ঢাকা ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪

এমপি আনারের মৃত্যুর খবরে কালীগঞ্জে মাতম

প্রকাশ: ২২ মে ২০২৪, ০৮:৩২ পিএম
আপডেট: ২২ মে ২০২৪, ০৮:৩২ পিএম
এমপি আনারের মৃত্যুর খবরে কালীগঞ্জে মাতম
ছবি : খবরের কাগজ

‘আমার মেয়েজামাই তো কারও ক্ষতি করেনি। তাকে কেন মেরে ফেলা হলো। আমরা এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। আমার সোনার জামাই এভাবে চলে গেল। তার টাকা-পয়সা সবকিছু নিয়ে যেত, কিন্তু তাকে ফিরিয়ে দিত। কেন এভাবে মেরে ফেলল।’

বুধবার (২২ মে) দুপুরে ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল আজিম আনারের বাসভবনের সামনে বিলাপ করতে করতে কথাগুলো বলছিলেন তার শাশুড়ি কালীগঞ্জ পৌরসভার সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর বিনা খাতুন।

পাশেই এমপি আনারের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সিঁড়িতে বসে বিলাপ করছিলেন এমপি আনারের এক সহযোগী রুবেল হোসেন। তিনি বলেন, ‘ভারত যাওয়ার আগে তার সঙ্গে আমার শেষ কথা হয়। এ সময় সে বলেছিল, গরিব মানুষের চেকগুলো তুলে রাখ। আমি ফিরে এসে চেকগুলো সব একসঙ্গে বিতরণ করব। সে চলে গেল, এখন এভাবে কে গরিব মানুষকে নিয়ে ভাববে। কে আর এভাবে কথা বলবে।’

আনারের আত্মীয়স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষী, প্রতিবেশীরা ছাড়াও স্থানীয় আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বুধবার তার বাসভবনে জড়ো হন। তাদের কান্নায় আশপাশের এলাকা ভারী হয়ে ওঠে।

এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের তদন্তপূর্বক শাস্তির দাবি করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু বলেন, ‘এমন নির্মম হত্যাকাণ্ড নেতা-কর্মীরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না।’ দোষীদের তদন্তপূর্বক শাস্তি দাবি করেন তিনি।

কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব হোসেন বলেন, ‘আমরা তার মতো একজন নেতাকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি। আমরা কিছুতেই তার এমন মৃত্যু মানতে পারছি না। তার মতো একজন রাজনীতিবিদকে হারিয়ে কালীগঞ্জবাসীর অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।’

নড়াইলে বজ্রপাতে ৩ রাখালের মৃত্যু

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ১২:১৫ পিএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ১২:১৫ পিএম
নড়াইলে বজ্রপাতে ৩ রাখালের মৃত্যু
ছবি : খবরের কাগজ

নড়াইলে বজ্রপাতে তিন রাখালের মৃত্যু হয়েছেন। এ সময় আরও একজন আহত হয়েছেন।

রবিবার (৩০ জুন) মধ্যরাতে উপজেলার কলোড়া ইউনিয়নের রামনগরচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

নিহতরা হলেন- যশোরের মনিরামপুর উপজেলার কাজীয়াড়া গ্রামের রতন মণ্ডল (৫৫), খুলনার নিজগ্রাম এলাকার মিল্টন রায় ও সাতক্ষীরার তালা উপজেলার কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের নন্দ ঢালি (৫০)।

আহত চিত্ত মণ্ডল একই এলাকার বাসিন্দা। তারা সবাই মাঠে শুকর চরাতেন। 

জানা যায়, প্রায় ২৫ দিন আগে বাড়ি থেকে শুকর চরাতে বের হয়েছিলেন তারা। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে তিন দিন আগে সদর উপজেলার রামনগরচর বিলে এসেছিলেন। রবিবার মধ্যরাতে বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে চারজনের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়। অন্যজন গুরুতর আহত হয়ে ঘটনাস্থলেই পড়েছিল।

সোমবার (১ জুলাই) সকালে স্থানীয়রা মাঠে যাওয়ার সময় তাদের দেখতে পেয়ে আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠায়।

কলোড়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য প্রদীপ কুমার বিশ্বাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সকালে স্থানীয়রা জানায় রাতে বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এতে একজন আহত হয়। তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নড়াইল সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাজেদুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, লাশগুলো উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আইনি প্রকৃয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্থান্তর করা হবে।

শরিফুল ইসলাম/অমিয়/

লালমনিরহাটে এইচএসসি পরীক্ষা দিতে পারেনি ১৬ জন

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ১০:৪২ এএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ১১:১৯ এএম
লালমনিরহাটে এইচএসসি পরীক্ষা দিতে পারেনি ১৬ জন
ছবি : খবরের কাগজ

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে কলেজ কর্তৃপক্ষের ভুলে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) কারিগরি (বিএম শাখা) পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি ১৬ জন পরীক্ষার্থী। 

রবিবার (৩০ জুন) কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের শিয়ালখোওয়া সূর্যমুখী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের ১৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিতে পারেনি।

জানা গেছে, সূর্যমুখী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজ থেকে প্রতি বছরের মতো এ বছরও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশে যথা সময়ে পরীক্ষার্থীরা ফরম পুরণ করেন। পরে ওই পরীক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশপত্রের জন্য গেলে কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, পরীক্ষাকেন্দ্রে ১৬ জনের প্রবেশপত্র পৌঁছে দেওয়া হবে। পরে পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রে গিয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো সহায়তা বা প্রবেশপত্র পায়নি। ফলে পরীক্ষা দিতে না পেরে হতাশা নিয়ে ফিরে গেছে এই ১৬ পরীক্ষার্থী। 

প্রতিষ্ঠানটির পরীক্ষার্থী বিপুল চন্দ্র ও আবু হাসান লিমন জানায়, কলেজ কর্তৃপক্ষ কেন্দ্রে প্রবেশপত্র পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল। সেই আশায় কেন্দ্রে গিয়েও পরীক্ষা দিতে পারেনি তারা। কর্তৃপক্ষের অবহেলায় হারিয়ে গেলো শিক্ষাজীবনের একটি বছর। এর সঠিক বিচার দাবি করে তারা। 

পরীক্ষার্থীর অভিভাবক বাবুল বলেন, সন্তানদের জীবন নিয়ে যারা ছিনিমিনি খেলে এমন শিক্ষক বা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া উচিত। তাদের অবহেলায় ১৬ জন পরীক্ষার্থীর জীবন থেকে হারিয়ে গেলো একটি বছর। তিনিও ন্যায় বিচার দাবি করেন।

ওই কলেজের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক সুকুমার বলেন, ১৬ জন পরীক্ষার্থীর ফরম পুরণ করা হয়েছিল। অনলাইন জঠিলতায় তাদের প্রবেশপত্র পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে ঢাকায় কয়েক দফায় গিয়েও কোনো কাজ হয়নি। 

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহির ইমাম বলেন, আমি মোবাইল ফোনে সংবাদ পেয়েছি। দ্রুত তদন্ত কমিটি করে রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমআই বকুল/জোবাইদা/অমিয়/

যশোরে বাবা-মা হত্যায় ছেলে, ভাবী হত্যায় দেবরের ফাঁসি

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ১০:১৯ এএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৪ এএম
যশোরে বাবা-মা হত্যায় ছেলে, ভাবী হত্যায় দেবরের ফাঁসি

যশোরে বাবা-মাকে হত্যার দায়ে ছেলে ও ভাবীকে হত্যায় দেবরের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন বিচারক।

রবিবার (৩০ জুন) অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (৭ম) আদালতের বিচারক জুয়েল অধিকারী অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (৪র্থ) আদালতের বিচারক সুরাইয়া সাহাব এ আদেশ দেন। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, যশোরের চৌগাছা উপজেলার মহির-আনোয়ারা দম্পতি হত্যা মামলায় ছেলে মিলন উদ্দিনকে (৩২) মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ। 

আদালতের পেশকার শাহরিয়ার আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ হত্যা মামলা সূত্রে জানা যায়, আসামি মিলন উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির লোক। সে তার বাবা-মার কাছ থেকে টাকা নিয়ে সারাদিন ঘুরে বেড়াতো। তাকে কাজকর্ম করার কথা বললেও সে শুনতো না। ২০১৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি তার বাবা মহির উদ্দীনের (৬২) কাছে হাত খরচের জন্য দুই হাজার টাকা চায়। টাকা না দেওয়ায় মিলন ঘরে থাকা ধারালো গাছি দাঁ দিয়ে বাবাকে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় তার মা আনোয়ারা বেগম (৫৫) ঠেকাতে গেলে মিলন তাকেও কুপিয়ে জখম করে। এক পর্যায়ে মহির ও আনোয়ারা ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ ঘটনায় মিলনের বিরুদ্ধে চৌগাছা থানায় হত্যা মামলা করেন তার ভাই হুমায়ুন কবির।

আদালতে সাক্ষ্য প্রমাণে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক মিলনকে মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন। রায় ঘোষণা শেষে বিচারক আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এদিকে বাঘারপাড়া উপজেলার গৃহবধু জিনিয়া ইয়াসমিন তুলি হত্যা মামলায় তার দেবর বিমান বাহিনীর সাবেক কর্পোরাল প্রভোস্ট মোহাম্মদ শাহবুদ্দিনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলার অপর দুই আসামি স্বামী জুলফিকার আলী ও শাশুড়ি ফরিদা বেগমকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। ঘটনা নিশ্চিত করছেন এপিপি আসাদুজ্জান আসাদ।

আসামি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন বাঘারপাড়া উপজেলার পান্তাপাড়া গ্রামের মৃত মোশারফের ছেলে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৩ এপ্রিল স্বামী জুলফিকার আলীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন তুলি। এ সময় দেবর শাহাবুদ্দিন তার ঘরে প্রবেশ করলে শাশুড়ি ফরিদা তার ঘরের দরজা আটকে দেয়। এরপর শাহবুদ্দিন ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে তুলিকে কুপিয়ে জখম করে। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে শাহাবুদ্দিন ও তার মা পালিয়ে যায়। প্রতিবেশীরা তুলিকে উদ্ধার করে প্রথমে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করে। পরে সিএমএইচ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে পরের দিন দুই সন্তানের মা তুলি মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের বাবা ঝিকরগাছা উপজেলার মোবারকপুর গ্রামের শহিদুল বাদী হয়ে মামলা করেন। তদন্ত শেষে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রফিকুল ইসলাম হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে তুলির দেবর, শাশুড়ি ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন। 

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তুলির স্বামী জুলফিকার আলীর দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়কে কেন্দ্র করে পারিবারিক কলহের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে। এ হত্যায় তার স্বামীর প্রত্যক্ষ মদদ ছিল।
 
আদালত শাহাবুদ্দিনকে ফাঁসি ও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে মামলার অপর দুই আসামি স্বামী জুলফিকার আলী ও শাশুড়ি ফরিদা বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন। পাশাপাশি দণ্ডিত আসামি পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছেন। 

এদিকে এ রায়ে পরিপূর্ণ সন্তুষ্ট নন মামলার বাদীপক্ষ। নিহত তুলির ভাই নূর আলম জানান, তুলির স্বামী জুলফিকার আলীও সরাসরি এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত। চার্জশিটে বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। ফলে ওই দুই আসামির শাস্তি নিশ্চিত করতে উচ্চ আদালতে যাবেন তারা।

এইচ আর তুহিন/জোবাইদা/অমিয়/

ঠাঁই হয়নি শ্মশ্মানে, ২ শিশুকে বস্তায় ভরে ভাসিয়ে দেওয়া হলো নদীতে

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ১০:০০ এএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ১০:০১ এএম
ঠাঁই হয়নি শ্মশ্মানে, ২ শিশুকে বস্তায় ভরে ভাসিয়ে দেওয়া হলো নদীতে
হবিগঞ্জ

কথায় বলে, মানব ধর্মই মহাধর্ম। কিন্তু এ যেন অমানবিকতার শেষ পর্যায়। শেষকৃত্যের জন্য একটু মাটি জুটলো না পানিতে ডুবে মারা যাওয়া দুই শিশুর জন্য। গ্রাম্য মাতব্বরদের বাধায় শ্মশ্মানে সমাধি দিতে না পেরে বস্তায় ভরে ভাসিয়ে দেওয়া হলো নদীতে।

এমন অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বদলপুর ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামে।

গেল শনিবার ফুটবল খেলা শেষে পুকুরে গোসল করতে নেমে মারা যায় ওই গ্রামের দুই শিশু প্রলয় দাস (৭) ও সুর্য দাস (৬)। সনাতন ধর্মের রীতি অনুযায়ী মরদেহ দাহ করা হয়। তবে শিশুদের বেলায় তা দাহ না করে সমাধি দেওয়ার রীতি রয়েছে।

রবিবার (৩০ জুন) দুপুরে শিশু প্রলয় দাসের মরদেহ শ্মশ্মানে সমাধি দেয় তার পরিবার। বিষয়টি গ্রামের মাতব্বররা জানার পর শিশুটির বাবা গোবিন্দ দাসকে ডেকে এনে শ্মশ্মানে মরদেহ না রাখার নির্দেশ দেয়। একইসঙ্গে সমাধি দেওয়া মরদেহ তুলে পানিতে ফেলে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। সন্তানের মরদেহ শ্মশ্মানে রাখতে বাবার শত অনুরোধ আর পায়ে ধরে কান্নাও মন গলাতে পারেনি মাতব্বরদের।

এক পর্যায়ে মাতব্বরদের চাপের মুখে সন্তানের মরদেহ সমাধি থেকে তুলতে বাধ্য হন হতভাগা বাবা। পরে বস্তাবন্দি করে ফেলে দেওয়া হয় কালনী নদীতে।

প্রলয়ের এমন পরিণতি দেখে অপর শিশু সূর্য দাসের পরিবারও তার মরদেহ বস্তাবন্দি করে নদীতে ফেলে দেয়।

শিশু প্রলয় দাসের বাবা গোবিন্দ দাস বলেন,  ‘বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে আমি আমার ছেলেকে পাহাড়পুর মহাশশ্মানের দেয়াল সংলগ্ন মাটিতে সমাধি দিই। কিন্তু গ্রাম পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক দিপেশ দাস ও কোষাধ্যক্ষ অসিত সরকারসহ পঞ্চায়েতের লোকেরা আমাকে ডেকে লাশ তুলে নদীতে ভাসিয়ে দিতে বলেন৷ আমি লাশ না তোলার জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষসহ উপস্থিত সবার  হাতে পায়ে ধরে কান্নাকাটি করলেও তারা আমার কথা শুনেননি। অবশেষে পঞ্চায়েত কমিটির চাপে বাধ্য হয়ে সন্ধ্যায় আমি ছেলের লাশ তুলে নদীতে ভাসিয়ে দিই।’

অপর শিশুর বাবা রুবেল দাস বলেন, ‘শশ্মানে গোবিন্দ দাসের ছেলের লাশ সমাধিতে বাঁধার বিষয়টি জানার পর বাধ্য হয়ে আমার ছেলে সূর্যের লাশ বস্তায় ভরে নদীতে ফেলে দিয়েছি।’

গ্রাম পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক দিপেশ সরকার বলেন, ‘এটি আমার একার সিদ্ধান্ত না। গ্রাম কমিটির সবার সিদ্ধান্ত ছিল।’

পঞ্চায়েতের কোষাধ্যক্ষ অসিত সরকার বলেন, ‘গ্রামের কমিটির সিদ্ধান্ত হলো শশ্মানের পরিবেশ পরিষ্কার রাখার জন্য পাশে কোনো সমাধি করা যাবে না। এই সিদ্ধান্ত এলাকার সবার জন্য সমান।’

বদলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুসেনজিৎ চৌধুরীর বলেন, ‘বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। ঘটনাটি অমানবিক৷ শ্মশ্মানতো মানুষের সৎকারের জন্যই। এখানে সমাধিত করা হলে শ্মশ্মানের পরিচ্ছন্নতার বিষয় কেন আসবে?’

আজমিরীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ডালিম আহমেদ বলেন, ‘এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখছি। অভিযোগ পেলে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কাজল সরকার/অমিয়/

কুড়িগ্রামের বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বাবা ছেলেসহ ৩ জনের মৃত্যু

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪৫ এএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪৫ এএম
কুড়িগ্রামের বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বাবা ছেলেসহ ৩ জনের মৃত্যু

কুড়িগ্রামের দুই উপজেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বাবা ছেলেসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

রবিবার (৩০ জুন) সন্ধ্যায় পৃথক দুটি ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের অর্জুনলাল মসজিদ এলাকার আবু তাহের (৫৫) ও তার ছেলে রাসেল মিয়া (১৮) বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা যান।

অন্যদিকে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়াল ডাঙা ইউনিয়নের খিতাবখাঁ পূর্বটারী গ্রামের মৃত বাবর আলী ছেলে আবুল কালাম আজাদ বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা যান।

পরিবার ও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে দলদলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী জানান, সন্ধ্যায় বৈদ্যুতিক সংযোগ বোডের কাজ করার সময় ছেলে রাসেল মিয়া বির্দ্যুৎস্পৃষ্ট হন। এ সময় তাকে বাঁচাতে এগিয়ে যান বাবা আবু তাহের। পরে বাবা ছেলে দুজনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। 

উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মর্তুজা বলেন, খবর পেয়ে থানা থেকে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তারা তথ্য সংগ্রহ করছে। এ ঘটনায় আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে রাজারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান জানান, বিকেলে বাড়িতে ব্যাটারীচালিত অটোরিক্সায় চার্জ দেওয়ার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আহত হয় আবুল কালাম আজাদ। তাকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

গোলাম মওলা/জোবাইদা/অমিয়/