![‘থাই গোল্ড’ কচু চাষে সফল সিরাজুল](uploads/2024/06/26/lakximipur-kochu-1719389656.jpg)
লক্ষ্মীপুরের উত্তর জয়পুর গ্রামে থাই গোল্ড জাতের পানি কচু চাষ করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন সফল কৃষি উদ্যোক্তা সিরাজুল ইসলাম। চলতি বছর তিনি তার বন্ধুর মাধ্যমে থাইল্যান্ড থেকে ২৮০টি থাই গোল্ড জাতের কচুর চারা এনে বাড়ির পাশের পাঁচ শতাংশ জমিতে রোপণ করেন। পরে সেখান থেকে সংগ্রহ করে বর্তমানে এক বিঘা জমিতে কচু চাষ করেছেন তিনি। সিরাজুল ইসলাম লক্ষ্মীপুর জেলা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সহসভাপতি।
সিরাজুল ইসলাম জানান, এ জাতের প্রতিটি কচুর উচ্চতা ১২ ফুট পর্যন্ত এবং ডাল ছাড়া মূল কচুর ওজন ৪০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ ছাড়া প্রতিটি লতি লম্বায় চার ফুট ও ১২ মিলিমিটার পর্যন্ত মোটা হয়। বর্তমানে তার চাষ করা একটি কচুর ওজন ৪ মাসে ২০ থেকে ২৫ কেজি ও উচ্চতা প্রায় ৮ ফুট পর্যন্ত হয়েছে। এ ছাড়া ৮ থেকে ১০ পিস লতির ওজন এক কেজি হয়েছে। তিনি আশা করছেন, আগামী চার মাসের মধ্যে প্রতিটি কচু ৪০ কেজি ওজন হবে।
সিরাজুল ইসলামের কচু চাষের সংবাদ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে উৎসুক চাষিরা একনজর তার কচু খেত দেখতে আসছেন।
সিরাজুল জানান, ইতোমধ্যে ১০ জন চাষিকে এ কচুর চাষ করার জন্য চারা দিয়েছেন তিনি। তার কচু খেতে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ ঢুকে হাত উঁচু করলেও বাইরে থেকে দেখা সম্ভব না। তার জানা মতে তিনিই প্রথম দেশে থাই গোল্ড জাতের কচুর চাষ শুরু করেছেন। দেশের চাষিদের মধ্যে এ কচু চাষ বিস্তারে তিনি সব ধরনের সহযোগিতা করবেন।
সিরাজুল ইসলাম ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) চাকরি ছেড়ে বাড়িতে এসে শখের বসে নার্সারি দিয়ে বিভিন্ন জাতের ফলদ, বনজ, ফুল ও সবজির চারা উৎপাদন শুরু করেন। পাশাপাশি তিনি এলাকার আগ্রহী যুবকদের হাতে-কলমে চারা উৎপাদন করা শিখাতে থাকেন। তার কাছে চারা উৎপাদন শিখে ইতোমধ্যে ৫০ জন বেকার যুবক স্বাবলম্বী হয়েছেন। তিনি তার কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার।
সিরাজুল ইসলাম খবরের কাগজকে জানান, বাজারে তার উৎপাদিত কচুর লতি নিয়ে গেলে মানুষ একনজর তা দেখার জন্য ভিড় জমান। বর্তমানে তিনি খেতে উৎপাদিত কচু বিক্রি শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে ২০টি কচু চার হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছর প্রায় ছয় লাখ টাকার কচু বিক্রি হবে। তবে কচু চাষাবাদে তিনি কৃষি বিভাগ থেকে কোনো পরামর্শ পাননি।
এলাকার আরেক সবজি চাষি শরীফ জানান, সিরাজুল ইসলাম থেকে তিনি ইতোমধ্যে থাই গোল্ড জাতের কচুর চারা নিয়ে লাগিয়েছেন। সিরাজুল ইসলাম একজন সফল উদ্যোক্তা। তার কাছে কৃষি চাষাবাদ বিষয়ে পরামর্শ নিয়ে অনেকেই আজ স্বাবলম্বী হয়েছেন।
উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের কৃষি ব্লক সুপার ভাইজার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহজাহান বলেন, ‘সিরাজুল ইসলামের কচুর খেত আমি সরেজমিনে দেখে এসেছি। এ কচুর চাষ সম্প্রসারণে সহযোগিতা করব।’