ঢাকা ২১ আষাঢ় ১৪৩১, শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪

নেই সিঁড়ি, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নজরদারির অভাবে রেস্টুরেন্ট এখন ‘মৃত্যুকূপ’

প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৪, ১০:৫০ এএম
আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৪, ১০:৫০ এএম
নজরদারির অভাবে রেস্টুরেন্ট এখন ‘মৃত্যুকূপ’
নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে গড়ে ওঠা বহুতল ভবন সেন্টারপয়েন্ট। এই ভবনে রয়েছে রুফটপ রেস্টুরেন্ট। খবরের কাগজ

নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীতে একাধিক বহুতল ভবনে গড়ে ওঠা শতাধিক রেস্টুরেন্টে অগ্নিনির্বাপণের কোনো ব্যবস্থা নেই। এর মধ্যে অনেক ভবনে ওঠা-নামার জন্য লিফট ছাড়া বিকল্প কোনো ব্যবস্থাও রাখা হয়নি। এতে দুর্ঘটনার সময় বিদ্যুৎ বন্ধ হলে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন ভবনগুলোতে আসা দর্শনার্থীরা। 

প্রভাবশালীদের ছাড়ায় থেকে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া এসব রেস্টুরেন্টকে ‘মৃত্যুকূপ’ দাবি করে স্থানীয়রা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি প্রত্যাশা করেছেন। আর অভিযোগের তির যাচ্ছে যাদের দিকে তারা দিয়েছেন ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস, সঙ্গে রেখেছেন খবর প্রকাশ না করার অনুরোধ। অন্যদিকে বিষয়টি নজরে আছে জানিয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ বলছে, ১৫টি রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে নোটিশ পাঠানো হয়েছে, পর্যায়ক্রমে বাকিদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত মঙ্গলবার বিকেলে শহরের প্রধান সড়কের সেন্টারপয়েন্ট ভবনে গিয়ে দেখা যায়, পাঁচজনের ধারণক্ষমতার একটি ছোট লিফটই ওঠানামার একমাত্র ভরসা। এ ভবনে নিচের তিনতলা কাপড়ের শোরুম, পাঁচতলায় পার্টিসেন্টার এবং সাত, আট ও নয় তলায় স্কাইভিউ রুফটপ রেস্টুরেন্ট। ওঠানামার সরু সিঁড়িটি শোরুমের ভেতরে আটকা এবং উপরের দিকে বড় বড় গ্যাস সিলিন্ডার ও খাবার রেখে বন্ধ রাখা হয়েছে।

সেন্টারপয়েন্টে এ প্রতিবেদক অবস্থান করার সময়ই স্কাইভিউ রেস্টুরেন্টের একমাত্র লিফটটি এক ঘণ্টারও বেশি সময় বন্ধ থাকতে দেখা যায়। তখন কেউ উপর-নিচে ওঠানামা করতে পারেননি। ওই সময় রুফটপ রেস্টুরেন্টে (সপ্তম থেকে নবম তলা) আটকে পড়া আতঙ্কিত অনেকে খবরের কাগজকে বলেন, এটি একটি ‘মৃত্যুফাঁদ’। এভাবে কোনো ভবনের কার্যক্রম চলতে পারে না।

এ ছাড়াও শহরে ব্যাঙের ছাতার মতো যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অসংখ্য রেস্টুরেন্ট। যাদের ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশ অধিদপ্তরের সনদসহ কোনো অনুমোদন নেই। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় চলছে এসব রেস্টুরেন্ট। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এসব ‘মৃত্যুকূপ’ গড়ে উঠছে বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।

স্কাইভিউ রেস্টুরেন্টে আসা জেলা ফুটবল দলের খেলোয়াড় মাহবুবুল ইসলাম হিমু খবরের কাগজকে বলেন, ‘পরিবার নিয়ে সবাই এসব রেস্টুরেন্টে খেতে আসেন। কিন্তু এগুলোতে পর্যাপ্ত অগ্নিনিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই। প্রশাসনকে এসব বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত।’

সামছুদ্দিন আহমেদ শাওন নামে আরেকজন বলেন, ‘প্রশাসনের তদারকির অভাবে শহরে রেস্টুরেন্ট নামের এসব মৃত্যুকূপগুলো গড়ে উঠছে। বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ছাড়া দপ্তরগুলো তৎপর হয় না। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।’

স্কাইভিউ রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক মোশাররফ হোসেন পারভেজ বলেন, ‘সাময়িক সময়ের জন্য লিফটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। পরে মিস্ত্রি ডেকে ঠিক করা হয়েছে। রেস্টুরেন্টে অগ্নিনির্বাপণে কিছু ব্যবস্থা আছে। বাকি ব্যবস্থার জন্য মালিকপক্ষকে বলা হয়েছে।’

স্কাইভিউর মালিক দাবি করে সৌদি আরব থেকে সোহাগ আহছান নামে একজন বলেন, ‘ত্রুটিগুলো আমাদেরও নজরে এসেছে। আমরা অচিরেই এসব সমস্যার সমাধানে ব্যবস্থা নেব। নিউজটি না করার অনুরোধ রইল।’

নোয়াখালী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সুজিত বড়ুয়া খবরের কাগজকে বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ বহুতল ভবনের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা সাততলা পর্যন্ত অনুমোদন দেই। এর বাইরে বহুতল ভবনের বিষয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’

ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন মাস্টার কবির হোসেন খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। নোয়াখালী সুপার মার্কেট, আমানিয়া, টোকিও কাবাবসহ অন্তত ১৫টি রেস্টুরেন্টকে এরই মধ্যে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবগুলো রেস্টুরেন্ট মালিককে নোটিশ পাঠানো হবে।’

পরিবেশ অধিদপ্তরের নোয়াখালী কার্যালয়ের উপপরিচালক মিহির লাল সরদার বলেন, ‘কিছু রেস্টুরেন্ট পরিবেশ সনদের জন্য আবেদন করেছে। জনবল সংকটে অনেক সময় অভিযান চালানো সম্ভব হয় না। তার পরও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জেলা প্রশাসক দেওয়া মাহবুবুর রহমান ঢাকায় ডিসি সম্মেলনে রয়েছেন। তার নম্বরে ফোন দিলে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না মাহমুদ বলেন, ‘এ বিষয়ে স্যারের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত কমিটি গঠন করে অভিযান চালানো হবে।’

পাবনায় প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিহত ৪

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৭ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৭ পিএম
পাবনায় প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিহত ৪
ছবি : খবরের কাগজ

পাবনার ঈশ্বরদীতে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে চারজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও তিনজন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) রাত ৯টার দিকে উপজেলার পাবনা-ঈশ্বরদী মহাসড়কের দাশুড়িয়া সুগার মিলের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটনা। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

ঈশ্বরদীর পাকশি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীরবিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ঈশ্বরদী থেকে পাবনার দিকে যাচ্ছিল প্রাইভেটকারটি। পথে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হন‌। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরও একজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় উদ্ধার কার্যক্রম চলছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

পার্থ হাসান/সালমান/

দেশব্যাপী ষান্মাসিক পরীক্ষা শুরু, ব্যতিক্রম রাঙামাটি বায়তুশ শরফ মাদ্রাসা!

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১০:১৪ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১০:১৪ পিএম
দেশব্যাপী ষান্মাসিক পরীক্ষা শুরু, ব্যতিক্রম রাঙামাটি বায়তুশ শরফ মাদ্রাসা!
ছবি : খবরের কাগজ

সারা দেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণিতে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন কার্যক্রম শুরু হয়েছে গতকাল ৩ জুলাই থেকে। মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সময়সূচি ও করণীয় নির্দেশনা ইতোমধ্যেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এই নির্দেশনা মানেনি রাঙামাটি বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া আদর্শ মাদ্রাসা।

এমনকি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মৃদুল কান্তি তালুকদার দুপুরে হলেও পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে আসলে তাতেও কর্ণপাত করেননি প্রতিষ্ঠানটির প্রিন্সিপাল সামশুল আরেফিন। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রথম দিন রুটিনটা একটু মিসিং হয়েছে। শনিবার থেকে পরীক্ষা নেওয়া শুরু করব।’

তবে সরকারি নির্দেশনা না মানার প্রমাণ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন শিক্ষা কর্মকর্তা মৃদুল কান্তি তালুকদার।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান (রুটিন দায়িত্ব) প্রফেসর মো. মশিউজ্জামান স্বাক্ষরিত গত ৩০ জুনের এক চিঠিতে এই নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়েছে, ‘সময় নির্ধারিত’ ও ‘অতীব জরুরি’। এই চিঠি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও এসব অধিদপ্তরের শিক্ষা বিভাগসহ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবদের পাঠানো হয়েছে। সেখানে নির্দেশনাপত্রটি বিভাগগুলোর আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে পাঠাতে বলা হয়েছে।

সরকারি সিদ্ধান্ত আর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশনাকে পাশ কাটিয়ে যথাসময়ে পরীক্ষা শুরু না করার বিষয়ে সামশুল আরেফিন বলেন, ‘আমাদের প্রথম দিন রুটিনটা একটু মিসিং হয়েছে। তবে ওইদিন কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত নয় আরবি পরীক্ষাগুলো নিয়েছি। আমাদের এবতেদায়ি (প্রাথমিক) শাখাও সংযুক্ত। রুটিন করতে সব একসঙ্গেই করেছি। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত আমাদের প্রায় ৯০ জন শিক্ষার্থী আছে।’

নিজের একক সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ায় কোনো সমস্যা তৈরি হবে কি না-জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই সবগুলো পরীক্ষা আমরা শনিবার থেকে একসঙ্গে শুরুর চিন্তা করছি। মাদ্রাসার চারটি বিষয় সরকার যে রুটিন দিছে ওখানে নেই। গতকালের আগ পর্যন্ত সরকারি নির্দেশনা ছিল যে, পরীক্ষার গ্যাপের মধ্যে ক্লাস হবে না। আমরা ভাবছিলাম ওই গ্যাপের মধ্যে পরীক্ষাটা নিয়ে নেব। কিন্তু এখন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হওয়ায় শিডিউল মেনেই পরীক্ষা নেব।’

প্রিন্সিপালের এমন সিদ্ধান্তকে ‘হঠকারী’ বলে মন্তব্য করেছেন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল বাতেন। 

তিনি বলেন, সরকারি সিদ্ধান্তকে না মেনে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মনগড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পরীক্ষা শুরুর বিষয়ে পরিচালনা কমিটির সঙ্গে কোনো আলোচনাও করেননি। কোনো সমস্যা হলে আমরা সমাধানের উদ্যোগ নিতে পারতাম। কিন্তু প্রিন্সিপাল একক সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পরীক্ষার মতো অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কার্যক্রম থেকে পিছিয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মৃদুল কান্তি তালুকদার বলেন, ‘আমি তো গতকাল গিয়েছিলাম। পরীক্ষা হয়েছে। ঘটনা কী? পরীক্ষা হয়নি? তারা সময়মতো পরীক্ষা নেয়নি। তাই নির্দেশনা দিয়েছি, আপনারা এই ভুল করলেন কেন? আমাকে বলেছিল যে, পরে পরীক্ষা হবে। সম্ভবত ১২টা কী ১টায় একটা টাইম দিয়েছিল পরীক্ষা নেওয়ার।’

নির্দেশনা দেওয়ার পরও পরীক্ষা না নেওয়ার বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, ‘ইচ্ছে করলেই তার (প্রিন্সিপাল) মতো পরীক্ষা নিতে পারবেন না। এটা আগে থেকেই শিডিউল করা আছে। টাইমলি নিতে হবে। যদি পরীক্ষা না নিয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জিয়াউর রহমান/সালমান/

ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢল গাইবান্ধায় ৭০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৯:১৫ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৯:১৫ পিএম
গাইবান্ধায় ৭০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ
ছবি: খবরের কাগজ
টানা ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে গাইবান্ধার চার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামগুলো প্লাবিত হচ্ছে। গতকাল বুধবার থেকে ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘটসহ সবগুলো নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি বৃদ্ধির কারণে প্লাবিত হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের স্কুলগুলো। জেলায় বন্যাকবলিত গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটার উপজেলার মোট ৭০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি কয়েকটি স্কুল আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত করা হচ্ছে।
 
গাইবান্ধা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ছুটি শেষে গতকাল বুধবার বিদ্যালয় খোলা হয়েছে। চার উপজেলার চরাঞ্চলে কয়েকটি বিদ্যালয়ের মাঠে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এতে ওই এলাকার বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্যার কারণে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসতে পারছে না। বিদ্যালয় খোলার পর বিদ্যালয়ে কিছু শিক্ষার্থী আসলেও অনেক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আসতে পারেনি। টানা চার দিনের বৃষ্টি আর বন্যার পানি বেড়েই চলছে। জেলার ৭০টি বিদ্যালয় বন্যায় প্লাবিত হওয়ায় পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। এরমধ্যে গাইবান্ধা সদরে ১৭টি, ফুলছড়িতে ২১টি, সাঘাটা ২১টি ও সুন্দরগঞ্জ ১১টি।
 
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, গাইবান্ধা সদর ও ফুলছড়িতে কয়েকটি বিদ্যালয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। ভরতখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে হাঁটু পানি হয়েছে। শ্রেণিকক্ষেও পানি। যাতায়াতের রাস্তার পানির নিচে পড়ে আছে। রাস্তাগুলোতে প্রায় ২ থেকে ৩ ফুট পানি রয়েছে। রাস্তা পানি নিচে থাকায় চলাচল করতে পারছে না লোকজন। ফুলছড়ি উপজেলার চর পেপুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পেপুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কালুরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোর একই অবস্থা। এসব এলাকায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির চরম অভাব দেখা দিয়েছে।
 
এদিকে পানি বৃদ্ধির কারণে নদী তীরবর্তী গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি, মোল্লারচর, গিদারি, ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া, এরেন্ডাবাড়ি, ফজলুপুর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া তারাপুর, হরিপুর, সাঘাটা উপজেলার ফজলুপুর, গজারিয়া ইউনিয়নের অনেক নিম্নাঞ্চল জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।
 
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সূত্র জানায়, বন্যাকবলিত চারটি উপজেলার ২৪টি ইউনিয়নের ১৭ হাজার ৮২০টি পরিবার পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে। জেলায় ১৮১ স্থায়ী ও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। জি আর (প্রাকৃতিক দুযোর্গ) চারশ মেট্রিকটন চাল ও নগদ ১০ লাখ টাকা মজুদ রয়েছে।
 
চর পেপুলিয়া গ্রামের আবদুল্লাহ (৪৫) বলেন, গতকাল থেকে নদীর পানি খুব বাড়ছে। রাতে আমাদের বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছে। রান্না করতে পারছি না। খুবই কষ্টে আছি। বাড়ির পাশে স্কুলটিতে পানি ঢুকেছে। বন্যার কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা আসতে পারছে না। 
 
গুপ্তমনি চরের জলিল মিয়া (৫০) বলেন, বন্যার পানি বেড়েই চলছে। বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করছে। বন্যার কারণে অনেক ভোগান্তির মধ্যে আছি। চালডাল সবই আছে,শুধু রান্না করতে পারছি না।  
 
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম জানান, জেলার চার উপজেলার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গতকাল থেকে পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ফলে ৭০টি বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। ১৫টি বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিদ্যালয়ে আগের মতো পাঠদান চালু করা হবে। 
 
গাইবান্ধা পাউবোর নিয়ন্ত্রণকক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলার ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্রে নদের পানি ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখঘাট পয়েন্টে ৫১ সেন্টিমিটার, ঘাঘট নদীর পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ৪৬ সেন্টিমিটার, করতোয়ার পানি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চকরহিমাপুর পয়েন্টে ৫০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে তিস্তার পানি সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সংলগ্ন রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে ২৩ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়েছে। 
 
অপরদিকে গত ২৪ ঘন্টায় ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত এ পরিমাণ পানি বৃদ্ধি ও কমে। 
 
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানিয়েছেন, নদ-নদীর পানি বাড়লেও আপাতত বড় বন্যার সম্ভাবনা নেই। তিনি মুঠোফোনে বলেন, উজানের ঢলে ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদীর পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে তিস্তার পানি কমতে শুরু করেছে।
 
রফিক খন্দকার/এমএ/

চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ত্রুটি পেয়েছে তদন্ত কমিটি

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৮:৩০ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৮:৩০ পিএম
চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ত্রুটি পেয়েছে তদন্ত কমিটি
ছবি : খবরের কাগজ

চট্টগ্রাম নগরের মহিউদ্দিন চৌধুরী এক্সপ্রেসওয়ের কাজের মানে ত্রুটি পেয়েছে তদন্ত কমিটি। 

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে এক্সপ্রেসওয়ে পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিভিন্ন অসংগতির কথা তুলে ধরেন গৃহায়ণ ও গণর্পূত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি কর্তৃক গঠিত উপকমিটির আহ্বায়ক সংসদ সদস্য এম এ লতিফ, মজিবুর রহমান মনজু ও পারভীন জামান। 

লালখান বাজার হতে পতেঙ্গা পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ আলহাজ এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে বাংলাদেশ ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ও চীনের র‌্যাংকিন। এই প্রকল্পের ব্যয় ৪ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা।

তিনি বলেন, ‘এই ওভারপাসের জন্য চার হাজার কোটি টাকা খরচ করল সরকার। চট্টগ্রামের যানজট নিরসন এবং যোগাযোগ সুবিধার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। এই বিপুল টাকা ব্যয়ের পরও কেন শহরের মানুষ বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তা ব্যবহার করতে পারছে না। এত খরচ এবং ব্যাংক সুদ বাড়ছে। এটা কে দেবে? যাদের ভুলত্রুটি হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হবে। পিলারে যে ফাটলের কথা বলা হচ্ছে, তা যাচাই করে দেখার জন্য বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা হবে। প্রতিবেদনগুলো সবার সামনে তুলে ধরা হবে।’ 

এম এ লতিফ আরও বলেন, ‘কনসালটেন্ট ফার্মকে বলেছি তারা কী দেখেছে। তাদের কাজটা কী? যেসব নাট-বোল্ট লাগিয়েছে তা গাড়ি চলাচলের সময় ঝাঁকুনি দেয়। অন্যান্য এক্সপ্রেসওয়েতে আমি দেখেছি এটা হয় না। এটা তারা রেক্টিফাই করবে। কনস্ট্রাকশনে গুরুতর কোনো ত্রুটি বা গাফিলতি বা সিলিন্ডার টেস্ট করেছে কি না, পাইলিং যথাযথ হয়েছে কি না, সবকিছু দেখা হবে। আমাদের তিন মাস সময় দেওয়া হয়েছে। যদি অনিয়ম হয়ে থাকে একেকটার একেক রকম ব্যবস্থা আছে। কারও জেল হবে। কারও জরিমানা হবে। এত বড় একটা সুপারস্ট্রাকচারে অনিয়ম করলে প্রধানমন্ত্রী কাউকে ছাড় দেবেন না।’

বান্দরবানে বেনজীরের জমির নিয়ন্ত্রণ নিল প্রশাসন

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৭:৪৭ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৭:৪৭ পিএম
বান্দরবানে বেনজীরের জমির নিয়ন্ত্রণ নিল প্রশাসন
ছবি : খবরের কাগজ

বান্দরবানে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তি  নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) আদালতের নির্দেশে বান্দরবানের সুয়ালক ইউনিয়নের ২৫ একর জমির রিসিভার নিয়োগ করে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

এদিন দুপুরে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন ও তার নেতৃত্বাধীন টিম সুয়ালক ইউনিয়নে ওই জমি পরিদর্শন করে। পরে আদালতের আদেশ ছাড়া এই সম্পত্তি বিক্রয়/হস্তান্তর/বিনিময় করা যাবে না বলে বিশেষ বিজ্ঞপ্তি জারি করে সাইনবোর্ড স্থাপন করে দেওয়া হয়। 

এ সময় জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, আজ থেকে এই জমির রিসিভার নিয়োগ করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এস এম মঞ্জুরুল হককে আহ্বায়ক করে ৮ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং এই কমিটি এখন থেকে সার্বিক তদারকি করার পাশাপাশি সব আয়-ব্যয়ের হিসাব দুদকের মাধ্যমে আদালতে উপস্থাপন করবে।

এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এস এম মঞ্জুরুল হক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবীবা মীরা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বান্দরবানের উপপরিচালক এম এম শাহনেয়াজ, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অভিজিৎ শীল, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আবদুর রহমানসহ জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন এবং গণমাধ্যমকর্মী ও এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।