![লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাত ময়দান](uploads/2024/06/15/holly hajjkk-1718463261.jpg)
‘লাব্বাইক আল্লাহুমা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে শনিবার মুখরিত ছিল ঐতিহাসিক আরাফাত ময়দান। সেখানে সমবেত হয় বিশ্বের ১৬০ দেশের ১৫ লাখের বেশি ধর্মপ্রাণ মুসলমান। মক্কা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ৪ বর্গমাইল আয়তনের এই আরাফাত ময়দান। এখানে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সেলাইবিহীন দুই খণ্ড সাদা কাপড় পরে হাজির ছিলেন হজযাত্রীরা। এ সময় আরাফাত ময়দানে হাজীযাত্রীরা তাসবিহ পাঠ, কোরআন তিলাওয়াত, দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে গুনাহ মাফের প্রার্থনা করেন। খবর বাসসের।
ইসলামী রীতি অনুযায়ী, জিলহজ মাসের নবম দিনটি আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে ইবাদতে কাটানোই হলো হজ। শ্বেতশুভ্র পোশাকে আবৃত লাখ লাখ হজযাত্রী আরাফাত ময়দানের জাবালে রহমতের পাদদেশ ও মসজিদে নামিরার আশপাশে অবস্থান নিয়ে জীবনের পরম কাঙ্ক্ষিত হজ পালন করেন। জান্নাত থেকে বিতাড়িত মানবজাতির পিতা হজরত আদম (আ.) ও মাতা হজরত হাওয়া (আ.) পৃথিবীতে দীর্ঘদিন একাকী ঘুরতে ঘুরতে এ আরাফাতের ময়দানে এসেই মিলিত হন। এই ময়দানে ‘রব্বানা জালামনা আনফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফির লানা লানাকুন্না মিনাল খসিরিন’- এ দোয়া পড়ার পর আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দেন। ১৪০০ বছরেরও আগে বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (স.) এখানেই বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। এ কারণে আরাফাতে উপস্থিত না হলে হজের আনুষ্ঠানিকতা পূর্ণাঙ্গ হয় না। এখানে হজযাত্রীরা ফজর ছাড়াও এক আজান ও দুই ইকামতে জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করেন।
শুক্রবার রাতেই অধিকাংশ হজযাত্রীকে মোয়াল্লিমরা গাড়িতে করে নিয়ে আসেন আরাফাতে নির্ধারিত তাদের তাঁবুতে। তবে অনেকে শনিবার সকালে আসেন। তারা সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করেন।
আরাফায় অবস্থিত মসজিদে নামিরা থেকে হজের মূল খুতবা দেন মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়খ মাহের বিন হামাদ আল-মুআইকিলি।
মক্কা ও মদিনার পবিত্র দুই মসজিদের তত্ত্বাবধানকারী জেনারেল প্রেসিডেন্সি বিভাগ জানায়, এ বছর আরাফার ময়দান থেকে প্রচারিত হজের খুতবার অনুবাদ প্রচারিত হয় বিশ্বের ৫০টি ভাষায়। এবারে হজের খুতবার বাংলা অনুবাদের দায়িত্বে ছিলেন সৌদি আরবে অধ্যয়নরত বাংলাদেশের চার শিক্ষার্থী ড. খলীলুর রহমান, আ ফ ম ওয়াহিদুর রহমান মাক্কী, মুবিনুর রহমান ফারুক ও নাজমুস সাকিব। গত বছরও তারা এ দায়িত্বে ছিলেন।
সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে মাগরিব না আদায় করেই মুজদালিফার উদ্দেশে আরাফাত ময়দান ছাড়েন হজযাত্রীরা। সেখানে যাওয়া মাত্র মাগরিব ও এশা এক আজানে, দুই ইকামতে আদায় করেন। এরপর মুজদালিফায় উন্মুক্ত আকাশের নিচে মাথা খোলা অবস্থায় রাত্রি যাপন করেন হজযাত্রীরা। আজ রবিবার তারা মুজদালিফার মিনায় প্রতীকী ‘শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের' জন্য নুড়ি সংগ্রহ করবেন। এ জন্য পুরো মুযদালিফাজুড়ে বিশেষ ধরনের ছোট ছোট পাথর ছড়িয়ে রাখা হয়।
প্রতিবছরের মতো এবারও হজের দিন ভোরে কাবা আচ্ছাদিত করা হয় নতুন চাদরে।
প্রসঙ্গত, গত বছর সৌদি আরবে ১৮ লক্ষাধিক লোক হজ পালন করেন। যাদের প্রায় ৯০ শতাংশ বিদেশী।