ঢাকা ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪

সাতক্ষীরায় দাবদাহে মরছে ঘেরের চিংড়ি

প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৪, ০১:২৮ পিএম
আপডেট: ০৬ মে ২০২৪, ০১:২৯ পিএম
সাতক্ষীরায় দাবদাহে মরছে ঘেরের চিংড়ি
প্রচণ্ড দাবদাহ ও ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে বাগদা চিংড়ি। উৎপাদন মৌসুমের শুরুতে চিংড়ি চাষে এমন ক্ষতির মুখে সাতক্ষীরার চাষিরা। ছবি : খবরের কাগজ

সাদা স্বর্ণের রাজধানীখ্যাত সাতক্ষীরায় চিংড়ি উৎপাদন মৌসুমের শুরুতে প্রচণ্ড দাবদাহ ও ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আশঙ্কাজনক হারে মারা যাচ্ছে বাগদা চিংড়ি। উৎপাদন মৌসুমের শুরুতে চিংড়ি চাষে এমন ক্ষতির মুখে পড়েছেন জেলার অধিকাংশ চাষি।

জেলা মৎস্য বিভাগ বলছে, ভাইরাসের পাশাপাশি প্রচণ্ড দাবদাহ, পর্যাপ্ত পানির অভাব, অতিরিক্ত লবণাক্ততা, জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানাবিধ কারণে ঘেরের বাগদা চিংড়ি মরছে। তার ওপর চাষিরা মৎস্য বিভাগের পরামর্শ গ্রহণ না করায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে দাবি মৎস্য বিভাগের।

জেলা মৎস্য অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, সাতক্ষীরায় ছোট-বড় মিলিয়ে ৫৯ হাজার লবণ-পানির ঘের রয়েছে। যার আয়তন প্রায় ৮০ হাজার হেক্টর। আর জেলার মোট উৎপাদিত চিংড়ির ৯০ শতাংশ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয় এবং বাকি ১০ শতাংশ দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে সরবরাহ হয়। তবে এ বছর প্রায় ঘেরের বাগদা চিংড়ি মরে যাচ্ছে। এতে জেলার চাষিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

স্থানীয় মৎস্য চাষিরা বলছেন, বিগত বছরগুলোর তুলনায় চলতি বছর তাপমাত্রা অনেক বেশি। এপ্রিল থেকে গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে পুড়ছে জেলা। হয়নি কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি। ফলে লবণ-পানির ঘেরগুলোতে লবণাক্ততা বেড়েছে। এতে দুই সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন ঘেরের চিংড়িতে মড়ক লেগেছে। চাষিরা নতুন করে আর চিংড়ির পোনা ছাড়ছেন না। সবার মাঝে একটা আতঙ্ক বিরাজ করছে।

জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অনাবৃষ্টি আর প্রখর রোদে মাছের ঘের আর ছোট-বড় জলাশয়গুলোতে পানি কমে গেছে। অত্যধিক তাপে পানি উত্তপ্ত হয়ে ও লবণাক্ততা বৃদ্ধি পেয়ে মারা যাচ্ছে চিংড়ি মাছ। শ্যামনগর উপজেলার গুমানতলী এলাকার চিংড়ি চাষি ইব্রাহিম খলিল জানান, ২০১২ সাল থেকে তিনি বাগদা চিংড়ির চাষ করেন। এবারও ১০ বিঘা লবণ-পানির ঘেরে ৪৫ হাজার বাগদার পোনা ছেড়েছেন। এখন প্রতিটি বাগদার ওজন ৪০ গ্রাম করে হয়েছে। কিন্তু তীব্র এই গরমে বাগদায় মড়ক লেগে সব মারা যাচ্ছে। তার ভাষায়, মৎস্যঘেরে পর্যাপ্ত পানি রয়েছে। নিয়মিত পরিচর্যার কোনো ত্রুটিও রাখেননি। কিন্তু তীব্র দাবদাহের কারণে কোনো হিসাব-নিকাশ মিলছে না।

একই এলাকার রাজু আহম্মেদ বলেন, ‘চলতি মৌসুমে ২০০ বিঘা জমিতে চিংড়ি চাষ করেছি। প্রথম কোটার অবমুক্ত করা বাগদা মাছ মরে গেছে। এতে আমার ৩ লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।’ প্রচণ্ড গরম, পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধিসহ অনাবৃষ্টির কারণে তার মতো এ অঞ্চলের প্রায় সব মৎস্যঘেরের একই দশা। এলাকার বেশির ভাগ ঘেরে পর্যাপ্ত পানি নেই।

পোড়াকাটলা গ্রামের জয়ন্ত মণ্ডল জানান, চলতি মৌসুমে ১০ লাখ টাকা ঋণ করে ৫০ বিঘা জমিতে বাগদার চাষ করেন। চিংড়ি বিক্রি করে এপ্রিল মাসের ভেতর ঋণের টাকা উঠে যাওয়ার কথা। কিন্তু দাবদাহের কারণে মাছে মোড়ক লেগেছে। প্রতিদিন মাছ মারা যাচ্ছে। হঠাৎ মাছ মরার কারণে তিনি এখন পর্যন্ত ১ লাখ টাকার মাছও বিক্রি করতে পারেননি।

দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার হান্নান সরদার বলেন, ‘বছরের শুরুতে ঘেরে বাগদার পোনা ছেড়েছি। সেগুলো বিক্রির উপযুক্ত হয়ে উঠেছিল। তবে হঠাৎ করে দুই সপ্তাহ আগে থেকে ঘেরে মাছ মরে ভেসে উঠছে। আর যেসব জীবিত মাছ পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোর শরীরও দুর্বল। মাছ লালচে হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে প্রতিদিন ভোরে আমার মতো অন্য ঘেরে একাধিক শ্রমিক কাজ করেন। তারা সবাই মরা মাছ তোলেন এবং একই সঙ্গে যতটা সম্ভব জীবিত মাছ ধরে নিয়ে বাজারজাত করেন। দাবদাহের কারণে মাছে মড়ক লাগায় ব্যবসায়ীরা চাষিদের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত করছেন। ইচ্ছামতো দামে মাছ কিনছেন ব্যবসায়ীরা। আর চাষিরাও উপায়ন্তর না পেয়ে নিজেদের ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনতে ব্যবসায়ীদের দেওয়া দামে মাছ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।’

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা মৎস্য কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, সাতক্ষীরায় দেশে বাগদা ও গলদা চিংড়ির এক-তৃতীয়াংশ উৎপাদিত হয়। তবে এখানে মাছের ঘের সনাতন পদ্ধতির। বেশির ভাগ ঘেরে পানির গভীরতা দেড় থেকে দুই ফুটের বেশি নয়। এ জন্য গ্রীষ্মকালে ঘেরে পানির স্বল্পতা, অস্বাভাবিক তাপমাত্রার কারণে মাছ মরার আশঙ্কা থাকে। এ জন্য ঘেরের গভীরতা বৃদ্ধিসহ ঘের প্রস্তুত ও ভাইরাসমুক্ত পোনা ছাড়তে চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বাগদা চাষের জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর লবণসহিষ্ণু মাত্রা হলো সর্বোচ্চ ২৫ পার্টস পার থাউস্যান্ড (পিপিটি)। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে পরিবেশের তাপমাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। পাশাপাশি চিংড়ি চাষের জন্য যে পরিমাণ পানির প্রয়োজন, তা ঘেরগুলোতে নেই। এ কারণে লবণাক্ততা বেড়ে গিয়ে গরমের কারণে বাগদা চিংড়ি মারা যাচ্ছে। চাষিরা মৎস্য বিভাগের পরামর্শ গ্রহণ না করায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

শ্রম খাত সংস্কারে সহায়তা করবে ‘অ্যাডভান্সিং ডিসেন্ট ওয়ার্ক ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্প

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ০৭:৩০ পিএম
আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪, ০৭:৩০ পিএম
শ্রম খাত সংস্কারে সহায়তা করবে ‘অ্যাডভান্সিং ডিসেন্ট ওয়ার্ক ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্প
ছবি : সংগৃহীত

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) বাংলাদেশ বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) লা মেরিডিয়ান হোটেলে ‘অ্যাডভান্সিং ডিসেন্ট ওয়ার্ক ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রকল্পের উদ্বোধন করেছে। টিম ইউরোপ ইনিশিয়েটিভের আওতায় এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস ও সুইডেন।

আগামী চার বছরে ২৪.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের শ্রম খাত সংস্কার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সহায়তা করবে প্রকল্পটি। আর এই সংস্কার সুশাসন, মৌলিক নীতি ও কর্মক্ষেত্রে শ্রমিক অধিকারের সুরক্ষা এবং টেকসই ও প্রতিযোগিতামূলক উদ্যোগ ২০২৬ সালে বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মর্যাদা থেকে উত্তরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা সামাজিক ন্যায়বিচার সমর্থন করি। বাংলাদেশে শ্রম সংস্কারকে উৎসাহিত করতে এবং অর্থনীতির সব সেক্টরে পুরুষ ও নারীদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব মো. মাহবুব হোসেন আইএলওর গভর্নিং বডির সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমাদের শ্রমিকদের কল্যাণ ও নিরাপদ কর্মক্ষেত্র নিশ্চিত করতে এই সংস্কার উদ্যোগকে আরও এগিয়ে নিতে আমরা কাজ করব।’

আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমোপুতিয়ানিন তার বক্তব্যে ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা থেকে উত্তরণে কার্যকর ত্রিপক্ষীয় অংশীদারত্বের গুরুত্ব উল্লেখ করে বলেন, ‘মৌলিক নীতি ও নিরাপদ কর্ম-পরিবেশের অধিকার কেবল শ্রমিক ও নিয়োগকর্তা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে স্বচ্ছ ও পরামর্শমূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই সুরক্ষিত হতে পারে।’

এইচ ই চার্লস হোয়াইটলি বাংলাদেশ সরকারের চলমান উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, ‘আমরা শ্রম সংস্কারের বিষয়ে সরকারের অঙ্গীকারকে স্বাগত জানাই এবং আগামী কয়েক বছরে নতুন সাফল্যের গল্প তৈরিতে এই প্রচেষ্টায় সহায়তা করতে আগ্রহী। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ব্যক্তির উন্নয়ন, শ্রমিক সম্প্রদায়কে শক্তিশালী করা এবং বাংলাদেশে একটি টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গল্প রচিত হবে।’

অনুষ্ঠানে কানাডিয়ান হাইকমিশনার এইচ ই লিলি নিকোলস বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদনসাপেক্ষে একটি পরিপূরক প্রকল্পের মাধ্যমে অ্যাডভান্সিং ডিসেন্ট ওয়ার্ক ইনিশিয়েটিভে কানাডা যোগ দেবে বলে ঘোষণা দেন। 

টিম ইউরোপ থেকে উপস্থিত ছিলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত এইচ ই চার্লস হোয়াইটলি, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত এইচ ই আলেকজান্দ্রা বার্গ ভনলিন্ডে, ডেনমার্ক দূতাবাসের হেড অব কো-অপারেশন অ্যান্ডার্স কার্লসেন এবং নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের হেড অব কো-অপারেশন থিজ ওউডস্ট্রা।

সূচকের উত্থানে লেনদেন ছাড়াল ৬০০ কোটি টাকা

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ০৩:৩১ পিএম
আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪, ০৩:৩১ পিএম
সূচকের উত্থানে লেনদেন ছাড়াল ৬০০ কোটি টাকা

দেশের পুঁজিবাজারে আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবারও ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। এদিন প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক বেড়েছে। সেই সঙ্গে ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে ৬০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

এর মাধ্যমে ২৫ কার্যদিবস বা এক মাসের বেশি সময় পর ডিএসইতে ৬০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলো।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের তৃতীয় কিস্তির অনুমোদন মেলায় পুঁজিবাজারে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় ২০২২ সালের জুলাই মাসে আইএমএফের কাছে ঋণ চায় বাংলাদেশ। আইএমএফের ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭৬ দশমিক ২৭ মিলিয়ন ডলার আসে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে। এরপর ডিসেম্বরে আসে দ্বিতীয় কিস্তি হিসেবে প্রায় ৬৮১ মিলিয়ন ডলার। তবে তৃতীয় কিস্তির ঋণ পাওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। এ নিয়ে ছড়ায় নানা গুঞ্জন। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে পুঁজিবাজারেও। 

এমন পরিস্থিতিতেই আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাওয়ার সব শঙ্কা কেটে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদের সভায় তৃতীয় কিস্তির প্রায় ১১১ কোটি ৫০ লাখ ডলার ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়। 

আইএমএফ ঋণ অনুমোদনের খবরে গত মঙ্গলবার পুঁজিবাজারে  ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। বুধবার এসে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আরও বেড়েছে। 

এদিন পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মিলে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকে। এমনকি লেনদেনের শেষদিকে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বেড়ে যায়। ফলে সূচকের বড় উত্থান দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৫১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৮৯টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৬৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৬০ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৩০২ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৬৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯০৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

এদিকে সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬০৫ কোটি ১২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫২৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৮০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ারের শেয়ার। কোম্পানিটির ৬২ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ক্যাপটিভ গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের ২১ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৬ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ।

এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, লাভেলো আইসক্রিম, ওরিয়ন ফার্মা, ব্র্যাক ব্যাংক এবং রবি।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৮৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৪৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।

ডিএসই পরিচালকের শেয়ার কারসাজি তদন্তের নির্দেশ

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ০৩:২৪ পিএম
আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪, ০৩:২৪ পিএম
ডিএসই পরিচালকের শেয়ার কারসাজি তদন্তের নির্দেশ
ডিএসই স্বতন্ত্র পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) স্বতন্ত্র পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের বিরুদ্ধে অনৈতিকভাবে শেয়ার লেনদেন ও কারসাজিতে সহায়তার যে অভিযোগ উঠেছে, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) আলাদাভাবে তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে তার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

অন্যদিকে তদন্তকালীন সময়ে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে ডিএসইর পরিচালকের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানকে তদন্তসংক্রান্ত এ নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডিএসইর পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে শেয়ার কারসাজিতে জড়িত সাম্প্রতিক সময় গণমাধ্যমে এমন সংবাদ প্রকাশ হয়। এমন সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়। 

মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদের প্রভাবশালী সদস্য অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বিধি লঙ্ঘন করে কারসাজির মাধ্যমে ৩টি বিও অ্যাকাউন্টে ১৩ কোটি ১৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করেছেন।

আর এ কাজের মাধ্যমে তিনি তিনটি অপরাধ করেছেন মর্মে বলা হয়েছে। প্রথমত, তিনি স্টক এক্সচেঞ্জের পর্ষদে থেকে বেআইনি ও অনৈতিকভাবে শেয়ার লেনদেন করে সুবিধা নিয়েছেন, দ্বিতীয়, কারসাজির কারণে যেসব কোম্পানিকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, এর অধিকাংশের শেয়ার লেনদেন করে সুবিধা নিয়েছেন এবং তৃতীয়ত, নিয়ন্ত্রক সংস্থার সহায়তায় পর্ষদ ভেঙে যেসব কোম্পানি দখল করা হয়েছে, এর সবকটি থেকেই তিনি আগাম তথ্য জেনে শেয়ার লেনদেন করে লাভবান হয়েছেন।

আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ডিএসইর পরিচালক পদে থাকার কারণে কোম্পানির গোপন সংবাদের সুযোগ কাজে লাগিয়ে পুঁজিবাজারে আস্থার সংকট তৈরি করেছেন এবং এর ফলে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।

চিঠিতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ২১ ধারামতে প্রকাশিত অভিযোগের বিষয়ে আগামী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
অন্যদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (বোর্ড এডমিনিস্ট্রেশন) রেজুলেশন ২০২৩ এর ধারা ৮ (২) (এ), ৮(২) (বি), ৮(২) (ডি), ৮(৩)(১)-সহ বিএসইসি এবং ডিএসইএ কর্তৃক অনুসৃত অন্যান্য আইন, বিধি, প্রবিধি অথবা নির্দেশনা পরিপন্থী কোনো কার্য করছেন কি না তা তদন্ত সম্পন্ন করে প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের তদন্ত প্রতিবেদন মোতাবেক অনতিবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে তা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে অবহিত করতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক। গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন তাকেসহ চারজনকে ডিএসইর স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। ডিএসইর পাঠানো একটি তালিকা থেকে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, বিএসইসির শীর্ষ ব্যক্তির পছন্দের আলোকে তার পরামর্শেই ওই তালিকায় আব্দুল্লাহ আল মাহমুদসহ কয়েকজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে ডিএসই। আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ এবং ডিএসইর চেয়ারম্যান ড. হাফিজ মো. হাসান বাবু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতিতে একই গ্রুপে অবস্থান করেন, বিএসইসির ওই কর্মকর্তা গ্রুপটির অন্যতম পুরোধা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনেরও (পিকেএসএফ) গভর্নিং বডির সদস্য। বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. খায়রুল হোসেন পিকেএসএফের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ড. মাহমুদ সেখানে গভর্নিং বডির সদস্য হিসেবে যোগ দেন।

সৌদি আরবের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ০৩:১০ পিএম
আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪, ০৩:১০ পিএম
সৌদি আরবের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ
জেদ্দায় লোহিত সাগরের তীরে অবস্থিত সৌদি আরবের বন্দর জেদ্দা ইসলামিক পোর্ট। ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সৌদি আরবের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। এই সময়ে দেশটির উদ্বৃত্তের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ১৪০ কোটি (৪১ দশমিক ৪০ বিলিয়ন) সৌদি রিয়াল বা ১১ দশমিক ০৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। সে হিসাবে আগের মাসের তুলনায় বাণিজ্য উদ্বৃত্ত বেড়েছে ৩৬ শতাংশ। সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় এক পরিসংখ্যানে এই তথ্য জানানো হয়েছে। খবর আরব নিউজের। 

সৌদি আরবভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা, তেলবহির্ভূত (পণ্য ও সেবা) রপ্তানি বাড়ায় দেশটির সামগ্রিক বাণিজ্য উদ্বৃত্তের দেখা পেয়েছে তারা। সৌদি আরবের জেনারেল অথোরিটি অব স্ট্যাটিস্টিকসের দেওয়া তথ্যমতে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সৌদি আরবের তেলবহির্ভূত রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ বেড়েছে। এই বাণিজ্য উদ্বৃত্তের সংবাদটি এমন সময়ে এসেছে, যখন দেশটি জ্বালানি খাতের ওপর নির্ভরতা কমাতে এবং অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনতে তেলবহির্ভূত রপ্তানি বাড়ানোর জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। 

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অন্যান্য খাতকে শক্তিশালী করতে এবং আরও ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক কাঠামো অর্জনে সৌদি আরবের প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরেছে।

খবরে বলা হয়, জাতীয় তেলবহির্ভূত রপ্তানিতে ২০২৩ সালের এপ্রিলের তুলনায় এই বছরের এপ্রিলে ১ দশমিক ৬০ শতাংশের মাঝারি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। যেখানে পুনরায় রপ্তানি করা পণ্য একই সময়ের তুলনায় ৫৬ দশমিক ৪০ শতাংশের উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি ঘটেছে।

তবে রপ্তানির বিপরীতে সামগ্রিক বহির্গামী পণ্য সরবরাহ ১ শতাংশ কমেছে। প্রাথমিকভাবে জ্বালানি তেল রপ্তানিতে ৪ দশমিক ২০ শতাংশ হ্রাসের কারণে সামগ্রিক রপ্তানি কমেছে। ফলস্বরূপ, মোট বহির্গামী সরবরাহে জ্বালানি তেলের অনুপাত ২০২৩ সালের এপ্রিলে যেখানে ছিল ৮০ দশমিক ৬০ শতাংশ, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সেটি ৭৮ শতাংশে নেমে এসেছে।

এই সময়ে দেশটির আমদানি ১ দশমিক ৩০ শতাংশের মতো হ্রাস পেয়েছে এবং মার্চেন্ডাইজ ট্রেড ব্যালেন্স সারপ্লাস আগের বছরের তুলনায় দশমিক ৫০ শতাংশ কমেছে। প্রসঙ্গত, মার্চেন্ডাইজ ট্রেড ব্যালেন্স সারপ্লাস হলো, একটি দেশের রপ্তানি থেকে আসা আয়ের পরিমাণ যখন আমদানিতে করা ব্যয়ের চেয়ে বেশি হয়।

খবরে বলা হয়, গত মাসের তুলনায় চলতি বছরের এপ্রিলে সৌদি আরবের পণ্য রপ্তানির মূল্য ১ দশমিক ৭০ শতাংশ, তেলবহির্ভূত রপ্তানি ৬ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং আমদানি ১৭ দশমিক ৪০ শতাংশ কমেছে। তবে এসব সত্ত্বেও দেশটির বাণিজ্য ভারসাম্য যথেষ্ট বেড়েছে।

আমদানির বিপরীতের তেলবহির্ভূত পণ্য রপ্তানির অনুপাত উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ২০২৩ সালের এপ্রিলের ৩২ দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে এই হার ৩৭ দশমিক ১০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এই উন্নতির পেছনে তেলবহির্ভূত রপ্তানি বৃদ্ধি এবং আমদানি হ্রাসের ভূমিকা ছিল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

আরব নিউজ জানায়, সৌদি আরবের তেলবহির্ভূত রপ্তানির মধ্যে শীর্ষ স্থানে ছিল প্লাস্টিক, রাবার এবং এই দুটি থেকে তৈরি করা পণ্য। মোট রপ্তানিতে এর অবদান ২৬ দশমিক ২০ শতাংশ এবং এপ্রিল ২০২৩ সালের তুলনায় এই ক্যাটাগরির পণ্য রপ্তানি ২০ দশমিক ৫০ শতাংশ বেড়েছে।

রাসায়নিক পণ্যগুলোও দেশটির রপ্তানিতে একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে, যার অবদান ছিল তেলবহির্ভূত রপ্তানির ২৫ দশমিক ৭০ শতাংশ। তবে রাসায়নিক পণ্য রপ্তানি আগের বছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ কমেছে।

অন্যদিকে আমদানি করা পণ্যের মধ্যে শীর্ষস্থানে ছিল যন্ত্রপাতি, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও যন্ত্রাংশ, যার পরিমাণ ছিল মোট আমদানির ২৬ দশমিক ৬০ শতাংশ। এটি ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসের তুলনায় ৩২ দশমিক ৪০ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া পরিবহন সরঞ্জাম ও যন্ত্রাংশ আমদানির পরিমাণ ছিল মোট আমদানির ১১ দশমিক ৭০ শতাংশ। এটি আগের বছরের তুলনায় ২৪ দশমিক ৫০ শতাংশ কম।

খবরে বলা হয়, সৌদি আরবের বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার চীন। চলতি বছরের এপ্রিলে দেশটির মোট রপ্তানির ১৬ দশমিক ৬০ শতাংশই ছিল চীনে। এ ছাড়া জাপান ও ভারতে যথাক্রমে ৯ দশমিক ২০ শতাংশ ও ৮ দশমিক ১০ শতাংশ পণ্য ও সেবা রপ্তানি হয়েছে।

গাইবান্ধায় লেবু চাষে বাজিমাত, মাসে আয় ৬০ হাজার টাকা

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ০২:৫৩ পিএম
আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪, ০২:৫৯ পিএম
গাইবান্ধায় লেবু চাষে বাজিমাত, মাসে আয় ৬০ হাজার টাকা
গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরে লেবু চাষে সফল হয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা আবদুর রশিদ (৪২)। ছবি: খবরের কাগজ

গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরে ধানের বদলে লেবুর বাগান করে বাজিমাত করেছেন কৃষি উদ্যোক্তা আবদুর রশিদ (৪২)। উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের পূর্ব দামোদরপুর গ্রামে মাত্র ২৫ শতক জমিতে লেবুর বাগান করে মাসে ৬০ হাজার টাকা আয় করেছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি সাথি ফসল হিসেবে বেগুন, করলাসহ বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ করেছেন।

জানা গেছে, কৃষক আবদুর রশিদ পৈতৃক সূত্রে ৪০ শতক জমি পান। এই জমিতে প্রতিবছর বোরো ধান চাষ করতেন তিনি। ২৫ শতকে বোরো ধানের উৎপাদন খরচ পড়ে ৯ হাজার টাকা। ধান উৎপন্ন হতো ১৪ মণ। প্রতি মণ ৮০০ টাকা হিসাবে ধানের মূল্য দাঁড়ায় মোট ১১ হাজার ২০০ টাকা। উৎপাদন খরচ বাদে আয় হতো ২ হাজার ২০০ টাকা। অথচ একই পরিমাণ জমিতে লেবুর বাগান করে তিনি ৬০ হাজার টাকা আয় করেছেন। 

আবদুল রশিদ মিয়ার লেবুর বাগান ও মৎস্য খামারে গেলে তিনি জানান, এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করার পর রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেছেন। ঢাকা থেকে ফিরে স্থানীয় বাজারে একটি মুদি দোকান করেন। সেখানে মূলধন হারিয়ে বসেন তিনি। এরপর কাপড়ের দোকান করেন এবং কৃষিকাজ শুরু করেন। কয়েক বছর ধান চাষ করে তেমন আয় করতে পারেননি তিনি। পরে নিজ উদ্যোগে ২৫ শতক জমিতে দেশি জাতের লেবুর গাছ রোপণ করেন। পাশাপাশি মৎস্য খামার ও হাঁস-মুরগি পালন শুরু করেন। নিজ বাড়িতে তিনি কৃষি খামার তৈরি করেন। বর্তমানে এখান থেকে যে আয় হয়, সেটি দিয়েই সংসার ও দুই ছেলের লেখাপড়ার খরচ জোগান তিনি।

উদ্যোক্তা আবদুর রশিদ বলেন, ‘একপর্যায়ে কাপড়ের ব্যবসা বাদ দিয়ে লেবুর বাগান ও বাড়ির কৃষি খামারে মনোনিবেশ করি। জ্যৈষ্ঠ থেকে কার্তিক মাসের শেষ পর্যন্ত লেবু পাওয়া যায়। গত এক মাসে ৩২ হাজার টাকার লেবু বিক্রি করেছি। আরও ৩৫ হাজার টাকার লেবু বিক্রি করতে পারব। অর্থাৎ ২৫ শতকের লেবু উৎপাদন হয় ৭০ হাজার টাকার। উৎপাদন খরচ হয়েছে খুবই কম। উৎপাদন খরচ বাদে পাঁচ মাসে আয় হয় ৬০ হাজার টাকা। অথচ একই জমিতে বোরো চাষে চার মাসে আয় হয় ২ হাজার ২০০ টাকা। ধানের চেয়ে লেবু চাষে লাভ বেশি। সার, তেল ও শ্রমিক খরচ নেই। পাশাপাশি লেবুর ফসল হিসেবে ঢ্যাঁড়স, করলার চাষ করা হয়েছে। লেবুর পর ঢ্যাঁড়স ও করলা থেকেও আয় হবে।’
 
সাদুল্যাপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আবু হাসান বলেন, ‘লেবু চাষ ছাড়াও অন্য ফসল করতে কৃষক আবদুল রশিদকে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে তার লেবু বাগানের পাশেই পারিবারিক পুষ্টি বাগান করা হয়েছে। আবদুর রশিদকে নানাভাবে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তার সাফল্য দেখে ওই গ্রামের অনেক কৃষক লেবু চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।’