ঢাকা ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪

এখনো পানিবন্দি ১৭ লাখ মানুষ

প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৪, ০৮:৫৬ পিএম
আপডেট: ২৩ জুন ২০২৪, ০৯:৫৫ পিএম
এখনো পানিবন্দি ১৭ লাখ মানুষ
ছবি : মামুন হোসেন

ভারী বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও নেত্রকোনায় বন্যা দেখা দিয়েছে। তবে এসব জেলার বন্যাকবলিত এলাকা থেকে ধীরে ধীরে পানি নামতে শুরু করেছে। তার মধ্যে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজারের কোনো কোনো এলাকার মানুষ বসতবাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে। তবে ওই তিন জেলায় এখনো পানিবন্দি রয়েছে ১৭ লাখ মানুষ। 

আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট ব্যুরো ও জেলা প্রতিনিধিরা জানান-

ঢাকা: আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। 

রবিবার (২৩ জুন) নদ-নদীর পরিস্থিতি ও পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানানো হয়। 

এতে বলা হয়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানির স্তর হ্রাস পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কুশিয়ারা ছাড়া দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের উত্তরাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা নদীর পানির স্তর সময়বিশেষে বৃদ্ধি পেতে পারে।

সিলেটে ফেঞ্চুগঞ্জের পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি

সিলেটের প্রায় সব উপজেলাতেই নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। কিন্তু ব্যতিক্রম সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায়। সারা সিলেটে যখন পানি নামছে, তখন ফেঞ্চুগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। এই উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়ে ৫টি ইউনিয়নের ২৫টি গ্রামের হাজারও মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। বাড়িঘর পানিতে ডুবে থাকায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। এদিকে সিলেট জেলায় এখনো পানিবন্দি রয়েছে সাড়ে ৮ লাখ মানুষ। 

রবিবার দুপুরে সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সিলেটে ৮ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৭ জন বন্যাকবলিত। এর মধ্যে মহানগরে ১৫ হাজার মানুষ। বর্তমানে মহানগরের ৮টি ওয়ার্ড জেলার ১০৭টি ইউনিয়নে বন্যার পানি রয়েছে। সিলেটে বর্তমানে আশ্রয়কেন্দ্রে আছে ১৯ হাজার ৭৩৮ জন মানুষ। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। পৌঁছানো হচ্ছে বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধপত্র।

এদিকে একটানা তিন দিন ধরে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় সিলেট মহানগরেরও বিভিন্ন এলাকা থেকে পানি নামছে। তবে নিচু এলাকা এখনো জলাবদ্ধতা রয়েছে। সুরমা নদীর পানি কমলেও নগরীর পানি নামছে ধীরগতিতে। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বসতবাড়িতে ফিরছেন বাসিন্দারা। তবে যারা বাড়ি ফিরেছেন তারা পোহাচ্ছেন নানা ভোগান্তি। বন্যার্তরা জানিয়েছেন, পানি কমার সঙ্গে দুর্ভোগও বাড়ছে।

এদিকে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারা নদীর পাড়ে পূর্ব পিটাইটিকর নয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. লুকুস মিয়া বলেন, ‘ঈদের আগের দিন পানি ওঠে আমাদের বাড়িতে। এখনো পানিবন্দি আছি আমরা। এখন পর্যন্তু কেউ এসে আমাদের কোনো খোঁজ-খবর নেননি। চেয়ারম্যান, মেম্বার, এমপি অনেক হর্তাকর্তা আছেন। কিন্তু আমাদের কেউ একটু সাহায্য করেননি। আমার বাচ্চা-কাচ্চা, গরু-বাছুর নিয়ে অসহায় অবস্থার মধ্যে আছি। পানি যেদিন ঢুকেছে সেদিন ঘরের অর্ধেক মালামাল ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এখন দুয়েকটি কাঁথা-বালিশ আছে। এগুলোতেই পরিবার নিয়ে কোনোভাবে বসবাস করছি।’

মৌলভীবাজারে দুর্ভোগে হাওর পাড়ের বাসিন্দারা

উজানে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মৌলভীবাজার সদরের বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও হাওরাঞ্চলে অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে দুর্ভোগে রয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা। কুশিয়ারা ও জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে মনু ও ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এদিকে বন্যাকবলিত এলাকার প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রে বাড়ছে ভিড়। বন্যায় দুর্ভোগে সবচেয়ে বেশি পড়েছে জুড়ী, বড়লেখা ও কুলাউড়ার মানুষ। জেলার ৭ উপজেলার ৪৯টি ইউনিয়নের ৪৭৪টি গ্রামের প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষ এখনো পানিবন্দি রয়েছে।

রবিবার সকালে জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার হাকালুকি হাওর পাড়ের কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে পরিপূর্ণ হাকালুকির হাওরাঞ্চল। ছোট-বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে হাওরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে।

জেলা প্রশাসক ড. ঊর্মি বিনতে সালাম জানান, জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিংয়ে রয়েছে। পানিবন্দি এলাকার মানুষকে শুকনো খাবার ও চাল দেওয়া হচ্ছে।

সুনামগঞ্জে সব পর্যটন স্পট খুলে দেওয়া হয়েছে

সুনামগঞ্জের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় রবিবার দুপুরে টাঙ্গুয়ার হাওরসহ তাহিরপুরের সব পর্যটন স্পট আবারও খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এখনো পানিবন্দি রয়েছে প্রায় ৫ লাখ মানুষ। 

তাহিরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা পারভীন বলেন, গত কয়েক দিন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় সুনামগঞ্জের সার্বিক বন্য পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তাই আজকে (রবিবার) থেকে আবারও তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সব পর্যটন স্পট খুলে দেওয়া হয়েছে।

নেত্রকোনায় কমেনি মানুষের দুর্ভোগ

নেত্রকোনায় প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি কিছুটা কমেছে। এর ফলে বন্যা প্লাবিত বসতবাড়ি থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে কলমাকান্দা উপজেলার উব্দাখালী নদীর পানি এখনো ৩৯ সেন্টিমিটারের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে গুতুরা বাজার থেকে বড়খাপন সড়ক এখনো অনেকটাই পানির নিচে ডুবে আছে। এই সড়ক দিকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।

জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ জানান, বন্যার্তদের সেবায় ৮৬টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। 

ব্রহ্মপুত্র নদে ভাসছিল দুইজনের মরদেহ

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ০৪:১৯ পিএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ০৪:৫৬ পিএম
ব্রহ্মপুত্র নদে ভাসছিল দুইজনের মরদেহ
ছবি : খবরের কাগজ

গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে ভাসমান অবস্থায় দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (২৮ জুন) উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের গলনার চর ও বাইনকার চর এলাকা থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়। 

নিহত সোনা মিয়া (৫০) ও ফারুক হোসেন (৪৮) একই উপজেলার কাতলামারি ও দক্ষিণ উদখালি গ্রামের বাসিন্দা।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ব্রহ্মপুত্র নদে ভাসমান অবস্থায় মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দুইদিন আগে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন ওই দুই ব্যক্তি। পরে খোজাখুঁজির একপর্যায়ে নদী থেকে মরদেহ উদ্ধারের খবর শুনে স্বজনরা সোনা মিয়া ও ফারুক মিয়ার পরিচয় নিশ্চিত করেন। 

ফুলছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজিফুজ্জামান বসুনিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।’

রফিক খন্দকার/ইসরাত চৈতী/

মাগুরায় পৃথক দুর্ঘটনায় নিহত ২

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ০৪:০৪ পিএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ০৪:৩৯ পিএম
মাগুরায় পৃথক দুর্ঘটনায় নিহত ২
ছবি: খবরের কাগজ

মাগুরায় পৃথক দুর্ঘটনায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। 

শুক্রবার (২৮ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলার দুটি পৃথক স্থানে দুর্ঘটনায় তারা মারা যান।

নিহতদের মধ্যে কাজল (৬০) মাগুরা সদর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কেশবমোড় এলাকার মৃত গোলামের ছেলে। আর আবু ইছা (৬৫) সদর উপজেলার মঘী ইউনিয়নের বুধইর পাড়া এলাকার মোকলেস বিশ্বাসের ছেলে।
 
হাসপাতাল ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কাজল তার বাড়ির একটি আম গাছের ডাল ছাঁটায় করতে গিয়ে নিচে পড়ে যান। এ সময় পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

একই সময় আবু ঈছা বাড়ি তৈরির জন্য ইটবোঝাই নাটা গাড়ি (শ্যালো ইঞ্জিনচালিত এক ধরনের যান) ধাক্কা দিয়ে উঠানোর সময় গাড়িটি পিছনে সরে যায়। এতে নিচে চাপা পড়েন তিনি। পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
 
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেহেদী রাসেল জানান, তাদের মরদেহ আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

কাশেমুর রহমান/পপি/

চাকরির প্রলোভনে ভারতে পতিতালয়ে বিক্রি, ২ নারী গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ০৩:৩৮ পিএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ০৩:৩৮ পিএম
চাকরির প্রলোভনে ভারতে পতিতালয়ে বিক্রি, ২ নারী গ্রেপ্তার
আটক দুই নারী। ছবি: খবরের কাগজ

বিভিন্ন পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে বেশি বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে পাচার করে পতিতালয়ে বিক্রির সঙ্গে জড়িত চক্রের আরও দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

শুক্রবার (২৮ জুন) র‍্যাব ৭-এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. শরীফুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানাধীন জালিয়াপাড়া এলাকার মো. তারেকের স্ত্রী ঝুমু (৩০) ও
বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন বালুচড়া এলাকার বাসিন্দা পারভিন আক্তার (২৫)।

র‍্যাব জানায়, সম্প্রতি সময়ে মানব পাচার চক্রের প্রলোভনে পড়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের পতিতালয়ে বিক্রি হওয়া এক নারী পালিয়ে আসার পর তার লোমহর্ষক বর্ণনায় বেরিয়ে আসে নারী পাচার চক্রের ভয়াবহ সিন্ডিকেটের কথা। ওই নারী গত ২৪ জুন চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানায় ৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৩-৪ জনকে আসামি করে মানব পাচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার পর পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি এবং ছায়াতদন্ত শুরু করে র‍্যাব। একপর্যায়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব জানতে পারে, আসামি ঝুমু ও পারভিন আক্তার চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানাধীন বালুচড়া এলাকার নতুনপাড়া সিএনজি স্টেশনে অবস্থান করছে। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সেখানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। 

র‍্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. শরীফুল আলম খবরের কাগজকে বলেন, ‘এই মামলার আরেক আসামি মো. তারেককে গত ২৪ জুন বায়েজিদ বোস্তামী থানা-পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে আমাদের অভিযানে এ চক্রের আরও দুইজন ধরা পড়ে। তারা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন গার্মেন্টস কারখানার নারী শ্রমিকদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে বেশি বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে পাচার করে আসছিল।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘এই সিন্ডিকেট চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি থেকে শুরু করে যশোরের বেনাপোল পর্যন্ত বিস্তৃত। এই মানব পাচার চক্রে বেশ কিছু দালাল জড়িত। সীমান্ত পারাপার করতে সহায়তা করে লাইনম্যান। আইনি পদক্ষেপ নিতে তাদের বায়েজিদ বোস্তামী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’

তারেক মাহমুদ/ইসরাত চৈতী/ 

কক্সবাজারে আনসার আল ইসলামের ৩ সদস্য আটক

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ০৩:৩৫ পিএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ০৩:৩৫ পিএম
কক্সবাজারে আনসার আল ইসলামের ৩ সদস্য আটক
আটক আনসার আল ইসলাম এর তিন সদস্য

কক্সবাজারের চৌফলদন্ডিতে অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’-এর তিন সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাব।

এ সময় তাদের কাছ থেকে উগ্রবাদী বই, লিফলেট ও বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। 

শুক্রবার (২৮ জুন) দুপুরে র‌্যাব ১৫-এর সদর দপ্তরে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম। 

আটকরা হলেন, জামালপুরের ইসলামপুর এলাকার আব্দুল ওয়াহাবের ছেলে জাকারিয়া মন্ডল (১৯), ভোলার বোরহান উদ্দিনের মো. নুরুল আমিনের ছেলে নিয়ামত উল্লাহ (২১) ও ফেনীর সোনাগাজীর ইদ্রীস আলীর ছেলে মোহাম্মদ ওজায়ের (১৯)।

কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১৫ এবং র‍্যাব-৭ এর যৌথ আভিযাত্রিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কক্সবাজারের চৌফলদন্ডি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’-এর তিন সদস্যকে আটক করতে সক্ষম হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ১০টি উগ্রবাদী বই, ২৯টি লিফলেট ও বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জাম।’ 

আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আটকরা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য। তারা আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আল কায়েদা মতাদর্শের এই জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেয়। র‌্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত অভিযানের ফলে আনসার আল ইসলামের কার্যক্রম প্রায় স্তিমিত হয়ে পড়ে। 

আনসার আল ইসলামের নামে নতুন সদস্য সংগ্রহসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করতে ব্যহত হচ্ছে বিধায় তাদের কার্যক্রমকে চলমান রাখতে আনসার আল ইসলাম মতাদর্শী ‘আস-শাহাদাত’ নামে নতুন একটি জঙ্গি গ্রুপ তৈরি করে নতুন সদস্য সংগ্রহসহ দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকে। এই গ্রুপটি পার্শ্ববর্তী একটি দেশ থেকে পরিচালিত হচ্ছে এবং এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা আনুমানিক ৮৫-১০০ জন। এই গ্রুপটির উদ্ভাবক হচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশের নাগরিক হাবিবুল্লাহ এবং কথিত আমির সালাহউদ্দিন।’

জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি আরও বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ও নেতৃস্থানীয় অনেক সদস্য গ্রেপ্তার হয়। যেহেতু কিছু সংখ্যক সদস্যকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করেছে, তাই এই সংগঠনটিকে তারা পুনরুজ্জীবিত করতে নতুন রিক্রুটিং করছে। 

উঠতি বয়সী কিশোরদের অপব্যাখা দিয়ে সহজে ব্রেন ওয়াশের মাধ্যমে ভূলপথে নেওয়া যায় বিধায় কোমলমতি কিশোরদের তারা প্রথমে টার্গেট করতো। তাই এই সংগঠনের বেশিরভাগ সদস্যই ১৯-২০ বছর বয়সী তরুণ। সাধারণ  লেখাপড়ায় শিক্ষিত উগ্র মনোভাবাপন্ন লোকজনকে আকৃষ্ট করার জন্য দেশ বিরোধিতাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতো।’ 

মুহিববুল্লাহ মুহিব/ইসরাত চৈতী/ 

পণ্যবাহী গাড়ি থেকে চাঁদা আদায়, গ্রেপ্তার ১০

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ০১:৪৮ পিএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ০৪:৩৫ পিএম
পণ্যবাহী গাড়ি থেকে চাঁদা আদায়, গ্রেপ্তার ১০
ছবি: খবরের কাগজ

ময়মনসিংহে বিভিন্ন পণ্যবাহী গাড়ি থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। 

এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৪ হাজার ৬৪০ টাকা, ৩টি রিফ্লেক্টিং বেল্ট, ৩টি লাঠি ও বিপুল পরিমাণ চাঁদা আদয়ের রসিদ উদ্ধার করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৮ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ময়মনসিংহ র‌্যাব-১৪ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুর পৌনে ১২টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত নগরীর চরপাড়া, আকুয়া বাইপাস ও শম্ভুগঞ্জ এলাকায় চাঁদাবাজির সময় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলো- জাহাঙ্গীর ইসলাম (৪০), ফরহাদ হোসেন (৩৫), ইদ্রিস আলী (৩৭), তোফাজ্জল হোসেন (৪১), মিঠুন (২৫), আবু সাঈদ (৩০) ও রুবেল (৩০)।

এ ছাড়া গ্রেপ্তার হয়েছে জেলার তারাকান্দা উপজেলা ডিটুযারী গ্রামের সবুজ (৩৮), ঈশ্বরগঞ্জের দত্তপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম (৩৫) ও গৌরীপুরের নওয়াগাঁও গ্রামের মোহাম্মদ আলমাস (৪০)।

র‌্যাব জানায়, এরা কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে প্রতিদিন ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার ওপর অবস্থান নেয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পণ্যবাহী যানবাহন ময়মনসিংহে প্রবেশের সময় তারা বিভিন্ন সংকেতের মাধ্যমে গাড়ি থামিয়ে চালকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা চাঁদা আদায়ের রসিদও দিয়ে থাকে। চালকরা কখনো তাদের চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে গাড়ি ভাঙচুর, চালক-হেলপারকে মারধরসহ প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ র‌্যাব-১৪ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহিদুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘এই চক্রটি ময়মনসিংহের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতি রাতে পণ্যবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালকদের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করে। তাদের আশ্রয়দাতা, পৃষ্ঠপোষকতাকারী ও মদদদাতাদের তথ্য পাওয়া গেছে। তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।’

কামরুজ্জামান মিন্টু/সাদিয়া নাহার/

কামরুজ্জামান মিন্টু/সাদিয়া নাহার/