![সুবর্ণচরে মা-মেয়ে নির্যাতন: চুরি নয়, উদ্দেশ্যই ছিল ধর্ষণ](uploads/2024/02/08/1707362308.IMG_20240207_12401388.jpg)
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে গৃহবধূকে ধর্ষণ করতে সহযোগী মো. মেহরাজকে (৪৮) সিঁদকেটে চুরি করতে ঘরে ঢোকান আওয়ামী লীগ নেতা আবুল খায়ের মুন্সি মেম্বার (৬৭)। গ্রেপ্তারের পর মা-মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা অকপটে স্বীকার করেছেন তারা। গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় নোয়াখালী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘গৃহবধূর ঘরে গরু বিক্রির ১ লাখ টাকা গচ্ছিত ছিল। গভীর রাতে সহযোগী মেহরাজকে সিঁদকেটে সে টাকা আনতে পাঠান আবুল খায়ের মুন্সি। কিন্তু দরজা খোলার পর হারুনের সঙ্গে মুন্সি মেম্বারকে দেখতে পেয়ে মেহরাজ নিশ্চিত হন টাকা চুরি করতে নয়, বরং গৃহবধূকে ধর্ষণ করতেই মুন্সি মেম্বার ও হারুন তাকে দিয়ে দরজা খোলান।’
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে মেহরাজ জানান মুন্সি মেম্বার ও হারুন গৃহবধূকে (৩০) অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে পাশের কক্ষে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করার দৃশ্য দেখে সেও পাশের কক্ষে থাকা মেয়েকে (১২) হাত-মুখ বেঁধে ধর্ষণ করে। পরে মা-মেয়ের ব্যবহৃত স্বর্ণালংকার ও স্কুলব্যাগে থাকা ১৭ হাজার ২২৫ টাকা নিয়ে তারা বেরিয়ে যায়।’
পুলিশ সুপার দাবি করেন, গৃহবধূর দায়ের করা মামলার অজ্ঞাত আসামি এই মেহরাজ। কানটুপি দিয়ে মুখ ঢেকে রাখায় তাকে ঘটনার সময় চিনতে পারেননি ভুক্তভোগী। মেহরাজ চরওয়াপদা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চরকাজী মোখলেছ গ্রামের নুরুল আমিনের ছেলে। এলাকায় তিনি সাবেক মেম্বার আবুল খায়ের মুন্সির ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত। তার দেখানো মতে, সিঁদকাটায় ব্যবহৃত কোদাল ও ভয় দেখানো দা ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং ভুক্তভোগী নারীর বর্ণনামতে ঘটনার সময় পরিহিত কালো কানটুপি ও কালো প্যান্ট মুন্সি মেম্বারের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে গত সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত ২টায় বাড়ির সিঁদ কেটে ঘরে ঢুকে মা-মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণের পর স্বর্ণারংকার ও নগদ অর্থ নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ৯৯৯-এ কল পেয়ে চরজব্বর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করে। পরদিন মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে সুবর্ণচরের চরজব্বর থানায় ধর্ষণ ও নগদ টাকাসহ স্বর্ণালংকার লুটের মামলা করেছেন। এতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল খায়ের প্রকাশ মুন্সি মেম্বারকে প্রধান আসামি করা হয়। মামলায় অন্য আসামিরা হলেন চর কাজী মোখলেছ গ্রামের মৃত বশির আহম্মদের ছেলে গরু বেপারি মো. হারুন (৪২) ও অন্যজন অজ্ঞাত আসামি ছিলেন।
পুলিশ সুপার জানান, পলাতক হারুনও পালিয়ে বাঁচতে পারবেন না। তাকে পুলিশের হাতে ধরা পড়তেই হবে। গ্রেপ্তার দুই আসামিকে রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) বিজয়া সেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোহাম্মদ ইব্রাহীম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) নাজমুল হাসান রাজীব, সহকারী পুলিশ সুপার (চাটখিল সার্কেল) নিত্যানন্দ দাস, চরজব্বর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম।