![পারিশ্রমিক হিসেবে কোরবানির গোশত দেওয়া যাবে?](uploads/2024/06/11/beef-1718097304.jpg)
কোরবানি মুসলমানদের ধর্মীয় সংস্কৃতি। সামর্থ্যবানদের ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘অতএব আপনি আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি করুন।’ (সুরা কাউসার, আয়াত: ২)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি করল না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের কাছেও না আসে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩১২৩)
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনায় ১০ বছর অবস্থানকালে প্রতিবছরই কোরবানি করতেন।’ (তিরমিজি, হাদিস: ১৫০৭)
কোরবানি করতে হয় আল্লাহর জন্য। আল্লাহকে খুশি করার জন্য। আল্লাহতে পূর্ণাঙ্গ সমর্পণের দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য। কোরবানির মাধ্যমে ত্যাগের এক অনন্য উদাহরণ ফুটে ওঠে। কোরবানিতে গোশত খাওয়া কিংবা লোক দেখানোর নিয়ত করা যাবে না। এগুলো করলে কোরবানি হবে না। আল্লাহ বলেন, ‘কোরবানির গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না; বরং কোরবানির মধ্য দিয়ে তোমাদের তাকওয়া-পরহেজগারী বা আল্লাহভীতিই তাঁর কাছে পৌঁছায়।’ (সুরা হজ, আয়াত: ৩৯)
কোরবানির পশু জবাই বা কোরবানির পশুর গোশত ছাড়িয়ে এর বিনিময় বা পারিশ্রমিক নেওয়া জায়েজ আছে। তবে কোরবানির পশুর কোনো অংশ, অর্থাৎ পশুর গোশত, চর্বি বা অন্য কোনো অংশ পারিশ্রমিক হিসেবে নেওয়া বা দেওয়া জায়েজ হবে না। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া ৪/৪৫৪; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩২)
কোরবানির পশুর যেকোনো অংশ—গোশত, চর্বি, হাড্ডি ইত্যাদি বিক্রি করা জায়েজ নয়। তবে বিক্রি করলে সেই অর্থ নিজের কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না। পূর্ণ মূল্য সদকা করে দিতে হবে। (বাদায়েউস সানায়ে: ৫/৮১)
আলি ইবনে আবি তালিব (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে তাঁর (কোরবানির উটের) আনুষঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করতে বলেছিলেন। তিনি কোরবানির পশুর গোশত, চামড়া ও আচ্ছাদনের কাপড় সদকা করতে আদেশ করেন এবং এর কোনো অংশ কসাইকে দিতে নিষেধ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা তাকে (তার পারিশ্রমিক) নিজের পক্ষ থেকে দেব।’ (বুখারি, ১/২৩২)
লেখক: আলেম ও সাংবাদিক