![মানিকগঞ্জে কমেছে মাছের দাম](uploads/2024/06/27/Manikganj-Fishes-1719478110.jpg)
ভোরের আলো ফোঁটার আগে থেকেই ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগরম মানিকগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী তরা মৎস্য আড়ত। ঈদ-পরবর্তী সময়ে মাছের দাম ভালো থাকলেও চার দিন ধরে চাষের মাছ কেজিতে কমেছে ১০০ টাকা পর্যন্ত। জেলে ও পাইকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নদীতে বর্ষার পানি আসায় দেশীয় মাছের সরবরাহ বেশ বেড়েছে। যার কারণে মাছের বাজার পড়ে গেছে।
বুধবার (২৬ জুন) সকালে আড়তে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। মানিকগঞ্জের কালীগঙ্গা নদীর পাড়ে ২০০ বছরের পুরোনো তরা মৎস্য আড়তে মাছের দাম কমে যাওয়ায় বিক্রি কমে গেছে প্রায় ৩০ শতাংশের মতো।
তরা আড়তে পাঁচ কেজি ওজনের কাতল মাছ ১০০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজি, রুই মাছ ২০ টাকা কমে ৩০০ টাকা, ১৭০ টাকার পাঙাশ মাছ ১৬০ টাকা, ৩৭০ টাকার মাগুর মাছ ৩৫০ টাকা, ৩০ টাকা কমে শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে ইলিশ মাছের দাম। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার টাকা, ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২৫০ টাকা। এ ছাড়া আড়তে বিভিন্ন প্রকারের দেশীয় মাছ ৪৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
রাতুল মৎস্য আড়তের ম্যানেজার সুমন বলেন, ‘ঈদের পর মাছের বাজার স্বাভাবিক ছিল। চার দিন ধরে আমাদের এই আড়তে চাষের মাছের দাম কমেছে। যেখানে আমাদের প্রতিদিন ৭-৮ লাখ টাকার মাছ বিক্রি হতো, এখন সেখানে বিক্রি নেমেছে ৫ লাখে।’
মাছ ব্যবসায়ী আবুল হোসেন জানান, ‘নদীতে পানি আসায় দেশীয় মাছের সরবরাহ বেড়েছে। আর ক্রেতারা দেশীয় মাছের দিকে বেশি ঝুঁকছেন। তাই চাষের মাছের দাম চার দিন ধরে কম যাচ্ছে। আমাদের এখানে শতাধিক মাছের আড়তদার আছেন। প্রতিদিন মানিকগঞ্জের বিভিন্ন বাজার থেকে কয়েক শতাধিক খুচরা মাছ ব্যবসায়ী এখান থেকে মাছ কিনে নিয়ে বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করেন। আগে খুচরা ব্যবসায়ীরা যেখানে ২০-৩০ হাজার টাকার চাষের মাছ নিতেন, এখন ১০-১৫ হাজার টাকার মাছ নিচ্ছেন। এতে করে আমাদের বিক্রি কমে গেছে। কিছু মাছে লোকসানও গুনতে হচ্ছে।’
খুচরা বিক্রেতা আলমাস আলী বলেন, ‘আমরা এখান থেকে মাছ কিনে নিয়ে শহরের বাজারে বিক্রি করি। ক্রেতাদের চাহিদা দেশীয় মাছ। তাই চাষের মাছ কম পরিমাণে কিনছি। তবে চাহিদা থাকায় দেশীয় মাছের ভালো দামেই আড়তদাররা বিক্রি করছেন।’
মানিকগঞ্জ পৌরসভার পূর্ব দাশড়া এলাকার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘শুনেছি তরা মাছের আড়তে ভালো দেশীয় মাছ পাওয়া যাচ্ছে। তাই দুই কেজি বিভিন্ন জাতের দেশি মাছ কিনলাম ১ হাজার ২৫০ টাকায়, যা শহরের বাজার থেকে কিনতে গেলে আমাকে আরও কয়েক শ টাকা বেশি গুনতে হতো। আর বড় সাইজের কাতল মাছ খুব কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। ৫০০ টাকা কেজির কাতল আজ ৪০০ করে কিনেছি।’
তরা মৎস্য আড়তের সভাপতি ভোলানাথ সরকার খবরের কাগজকে বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী এই আড়তে ভোরের আলো ফোটার আগেই মাছের কেনাবেচা শুরু হয়। এখানে খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারি দামে মাছ কিনে স্থানীয় বাজারগুলোতে বিক্রি করেন। বর্তমানে চার দিন ধরে মাছের দাম কম যাচ্ছে। আগে প্রতিদিন কোটি টাকার মাছ বিক্রি হলেও কয়েক দিন ধরে তা ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকায় নেমে গেছে।’