ঢাকা ২১ আষাঢ় ১৪৩১, শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪

অস্ত্র ফেরত দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আহ্বান বম জনগোষ্ঠীর

প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৪, ১১:৪১ এএম
আপডেট: ১১ জুন ২০২৪, ১১:৪১ এএম
অস্ত্র ফেরত দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আহ্বান বম জনগোষ্ঠীর
মানববন্ধবে অংশ নিয়েছেন বম জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।ছবি: খবরের কাগজ

কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টকে (কেএনএফ) সশস্ত্র সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ করে লুট করা সরকারি ১৪টি অস্ত্র ফেরত দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন রোয়াংছড়ি উপজেলায় বসবাসরত বম জনগোষ্ঠী। 

সোমবার (১০ জুন) সকাল ১০টায় রোয়াংছড়ি বাজারে সর্বস্তরের সাধারণ বম জনগোষ্ঠীর ব্যানারে দুই শতাধিক নারী-পুরুষ  প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছেন। 

এ সময় বক্তারা বলেন, সম্প্রতি বান্দরবানে রোয়াংছড়িতে সেনাবাহিনীর ওপর হামলা, রুমা ও থানচি উপজেলায় কেএনএফের ব্যাংক ডাকাতি, সরকারি অস্ত্র লুট, অপহরণ ও চাঁদাবাজির তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। 

একই সঙ্গে পুলিশ ও আনসার সদস্যে ১৪টি অস্ত্র ও গোলাবারুদ ফেরত দিয়ে কেএনএফ সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আহ্বান জানান তারা। 

রোয়াংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নেইত পুইতিং বম বলেন, পার্বত্য জেলা বান্দরবানে যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কেএনএফ সশস্ত্র সংগঠন কর্তৃক ব্যাংক ডাকাতি, সরকারি অস্ত্র লুট, অপহরণ, চাঁদাবাজি ও সেনাবাহিনীর ওপর হামলাসহ নানা রকম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। সরকার সাধারণ নাগরিকদের জানমাল রাষ্ট্রীয় সম্পদের নিরাপত্তার ও সন্ত্রাস প্রতিরোধ দমনের লক্ষ্যে যৌথ বাহিনী অভিযান পরিচালনা করছে। আমাদের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।

বান্দরবান সরকারি কলেজের ছাত্রী জেনেট বম বলেন, কেএনএফের ক্রমবর্ধমান বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে এলাকায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। কেএনএফের অনৈতিক কার্যকলাপের জন্য সাধারণ মানুষ বিশেষ করে বম জনগোষ্ঠীর মা-বোন, বৃদ্ধ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভুক্তভোগী হতে চাই না। 

আজ বম জনগোষ্ঠীর অধিকাংশ গ্রাম জনশূন্য। শত শত মানুষ দেশান্তরিত হচ্ছে। স্কুল, কলেজ, ভার্সিটির শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা বন্ধ হচ্ছে। স্বাভাবিক গৃহস্থালির কাজ, আর্থসামাজিক, জীবন-জীবিকা নির্বাহের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এলাকায় সাধারণ মানুষ অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এসবের দায়ভার কেএনএফকে নিতে হবে। 

তিনি বলেন, বম জনগোষ্ঠীর প্রধান আয়ের উৎস হচ্ছে ফলদ বাগান ও জুম চাষ। ফলদ বাগান করে শত শত পরিবার জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। ফলমূল বিক্রি করার এই মৌসুমে কেএনএফ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে এলাকায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে ব্যবসায়ীরা বম পাড়ায় আসতে পারছেন না। শত শত একর আম, আনারস বিভিন্ন ফলদ বাগান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘কেএনএফ সংগঠনের প্রতি আমাদের অনুরোধ, যদি সমাজে শান্তি চাও, লুণ্ঠিত সরকারি অস্ত্র ফেরত দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসো। তোমাদের অযৌক্তিক ও অবান্তর দাবি বম জাতির সামাজিক অবক্ষয়, বিশৃঙ্খলা, অর্থনৈতিক ধ্বংস ও এলাকার ক্ষতি ছাড়া কোনো সুফল বয়ে আনবে না।’ 

মানববন্ধনে রোয়াংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নেইত পুইতিং বমের সভাপতিত্বে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন রোয়াংছড়ি উপজেলার ৩৪১নং মৌজার হেডম্যান বয়থাং বম, পারখুম বম প্রমুখ। 

গত ২ ও ৩ এপ্রিল রুমা ও থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতি, ব্যাংক ব্যবস্থাপককে অপহরণ, টাকা লুট ও পুলিশ-আনসার সদস্যদের ১৪টি অস্ত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ব্যাংক ব্যবস্থাপক উদ্ধার হলেও লুট হওয়া অস্ত্র ও টাকা দুই মাসেও উদ্ধার করা যায়নি। সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে।

রিজভী/ইসরত চৈতী/অমিয়/

পাবনায় প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিহত ৫

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৭ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০১:১১ এএম
পাবনায় প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিহত ৫
ছবি : খবরের কাগজ

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এতে দুজন আহত হয়েছেন।  বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) রাত ৯টার দিকে পাবনা-ঈশ্বরদী মহাসড়কের দাশুড়িয়া সুগার মিলের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

নিহতরা হলেন, ঈশ্বরদী উপজেলার আজমপুর গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে জিহাদ (১৪), কবির ওরফে আনোয়ার হোসেনের ছেলে মাইক্রোবাস চালক বিজয় (২৩), ইলিয়াস আলীর ছেলে শিশির (১৪), মাসুম হোসেনের ছেলে সিফাত (১৫), ভাড়ইমারি গ্রামের ওয়াজ উদ্দিনের ছেলে শাওন (১৫)।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঈশ্বরদী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, রাতে ঈশ্বরদী থেকে পাবনার দিকে যাচ্ছিল একটি প্রাইভেট কার। পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটি ও গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলে তিনজন নিহত হয়েছেন‌। আহত চারজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরও দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। 

পার্থ হাসান/সালমান/

দেশব্যাপী ষান্মাসিক পরীক্ষা শুরু, ব্যতিক্রম রাঙামাটি বায়তুশ শরফ মাদ্রাসা!

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১০:১৪ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ১০:১৪ পিএম
দেশব্যাপী ষান্মাসিক পরীক্ষা শুরু, ব্যতিক্রম রাঙামাটি বায়তুশ শরফ মাদ্রাসা!
ছবি : খবরের কাগজ

সারা দেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণিতে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন কার্যক্রম শুরু হয়েছে গতকাল ৩ জুলাই থেকে। মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সময়সূচি ও করণীয় নির্দেশনা ইতোমধ্যেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এই নির্দেশনা মানেনি রাঙামাটি বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া আদর্শ মাদ্রাসা।

এমনকি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মৃদুল কান্তি তালুকদার দুপুরে হলেও পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে আসলে তাতেও কর্ণপাত করেননি প্রতিষ্ঠানটির প্রিন্সিপাল সামশুল আরেফিন। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রথম দিন রুটিনটা একটু মিসিং হয়েছে। শনিবার থেকে পরীক্ষা নেওয়া শুরু করব।’

তবে সরকারি নির্দেশনা না মানার প্রমাণ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন শিক্ষা কর্মকর্তা মৃদুল কান্তি তালুকদার।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান (রুটিন দায়িত্ব) প্রফেসর মো. মশিউজ্জামান স্বাক্ষরিত গত ৩০ জুনের এক চিঠিতে এই নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়েছে, ‘সময় নির্ধারিত’ ও ‘অতীব জরুরি’। এই চিঠি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও এসব অধিদপ্তরের শিক্ষা বিভাগসহ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবদের পাঠানো হয়েছে। সেখানে নির্দেশনাপত্রটি বিভাগগুলোর আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে পাঠাতে বলা হয়েছে।

সরকারি সিদ্ধান্ত আর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশনাকে পাশ কাটিয়ে যথাসময়ে পরীক্ষা শুরু না করার বিষয়ে সামশুল আরেফিন বলেন, ‘আমাদের প্রথম দিন রুটিনটা একটু মিসিং হয়েছে। তবে ওইদিন কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত নয় আরবি পরীক্ষাগুলো নিয়েছি। আমাদের এবতেদায়ি (প্রাথমিক) শাখাও সংযুক্ত। রুটিন করতে সব একসঙ্গেই করেছি। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত আমাদের প্রায় ৯০ জন শিক্ষার্থী আছে।’

নিজের একক সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ায় কোনো সমস্যা তৈরি হবে কি না-জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই সবগুলো পরীক্ষা আমরা শনিবার থেকে একসঙ্গে শুরুর চিন্তা করছি। মাদ্রাসার চারটি বিষয় সরকার যে রুটিন দিছে ওখানে নেই। গতকালের আগ পর্যন্ত সরকারি নির্দেশনা ছিল যে, পরীক্ষার গ্যাপের মধ্যে ক্লাস হবে না। আমরা ভাবছিলাম ওই গ্যাপের মধ্যে পরীক্ষাটা নিয়ে নেব। কিন্তু এখন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হওয়ায় শিডিউল মেনেই পরীক্ষা নেব।’

প্রিন্সিপালের এমন সিদ্ধান্তকে ‘হঠকারী’ বলে মন্তব্য করেছেন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল বাতেন। 

তিনি বলেন, সরকারি সিদ্ধান্তকে না মেনে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মনগড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পরীক্ষা শুরুর বিষয়ে পরিচালনা কমিটির সঙ্গে কোনো আলোচনাও করেননি। কোনো সমস্যা হলে আমরা সমাধানের উদ্যোগ নিতে পারতাম। কিন্তু প্রিন্সিপাল একক সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পরীক্ষার মতো অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কার্যক্রম থেকে পিছিয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মৃদুল কান্তি তালুকদার বলেন, ‘আমি তো গতকাল গিয়েছিলাম। পরীক্ষা হয়েছে। ঘটনা কী? পরীক্ষা হয়নি? তারা সময়মতো পরীক্ষা নেয়নি। তাই নির্দেশনা দিয়েছি, আপনারা এই ভুল করলেন কেন? আমাকে বলেছিল যে, পরে পরীক্ষা হবে। সম্ভবত ১২টা কী ১টায় একটা টাইম দিয়েছিল পরীক্ষা নেওয়ার।’

নির্দেশনা দেওয়ার পরও পরীক্ষা না নেওয়ার বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, ‘ইচ্ছে করলেই তার (প্রিন্সিপাল) মতো পরীক্ষা নিতে পারবেন না। এটা আগে থেকেই শিডিউল করা আছে। টাইমলি নিতে হবে। যদি পরীক্ষা না নিয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জিয়াউর রহমান/সালমান/

ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢল গাইবান্ধায় ৭০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৯:১৫ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৯:১৫ পিএম
গাইবান্ধায় ৭০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ
ছবি: খবরের কাগজ
টানা ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে গাইবান্ধার চার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামগুলো প্লাবিত হচ্ছে। গতকাল বুধবার থেকে ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘটসহ সবগুলো নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি বৃদ্ধির কারণে প্লাবিত হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের স্কুলগুলো। জেলায় বন্যাকবলিত গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটার উপজেলার মোট ৭০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি কয়েকটি স্কুল আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত করা হচ্ছে।
 
গাইবান্ধা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ছুটি শেষে গতকাল বুধবার বিদ্যালয় খোলা হয়েছে। চার উপজেলার চরাঞ্চলে কয়েকটি বিদ্যালয়ের মাঠে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এতে ওই এলাকার বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্যার কারণে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসতে পারছে না। বিদ্যালয় খোলার পর বিদ্যালয়ে কিছু শিক্ষার্থী আসলেও অনেক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আসতে পারেনি। টানা চার দিনের বৃষ্টি আর বন্যার পানি বেড়েই চলছে। জেলার ৭০টি বিদ্যালয় বন্যায় প্লাবিত হওয়ায় পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। এরমধ্যে গাইবান্ধা সদরে ১৭টি, ফুলছড়িতে ২১টি, সাঘাটা ২১টি ও সুন্দরগঞ্জ ১১টি।
 
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, গাইবান্ধা সদর ও ফুলছড়িতে কয়েকটি বিদ্যালয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। ভরতখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে হাঁটু পানি হয়েছে। শ্রেণিকক্ষেও পানি। যাতায়াতের রাস্তার পানির নিচে পড়ে আছে। রাস্তাগুলোতে প্রায় ২ থেকে ৩ ফুট পানি রয়েছে। রাস্তা পানি নিচে থাকায় চলাচল করতে পারছে না লোকজন। ফুলছড়ি উপজেলার চর পেপুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পেপুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কালুরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোর একই অবস্থা। এসব এলাকায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির চরম অভাব দেখা দিয়েছে।
 
এদিকে পানি বৃদ্ধির কারণে নদী তীরবর্তী গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি, মোল্লারচর, গিদারি, ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া, এরেন্ডাবাড়ি, ফজলুপুর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া তারাপুর, হরিপুর, সাঘাটা উপজেলার ফজলুপুর, গজারিয়া ইউনিয়নের অনেক নিম্নাঞ্চল জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।
 
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সূত্র জানায়, বন্যাকবলিত চারটি উপজেলার ২৪টি ইউনিয়নের ১৭ হাজার ৮২০টি পরিবার পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে। জেলায় ১৮১ স্থায়ী ও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। জি আর (প্রাকৃতিক দুযোর্গ) চারশ মেট্রিকটন চাল ও নগদ ১০ লাখ টাকা মজুদ রয়েছে।
 
চর পেপুলিয়া গ্রামের আবদুল্লাহ (৪৫) বলেন, গতকাল থেকে নদীর পানি খুব বাড়ছে। রাতে আমাদের বাড়িঘর প্লাবিত হয়েছে। রান্না করতে পারছি না। খুবই কষ্টে আছি। বাড়ির পাশে স্কুলটিতে পানি ঢুকেছে। বন্যার কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা আসতে পারছে না। 
 
গুপ্তমনি চরের জলিল মিয়া (৫০) বলেন, বন্যার পানি বেড়েই চলছে। বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করছে। বন্যার কারণে অনেক ভোগান্তির মধ্যে আছি। চালডাল সবই আছে,শুধু রান্না করতে পারছি না।  
 
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম জানান, জেলার চার উপজেলার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গতকাল থেকে পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ফলে ৭০টি বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। ১৫টি বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিদ্যালয়ে আগের মতো পাঠদান চালু করা হবে। 
 
গাইবান্ধা পাউবোর নিয়ন্ত্রণকক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলার ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্রে নদের পানি ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখঘাট পয়েন্টে ৫১ সেন্টিমিটার, ঘাঘট নদীর পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ৪৬ সেন্টিমিটার, করতোয়ার পানি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চকরহিমাপুর পয়েন্টে ৫০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে তিস্তার পানি সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সংলগ্ন রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে ২৩ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়েছে। 
 
অপরদিকে গত ২৪ ঘন্টায় ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত এ পরিমাণ পানি বৃদ্ধি ও কমে। 
 
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানিয়েছেন, নদ-নদীর পানি বাড়লেও আপাতত বড় বন্যার সম্ভাবনা নেই। তিনি মুঠোফোনে বলেন, উজানের ঢলে ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদীর পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে তিস্তার পানি কমতে শুরু করেছে।
 
রফিক খন্দকার/এমএ/

চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ত্রুটি পেয়েছে তদন্ত কমিটি

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৮:৩০ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৮:৩০ পিএম
চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ত্রুটি পেয়েছে তদন্ত কমিটি
ছবি : খবরের কাগজ

চট্টগ্রাম নগরের মহিউদ্দিন চৌধুরী এক্সপ্রেসওয়ের কাজের মানে ত্রুটি পেয়েছে তদন্ত কমিটি। 

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে এক্সপ্রেসওয়ে পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিভিন্ন অসংগতির কথা তুলে ধরেন গৃহায়ণ ও গণর্পূত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি কর্তৃক গঠিত উপকমিটির আহ্বায়ক সংসদ সদস্য এম এ লতিফ, মজিবুর রহমান মনজু ও পারভীন জামান। 

লালখান বাজার হতে পতেঙ্গা পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ আলহাজ এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে বাংলাদেশ ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ও চীনের র‌্যাংকিন। এই প্রকল্পের ব্যয় ৪ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা।

তিনি বলেন, ‘এই ওভারপাসের জন্য চার হাজার কোটি টাকা খরচ করল সরকার। চট্টগ্রামের যানজট নিরসন এবং যোগাযোগ সুবিধার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। এই বিপুল টাকা ব্যয়ের পরও কেন শহরের মানুষ বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তা ব্যবহার করতে পারছে না। এত খরচ এবং ব্যাংক সুদ বাড়ছে। এটা কে দেবে? যাদের ভুলত্রুটি হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হবে। পিলারে যে ফাটলের কথা বলা হচ্ছে, তা যাচাই করে দেখার জন্য বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা হবে। প্রতিবেদনগুলো সবার সামনে তুলে ধরা হবে।’ 

এম এ লতিফ আরও বলেন, ‘কনসালটেন্ট ফার্মকে বলেছি তারা কী দেখেছে। তাদের কাজটা কী? যেসব নাট-বোল্ট লাগিয়েছে তা গাড়ি চলাচলের সময় ঝাঁকুনি দেয়। অন্যান্য এক্সপ্রেসওয়েতে আমি দেখেছি এটা হয় না। এটা তারা রেক্টিফাই করবে। কনস্ট্রাকশনে গুরুতর কোনো ত্রুটি বা গাফিলতি বা সিলিন্ডার টেস্ট করেছে কি না, পাইলিং যথাযথ হয়েছে কি না, সবকিছু দেখা হবে। আমাদের তিন মাস সময় দেওয়া হয়েছে। যদি অনিয়ম হয়ে থাকে একেকটার একেক রকম ব্যবস্থা আছে। কারও জেল হবে। কারও জরিমানা হবে। এত বড় একটা সুপারস্ট্রাকচারে অনিয়ম করলে প্রধানমন্ত্রী কাউকে ছাড় দেবেন না।’

বান্দরবানে বেনজীরের জমির নিয়ন্ত্রণ নিল প্রশাসন

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৭:৪৭ পিএম
আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৭:৪৭ পিএম
বান্দরবানে বেনজীরের জমির নিয়ন্ত্রণ নিল প্রশাসন
ছবি : খবরের কাগজ

বান্দরবানে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তি  নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) আদালতের নির্দেশে বান্দরবানের সুয়ালক ইউনিয়নের ২৫ একর জমির রিসিভার নিয়োগ করে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

এদিন দুপুরে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন ও তার নেতৃত্বাধীন টিম সুয়ালক ইউনিয়নে ওই জমি পরিদর্শন করে। পরে আদালতের আদেশ ছাড়া এই সম্পত্তি বিক্রয়/হস্তান্তর/বিনিময় করা যাবে না বলে বিশেষ বিজ্ঞপ্তি জারি করে সাইনবোর্ড স্থাপন করে দেওয়া হয়। 

এ সময় জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, আজ থেকে এই জমির রিসিভার নিয়োগ করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এস এম মঞ্জুরুল হককে আহ্বায়ক করে ৮ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং এই কমিটি এখন থেকে সার্বিক তদারকি করার পাশাপাশি সব আয়-ব্যয়ের হিসাব দুদকের মাধ্যমে আদালতে উপস্থাপন করবে।

এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এস এম মঞ্জুরুল হক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবীবা মীরা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বান্দরবানের উপপরিচালক এম এম শাহনেয়াজ, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অভিজিৎ শীল, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আবদুর রহমানসহ জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন এবং গণমাধ্যমকর্মী ও এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।