![কোরবানির গোশত বণ্টনরীতি](uploads/2024/06/13/14-02-1718259560.jpg)
ঈদুল আজহার দিন প্রথমে কোরবানির গোশত দিয়ে খাবার শুরু করা সুন্নত। এ সুন্নত শুধু ১০ জিলহজের জন্য; ১১ বা ১২ তারিখে গোশত দিয়ে খাওয়া শুরু করা সুন্নত নয়। (তিরমিজি, ১/১২০)
হাদিসে এসেছে, কোরবানির স্থানে গিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজ হাতে ৬৩টি পশু কোরবানি করলেন। এরপর যা অবশিষ্ট থাকল, তা আলি (রা.)-কে দিলেন এবং তিনি তা কোরবানি করলেন। তিনি নিজে তাকে কোরবানির পশুতে শরিক করলেন। পরে তিনি প্রত্যেক পশুর কিছু অংশ নিয়ে একটি হাঁড়িতে রান্নার নির্দেশ দিলেন। গোশত রান্না হলে তারা দুজনই তা থেকে খেলেন এবং ঝোল পান করলেন। (মুসলিম, ২৮১৫)
কোরবানির গোশত বণ্টনের নিয়ম
কোরবানির গোশতের এক-তৃতীয়াংশ গরিব-মিসকিনকে, এক-তৃতীয়াংশ আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীকে দেওয়া উত্তম। তবে যদি এমন হয় যে, সঠিকভাবে বণ্টন করলে নিজ পরিবারের কষ্ট হবে, তবে পুরো গোশত নিজে রেখে দিলেও অসুবিধা নেই। (বাদায়েউস সানায়ে, ৪/২২৪, ফতোয়ায়ে আলমগিরি, ৫/৩০০)
উল্লেখ্য, শরিকে কোরবানিতে ওজন করে গোশত বণ্টন করতে হবে; অনুমান করে ভাগ করা জায়েজ নয়। (আদ-দুররুল মুখতার,৬/৩১৭, ফতোয়ায়ে কাজিখান, ৩/৩৫১)। বণ্টনের ক্ষেত্রে কাঁচা গোশত বা রান্না করা গোশতের মাঝে কোনো পার্থক্য নেই। (আল কাফি, ১/৪২৪)
কোরবানির গোশতের সামাজিক বণ্টন
অনেক এলাকায় প্রত্যেক কোরবানিদাতা নিজ কোরবানির গোশতের এক-তৃতীয়াংশ (যা ফকির-মিসকিনদের মাঝে বণ্টন করা মুস্তাহাব) ব্যক্তিগতভাবে বণ্টন না করে সামাজিকভাবে বণ্টন করার উদ্দেশ্যে স্বেচ্ছায় সমাজে জমা দেন। এটা জায়েজ আছে। সমাজে জমা দেওয়া গোশতের বণ্টন থেকে কোরবানিদাতা কোনো ভাগ গ্রহণ করতে পারবেন না। তা শুধু গরিব-মিসকিনদের প্রাপ্য। (বাদায়েউস সানায়ে, ৮/১৩৩)
অমুসলিমদের কোরবানির গোশত দেওয়া
কোরবানির গোশত ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের দেওয়া জায়েজ। (ইলাউস সুনান, ৭/২৮৩)
পারিশ্রমিক হিসেবে গোশত দেওয়া
জবাইকারী, কসাই বা কোরবানির কাজে সহযোগিতাকারীকে গোশত বা কোরবানির পশুর কোনো কিছু পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া যাবে না। (আদ-দুররুল মুখতার, ৬/৩২৮)
আলি (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে তাঁর কোরবানির উটের আনুষঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করতে নির্দেশ দিলেন। তিনি কোরবানির পশুর গোশত, চামড়া ও আচ্ছাদনের কাপড় সদকা করতে আদেশ করেন এবং এর কোনো অংশ কসাইকে দিতে নিষেধ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা তাকে (তার পারিশ্রমিক) নিজেদের পক্ষ থেকে (আলাদাভাবে) দেব।’ (মুসলিম, ১৩১৭)
লেখক: খতিব, বঙ্গভবন জামে মসজিদ