![গাইবান্ধায় লেবু চাষে বাজিমাত, মাসে আয় ৬০ হাজার টাকা](uploads/2024/06/27/Gaibandha-lemon-1719478425.jpg)
গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরে ধানের বদলে লেবুর বাগান করে বাজিমাত করেছেন কৃষি উদ্যোক্তা আবদুর রশিদ (৪২)। উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের পূর্ব দামোদরপুর গ্রামে মাত্র ২৫ শতক জমিতে লেবুর বাগান করে মাসে ৬০ হাজার টাকা আয় করেছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি সাথি ফসল হিসেবে বেগুন, করলাসহ বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ করেছেন।
জানা গেছে, কৃষক আবদুর রশিদ পৈতৃক সূত্রে ৪০ শতক জমি পান। এই জমিতে প্রতিবছর বোরো ধান চাষ করতেন তিনি। ২৫ শতকে বোরো ধানের উৎপাদন খরচ পড়ে ৯ হাজার টাকা। ধান উৎপন্ন হতো ১৪ মণ। প্রতি মণ ৮০০ টাকা হিসাবে ধানের মূল্য দাঁড়ায় মোট ১১ হাজার ২০০ টাকা। উৎপাদন খরচ বাদে আয় হতো ২ হাজার ২০০ টাকা। অথচ একই পরিমাণ জমিতে লেবুর বাগান করে তিনি ৬০ হাজার টাকা আয় করেছেন।
আবদুল রশিদ মিয়ার লেবুর বাগান ও মৎস্য খামারে গেলে তিনি জানান, এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করার পর রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেছেন। ঢাকা থেকে ফিরে স্থানীয় বাজারে একটি মুদি দোকান করেন। সেখানে মূলধন হারিয়ে বসেন তিনি। এরপর কাপড়ের দোকান করেন এবং কৃষিকাজ শুরু করেন। কয়েক বছর ধান চাষ করে তেমন আয় করতে পারেননি তিনি। পরে নিজ উদ্যোগে ২৫ শতক জমিতে দেশি জাতের লেবুর গাছ রোপণ করেন। পাশাপাশি মৎস্য খামার ও হাঁস-মুরগি পালন শুরু করেন। নিজ বাড়িতে তিনি কৃষি খামার তৈরি করেন। বর্তমানে এখান থেকে যে আয় হয়, সেটি দিয়েই সংসার ও দুই ছেলের লেখাপড়ার খরচ জোগান তিনি।
উদ্যোক্তা আবদুর রশিদ বলেন, ‘একপর্যায়ে কাপড়ের ব্যবসা বাদ দিয়ে লেবুর বাগান ও বাড়ির কৃষি খামারে মনোনিবেশ করি। জ্যৈষ্ঠ থেকে কার্তিক মাসের শেষ পর্যন্ত লেবু পাওয়া যায়। গত এক মাসে ৩২ হাজার টাকার লেবু বিক্রি করেছি। আরও ৩৫ হাজার টাকার লেবু বিক্রি করতে পারব। অর্থাৎ ২৫ শতকের লেবু উৎপাদন হয় ৭০ হাজার টাকার। উৎপাদন খরচ হয়েছে খুবই কম। উৎপাদন খরচ বাদে পাঁচ মাসে আয় হয় ৬০ হাজার টাকা। অথচ একই জমিতে বোরো চাষে চার মাসে আয় হয় ২ হাজার ২০০ টাকা। ধানের চেয়ে লেবু চাষে লাভ বেশি। সার, তেল ও শ্রমিক খরচ নেই। পাশাপাশি লেবুর ফসল হিসেবে ঢ্যাঁড়স, করলার চাষ করা হয়েছে। লেবুর পর ঢ্যাঁড়স ও করলা থেকেও আয় হবে।’
সাদুল্যাপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আবু হাসান বলেন, ‘লেবু চাষ ছাড়াও অন্য ফসল করতে কৃষক আবদুল রশিদকে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে তার লেবু বাগানের পাশেই পারিবারিক পুষ্টি বাগান করা হয়েছে। আবদুর রশিদকে নানাভাবে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তার সাফল্য দেখে ওই গ্রামের অনেক কৃষক লেবু চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।’