অনুশীলনে ফ্রান্সের অলিভার জিরুদ ও ক্রিশ্চিয়ানে রোনালদো
১৯৭৮ থেকে ২০১৫, দীর্ঘ এই সময়ে টানা ১০ ম্যাচে ফ্রান্সের কাছে হেরেছিল পর্তুগাল। সেই খরা পর্তুগাল কাটায় ২০১৬ সালে, ইউরোর ফাইনালে (১-০)। ফরাসিদের হারিয়ে রোনালদোরা জেতে পরম আরাধ্যের প্রথম ইউরো শিরোপা। এরপর দুই দল মুখোমুখি হয়েছে ইউরোর সবশেষ আসরে। গ্রুপ পর্বের সেই লড়াইটি ছিল অমীমাংসিত (২-২)। সেই লড়াইয়ের চার বছর পর ফ্রান্স ও পর্তুগাল আবার মুখোমুখি। এবার কোয়ার্টার ফাইনালের মঞ্চ। সেমিতে যাওয়ার লড়াইয়ে আজ হামবুর্গে মুখোমুখি দুই সাবেক চ্যাম্পিয়ন। ফ্রান্সের সামনে ২০১৬ ফাইনাল হারের শোধ তোলার উপলক্ষ। পর্তুগালের চোখ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর প্রথম সেমিতে পা রাখা। হামবুর্গে কী হবে শুক্রবার (৫ জুলাই) , ফরাসিদের বদলা নাকি পর্তুগিজদের পুনরাবৃত্তি?
লড়াইটা শুক্রবার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো বনাম কিলিয়ান এমবাপ্পেরও। যদিও সময়ের দুই তারকা ফুটবলার এখনো নামের সুবিচার করতে পারেনি। এমবাপ্পে পেনাল্টি থেকে একটি গোল পেলেও রোনালদোর হিসেবটা শূন্য। দুই ঘুমন্ত দৈত্য আজ জেগে উঠতে চাইবে প্রাণপণ, তা অনুমেয়।
হেড টু হেড কিংবা সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স- সব দিক থেকেই এগিয়ে থাকছে ফ্রান্স। ২৮ বারের মোকাবিলায় ফ্রান্সের জয় ১৯টি। সেখানে পর্তুগালের জয় ৬টি। ড্র হয়েছে তিন ম্যাচ। ২০১৬ ইউরো ফাইনালে ফ্রান্সকে হারানোর পর আর জয় পায়নি পর্তুগাল। তিনবারের দেখায় হার দুটি, ড্র একটি।
ইউরো ফুটবলে ফ্রান্স দুবারের চ্যাম্পিয়ন (১৯৮৪ ও ২০০০)। ২০১৬-তে ফাইনালে উঠলেও শিরোপা থেকেছে অস্পর্শ। গত আসরে দলটি বিদায় নেয় শেষ ষোলো থেকে। এবার কতদূর যাবে ফ্রান্স, তা সময়ই বলে দেবে। যদিও চলতি টুর্নামেন্টে ফ্রান্স অজেয়। কিন্তু নামের সঙ্গে পারফরম্যান্সের ব্যাপক তফাত দলটির। গ্রুপ পর্বে এক জয় ও দুই ড্রয়ের পর শেষ ষোলোয় বেলজিয়ামকে দিদিয়ে দেশমের দল হারায় ১-০ গোলে। গোলটি ছিল প্রতিপক্ষের আত্মঘাতী।
অন্যদিকে পর্তুগাল শেষ দুই ম্যাচে গোলহীন, শেষ ষোলোর বৈতরণী দলটি পার হয়েছে টাইব্রেকারে স্লোভেনিয়াকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে। যেখানে পেনাল্টি মিসের পর কেঁদেছিলেন রোনালদো। গোলরক্ষক দিয়েগো কস্তার অবিশ্বাস্য বীরত্বে শেষ আটে নাম লেখায় পর্তুগিজরা।
তারপরও ফ্রান্সের বিপক্ষে লড়তে প্রস্তুত পর্তুগাল। দলটির হেড কোচ রবার্তো মার্তিনেজ বলেন, ‘আমাদের পূর্ণ মনোযোগ কোয়ার্টারের ম্যাচে এবং প্রস্তুত ফ্রান্সের জন্য। তারা খুব শক্তিশালী, তবে সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে মরিয়া আমরা।’ অন্যদিকে ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশমের চোখ সেমিতে।
তিনি বলেন, ‘এখনো আমরা নিজেদের সেরাটা দিতে পারিনি। অথচ দল হিসেবে আমাদের আরও ভালো কিছু করা উচিত। সবাই ক্ষুধার্ত সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য।’
ইউরোর চলতি আসরে সবচেয়ে বেশি শট নিয়েছেন রোনালদো (২০টি)। কম যাননি এমবাপ্পেও (১৫টি)। কিন্তু চেষ্টার সমান্তরালে মেলেনি ফল। এবার হামবুর্গের লড়াইয়ে ফরাসি দুর্গের পতন ঘটাতে পর্তুগাল তাকিয়ে থাকবে রোনালদোর দিকে। ফরাসিরা সওয়ার হতে চাইবে এমবাপ্পের কাঁধে। শেষ হাসি কে হাসবেন, তা সময়ই বলে দেবে।