![গোপালগঞ্জে রেকর্ড ফলন দিয়েছে বিনা চিনাবাদাম-৬](uploads/2024/06/24/chinabadam-1719210183.jpg)
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত বিনা চিনাবাদাম-৬ একটি উচ্চফলনশীল চিনাবাদামের জাত। এ জাতের চিনাবাদাম হেক্টরে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৯০০ কেজি ফলন দিতে সক্ষম। কিন্তু গোপালগঞ্জে এ বিনা চিনাবাদাম ২ হাজার ৯৫৮ কেজি ফলন দিয়েছে। এটি বিনা চিনাবাদাম-৬ জাতের রেকর্ড পরিমাণ ফলন।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানিকহার গ্রামের কৃষক সাইফুল আলম খান বিনা চিনাবাদাম চাষ করে ২ হাজার ৯৫৮ কেজি ফলন পেয়েছেন।
কৃষক সাইফুল আলম খান বলেন, ‘আমি গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে বীজ ও সার পেয়ে আমার ১৫০ শতাংশ জমিতে বাদামের আবাদ করি। প্রতি শতাংশে আমি এ জাতের বাদাম ১২ কেজি ফলন পেয়েছি। সে হিসাবে এক হেক্টরে এ বাদাম ফলন দিয়েছে ২ হাজার ৯৫৮ কেজি। এটি রেকর্ড ফলন।’
সাইফুল আলম খান আরও বলেন, ‘আমার দেড় একর জমিতে বাদাম আবাদে খরচ হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। এখান থেকে আমি ১ হাজার ৮০০ কেজি বাদাম পেয়েছি। প্রতি কেজি বাদাম ১০০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারব। উৎপাদিত বাদাম ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি হবে। খরচ বাদে লাভ হবে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। ধান ও পাটের তুলনায় বাদামে লাভ অনেক বেশি। বাদামের পর আমি বিনা আমন ধান করব। আমন কেটে স্বল্পজীবনকাল সম্পন্ন বিনা সরিষা চাষ করে আসছি। বিনার শস্য বিন্যাস অনুসরণ করে আমি প্রতিবছর একই জমিতে তিনটি ফসল করতে পারছি। এতে আমার আয় বেড়েছে। আর্থসমাজিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটাতে পেরেছি।’
একই গ্রামের বাদামচাষি প্রহল্লাদ বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের গ্রামে অধিকাংশ কৃষক বাদাম চাষ করেন। আমরা লাভজনক বিনা চিনাবাদ-৬ আবাদ করতে চাই। কিন্তু বিনা আমাদের বীজ দিতে পারে না। তাই এ জাতের বাদামের আবাদ আমরা সম্প্রসারণ করতে পারছি না। বীজ প্রাপ্তি নিশ্চিতের দাবি জানাই।’
গোপালগঞ্জ বিএডিসির উপ-পরিচালক সঞ্জয় কুমার দেবনাথ বলেন, ‘বিনা চিনাবাদাম-৬-এর বীজ বিএডিসি উৎপাদন করে। বাদাম আবাদের আগে কৃষক আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা সরকার নির্ধারিত মূল্যে মানসম্পন্ন বিনা চিনাবাদাম-৬-এর বীজ সরবরাহ করতে পারব। আর এতে বিনা চিনাবাদাম-৬ জাতের চাষাবাদ সম্প্রসারিত হবে। ভালো ফলন পেয়ে কৃষক লাভবান হবেন। দেশে ভোজ্যতেলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।’
বিনা গোপালগঞ্জ উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইনচার্জ ড. মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘বিনা চিনাবাদাম-৬ হেক্টরে ২ হাজার ৯০০ কেজি পর্যন্ত ফলন দিতে পারে। কিন্তু কৃষক সাইফুল এ বাদাম চাষ করে বাড়তি পরিচর্যা করেছেন। তাই তিনি রেকর্ড পরিমাণ ২ হাজার ৯৫৮ কেজি ফলন পেয়েছেন। এ চিনাবাদামের জীবনকাল ১৪০ থেকে ১৫০ দিন। বাদামের ভেতরের দানা পুষ্ট। তাই তেলের পরিমাণ ৪৮ শতাংশ। এ বাদাম আবাদ করে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। এ বাদামের বদৌলতে কৃষক একই জমিতে বছরে তিনটি ফসল করতে পারেন। এ বাদামের চাষ সম্প্রসারণ করতে পারলে দেশে ভোজ্যতেলের আমদানি হ্রাস ও তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।’ সূত্র: বাসস