ঢাকা ১৯ আশ্বিন ১৪৩১, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪

মানবাধিকার দিবসে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চক্রান্ত হচ্ছে : তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:০৬ পিএম
আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৩:১৮ পিএম
মানবাধিকার দিবসে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চক্রান্ত হচ্ছে : তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছবি : খবরের কাগজ

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মানবাধিকার একটি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। মানবাধিকারের কথা বলে কোনো কোনো দেশকে দমন করে রাখার চেষ্টা করা হয়। দেশে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, অথচ বিবৃতিজীবীরা হারিয়ে গেছেন। বিশ্ব মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে দেশে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চক্রান্ত হচ্ছে। 

শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) অনুষ্ঠাটির আয়োজন করে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, কোনো কোনো সন্ত্রাসীর মানবাধিকার নিয়েও সোচ্চার হয়। কিন্তু সেই সন্ত্রাসী যে এত মানুষ মারল, সেটি নিয়ে কোনো কথাবার্তা নেই। পৃথিবীতে কিছু মানবাধিকার সংগঠন আছে, যেগুলো মূলত মানবাধিকারের ব্যবসা করে। কিছু সংগঠন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন জায়গায় মানবাধিকারের কথা বলে। কিন্তু ফিলিস্তিনে পাখি শিকার করার মতো মানুষ শিকার করা হচ্ছে, ১০ হাজারের বেশি নারী ও শিশুকে হত্যা করা হলো, কিন্তু এটি নিয়ে বড় বড় সংগঠনে কোনো বিবৃতি নেই। অথচ তারা বরিশালে একজন আরেকজনকে ঘুষি মারল এবং কোথায় কিছু মানুষ একজনকে ধাওয়া করল সে জন্য বিবৃতি দিল। আমি কথাগুলো বলছি, কারণ ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে ১৯৭৫ সালে, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বেই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ এবং সেটিকে আইনে পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ করা। দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে ১৯৭৭ সালে, নির্বিচারে সেনা অফিসার ও বিমানবাহিনীর অফিসারদের বিনা বিচারে হত্যা করা। একজনের নামের সঙ্গে আরেকজনের মিল আছে। তারপর ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা। ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে মানুষ পোড়ানোর মহোৎসব। এগুলো চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা। 

তিনি বলেন, কিছু বিবৃতিজীবী আছেন, বিবৃতি দেওয়ায় তাদের পেশা। বাংলাদেশেও কিছু বিবৃতিজীবী আছেন। ইদানীং অবশ্য তাদের দেখা যাচ্ছে না, বিবৃতিজীবীরা বেশির ভাগ হারিয়ে গেছেন। দেশে যেভাবে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, সব সময় যারা এ ধরনের বিবৃতি দেন, তাদের বিবৃতি এখন দেখতে পাচ্ছি না। এই বিবৃতিজীবীরা কই? জনগণ এদের খুঁজছেন, আমিও তাদের খুঁজছি। আমি একটু উদ্বিগ্ন তাদের জন্য। তারা জ্বর কিংবা ডেঙ্গুতে আক্রন্ত হলেন কি না, তা নিয়ে মানুষ চিন্তায় আছেন। 

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনে হামলা চালিয়ে একই হাসপাতালে একসঙ্গে ৫০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আরেকটি হাসপাতালে হামলা চালিয়ে হাসপাতালকে অকেজো করে দেওয়ার পর সেখানে আইসিইউতে থাকা সব মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন। এই ধরনের চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন বিশ্ববেনিয়ারা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেছেন। আবার ইসরাইলি বাহিনী যাতে ভালোমতো বোমা বর্ষণ করতে পারে সে জন্য সহায়তাও করছে। 

তিনি বলেন, ‘বিশ্ব প্রেক্ষাপটে এই মানবাধিকার লঙ্ঘন। এতে আমরা চুপ থাকতে পারি না। আমি প্রথম থেকেই এটার বিরুদ্ধে সোচ্চার আছি এবং থাকব। আমাদের সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীও আছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে গিয়ে এটার বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছেন। আরব রাষ্ট্রগুলোর সব রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বসে এই ব্যাপারে করণীয় নির্ধারণ করার জন্য তাদের অনুরোধ জানিয়েছেন।’ 

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, কেউ হরতাল-অবরোধের ডাক দিতে পারে, সরকার পতনের ডাক দিতে পারে, সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখতে পারে, এটিই গণতান্ত্রিক ও বহুমাত্রিক সমাজের রীতি। কিন্তু ঘরে বসে সেই ডাক দিয়ে গাড়ির মধ্যে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করা, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা, সেটি তো কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নয়। এগুলো একদিকে যেমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, অপরদিকে মানুষের অধিকার এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন করা। আমি আশা করব, সাংবাদিকরা এগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলবেন, কলম ধরবেন। 

চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলামের সঞ্চালনায় ও সভাপতি তপন চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি মোহাম্মদ শহীদুল আলম, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আলী আব্বাস, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য কলিম সরওয়ার, সিইউজের সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম, সিনিয়র সহসভাপতি রুবেল খান, সহসভাপতি অনিন্দ্য টিটু, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক প্রমুখ। 

এমএ/

ট্রাক-ইজিবাইক সংঘর্ষে জামায়াতের নেতাসহ নিহত ৩

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:০৫ পিএম
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৫৭ পিএম
ট্রাক-ইজিবাইক সংঘর্ষে জামায়াতের নেতাসহ নিহত ৩
দুর্ঘটনাকবলিত ইজিবাইক। ছবি: খবরের কাগজ

জামালপুরে ট্রাক ও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ইজিবাইকের চালক ও উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নেতাসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। 

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকালে শহরের টিউবওয়েলপাড় মোড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

নিহতরা হলেন- মেলান্দহ উপজেলার ঝাউগড়ার কাপশহাটিয়া এলাকার জয়নাল হোসেনের ছেলে ইজিবাইকচালক রোকন মাহমুদ (৪৫), ইজিবাইকের যাত্রী একই ইউনিয়নের শেখসাদী এলাকার আব্দুস সোবাহানের ছেলে আব্দুল মালেক (৫৩) এবং জামালপুর সদর উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়নের নয়াপাড়া এলাকার মৃত আব্দুস সোবাহানের ছেলে ও সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও বেলটিয়া কামিল মাদ্রাসার শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান (৫৫)।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জামালপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া কালিবাড়ী এলাকা থেকে একটি ইজিবাইকে তিনজন যাত্রী জামালপুর শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। ইজিবাইকটি শহরের টিউবওয়েলপাড় মোড় এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ইজিবাইকের চালক রোকন মাহমুদ নিহত হন। খবর পেয়ে আহত তিন যাত্রীকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে আব্দুল মালেককে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। 

এদিকে আহত মোস্তাফিজুর রহমান ও নাদের মিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে রেফার্ড করা হয়। 

পরে ময়মনসিংহে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মোস্তাফিজুর রহমানকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর যাত্রী নাদের মিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।   

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সাল মো. আতিক বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বাকি দুজন হাসপাতালে মারা গেছেন। তাদের মরদেহ আনার কাজ চলছে। চালক ট্রাক নিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় আটক করা যায়নি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’ 

আসিফ/পপি/

মিরসরাইয়ে রূপসী ঝরনায় ২ পর্যটক নিখোঁজ

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০২:০০ পিএম
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০২:০৭ পিএম
মিরসরাইয়ে রূপসী ঝরনায় ২ পর্যটক নিখোঁজ
মিরসরাইয়ে রূপসী ঝরনা

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে রূপসী ঝরনার কূপে দুই পর্যটক নিখোঁজ হয়েছেন। 

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকালে নিখোঁজের এ খবর পাওয়া যায়। 

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের স্টেশন অফিসার ইমাম হোসেন পাটোয়ারী খবরের কাগজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, সকালে ঝরনা এলাকায় কয়েকজন পর্যটক ঘুরতে যান। ঝরনার কূপে দুই পর্যটক নিখোঁজ হন। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে যান।
ইমাম হোসেন পাটোয়ারী বলেন, ঝরনায় দুজন পর্যটক নিখোঁজের খবরে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে এখনো তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

মেহরাজ/পপি/

মমেক হাসপাতাল টাকা ছাড়া মেলে না সেবা

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২৫ এএম
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২৬ এএম
টাকা ছাড়া মেলে না সেবা
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে সেবাপ্রত্যাশীরা। ইনসেটে রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে এক নারী কর্মচারী (অ্যাপ্রোন পরা) টাকা নিচ্ছেন। ছবি: খবরের কাগজ

এক হাজার শয্যার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে প্রতিদিন তিনগুণেরও বেশি রোগী ভর্তি থাকে। এর বাইরে আউটডোরে প্রতিদিন চিকিৎসা নেন আরও তিন থেকে চার হাজার রোগী। অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালটিতে রোগী ও তাদের স্বজনদের সেবা পেতে সরকার নির্ধারিত ফির চেয়েও অতিরিক্ত টাকা গুনতে হয়। অন্যথায় সেবা পাওয়া যায় না।

ভুক্তভোগীরা জানান, হাসপাতালে রোগী আনার পর ট্রলিতে উঠানো থেকেই শুরু হয় হয়রানি ও অনিয়ম। টাকা না দিলে ট্রলি পাওয়া যায় না। বেড পাওয়াসহ সব ক্ষেত্রে আয়া, ওয়ার্ডবয়, ক্লিনারসহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের টাকা দিতে হয়। এ ছাড়া আউটডোরে লম্বা লাইন থাকলেও বাড়তি টাকা গুনলেই তাৎক্ষণিক টিকিট পাওয়া যায়। ১০ টাকার এই টিকিটের জন্য দিতে হয় কমপক্ষে ১০০ টাকা।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ৩৭টি ওয়ার্ডের বিপরীতে প্রতিদিন তিন শিফটে ৪১০ জন চিকিৎসক এবং এক হাজার ৭২ জন নার্স দায়িত্ব পালন করেন। বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছয় জেলা ছাড়াও সুনামগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, নরসিংদী এবং গাজীপুরের রোগীরা এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন।

রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের সামনে অনিয়ম হলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। টাকা না দিলে কর্মচারীদের কাছ থেকে সেবা না পাওয়ার অভিযোগ দেওয়া হলেও সংশ্লিষ্টরা আমলে নেন না। অসাধু কর্মচারীদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠলেও কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় না। ফলে সব ধরনের অনিয়ম এখানে নিয়মে পরিণত হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ওয়ার্ডগুলোর মেঝে এবং বারান্দাতে বহু রোগীকে ঠাসাঠাসি করে থাকতে হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন বৃদ্ধ নারী-পুরুষসহ শিশুরা।
 
হাসপাতালের আউটডোরেও একই অবস্থা। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটতে হচ্ছে। তবে অনেকে লাইন ছাড়াই টিকিট নিতে অসাধু কর্মচারীদের কাছে যান। তাদেরকে নির্ধারিত মূল্যের অন্তত দশগুণ বেশি অর্থ দিয়ে টিকিট নিয়ে চিকিৎসকের কক্ষে যাচ্ছেন। এ ছাড়াও হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময়ও রোগীদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে দেখা গেছে। দালাল ধরে গেলে সিরিয়াল ছাড়াই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাসহ দ্রুত রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে।

মো. মনির নামে সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর এলাকার এক তরুণ খবরের কাগজকে বলেন, ‘সম্প্রতি হঠাৎ ঘাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়। এক সপ্তাহ পার হওয়ার পরও ভালো না হওয়ায় বড় ভাইকে নিয়ে হাসপাতালের আউটডোরে যাই। লম্বা লাইন দেখতে পেয়ে এক কর্মচারীকে সরকার নির্ধারিত ১০ টাকার পরিবর্তে ১০০ টাকা দিয়ে লাইন ছাড়াই টিকিট কেটে ডাক্তার দেখাই।’ 

বাড়তি টাকা দেওয়া ঠিক হলো কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অনেকে অসাধু কর্মচারী কিংবা দালালদের সঙ্গে আস্তে আস্তে কথা বলে বাড়তি টাকা দিয়ে সুবিধা নেন। তাই আমিও দিয়েছি।’

আকাশ নামে আরেকজন বলেন, ‘কিছুদিন আমার মাকে কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি করেছিলাম। ওই ওয়ার্ডে রনি ও এমদাদ নামে দুই কর্মচারীকে টাকা দিয়ে খুশি রাখতে হয়। টাকা না দিলে ভেতরে গিয়ে মাকে দেখতে দেওয়া হয় না। এমতাবস্থায় বাধ্য হয়ে টাকা দিতে হয়েছে। মায়ের ছুটি হওয়ার পর হাসপাতালের উপপরিচালকসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে জানানো হলে তদন্তে প্রমাণ মিললে চাকরিচ্যুত করা হবে জানানো হয়। কিন্তু পরে আর তদন্তও করা হয়নি, চাকরিচ্যুতও করা হয়নি। ফলে তাদের মতো অসাধু কর্মচারীরা রোগীদের যথাযথ সেবা না দিয়ে নিজেদের পকেট ভারী করতে ব্যস্ত থাকে।’

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ময়মনসিংহ মহানগরের সভাপতি আলী ইউসুফ খবরের কাগজকে বলেন, ‘ট্রলিতে রোগী আনা-নেওয়া, সিট পাওয়া, লাইনে না দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ এবং বিভিন্ন টেস্ট দ্রুততম সময়ের মধ্যে করার ক্ষেত্রে রোগীদের অতিরিক্ত টাকা দিতে হচ্ছে। হাসপাতালের অসাধু কর্মচারীরা এই অনৈতিক কাজে জড়িত। বাড়তি সুবিধা আদায়ের আশায় রোগী ও তাদের স্বজনদের ইচ্ছাও দুর্নীতিকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উচিত, রোগীদের ভোগান্তি কমানোর দিকে মনোযোগী হওয়া।’

রোগীদের যথাযথ চিকিৎসাসেবা দিতে চিকিৎসকদের চেষ্টার কমতি নেই উল্লেখ করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। রোগী ও তাদের স্বজনদেরও সচেতন হওয়া দরকার।

যশোরে বিজ্ঞান উৎসব রেলে অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু রোধের কৌশল দেখাল শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫৩ এএম
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫৩ এএম
রেলে অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু রোধের কৌশল দেখাল শিক্ষার্থীরা
যশোর জিলা স্কুলে বিজ্ঞান উৎসব। ছবি: খবরের কাগজ

যশোর জিলা স্কুলে ‘জ্যোতির্বিজ্ঞানী রাধা গোবিন্দ চন্দ্র স্মারক বিজ্ঞান উৎসব’-এ মেতে ওঠে খুদে বিজ্ঞানপ্রেমীরা। তারা ডিজিটাল সিটি, রেললাইনে অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু রোধ, ফায়ার ফাইটিং রোবটসহ ১৫টি প্রজেক্ট উপস্থাপন করে।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের সহযোগিতায় দিনব্যাপী এ উৎসবের আয়োজন করে জেসিবি বিজ্ঞান ক্লাব।

এতে যশোর কালেক্টরেট স্কুলের একদল শিক্ষার্থী প্রদর্শন করে, রেললাইনে অসাবধানতায় কাটা পড়ে মৃত্যু ও অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় প্রাণহানি রোধের কৌশল। তারা লেজার ও সেন্সর প্রযুক্তি ব্যবহার করে দর্শনার্থীদের দেখিয়েছে, কীভাবে রেললাইনে অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু রোধ করা যায়।

এর আগে মেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে বিজ্ঞান উৎসবের উদ্বোধন করেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস। বিজ্ঞান উৎসবে জেলার ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী প্রজেক্ট প্রদর্শন করে। এ ছাড়া  উৎসবে দেয়াল পত্রিকা, অলিম্পিয়াড, আইকিউ টেস্ট, বিজ্ঞানভিত্তিক কুইজ ও বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেয় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী।  

এদিকে বিজ্ঞান উৎসবে যশোর জিলা স্কুলের সম্মিলিত প্রজেক্ট ছিল ‘ডিজিটাল সিটি’। দলের সদস্যরা জানায়, ‘সিটি থাকবে সিসিটিভির আওতায়, আগুন লাগলে সংকেত দেবে ‘ফায়ার এলার্ম’। থাকবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও লাইব্রেরি। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় থাকবে ডিসপ্লে বোর্ড। সেখানে খেলা, খবরসহ যেকোনো তথ্য সহজেই দেখা যাবে। 

যশোর জিলা স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাবরিক রহমান বলে, ‘আমাদের ক্লাসের কয়েক বন্ধু মিলে উদ্ভাবন করেছি ‘ফায়ার ফাইটিং রোবট’। যেসব জায়গায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পৌঁছাতে পারেন না, সেখানে এ রোবট দ্রুত এবং নিরাপদে অগ্নিকাণ্ড স্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ করবে।’

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, ‘তরুণ সমাজের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে অপার সম্ভাবনা। আমাদের ছেলেমেয়েরা মেধা ও দক্ষতায় অন্য জাতির চেয়ে কোনো অংশেই পিছিয়ে নেই। সঠিক দিক-নির্দেশনা ও পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারলে বিজ্ঞান চিন্তায় উজ্জীবিত এই প্রজন্ম দেশকে নিয়ে যাবে অনন্য উচ্চতায়। ভবিষ্যতে এই খুদে বিজ্ঞানীদের মধ্য থেকেই উদ্ভাবক বেরিয়ে আসবে।’ 

তিনি ক্ষোভের সঙ্গে আরও বলেন, ‘জ্যোতির্বিজ্ঞানী রাধা গোবিন্দ চন্দ্র যশোরের মানুষ। কিন্তু এই প্রজন্মের কেউই তাকে চিনে না। এমনকি তার বাড়িটাও দখল হয়ে আছে। বাড়িটি দখলমুক্ত করে সেখানে বিজ্ঞান জাদুঘর করার দাবি জানাচ্ছি।’ 

জেসিবি ক্লাবের সভাপতি সাজিন আহম্মেদ জয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যবিপ্রবির পেট্টোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. আমিনুর রহমান, যশোর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক শোয়াইব হোসেনসহ আরও অনেকে।

ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস মহাসড়কের পাশে ময়লার ভাগাড়

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪২ এএম
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১১ এএম
মহাসড়কের পাশে ময়লার ভাগাড়
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের কেরানিহাট বাজারের পাশে ময়লার ভাগাড়। ছবি: খবরের কাগজ

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার কেরানিহাট গরুর বাজার। এর পাশ দিয়ে চলে গেছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক। স্থানীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই বাজারের পাশেই দীর্ঘদিন ধরে উন্মুক্ত স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়। জায়গাটি এখন রীতিমতো ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। সেখান থেকে ছড়ানো দুর্গন্ধে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, পথচারী ও অফিসগামী মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। মাঝে মধ্যে গাড়ির চাপ বাড়লে এ পথে যানজটের সৃষ্টি হয়। তখন গাড়িতে থাকা চালক, স্টাফ ও যাত্রীরা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন। স্থানীয়রা বলছেন, দিন যত যাচ্ছে, ভাগাড়ের আকার তত বড় হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্দিষ্ট করে কেউ এখন পর্যন্ত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, কেরানিহাট গরু বাজারসংলগ্ন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পশ্চিম পাশে বিশাল অংশজুড়ে বিভিন্ন ধরনের ময়লা-আবর্জনা, খাবার হোটেলের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কয়েক বছর ধরে হোটেল-রেস্টুরেস্ট মালিকদের পাশাপাশি মৌসুমি ফল ব্যবসায়ীরাও সেখানে বিভিন্ন বর্জ্য ফেলছেন। এ কাজে পিছিয়ে নেই অন্য ব্যবসায়ীরাও।

এ মহাসড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে আমাদের এ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ময়লার স্তূপের পাশেই মহাসড়ক। যানজট সৃষ্টি হলে পচা বর্জ্যের দুর্গন্ধে ভোগান্তি আরও বেড়ে যায়।’ 

পথচারী জসিম উদ্দিন, জালাল আহমদ, মো. নাছিরসহ অনেকের ভাষ্য, এ মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করলে বা আশপাশের এলাকায় বসবাস করলে দুর্গন্ধে টেকা যায় না। বিশেষ করে মুরগি ও মাছের নাড়িভুঁড়ির দুর্গন্ধে মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়ে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ নাক-মুখে রুমাল চেপে যাতায়াত করেন। 

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক আবদুর রহিম বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই ময়লা-আবর্জনাসহ বৃষ্টির পানি কৃষিজমিতে গিয়ে পড়ে। এত কিছুর পরও সমস্যাটি সমাধানে কেউ এগিয়ে আসছেন না।

জনার কেঁওচিয়া আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফুর রহমান জানায়, এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন তাকে নাকে রুমাল ও টিস্যু চেপে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে হয়। দিনদিন ময়লার স্তূপটির পরিধি বড় হচ্ছে। শিগগিরই এ স্তূপ না সরালে এ পথ দিয়ে যাতায়াত করা তার জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।

সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কে এম আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ময়লা-আবর্জনা বৃষ্টির পানিতে মিশে আশপাশের জমি ও ডোবায় পড়ছে। এ পানির মাধ্যমে পানিবাহিত ও ভাইরাসজনিত বিভিন্ন ধরনের রোগ ছড়াতে পারে। এ ছাড়া চর্মরোগ হওয়ার ঝুঁকি তো আছেই। তাই যত দ্রুত সম্ভব ময়লার ভাগাড়টি সরিয়ে ফেলা উচিত।’

চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মঈনুদ্দিন ফয়সাল খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে কেউ এখন পর্যন্ত অভিযোগ করেননি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে জায়গাটি পরিদর্শন করব। এরপর ময়লার ভাগাড়টি সরিয়ে ফেলতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেব।’

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস বলেন, সুনির্দিষ্ট করে কেউ এ বিষয়ে আমার কাছে অভিযোগ করেননি। কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ময়লা-আবর্জনা ফেলার অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।