বাগেরহাটের ১ হাজার ২৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভাষাশহিদদের স্মরণে এখনো নির্মাণ করা হয়নি শহিদ মিনার। যদিও সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার থাকা বাধ্যতামূলক। সরকারি এ নির্দেশনা মানা হচ্ছে না জেলার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। ফলে একুশে ফেব্রুয়ারিতে ফুল দিয়ে শহিদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। এদিকে যেসব প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার রয়েছে, সেগুলোও সারা বছর পড়ে থাকে অযত্নে-অবহেলায়।
জেলায় সরকারি-বেসরকারি মিলে ২৮২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৪০টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১১টি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ১১২টি মাদ্রাসা ও ১ হাজার ১৬২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। জেলায় সব মিলিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১ হাজার ৬০৭টি। এর মধ্যে ১ হাজার ২৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার ও স্মৃতিস্তম্ভ নেই। স্বাধীনতার প্রায় ৫৩ বছরেও এসব প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, বাগেরহাটে মোট ৯টি উপজেলায় ১ হাজার ১৬২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এর মধ্যে ২৪০টিতে শহিদ মিনার ও স্মৃতিস্তম্ভ নেই। প্রতিটি বিদ্যালয় শহিদ মিনার ও স্মৃতিস্তম্ভ তৈরিতে সরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা যায়, প্রাথমিক পর্যায়ে ৮০ ভাগ স্কুলে শহিদ মিনার নেই। অধিকাংশ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নেই। এর মধ্যে কোনো মাদ্রাসাতেই নেই শহিদ মিনার। বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার না থাকার কারণ অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিদ্যালয়গুলোয় শহিদ মিনার নির্মাণে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয় না।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মু. শাহ আলম বলেন, ‘কিছু কিছু বিদ্যালয়ে স্থায়ী শহিদ মিনার আছে। সরকারিভাবে জেলার প্রতিটি স্কুলে শহিদ মিনার তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। একই নকশায় প্রতিটি স্কুলে শহিদ মিনার তৈরি করার জন্য সরকারিভাবে আমাদের কাছে স্কুলের হিসাব চাওয়া হয়েছে। আমরা আমাদের জেলার হিসাব দিয়েছি।’
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিজস্ব উদ্যোগে শহিদ মিনার তৈরি করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।’ জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার থাকলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভাষার প্রতি ভালোবাসা ও ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারে। জেলার যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নেই, সেসব প্রতিষ্ঠানে তা নির্মাণে বিভিন্ন বরাদ্দের মাধ্যমে সহযোগিতা করা হবে।’