও ভাগ্য নির্ণয়ক শরসমূহ তো শুধুই ঘৃণ্য বস্তু, শয়তানের কাজ। কাজেই তোমরা সেগুলো বর্জন করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সুরা মায়িদা, আয়াত: ৯০)

 

যা পান করলে নেশা তৈরি হয়, তা-ই নেশাজাতীয় দ্রব্যনেশাজাতীয় দ্রব্যকে যে নামেই ডাকা হোক, যে লেবেলেই তাতে আঁটা হোক এবং যে উপাদান থেকেই তা তৈরি হোকসব হারাম বা নিষিদ্ধ। এর ওপর ভিত্তি করে; যা কিছু পান বা সেবন করলে নেশা হয়তাও হারাম। রাসুল (সা.) বলেছেন, প্রত্যেক নেশা উদ্রেককারী দ্রব্যই মদ, আর সব ধরনের মদই হারাম। (মুসলিম, হাদিস: ২০০৩)

 

বুদ্ধি-বিবেককে আচ্ছন্ন করে ফেলে, এমন দ্রব্যও খাওয়া নিষেধ। কারণ তা মদের অন্তর্ভুক্ত। উমর (রা.) একবার মিম্বারে দাঁড়িয়ে মুসল্লিদের সামনে ঘোষণা করেছিলেন, মদ হলো তা, বুদ্ধি-বিবেক আচ্ছন্ন করে ফেলে যা। (বুখারি, হাদিস: ৩০৩২)

 

বাজারে এমন অ্যালকোহল আছে, যা প্রচুর পরিমাণে খেলে নেশার সৃষ্টি হয়, অল্প খেলে হয় না। ইসলাম কম-বেশি পরিমাণের প্রতি ভ্রূক্ষেপ করেনি। প্রচুর পরিমাণে খেলে যা নেশার সৃষ্টি করে, তার অল্পকেও নিষেধ করেছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যা প্রচুর পানে নেশা হয়, তার সামান্যও হারাম। (আবু দাউদ, হাদিস: ৩৬৮১)

 

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, যে দ্রব্যের এক ফারাক (মশক) পরিমাণ (পানে) নেশা সৃষ্টি করে তার এক আজল পরিমাণও হারাম। (তিরমিজি, হাদিস: ১৮৬৬)

 

লেখক: আলেম ও সাংবাদিক

অজুর ফরজ কয়টি

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৭:৪২ পিএম
অজুর ফরজ কয়টি
অজু করছেন এক মুসল্লি। ছবি : ইন্টারনেট

আল্লাহ পবিত্র। তিনি পবিত্রতা অর্জনকারীকে ভালোবাসেন। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারীকে ভালোবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরও ভালোবাসেন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২২২)

ইসলামে পবিত্রতা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম অজু। নামাজের জন্য অজু করা আবশ্যক। অজু করা ছাড়া নামাজ শুদ্ধ হবে না। আল্লাহ বলেন, ‘হে বিশ্বাসীরা, যখন তোমরা নামাজের জন্য দাঁড়াও, তখন তোমাদের মুখ হাত কনুই পর্যন্ত ধোবে ও তোমাদের মাথায় হাত বুলিয়ে নেবে, আর গিট পর্যন্ত ধোবে। যদি তোমরা অপবিত্র থাকো, তবে বিশেষভাবে পবিত্র হবে। যদি তোমরা অসুস্থ থাকো বা সফরে থাকো বা তোমাদের কেউ পায়খানা থেকে আসো কিংবা স্ত্রীর সঙ্গে সঙ্গত হও, আর পানি না পাও, তবে তাইয়াম্মুম করবে। পরিষ্কার মাটি দিয়ে এবং তা মুখে ও হাতে বুলিয়ে নেবে। আল্লাহ্ তোমাদেরকে কষ্ট দিতে চান না এবং তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে চান ও তোমাদের ওপর তাঁর অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করতে চান- যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জানাতে পারো।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত: ৬)

অজুর ফরজ
অজুতে চারটি ফরজ কাজ রয়েছে। কেউ যদি তা পরিপূর্ণভাবে পালন না করে, তা হলে তার অজু সঠিক হবে না। অজুর চার ফরজ হলো—

  • সমস্ত মুখমণ্ডল ধৌত করা।
  • দুই হাতের কনুই পর্যন্ত ধৌত করা।
  • মাথার চার ভাগের এক ভাগ মাসেহ করা।
  • দুই পা টাখনুসহ ধৌত করা।

অজুর ফজিলত
নুআইম মুজমির (রহ.) বলেন, ‘আমি আবু হুরায়রা (রা.)-এর সঙ্গে মসজিদের ছাদে উঠলাম। অতঃপর তিনি অজু করে বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন আমার উম্মতকে এমন অবস্থায় আহ্বান করা হবে, যে অজুর প্রভাবে তাদের হাত-পা ও মুখমণ্ডল উজ্জ্বল থাকবে। তাই তোমাদের মধ্যে যে এ উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে নিতে পারে, সে যেন তা করে।’ (বুখারি, হাদিস: ১৩৬)

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক

 

‌আত্তাহিয়াতু কি, কখন পড়তে হয়?

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৯:০০ এএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৫ এএম
‌আত্তাহিয়াতু কি, কখন পড়তে হয়?
নামাজের বৈঠকে দোয়া পড়ছেন মুসল্লি। ছবি: ইন্টারনেট

তাশাহুদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দোয়া, যা নামাজের প্রত্যেক বৈঠকে পড়তে হয়। তাশাহুদকে অনেকে আত্তাহিয়াতু বলেন। আত্তাহিয়াতু হচ্ছে আল্লাহতায়ালা এবং মুহাম্মাদ (সা.)-এর একটি কথোপকথন। নামাজের ভেতরে যেসব কাজ ফরজ তার একটি নামাজে বৈঠকে বসা। আর বৈঠকে আত্তাহিয়াতু বা তাশাহুদ পড়া ওয়াজিব (আবশ্যক)।

তাশাহুদের আরবি

التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ

বাংলা উচ্চারণ: আত্তাহিয়াতু লিল্লাহি ওয়াস সালা ওয়াতু, ওয়াত তাইয়িবাতু, আসসালামু আলাইকা আইয়ু হান নাবিইয়ু, ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।

বাংলা অর্থ: সমস্ত মৌখিক, শারীরিক ও আর্থিক ইবাদত আল্লাহর জন্য। হে নবি, আপনার প্রতি সালাম এবং আল্লাহর রহমত ও বরকত নাজিল হোক। সালাম আমাদের প্রতি এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের প্রতি। আমি সাক্ষ্য প্রদান করছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর বান্দা এবং রাসুল।

তিন বা চার রাকাতবিশিষ্ট নামাজের দুই রাকাতের পর বৈঠক করা ওয়াজিব। (বুখারি, ১/১১৪) এবং প্রথম ও শেষ উভয় বৈঠকে আত্তাহিয়াতু পড়া আবশ্যক। (বুখারি ১/১১৫: ৮৩০, ৮৩১)

লেখক: আলেম ও অনুবাদক

 

ঘুম থেকে ওঠার দোয়া

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১১:১০ পিএম
ঘুম থেকে ওঠার দোয়া
শিল্পীর তুলিতে আঁকা ঘুমন্ত বালকের ছবি। ফ্রিপিক

ঘুম আল্লাহর পক্ষ থেকে নেয়ামত ও অনুগ্রহ। মানুষ চাইলেই ঘুমাতে পারে না। কেউ কেউ সামান্য একটু শান্তির ঘুমের জন্য হাজারো টাকার ওষুধ খায়। আবার কেউ কেউ ঘুম দূর করার জন্যও ওষুধ খায়। তবে পরিমিত ঘুম মানবদেহের জন্য উপকারী। মানুষের ক্লান্তি-অবসাদ দূর করতে ঘুমের অবদান অসামান্য। আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের ঘুম বা নিদ্রাকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী। রাতকে করেছি আবরণ। দিনকে করেছি জীবিকা অর্জনের সময়।’ (সুরা নাবা, আয়াত: ৯-১১) 

একজন মুসলমানের কোনো কাজ যখন আল্লাহর হুকুম ও রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাত অনুযায়ী হয়, তখন তা ইবাদতে পরিণত হয়। প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ঘুম থেকে জেগে আবার ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত পূর্ণ সময়ই ইসলামি বিধিবিধান রয়েছে। এ বিধানগুলো পালনে আল্লাহর পক্ষ থেকে রয়েছে অগণিত সওয়াব।  

ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার দোয়া
হুজাইফা (রা.) বলেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন ঘুম থেকে উঠে বলতেন, 

الحمدُ لله الذي أحيَانَا بَعْدَ مَا أماتَنَا وإليه النُّشُوْر

বাংলা উচ্চারণ: আলহামদুলিল্লা হিল্লাজি আহইয়া না বাদা মা আমাতানা ওয়া ইলাইহিন নুশুর। 

বাংলা অর্থ: প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি (নিদ্রারূপ) মৃত্যুর পর আমাদের জীবিত করলেন, আর তারই কাছেই সবার পুনরুত্থান। (মুসলিম, হাদিস: ২৭১১)

মানুষ যখন আল্লাহর নেয়ামত পেয়ে নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে, আল্লাহ নেয়ামতকে বৃদ্ধি করে দেন। তার থেকে দূর করবেন ক্লান্তিভাব। সে শরীরে ফিরে পাবে এক নতুন উদ্যমতা।

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক

বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম ও দোয়া

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:০০ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৬ এএম
বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম ও দোয়া
নামাজরত এক ব্যক্তির ছবি। ইন্টারনেট

ইশার নামাজের পর থেকে শেষ রাতের আগপর্যন্ত যেকোনো সময় বিতর নামাজ পড়া যায়। বিতর নামাজ তিন রাকাত। অন্যান্য ফরজ নামাজের মতো দুই রাকাত নামাজ পড়ে প্রথম বৈঠকে বসে তাশাহহুদ পড়া। তারপর তৃতীয় রাকাত পড়ার জন্য উঠে সুরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য কোনো সুরা বা আয়াত মেলানো। কিরাত (সুরা বা অন্য আয়াত মেলানোর পর) শেষ করার পর তাকবির বলে দুহাত কান পর্যন্ত উঠাবে এবং তাকবিরে তাহরিমার মতো হাত বাঁধবে। তারপর নিঃশব্দে (অনুচ্চ স্বরে) দোয়া কুনুত পড়বে। দোয়া কুনুত পড়ে আগের মতো রুকু-সিজদা করবে। তারপর শেষ তাশাহহুদ, দরুদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবে।

দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ
আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতায়িনুকা ওয়া নাসতাগ ফিরুকা, ওয়ানুমিনু বিকা ওয়া নাতাওয়াক্কালু আলাইকা, ওয়া নুসনি আলাইকাল খাইর। ওয়া নাসকুরুকা ওয়ালা নাক ফুরুকা, ওয়া নাখলাউ উয়ানাত রুকু মাইয়াফ জুরুকা। আল্লাহুম্মা ইইয়াকানা বুদু ওয়ালাকা নুসল্লি, ওয়ানাস জুদু ওয়া ইলাইকা নাসয়া; ওয়া নাহফিদু ওয়া নারজু রাহমাতাকা, ওয়া নাখশা আজাবাকা; ইন্না আজাবাকা বিলকুফফারি মুলহিক।


দোয়া কুনুতের বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ, আমরা তোমারই সাহায্য চাই। তোমারই কাছে ক্ষমা চাই, তোমারই প্রতি ইমান রাখি, তোমারই ওপর ভরসা করি এবং সব মঙ্গল তোমারই দিকে ন্যস্ত করি। আমরা তোমার কৃতজ্ঞ হয়ে চলি, অকৃতজ্ঞ হই না। হে আল্লাহ, আমরা তোমারই দাসত্ব করি, তোমারই জন্য নামাজ পড়ি এবং তোমাকেই সিজদাহ করি। আমরা তোমারই দিকে দৌড়াই ও এগিয়ে চলি। আমরা তোমারই রহমত আশা করি এবং তোমার আজাবকে ভয় করি। আর তোমার আজাব তো কাফেরদের জন্যই নির্ধারিত।

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক

সন্তানের ভালোর জন্য দোয়া

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৭:২০ পিএম
সন্তানের ভালোর জন্য দোয়া
পিতা-মাতার সঙ্গে সন্তান। কার্টুন ছবি

সন্তান আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ নেয়ামত। নেক সন্তান আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার প্রতি মহান দান। আর সন্তান জন্মদানে পিতা-মাতার ভূমিকাই মুখ্য। তাই সন্তান লালন-পালন ও তাদের জন্য কল্যাণ কামনায় দোয়া করার দায়িত্বও পিতা-মাতার। সন্তান যদি নেককার হয়, তা হলে পিতা-মাতার রয়েছে অপরিসীম সদকায়ে জারিয়ার সওয়াব। এক আয়াতে সন্তানকে পার্থিব জীবনের অলংকারও বলা হয়েছে, ‘ধন, সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের অলংকার।’ (সুরা কাহাফ, আয়াত: ৪৬)

সন্তানের জন্য পিতা-মাতার দোয়া আল্লাহ অবশ্যই কবুল করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তিনটি দোয়া অবশ্যই কবুল হয়, এতে কোনো সন্দেহ নাই। ১. নির্যাতিতের দোয়া, ২. মুসাফিরের দোয়া এবং (৩) সন্তানের জন্য পিতা-মাতার দোয়া।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ১৫৩৬)  

সন্তানের জন্য পিতা-মাতা কী দোয়া করবে
পিতা-মাতার কাছে সন্তান সব সময় দোয়ার হকদার। তাদের উচিত সন্তানের জন্য সব সময় কল্যাণের দোয়া করা। সন্তান পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে পিতা-মাতার বেশি বেশি এই দোয়া করা উচিত—

বাংলা উচ্চারণ: ‘রাব্বি হাবলি মিল্লাদুনকা জুররিয়াতান তাইয়িবাহ, ইন্নাকা সামিউদ দোয়া।’

বাংলা অর্থ: হে আমাদের প্রতিপালক, তোমার পক্ষ থেকে আমাকে পূতপবিত্র সন্তান দান করো। নিশ্চয়ই তুমি প্রার্থনা কবুলকারী।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ৩৮) 

সন্তান যখন ভূমিষ্ঠ হবে তখন প্রত্যহ এই দোয়া পাঠ করা উচিত—

বাংলা উচ্চারণ: ‘রাব্বিজ আলনি মুকিমাস সালাতি, ওয়া মিন জুররিয়াতি, রাব্বানা ওয়া তাকাব্বাল দোয়া।’

বাংলা অর্থ: হে আমার প্রতিপালক, আমাকে নামাজ আদায়কারী করুন এবং আমার বংশধরদের মধ্য থেকেও। হে আমার প্রতিপালক, আমার প্রার্থনা কবুল করুন।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত: ৪০) 

সন্তান যখন প্রাপ্তবয়ষ্ক হবে তখন তার কল্যাণ কামনার্থে এই দোয়া বেশি বেশি  পাঠ করা যেতে পারে—

বাংলা উচ্চারণ: ‘রাব্বানা লিয়ুকিমুস সালাতা, ফাজআল আফইদাতাম মিনান নাসি, তাহওয়ি ইলাইহিম ওয়ারজুকহুম মিনাস সামারাতি, লা আল্লাহুম ইয়াশকুরুন।’

বাংলা অর্থ: হে আমার প্রতিপালক, তারা (সন্তান-সন্ততি) যাতে নামাজ প্রতিষ্ঠা করে। কাজেই তুমি মানুষের অন্তরকে তাদের প্রতি অনুরাগী করে দাও। আর ফল-ফলাদি দিয়ে তাদের জীবিকার ব্যবস্থা করো; যাতে তারা (আল্লাহতায়ালার) শুকরিয়া আদায় করতে পারে।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত: ৩৭)

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক