![সুবর্ণচরে মা-মেয়ে ধর্ষণ : প্রধান আসামি মুন্সি মেম্বার গ্রেপ্তার](uploads/2024/02/07/1707284009.Abul-Khair-munshi-member.jpg)
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে মা-মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা আবুল খায়ের প্রকাশ মুন্সি মেম্বারকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সদরের কাদির হানিফ ইউনিয়ন থেকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও চরজব্বার থানা-পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার আবুল খায়ের প্রকাশ মুন্সি মেম্বার চরওয়াপদা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি এবং ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য।
নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান গ্রেপ্তারের বিষয়টি খবরের কাগজকে নিশ্চিত করে বলেন, ভুক্তভোগী নারীর দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি আবুল খায়ের মুন্সি মেম্বারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এর আগে দুপুরে ভুক্তভোগী নারী (৩০) বাদী হয়ে সুবর্ণচরের চরজব্বর থানায় ধর্ষণ ও নগদ টাকাসহ স্বর্ণালঙ্কার লুটের ঘটনায় তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল খায়ের প্রকাশ মুন্সি মেম্বারকে প্রধান আসামি করা হয়। মামলায় অপর আসামিরা হলেন- চর কাজী মোখলেছ গ্রামের মৃত বশির আহম্মদের ছেলে মো. হারুন (৪২) ও অপরজন অজ্ঞাত।
এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে ভুক্তভোগী মা-মেয়ের চিকিৎসা ও ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের গাইনি সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. আবদুল মন্নান শাকিল মা-মেয়েকে ভর্তির বিষয়টি খবরের কাগজকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, নির্যাতিতা মা-মেয়ে খুবই অসুস্থ। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পরীক্ষা শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।
মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপস্) বিজয়া সেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এলাকাবাসীর বক্তব্য অনুযায়ী প্রধান আসামি আবুল খায়ের মুন্সি মেম্বারের স্বভাব-চরিত্র ভালো নয়। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।’
এর আগে সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ২টার দিকে বাড়িতে মা-মেয়েকে একা পেয়ে সিঁধ কেটে তিন সন্তানের জননী (৩০) ও তার পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ের (১২) ওপর নির্যাতন চালায়। পরে ৯৯৯-এ কল পেয়ে চরজব্বর থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করে।
ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আবুল খায়ের মুন্সি মেম্বার দীর্ঘদিন থেকে তাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। মাঝেমধ্যে টেলিফোন করে কুপ্রস্তাব দিত। প্রস্তাবে রাজি না হলে খারাপ পরিণতির হুমকি দিত। সোমবার রাতে পুরুষহীন বাড়িতে সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে হাত-মুখ বেঁধে মাকে দুজন এবং মেয়েকে অপরজন ধর্ষণ করে। পরে মা-মেয়ের নাক-কানের স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টকা নিয়ে আসামিরা চলে গেলে ৯৯৯-এ কল দেওয়া হয়।
নির্যাতনের শিকার ওই নারীর স্বামী (৪২) খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। দিনমজুরি করি। কয়েক মাস আগে ওই এলাকায় পাঁচ শতক জমি কিনে বাড়ি করি। আসামিরা খুবই খারাপ প্রকৃতির। আমি এ জঘন্যতম ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের ফাঁসি চাই।’
ইকবাল মজনু/ইসরাত চৈতি/অমিয়/