![সিরাজগঞ্জের গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং, অতিষ্ঠ জনজীবন](uploads/2024/04/07/1712476914.Sirajganj.jpg)
সিরাজগঞ্জ জেলা শহরে লোডশেডিং কম থাকলেও উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কয়েক দিন ধরে ঘন ঘন লোডশেডিং চলছে। আর এ লোডশেডিংয়ে কারণে গ্রামাঞ্চলের মানুষের জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। ইরি-বোরো মৌসুমে লোডশেডিংয়ের কারণে চলনবিল এলাকায় ধানখেতে সেচ দিতে পাড়ছেন না কৃষকরা।
তা ছাড়াও লোডশেডিংয়ের কারণে ঈদ মৌসুমে তাঁতশিল্প এলাকায় কারখানাগুলোতে ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন। কারখানার মালিকরা ডিজেলচালিত জেনারেটরের সাহায্যে পাওয়ার লুম ও তাঁত কারখানা সচল রাখার চেষ্টা করছেন। রোজার দিনে সাহরি ও ইফতারের সময় বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার মাত্রা অতিরিক্ত হওয়ায় সাধারণ মানুষের চরম ভোগান্তি হচ্ছে। একদিকে রমজান, অন্যদিকে চৈত্রের তীব্র গরমে বিদ্যুতের এমন অবস্থায় তারা হতাশা প্রকাশ করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলার তাড়াশ, রায়গঞ্জ, শাহজাদপুর, বেলকুচি, উল্লাপাড়া ও চৌহালীসহ বিভিন্ন উপজেলার গ্রামগুলোতে পল্লীবিদ্যুতের বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি চলছে দীর্ঘদিন ধরে। বিশেষ করে গত কয়েক দিন ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে প্রচণ্ড গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। দিনে-রাতে এ লোডশেডিং উপজেলা শহরসহ গ্রামঞ্চলের শিশু ও বৃদ্ধ বয়সের মানুষ অসহ্য গরমে যন্ত্রণায় পড়েছেন। মধ্যরাতের লোডশেডিংয়ে শিশুদের কান্নার রোল পড়ে যায়।
বিদ্যুৎ না থাকায় প্রচণ্ড গরমে অনেকেই সর্দি-কাশি, জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। প্রচণ্ড দাবদাহে সারাদিন রোজা রাখার পর তারাবির নামাজের সময় বা রাতে বিদ্যুৎ না থাকায় চরম কষ্ট পোহাতে হচ্ছে মুসল্লিসহ সর্বসাধারণের। দিনে-রাতে কতবার লোডশেডিং হয় তা হয়তো পল্লীবিদ্যুতের বিভিন্ন উপজেলার জোনাল অফিসের কর্তৃপক্ষ জানে না বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা। দেশে বিদ্যুৎ সংকট না থাকলেও সিরাজগঞ্জে ঘন ঘন লোডশেডিং নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
চলনবিল এলাকার কৃষক গোলজার হোসেন বলেন, ‘গত কয়েক দিন ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে ধানেখেতে সেচ দিতে খুবই অসুবিধা হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে দুই ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে, আবার চলে যাচ্ছে। আবার এক ঘণ্টা পর আসছে। ফলে বিদ্যুৎচালিত মোটরে সেচ দিতে চরম অসুবিধা হচ্ছে।’
তাড়াশ উপজেলার আবুল হাসেম জানান, ‘রমজান মাসে লোডশেডিংয়ের কারণে তারাবি, ইফতার ও সাহরিতে রোজাদারদের চরম অসুবিধা হচ্ছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ নজর দেয় না।’
হ্যান্ডলুম অ্যান্ড পাওয়ার লুম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিরাজগঞ্জ জেলার শাখার সভাপতি বদিউজ্জামান মণ্ডল খবরের কাগজকে বলেন, ‘ঈদ মৌসুমে ঘন ঘন লোডশেডিং ও ডিজেলের দাম বাড়ার কারণে অধিকাংশ সময় কারখানায় উৎপাদন বন্ধ থাকছে। শ্রমিকরা ঠিকমতো কাজ করতে পারছেন না। এতে লোকসান গুনতে হচ্ছে তাঁতমালিকদের। লোডশেডিংয়ের কারণে শ্রমিকদের আয়-রোজগারও কমে গেছে। এভাবে লোডশেডিং চলতে থাকলে বেলকুচিসহ বিভিন্ন এলাকার তাঁতকারখানাগুলো চালানো সম্ভব হবে না।’
রায়গঞ্জ ভূইয়াগাতী পল্লীবিদ্যুতের জোনাল কর্মকর্তা ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. সোলাইমান হোসেন খবরের কাগজকে বলেন, ‘মূলত জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে, যার কারণে আমরা গ্রাহকের কাছে যথেষ্ট পরিমাণ বিদ্যুৎ পৌঁছাতে পারছি না। এ জন্য লোডশেডিং হচ্ছে। তবে অল্পদিনের মধ্যে এ পরিস্থিতি কেটে যাবে।’
সিরাজুল শিশির/জোবাইদা/অমিয়/