![ডলারসংকট : এপেক্সের মুনাফায় প্রভাব](uploads/2023/11/20/1700469785.Apex-Footwear.jpg)
দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান এপেক্স ফুটওয়্যার। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসা নিম্নমুখী। ফলে দেশে এবং বিদেশে পণ্যের বিক্রয় কমছে কোম্পানির। অর্থনৈতিক মন্দা এবং ডলার সংকটের কারণে কোম্পানির মুনাফায় প্রভাব পড়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে দেশের শীর্ষস্থানীয় জুতা তৈরির ব্র্যান্ড এপেক্স ফুটওয়্যারের আয় ১৭ শতাংশ কমেছে। একই সঙ্গে নিট মুনাফা হ্রাস হয়েছে ২৯ শতাংশ। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটি রাজস্ব কমেছে ৩৫১ কোটি টাকা। একই সঙ্গে নিট মুনাফা কমেছে কমে ২ কোটি ২৩ লাখ টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। প্রথম প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৭২ পয়সা, যা এক বছর আগে ছিল ২ টাকা ৪৩ পয়সা।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার। ইপিএস বৃদ্ধি বা হ্রাসে ওই কোম্পানির শেয়ারের দামেরও হেরফের হয়। সাধারণভাবে ইপিএস বাড়লে শেয়ারের দাম বাড়ে। আর ইপিএস কমলে শেয়ারের দামও কমে যায়। এটি সাধারণ প্রবণতা। তবে সব সময় যে শেয়ারবাজারে শেয়ারের দামের ক্ষেত্রে এ ধরনের প্রবণতা দেখা যায়, তা নয়।
কোনো কোম্পানি নির্ধারিত সময়ে সব ধরনের খরচ বাদ দেওয়ার পর যে মুনাফা করে, সেই মুনাফাকে ওই কোম্পানির মোট শেয়ারসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে ইপিএস বের করা হয়। দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো প্রতি তিন মাস পর পর তাদের ইপিএসের তথ্য প্রকাশ করে। বছরকে চার ভাগে ভাগ করে প্রতি তিন মাসে এক প্রান্তিক হিসাবে বিবেচনা করা হয়। পুঁজিবাজারে কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রতি প্রান্তিক শেষে ইপিএস তথা লাভ-লোকসানের হিসাব প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক।
কোম্পানির আয়-ব্যয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে এপেক্স ফুটওয়্যারের কোম্পানি সচিব মো. ওমর ফারুক খবরের কাগজকে বলেন, আগের অর্থবছরের তুলনায় রপ্তানি আয় কমেছে। রপ্তানির সঙ্গে আয় কমে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানের সার্বিক ব্যবসার ওপর প্রভাব পড়েছে। মো. ওমর ফারুক বলেন, স্থানীয় বাজারে তাদের বিক্রির ধারাবাহিকতা ব্যাহত হয়েছে। একই সঙ্গে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ক্রমবর্ধমান কাঁচামাল আমদানি খরচ বেড়েছে। এ কারণে তাদের উৎপাদন খরচ ব্যাপক বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। এতে তাদের পণ্যের দাম কমাতে বাধ্য হচ্ছেন।
গত অথর্বছরে কোম্পানির আয় বেড়ে ছিল ১ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকা। এতে মুনাফা হয়েছিল ১৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
প্রতিষ্ঠানটির রপ্তানি আয় ছিল ৭১৩ কোটি টাকা। রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ছিল ৩৫ শতাংশ। এদিকে স্থানীয় বাজারে বিক্রয় হয়েছিল ৯৩৯ কোটি টাকা। এখানে প্রবৃদ্ধি ছিল ২২ শতাংশ।
২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য এপেক্স ফুটওয়্যার বিনিয়োগকারীদের ৩৫ শতাংশ নগদ এবং ১০ শতাংশ স্টকসহ ৪৫ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল।
১৯৯০ সালে ব্যবসা শুরু করা এ কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৯৩ সালে। বর্তমানে এটি ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানি হিসেবে ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা, যা ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ১ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার শেয়ারে বিভক্ত। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯৭ সালে দেশি ভোক্তাদের চাহিদা পূরণ করতে খুচরা চেইন শুরু করে।