ঠাকুরগাঁওয়ে প্রথম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টায় মামলা করায় চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে অভিযুক্তের পরিবার। এতে বিপাকে পড়েছেন ভুক্তভোগীর পরিবারসহ ১০ থেকে ১২টি পরিবারের সদস্যরা।
উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের পাহাড়ভাঙ্গা উত্তর কুড়ালিপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভুক্তভোগীর বাড়ির পশ্চিম পাশের যাতায়াতের রাস্তায় অভিযুক্তের পরিবার বাঁশ ও কঞ্চি দিয়ে বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। এতে বাদীর পরিবারের লোকজনসহ স্থানীয় কয়েকটি পরিবারের যাতায়াত পথ বন্ধ হয়ে গেছে। বিকল্প পথ হিসেবে তারা পাশের খেতের ওপর দিয়ে যাতায়াত করছে।
এ অবস্থায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ভুক্তভোগীর পরিবারটি।
ভুক্তভোগীর বাবা-মা খবরের কাগজকে জানান, গত ১৬ জানুয়ারি পেয়ারার লোভ দেখিয়ে প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে পাশের বাড়ির ওমর ফারুক নামে এক তরুণ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে গত ১৮ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁও সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। এতে পুলিশ ওই তরুণকে গ্রেপ্তার করে। পরে অভিযুক্ত জামিনে ছাড়া পেলে তার পরিবার বাদীপক্ষকে আপসের জন্য চাপ দিতে থাকে। তবে ভুক্তভোগী শিশুর পরিবার এ দাবি না মানায় তাদের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয় তারা।
এলাকার বাসিন্দা নাসিরুল ইসলাম বলেন, ‘মামলার পরে অভিযুক্তের পরিবার রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়। এতে ১০ থেকে ১২টি পরিবারকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আমরা এই পথ দিয়ে পার্শ্ববর্তী বাজার ও মসজিদে যাতায়াত করতাম। রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের বহু পথ ঘুরে বাজারে ও মসজিদে যেতে হচ্ছে। এ ছাড়াও আমাদের মাঠ থেকে ফসলও আনতে পারছি না।’
আক্তার বানু নামে এক গৃহিণী বলেন, ‘অভিযুক্তরা আমাদের একঘরে করে রাখার চেষ্টা করছে। তারা মনে করেছে রাস্তাটি বন্ধ করলে শিশুটির বাবা নিরুপায় হয়ে মামলাটি তুলে নেবে। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তারা যেন আমাদের দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে চলাচলের রাস্তাটি খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করে।’
এই অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্তের চাচি পারুল বেগম বলেন, ‘এটা আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি। এতদিন ব্যবহার করতে দিয়েছি; এখন আর দেব না। তবে এর সঙ্গে মামলার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কারও রাস্তা প্রয়োজন হলে সরকার তাদের জমি কিনে রাস্তা করে দেবে। আমি কাউকে রাস্তা দিতে পারব না।’
সব অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্তের মা হোসনেয়ারা ও বাবা হায়দার আলী বলেন, ‘আমাদের ছেলেকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। রাস্তা ও জমি নিতেই এই মামলা করা হয়েছে। আমাদের ছেলে নির্দোষ। আমরা সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন খবরের কাগজকে বলেন, ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নবীন/পপি/