ঢাকা ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪

রেল ট্রানজিট: পাল্টে যাবে আন্তযোগাযোগ

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ১১:২৪ এএম
আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪, ১১:২৮ এএম
রেল ট্রানজিট: পাল্টে যাবে আন্তযোগাযোগ
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের ট্রেন চলবে। সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের ভেতরে নতুন রেলপথ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এ ছাড়া যেসব রুটে ভারতের ট্রেন চলবে, সেসব রুটে রেলপথের সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে। বিদ্যমান রেলপথের সংস্কারও করতে হবে।  

তবে রেল ট্রানিজট চালু হলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। তবে নিরাপত্তা শঙ্কা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক কোনো কোনো বিশ্লেষক। আর যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা একটি পূর্ণাঙ্গ সমীক্ষা চালানোর পরামর্শ দিয়েছেন। সমীক্ষা হলে বোঝা যাবে কত কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করতে হবে, কোথায় কোথায় সক্ষমতা বাড়াতে হবে, সংস্কার করতে হবে ইত্যাদি। 

এ প্রসঙ্গে যোগাযোগ খাত বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. শামসুল হক খবরের কাগজকে বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশের ভেতরে যে রেলপথ দিয়ে আন্তর্দেশীয় যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণ করতে চায়, সেটির জন্য পূর্ণাঙ্গ সমীক্ষা করা দরকার। এতে বোঝা যাবে এই রেলপথ কতটা ব্যবহারের উপযোগী, কতটুকু সারপ্লাস আছে, আর সেই সারপ্লাস আমরা পরবর্তী সময়ে সর্বোচ্চ কতটা ব্যবহার করতে পারব।’ 

রুটগুলোতে নতুন রেলপথ নির্মাণের উদ্যোগ
বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, মোট ১২টি রুট দিয়ে ভারতের ট্রেন বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। এই রুটগুলোতেই মূলত নতুন রেলপথ নির্মাণ ও সংস্কার করে সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তবে এসব রেলপথ নির্মাণে অর্থায়নের বিষয়টি এখনো ভারত-বাংলাদেশ কোনো পক্ষ থেকেই পরিষ্কার করা হয়নি। 

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বালুরঘাট (ভারত)-হিলি-পার্বতীপুর-কাউনিয়া-লালমনিরহাট-মোগলহাট-গীতালদহ (ভারত) ৩২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রেলপথে ১৪ কিলোমিটার হবে নতুন রেললাইন এবং ১৮ কিলোমিটারের গেজ পাল্টানো হবে। বালুরঘাট (ভারত)-গীতলদহ-বামনহাট-সোনাহাট-গোলকগঞ্জ-ধুবরির (ভারত) দৈর্ঘ্য হবে ৫৬ কিলোমিটার, যার মধ্যে ৩৮ কিলোমিটার হবে নতুন রেললাইন এবং ১৮ কিলোমিটার হবে গেজ রূপান্তর। 

এ ছাড়া বালুরঘাট (ভারত)-হিলি-গাইবান্ধা-মহেন্দ্রগঞ্জ-তুরা-মেন্দিপাথর (ভারত) রুটে ২৫০ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ করা হবে। মঙ্গুরজান (ভারত)-পীরগঞ্জ-ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড়-হলদিবাড়ি (ভারত) রুটে ৬০ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ করা হবে। 
ডালখোলা (ভারত)-পীরগঞ্জ-ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড়-হলদিবাড়ি (ভারত) রুটে ৮০ কিলোমিটার নতুন রেললাইন হবে। রাধিকাপুর (ভারত)-বিরল-পার্বতীপুর-কাউনিয়া-গীতলদহ (ভারত) রুটের দৈর্ঘ্য হবে ৩২ কিলোমিটার, যার মধ্যে ১৪ কিলোমিটার নতুন রেললাইন এবং ১৮ কিলোমিটার হবে গেজ রূপান্তর। 

বেলোনিয়া (ভারত)-ফেনী-চট্টগ্রাম রুটের দৈর্ঘ্য হবে ১৩১ কিলোমিটার, যার মধ্যে ৩৮ কিলোমিটার নতুন রেললাইন এবং ৯৩ কিলোমিটার হবে গেজ রূপান্তর। গেদে (ভারত)-দর্শনা-ঈশ্বরদী-টঙ্গী-ভৈরববাজার-আখাউড়া-আগরতলা (ভারত) রুটে ১০০ কিলোমিটার গেজ রূপান্তর করতে হবে।

এ ছাড়া পেট্রাপোল (ভারত)-বেনাপোল-নাভারন-যশোর-রূপদিয়া-পদ্মবিলা-লোহাগাড়া-কাশিয়ানী-শিবচর-মাওয়া-নিমতলা-গেন্ডারিয়া-ঢাকা-টঙ্গী-ভৈরববাজার-আখাউড়া-আগরতলা রুটে ১২০ কিলোমিটার গেজ রূপান্তরের প্রয়োজন হবে। বালুরঘাট (ভারত)-হিলি-পার্বতীপুর-কাউনিয়া-লালমনিরহাট-মোগলহাট-গীতালদহ (ভারত) রুটটি ৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ। এখানে ১৪ কিলোমিটার বরাবর ট্র্যাক স্থাপন করতে হবে এবং বাকি ১৮ কিলোমিটারের জন্য গেজ রূপান্তর করতে হবে। 

বালুরঘাট (ভারত)-হিলি-গাইবান্ধা-মহেন্দ্রগঞ্জ-তুরা-মেন্দিপাথারের মতো কয়েকটি রুট আছে, যেখানে ২৫০ কিলোমিটারের পুরো অংশে নতুন রেল ট্র্যাক স্থাপন করতে হবে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিকল্প রুটের মধ্যে ফোর্বসগঞ্জ-লক্ষ্মীপুর সেকশনে ১৭ দশমিক ৬০ কিলোমিটার নতুন রুট হবে। ঠাকুরগঞ্জ (ভারত)-ছাত্তারহাট সেকশনে নতুন রুট হবে ২৪ দশমিক ৪০ কিলোমিটার। কুমেদপুর (ভারত)-আম্বারি ফালাকাটা নতুন রুটে ১৭০ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণের প্রয়োজন হবে।  

ভারতকে বাংলাদেশ এর আগেও ট্রানজিট দিয়েছে। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে প্রথমবারের মতো ‘অভ্যন্তরীণ নৌ-ট্রানজিট ও বাণিজ্য’ প্রটোকল স্বাক্ষর হয়েছিল। এর অনেক পরে ২০০৭ সালে ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়েতে যুক্ত হতে চুক্তি করে বাংলাদেশ। প্রাথমিকভাবে এই রেলপথের লক্ষ্য ছিলো ভারত, বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের মধ্যে যোগাযোগ গড়ে তোলা। তবে সেই সময়ই বলা হয়, কালক্রমে এই রেলপথে যুক্ত হবে মায়ানমার, চীন। এই রেল নেটওয়ার্কটিকে বিবেচনায় রেখে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ ও কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ তৈরি করা হয়। তবে শীঘ্রই এই রেল পথের সঙ্গে চীন ও মায়ানমারকে সংযুক্ত করার সম্ভাবনা নেই। এটি এখন শুধু বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যেই সীমিত হয়ে পড়েছে। 

নেপাল ও ভুটান যথাক্রমে ১৯৭৬ ও ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশের সাথে ট্রানজিট চুক্তি করেছিলো। কিন্তু ভারতের ভূ-খণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশের মালবাহী গাড়ি চলাচল করতে না পারায় সেটি কার্যকর হয়নি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে আন্তদেশীয় চুক্তি স্বাক্ষরের পর নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা জেগেছে বলে মন্তব্য করেছেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা। 

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ূন কবির বুধবার (২৬ জুন) খবরের কাগজকে বলেন, ‘আপনি যখন বিমসটেক (বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন), ট্রান্স এশিয়ান নেটওয়ার্ক আর বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল নিয়ে উপআঞ্চলিক সংযুক্তি-বিবিআইএন নিয়ে যখন কথা বলছি, সেই নেটওয়ার্ক বা রুট কিন্তু কেবল একটি দেশের রুট ব্যবহার করে বাস্তবায়ন সম্ভব না। আমরা চুক্তি বাস্তবায়নের সময় বলছি ভারতের ট্রেনটি গেদে স্টেশন থেকে দর্শনা, আব্দুলপুর, চিলাহাটি হয়ে হলদিবাড়ি, ডালগাও পর্যন্ত যাবে। পরে আমাদের অনুরোধে পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার জেলার হাসিমারা সীমান্ত পর্যন্ত রেল চালানোর অনুমতি মিলেছে। এতে আমরা ভুটান সীমান্তের কাছাকাছি যেতে পারব।’

রেলপথ সচিব বলেন, ‘বিরল-রাধিকাপুর হয়ে ভারতের যোগবাণী পর্যন্ত রেল চলবে। সেখান থেকে নেপালের বিরাটনগর সীমান্ত কাছে।  নেপালের পাথর এ রুটে আসছে বাংলাদেশে। এই পথে যদি পণ্যবাহী রেল আমরা পরিচালনা করতে পারি তবে বাংলাদেশ রাজস্ব আরও বেশি আয় করবে। চুক্তি অনুযায়ী আমরা ভারতের বর্তমান রেলপথ ব্যবহার করতে পারব।’ 

এখন প্রশ্ন উঠেছে, ১২টি রেলপথে আন্তদেশীয় সংযোগ স্থাপন করার ক্ষেত্রে বিনিয়োগ কিভাবে হবে। এ প্রশ্নে রেলওয়ে মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, ‘দুই দেশের একটা কমিটি হবে। এখন স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) তৈরি করতে হবে। ট্যারিফ প্ল্যান করতে হবে।  সবে তো চুক্তি হল। কারা কিভাবে অর্থ লগ্নি করবে সেটি আসবে তারপর। ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্ট দু ধরনের পলিসির কথাই চুক্তিতে আছে। এখন নেপাল, ভুটানে কিভাবে পণ্য যাবে, কিভাবে আমরা লভ্যাংশ পাব সেটি নির্ধারণ করবে কমিটি। এতে কোনো এক দেশ এককভাবে লাভবান হবে এমন কোনো কথা নেই।’

পরিবহনে ভারতের পথ কমবে ১১০০ কিলোমিটার, সময় বাঁচবে ২৬ ঘণ্টা
ভারতের ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের মালবাহী ও যাত্রীবাহী ট্রেন কলকাতা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি-গুয়াহাটি হয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার দূরত্ব ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার। কিন্তু যদি কলকাতা-টঙ্গী-আখাউরা-আগরতলা রুট ব্যবহার করলে দূরত্ব হবে মাত্র ৫০০ কিলোমিটার।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বর্তমানে আগরতলা-কলকাতা রুটে যাত্রীবাহী ট্রেনের সময় লাগে ৩৬ ঘণ্টা। কিন্তু বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে প্রস্তাবিত রুটে ট্রেন চললে লাগবে ১০ ঘণ্টার কম। সমঝোতা অনুযায়ী, ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশ নেপালে পণ্য পরিবহন করতে পারবে। 

বাংলাদেশের রেল যোগাযোগব্যবস্থায় যে প্রভাব পড়তে পারে 
ভারতের ট্রেন বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে চলাচল করলে অভ্যন্তরীণ রেল যোগাযোগব্যবস্থায় প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা। এতে ‘অপারেশনাল ডিজরাপশনের’ আশঙ্কা করছেন তারা। 

এ প্রসঙ্গে বুয়েটের অধ্যাপক ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. শামসুল হক খবরের কাগজকে বলেন, ‘নতুন ট্রেন যখন ঢুকবে বাংলাদেশে, তখন বাংলাদেশের নিজস্ব ট্রেনগুলোর চলাচল নিয়ে ভাবতে হবে। এই করিডরে চলাচলকারী রেলগুলোকে প্রাধান্য দিতে হবে আগে, তারপর নতুন ট্রেনের জন্য সম্ভাব্য সময়সীমা নির্ধারণ করতে হবে।’ 

এক প্রশ্নের জবাবে বুয়েটের এই অধ্যাপক বলেন, ‘অন্য একটি দেশের ট্রেন যখন দেশে ঢুকবে, তখন কিন্তু অপারেশনাল ডিজরাপশন তৈরি হবে। তারপর সিকিউরিটির জন্য খরচ আছে। আবার অবকাঠামো অবচয় কত হবে, প্রতিবছর সেটি হিসাব করতে হবে। এ ছাড়া রেলপথের ভবিষ্যৎ অবকাঠামো ও বাণিজ্যিক সম্ভাবনা যেন বিনষ্ট না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।’ তবে বিশ্লেষকরা বলেছেন, এই খরচ উঠানোর কেৌশল গ্রহণ করলে উল্টো অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশের লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হাদিউজ্জামান খবরের কাগজকে বলেন, ‘বাংলাদেশের ব্রডগেজ রেলপথগুলোর সর্বোচ্চ ভার বহনক্ষমতা (এক্সেল লোড) ২২ দশমিক ৫ টন। ভারতের ব্রডগেজ রেলপথগুলোয় এ সক্ষমতা ২২ দশমিক ৮২ টন। অর্থাৎ ভারতের রেলপথের চেয়ে বাংলাদেশের রেলপথের ভার বহনক্ষমতা কম। এখন প্রশ্ন আসবে, নতুন রেলপথে কোন রেক দিয়ে ট্রেন চালানো হবে। ভারতীয় রেক দিয়ে ট্রেন চালালে সেই মোতাবেক রেল ট্র্যাকও তৈরি করতে হবে। দর্শনা-চিলাহাটি রেলপথে সক্ষমতার চেয়ে বেশি ট্রেন চালাচ্ছে রেলওয়ে। এখন ভারতের মালবাহী ট্রেনগুলো বাংলাদেশের রেলপথের দুর্বল অংশগুলোয় গতি কমিয়ে চলে, তাহলে বাংলাদেশের রেল যোগাযোগব্যবস্থায় বিরূপ প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে।’

বাংলাদেশ আর্থিকভাবে লাভবান হবে: রেলওয়ের মহাপরিচালক
রেল ট্রানজিট পাওয়ায় ভারত যে এত সুবিধা পাচ্ছে, তাতে বাংলাদেশের লাভ কী তা নিয়েও নানা আলোচনা চলছে। এ ক্ষেত্রে এখনো সরকারের পক্ষ থেকে প্রাপ্তি সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। 

এ প্রসঙ্গে রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী খবরের কাগজকে বলেন, ‘ভারত থেকে মালবাহী বা প্যাসেঞ্জার যে ট্রেনই চলুক না কেন, আমরা একটা রাজস্ব পাব। ট্যারিফ কমিশন একটা ভাড়া ঠিক করে দেবে। তাতে রাষ্ট্র আর্থিকভাবে লাভবান হবে। এখানে একতরফাভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ নেই। তবে যাত্রীবাহী ট্রেন থেকে মালবাহী ট্রেনে আমাদের সাত-আট গুণ বেশি লাভ হয়।’

ভারতের রেক ও কোচ দিয়ে নতুন ট্রেন পরিচালনার পরিকল্পনা
রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ রেলওয়েতে ব্রডগেজ ক্যারেজের সংকট আছে। তাই রাজশাহী-কলকাতার রুটের ট্রেনটি ভারতীয় ক্যারেজ সংযোজন করে চলাচল করতে পারে। 

এ প্রসঙ্গে রেলওয়ে মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, ‘আমাদের যে ইঞ্জিন আছে তা দিয়ে আমরা সপ্তাহে একটা-দুইটা ট্রেন দুই দিন বা তিন দিন চালাব। আমাদের ব্রডগেজ কোচস্বল্পতা আছে। এখন ভারতের রেলওয়ের সঙ্গে আমরা আলোচনা করছি যদি তাদের ব্রডগেজ কোচ এনে সংযোজন করা যায়। রাজশাহী থেকে দর্শনার যে দূরত্ব… দর্শনা থেকে গেদে বা কলকাতার দূরত্ব কম। এখানে রাজস্ব আয় আমরা বেশি পাব।’ 

আশঙ্কার কথা বলা হচ্ছে নিরাপত্তা নিয়েও
রেল ট্রানজিট দেওয়ার ফলে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ারও আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের কেউ কেউ। তাদের আশঙ্কা, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন দমন করতে ভারত বাংলাদেশের ভেতরের এই রুট ব্যবহার করতে চাইতে পারে। এতে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়তে পারে বাংলাদেশ। 

এ প্রসঙ্গে সাবেক পররাষ্ট্রসচিব মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যেসব রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে অস্থিরতা বিরাজ করছে, সেসব অঞ্চলে ভারত হয়তো এই রেলপথ ব্যবহার করতে চাইবে। এসব রাজ্যে অতীতে ভারতীয় নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সংঘাতও হতে দেখা গেছে। অন্যদিকে চীন-ভারত সীমান্তেও বিভিন্ন সময় সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হতে দেখা গেছে।’

তৌহিদ হোসেন আরও বলেন, ‘এমন সংঘাতময় পরিস্থিতিতে বা দুঃসময়ে ভারত অবশ্যই এসব ট্রানজিট রুট ব্যবহার করতে চাইবে এবং সেটিই দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তার সবচেয়ে বড় কারণ হয়ে উঠতে পারে।’

বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ূন কবির বলছেন, ট্রানজিট দেওয়ার পর সেটির ওপর বাংলাদেশ কতটুকু নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবে, সেটির ওপরেই নিরাপত্তা হুমকির বিষয়টি অনেকাংশে নির্ভর করবে। ট্রানজিটে যদি শুধু পণ্য পরিবহনের কথা বলা থাকে, তাহলে সেটি ছাড়া ট্রেনে অন্য কিছু আনা-নেওয়া করা হচ্ছে কি না, সেটি যদি ঠিকমতো না দেখা হয় বা সেটির নিয়ন্ত্রণ যদি বাংলাদেশের হাতে না থাকে, তাহলে তো সমস্যা হতেই পারে।’

বুড়িগঙ্গায় লঞ্চডুবিতে ৩৪ প্রাণহানির ৪ বছর পার

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ১২:২৯ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ১২:২৯ পিএম
বুড়িগঙ্গায় লঞ্চডুবিতে ৩৪ প্রাণহানির ৪ বছর পার
ছবি: সংগৃহীত

বুড়িগঙ্গায় ২০২০ সালের ২৯ জুন ময়ূর-২ নামের লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে গিয়েছিল মর্নিং বার্ড নামের লঞ্চ। ওই ঘটনায় মর্নিং বার্ড লঞ্চের ৩৪ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে। হৃদয়বিদারক ওই ঘটনার পরদিন ৩০ জুন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলার পর চার বছর পেরিয়ে আজ ৩০ জুন পাঁচ বছরে পড়ল। এতদিনেও ওই মামলার বিচার সম্পন্ন হয়নি।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিমলচন্দ্র সমাদ্দারের দাবি, ‘এতদিনে এই মামলার রায় হয়ে যেত। তবে আসামিপক্ষের সময়ক্ষেপণপ্রবণতার কারণে এখনো বিচার সম্পন্ন হয়নি।’

গতকাল শনিবার তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘মামলার সাক্ষীদের মধ্যে দুই-চারজন বাদে সবাইকে আমরা আদালতে হাজির করে তাদের সাক্ষ্য নিয়েছি। কিন্তু আসামিপক্ষ সাফাই সাক্ষ্য দেওয়ার কথা বলে আদালতের কাছ থেকে বারবার সময় নিয়েছে। সাফাই সাক্ষ্যের জন্য তারা ৮-১০ জনের তালিকাও দিয়েছে আদালতে। সাফাই সাক্ষ্য সম্পন্ন হলে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হবে। বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসারে তারপর মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।’

আরেক প্রশ্নের উত্তরে আইনজীবী বলেন, আসামিপক্ষ সাফাই সাক্ষ্যের কথা বলে সময় চেয়েছে। এটি মামলাটিকে দীর্ঘসূত্রতায় ফেলার জন্য। কিন্তু আদালত সময় মঞ্জুর না করলে তারা এই আবেদন নিয়ে হাইকোর্টে যাবে। তাতে আরও বেশি সময়ক্ষেপণ হতে পারে।

আদালতের একটি সূত্র বলছেন, ‘এ মামলায় ৪২ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করি, আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে। সাক্ষ্যে এটা পরিষ্কার হয়েছে যে ঘাতক ময়ূর-২ লঞ্চটি দ্রুতগতিতে ঘাটে যাওয়ার সময় অপর লঞ্চ মর্নিং বার্ডকে ধাক্কা দিয়েছিল। ইচ্ছাকৃতভাবে এ ধাক্কা দেওয়ার কারণে এতজন মানুষ মারা গেছেন।’

এ ঘটনায় অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগ এনে নৌ-পুলিশ এই মামলা করে। মামলার আসামিরা হলেন ময়ূর-২ লঞ্চের মালিক মোসাদ্দেক হানিফ ছোয়াদ, মাস্টার আবুল বাশার মোল্লা, সহকারী মাস্টার জাকির হোসেন, চালক শিপন হাওলাদার, শাকিল হোসেন, সুকানি নাসির হোসেন মৃধা, গিজার হৃদয় হাওলাদার, সুপারভাইজার আব্দুস সালাম, সেলিম হোসেন হিরা, আবু সাঈদ ও দেলোয়ার হোসেন সরকার।

তাদের আইনজীবী সুলতান নাসের বলেন, ‘৩৬ জন সাক্ষীর মধ্যে কোনো চাক্ষুষ সাক্ষী নেই। সব মিলিয়ে আশা করছি, আসামিরা খালাস পাবেন।’ মামলাটি বর্তমানে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ শেখ হেলাল উদ্দিনের আদালতে বিচারাধীন। আগামী ৪ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য রয়েছে।

ঘটনার দিন ২০২০ সালের ২৯ জুন মর্নিং বার্ড নামের লঞ্চটি মুন্সীগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। কিন্তু সদরঘাটে পৌঁছানোর আগে চাঁদপুরগামী ময়ূর-২ লঞ্চের ধাক্কায় তা ডুবে যায়। ওই দুর্ঘটনায় ৩৪ যাত্রীর প্রাণহানি হয়।

নেত্রকোনা, খুলনা রেজিস্ট্রি অফিস ভবন হচ্ছে না

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ১২:২৩ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ১২:৫৮ পিএম
নেত্রকোনা, খুলনা রেজিস্ট্রি অফিস ভবন হচ্ছে না

২০১৭ সালে শুরু করে নির্ধারিত ৩ বছরে হয়নি। বিভিন্ন অজুহাতে পাঁচবার সংশোধন করে ২০২৪ সালের জুনে শেষ হচ্ছে ‘জেলা রেজিস্ট্রি অফিস ও উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণ’ প্রকল্পের কাজ। কিন্তু শুরু হয়নি নেত্রকোনা জেলা রেজিস্ট্রি অফিস, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা ও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রি অফিস নির্মাণকাজ। 

খুলনা জেলা রেজিস্ট্রি অফিস ভবনেরও একই দশা। কোনো কাজই শুরু হয়নি। এসব রেজিস্ট্রি ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ভবন বাদ দেওয়ার জন্য প্রকল্পটি সংশোধন করা হচ্ছে। সংশোধনের জন্য প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হলে তা যাচাই-বাছাই করতে সম্প্রতি প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

জনগণের সেবার মান বৃদ্ধি, কর্মকর্তাদের দাপ্তরিক সুবিধা বৃদ্ধি ও গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সংরক্ষণের জন্য ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল একনেক সভায় প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে আইন ও বিচার বিভাগ এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতায় গণপূর্ত অধিদপ্তর। 

সংশোধনের ব্যাপারে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট উপ-সচিব মোহাম্মদ মেহেদী হাসান খবরের কাগজকে বলেন, ‘প্রকল্পের কাজ সরকারের নিয়মে করতে হয়। প্রকল্পে কোনো কিছু সংযোজন করতে হলে সংশোধন করতে হয়। অনুরূপভাবে কিছু বাদ দিতে হলেও প্রকল্প সংশোধন করতে হয়। ভূমির সমস্যাসহ বিভিন্ন কারণে কয়েকটি জেলা রেজিস্ট্রি অফিস ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিস বিল্ডিং করা যাচ্ছে না। খরচ কমছে ১৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এ জন্য প্রকল্পটি সংশোধন করা হচ্ছে।’

দীর্ঘ সময়েও অগ্রগতি না হওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে সংশোধনের জন্য পাঠানোর সময় গত বছরের জুন পর্যন্ত খরচ হয়েছিল ২২৯ কোটি টাকা ও কাজ হয়েছিল ৭০ শতাংশ। এরপর কাজ হয়েছে। এ বছরের মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত অগ্রগতি হয়েছে ৮৮ শতাংশ। পিইসি সভায় আলোচনা হয়েছে যেহেতু আজ ৩০ জুন প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাই আর সময় বাড়ানো যাবে না। 

পরিকল্পনা কমিশন ও গণপূর্ত অধিদপ্তর সূত্রে মতে, ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময় ধরা হয়। তখন খরচ ধরা হয়েছিল ৩৬৬ কোটি টাকা। প্রকল্পের প্রধান প্রধান কাজের মধ্যে বিভিন্ন বিল্ডিং নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৮ দশমিক ৫১ একর। এতে খরচ ধরা হয় প্রায় ৫৭ কোটি টাকা। এ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণকাজে ২৫৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়। সীমানাপ্রাচীর, প্রধান ফটক ও গার্ডরুম নির্মাণে খরচ ধরা হয় প্রায় ১৫ কোটি টাকা। 

৩ বছরে তেমন কোনো কাজ না হওয়ায় ব্যয় না বাড়িয়ে প্রথমে সময় বাড়ানো হয় ৬ মাস। তাতেও কোনো কাজ না হলে আবার ১ বছর সময় বাড়িয়ে ২০২১ সালের জুন করা হয়। এরপর করোনা শুরু হলে সেই অজুহাতে আবার ১ বছর সময় বাড়ানো হয়। 

তার পরও কাজের গতি বাড়েনি। আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বিশেষ প্রথম সংশোধনী ডিপিপির অনুমোদন দেয়। তাতে সময় বাড়ানো হয় ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। কিন্তু জমি অধিগ্রহণসহ বিভিন্ন জটিলতায় আটকে যায় খুলনা, নেত্রকোনা, নারায়ণগঞ্জ, লক্ষ্মীপুরের রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণের কাজ।
 
এই সংশোধনের মাধ্যমে ১০ জেলা রেজিস্ট্রি অফিস নির্মাণ, ২টি জেলা অফিসের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ, ৬৪ উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস নির্মাণ, ১টি উপজেলা অফিসের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ, ৫ জেলায় জেলা রেজিস্ট্রি অফিস নির্মাণের লক্ষ্যে জমি অধিগ্রহণ ও ৪৪টি উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস নির্মাণের লক্ষ্যে ভূমি অধিগ্রহণ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এসব কাজ করার জন্য সময়ও বাড়ানো হয় দেড় বছর অর্থাৎ, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। 

উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) ঢাকা বিভাগের গাজীপুর রেজিস্ট্রি অফিস ভবন, রাজবাড়ী ও নারায়ণগঞ্জ রেজিস্ট্রি অফিস ভবন, রাজশাহীর পাবনা, নওগাঁ ও বগুড়া, রংপুরের ঠাকুরগাঁও ও নীলফামারী এবং খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গা ও বরিশাল রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। 

এ ছাড়া যেসব সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণ করার কথা তা হলো- ফরিদপুরের সদরপুর, টাঙ্গাইলের মধুপুর, টাঙ্গাইল সদর ও ধনবাড়ী, ঢাকার কামালপুর, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর ও শরীয়তপুরের জাজিরা। জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জ, ময়মনসিংহের ধোবাউরা, কান্দিপাড়া ও নান্দাইল উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস। এ ছাড়া নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ, আটপাড়া ও কলমাকান্দা সাব-রেজিস্ট্রি করার কথা। 

নোয়াখালী সদর, বসুরহাট ও সেনবাগ, চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও দক্ষিণ (মোহনগঞ্জ), ব্রাক্ষণবাড়িয়ার কসবা, নাসিরনগর, চট্টগ্রামের জোড়ারগঞ্জ। প্রকল্পের আওতায় বগুড়ার শেরপুর ও শিবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া, পাবনার চাটমোহর, সুজানগর ও বেড়া। এ ছাড়া জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট, ফুলবাড়ী, খানসামা ও বিরামপুর, ঠাকুরগাঁয়ের বুল্লিবাজার, সাতক্ষীরার ইসলামকাঠি ও শ্যামনগর, খুলনার পাইকগাছা, নড়াইলের কালিয়া, মাগুরার শালিখা ও মোহাম্মদপুর, ঝিনাইদহের শৈলকুপা, মহেশপুর ও কালীগঞ্জ, মেহেরপুরের গাংনী, বরিশালের মুলাদী ও রহমতপুর, পিরোজপুরের ইন্দরকানি ও মঠবাড়িয়া, বরগুনার আমতলী, তালতলী ও বেতাগী, পটুয়াখালীর খেপুপাড়া ও গলাচিপা, ভোলার তজুমদ্দিন, সিলেটের বিশ্বনাথ ও হবিগঞ্জে সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণ করার কথা বলা হয়। 

এ ছাড়া ১৭টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণেরও সিদ্ধান্ত হয়। সেগুলো হলো-নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ, শরীয়তপুরের জাজিরা, টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী ও গোপালপুর, মানিকগঞ্জের সিংগাইর ও দৌলতপুর, চট্টগ্রামের জোড়ারগঞ্জ, ব্রাক্ষণবাড়িয়ার আখাউড়া, ফেনীর দাগনভূঁইয়া, পাবনার ঈশ্বরদী, বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জ, ঝিনাইদহের মহেশপুর, শৈলকুপা ও কালীগঞ্জ, মাগুরার শালিখা, মেহেরপুরের গাংনী, গাইবান্ধার ফুলছড়ি, নীলফামারীর ডিমলা, কুড়িগ্রামের চররাজিবপুর, লালমনিরহাটের আদিতমারী, পাটগ্রাম ও সিলেটের দক্ষিণ সুরমা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। 

প্রকল্পটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও বাস্তবায়নে গতি বাড়েনি। তাই গত ২০২৩ সালের ১১ আগষ্ট প্রকল্প স্টেয়ারিং কমিটির (পিএসসি) সভায় দ্বিতীয় সংশোধনীর সিদ্ধান্ত হয়। কারণ শুরু হয়নি নেত্রকোনা জেলা রেজিস্ট্রি অফিসের কাজ, পুরোনো স্থাপনা থাকায় খুলনা জেলা রেজিস্ট্রি অফিসের কাজও শুরু করা যায়নি। দীর্ঘ এ সময়ে জমি অধিগ্রহণ হয়েছে ৩৬ রেজিস্ট্রি অফিস নির্মাণ ও ৭টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণের।

সিংগাইর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস সাইট এলাকাটি ১৩ ফুট গভীরে হওয়ায় অতিরিক্ত খরচ বাড়ছে। সংশোধনীতে তা আনা হয়েছে। সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে প্রকল্পটি মেয়াদ ধরা হয়েছে আজ ৩০ জুন পর্যন্ত। পিইসি সভায় সময় বাড়ানো হবে কি না, সে ব্যাপারে আলোচনা হলে কোনো সময় বাড়ানো হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের হিসাব দাখিলের দাবি সর্বমহলে

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ১১:১২ এএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ১১:২০ এএম
সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের হিসাব দাখিলের দাবি সর্বমহলে
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের হিসাব দাখিলের বিধান নিয়ে আবার বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সংসদের ভেতরে-বাইরে কথা উঠেছে। এমনকি বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ এবং ছাগলকাণ্ডে দেশজুড়ে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদ্য সাবেক সদস্য মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিলের বিষয়টি আবার আলোচনায় এসেছে।

সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি নিয়ে জাতীয় সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্ষমতাসীন দলের দুজন সংসদ সদস্য। গত ২৫ জুন ২০২৪-২৫ সংসদে সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, সরকারি চাকরিজীবীদের দফায় দফায় বেতন বাড়ানোর পরও দুর্নীতি কমেনি। সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে সম্পদের হিসাব দাখিল বাধ্যতামূলক করার জোরালো দাবি জানান তিনি। একই দাবি জানিয়ে সরকারি দলের অপর সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন বলেন, শহরের ৯০ শতাংশ বাড়ি হচ্ছে সরকারি কর্মকর্তাদের। এত বাড়ি, এত জমি হলো অথচ গোয়েন্দারা কেউ টের পেল না।

উচ্চমাত্রার দুর্নীতি কমাতে সরকারি চাকরিজীবীদের কাছ থেকে প্রতিবছর সম্পদের হিসাব নেওয়া এবং তা নিয়মিত হালনাগাদ করতে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ। বাংলাদেশ বিষয়ে আইএমএফের কান্ট্রি রিপোর্টে এ পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার বাংলাদেশের ঋণের তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের অনুমোদনের দিনে কান্ট্রি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। এমন একসময়ে এ পরামর্শ দিল আইএমএফ, যখন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও এনবিআর থেকে প্রত্যাহারকৃত সদস্য মতিউর রহমানের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ খুঁজে বের করতে তদন্ত চলছে।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ২০২২ সালের ১৬ জুন জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন, সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের হিসাবের বিবরণ দেওয়া বাধ্যতামূলক করতে আচরণ বিধিমালা-১৯৭৯ হালনাগাদ করা হচ্ছে। দুই বছর পার হলেও বিধিমালাটি চূড়ান্ত করা হয়নি। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের এক কর্মকর্তা খবরের কাগজকে বলেন, সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদ বিবরণী দাখিল নিশ্চিত করতে পারলে অপরাধ ও দুর্নীতি অনেকাংশে কমে আসবে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘সরকারি চাকরিজীবীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হলে তাদের সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার বিধান বাধ্যতামূলক করতে হবে। আয়কর রিটার্নে সম্পদের হিসাব বিবরণীর তথ্য থাকে। যদি কেউ না দিয়ে থাকে, তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’

তিনি মনে করেন, সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার বিধান বাধ্যতামূলক করা হলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মনে ভয়ভীতি কাজ করবে। এতে করে দুর্নীতি কমবে। 

সরকারি চাকরিজীবীদের পাঁচ বছর পরপর সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার বিধান ১৯৭৯ সালে চালু করা হয়। দেশে বর্তমানে ১৫ লাখ সরকারি চাকরিজীবী আছেন। চাকরিজীবীদের জবাবদিহি নিশ্চিতে আচরণ বিধিমালায় এ নিয়ম যুক্ত করা হয়। কিন্তু চার দশক ধরে এই নিয়ম পুরোপুরি প্রতিপালন করা যায়নি।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যমান সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, সরকারি চাকরিজীবীদের প্রতি পাঁচ বছর পর সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রত্যেক সরকারি চাকরিজীবীর প্রতি পাঁচ বছর অন্তর প্রদর্শিত সম্পত্তির হ্রাস-বৃদ্ধির হিসাব বিবরণী যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারের কাছে জমা দিতে হবে। কিন্তু ৪৩ বছর আগের এ বিধানকে মানছেন না সরকারি চাকুরেরা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ১৭ জানুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের সময় দুর্নীতি বন্ধে সরকারি চাকরিজীবীদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন। এর মধ্যে দুর্নীতি প্রতিরোধে সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা দেওয়ার বিষয়টিও ছিল। প্রধানমন্ত্রীর ওই অনুশাসন প্রতিপালন করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এরপর কয়েক দফা চিঠি দেওয়া হয় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে। কিন্তু এত বছর অতিক্রম করার পরও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়ন হয়নি।

দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান বর্তমানে ভোক্তার অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘বর্তমানে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ১৪ থেকে ১৫ লাখ। তাদের প্রত্যেককে যদি মূল্যায়ন না করা হয়, তাহলে সম্পদের হিসাব জমা দিয়ে কোনো লাভ হবে না। অনেকে আছেন, যারা নিজের নামে সম্পত্তি করেন না। তাই সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার বিধান বাধ্যতামূলক করা হলেই যে দুর্নীতি প্রতিরোধ হবে, এটিকে আমি কার্যকর পদক্ষেপ মনে করি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘শুধু সম্পদের হিসাব জমা দিয়ে লাভ নেই। যারা দুর্নীতি করছে, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘কোথায় দুর্নীতি হচ্ছে আমরা সবাই জানি। ওই সব জায়গায় দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করতে পারলে সেটি হবে কার্যকর পদক্ষেপ।’

জনপ্রশাসন মন্ত্রণায়ের একটি সূত্র বলেছে, বিদ্যমান ১৯৭৯ সালের সরকারি আচরণ বিধিমালা সংশোধনের কাজ চলছে। সংশোধিত বিধিমালা অনুযায়ী প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবে।

২০২৩ সালের নভেম্বরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একটি সভা হয়। সেখানে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা-১৯৭৯ নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় বলা হয়, ‘সরকারি চাকরিতে যোগদানের সময় এবং প্রতি পাঁচ বছর অন্তর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদ হ্রাস-বৃদ্ধির হিসাব দাখিলের বাধ্যবাধকতা আছে। কিন্তু নিয়মিত এ বিধানাবলি অনুসরণ করে হিসাব দাখিলের প্রশাসনিক চর্চা নেই। তবে এ অচল অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা-২০২২-এ আয়কর রিটার্ন স্লিপ জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।’

সম্পদের হিসাব দাখিলের নিয়ম শিথিল করা হয়েছে: ২০২৩ সালের নভেম্বরে সরকারি চাকরিজীবী আচরণ বিধিমালা সংশোধনের ক্ষেত্রে শর্ত শিথিল করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের হিসাবে ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। যারা নিয়মিত এনবিআরে আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন, তাদের আলাদাভাবে কোনো সম্পদের হিসাব জমা দিতে হবে না। সরকার প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর এনবিআরে দাখিল করা সম্পদের হিসাব বিবরণী সংগ্রহ করবে। জানা গেছে, প্রস্তাবিত সংশোধনী এনবিআরের সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধির সঙ্গে সাংঘর্ষিক কি না, তা যাচাই- বাছাই করছে আইন মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্টদের সম্মতি পাওয়া সাপেক্ষে বিধিমালাটি বাস্তবায়ন হলে সরকারি চাকুরেদের আলাদা করে সম্পদের হিসাব দিতে হবে না। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সংশোধিত বিধিমালা কার্যকর হলে সম্পদ বিবরণী দাখিলের প্রক্রিয়া আরও দুর্বল হয়ে পড়বে এবং দুর্নীতি বাড়বে। কারণ সরকারি চাকরি বিধিমালা প্রণয়নের সময় আয়কর রিটার্ন ছাড়াও সম্পদ বিবরণী দাখিলের বিধান করা হয়েছিল এবং বর্তমানেও সে যৌক্তিকতা ফুরিয়ে যায়নি।

জটিলতা বাড়বে: এনবিআর সূত্র বলেছে, সংশোধিত বিধিমালাটি চূড়ান্ত হলে আইনি জটিলতা বাড়বে। বিদ্যমান এনবিআরের আইন অনুযায়ী, আয়কর বিবরণীতে জমা দেওয়া তথ্য সংরক্ষণ করার বাধ্যবাধকতা আছে এবং তা প্রকাশও করা যাবে না। এই খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, আদালত চাইলে কিংবা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মতো রাষ্ট্রীয় তদন্তকারী সংস্থা চাইলেই কেবল ব্যক্তিশ্রেণির করদাতার যেকোনো তথ্য প্রদান করতে পারে এনবিআর। সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে এখন এই নিয়ম বদলে ফেলা হয়েছে। সে অনুযায়ী এনবিআর নিজেই এখন তাদের সম্পদ বিবরণী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেবে। অভিযোগ আছে, একশ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এনবিআরে জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে প্রকৃত সম্পদ দেখান না। বেনামে সম্পদ লুকিয়ে রাখেন।

আচরণবিধি অনুযায়ী সব সরকারি চাকরিজীবীর সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। যাদের টিআইএন আছে এবং ৪০ লাখ টাকার বেশি সম্পদধারী কিংবা বাড়ি-গাড়ি আছে, এমন সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের হিসাব দেওয়া বাধ্যতামূলক। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআরের সাবেক সদস্য আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সরকারি চাকরিজীবীদের আলদাভাবে সম্পদ হিসাব জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই। বর্তমান আয়কর আইনে রিটার্ন দাখিলের সময় সম্পদের হিসাব বিবরণী দিতে হয়।

সরকার যদি এই তথ্য চায়, তাহলে এনবিআর দিতে বাধ্য থাকবে। এর বাইরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পৃথকভাবে সম্পদের হিসাব দেওয়ার কোনো বিধান নেই। তিনি বলেন, বিদ্যমান আয়কর আইনে কোনো ব্যক্তি করদাতার তথ্য দেওয়ার নিয়ম নেই। সরকার যদি চায় তাহলে আইন সংশোধন করতে পারে। আসলে সরকার কী চায়, তার ওপর নির্ভর করছে বিষয়টি।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ১১:০২ এএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ১১:০৮ এএম
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা

সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিমে’ অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে নজিরবিহীন অচলাবস্থার দিকে যাচ্ছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। একই ইস্যুতে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সম্মিলিত শাট ডাউন বা কর্মবিরতি কর্মসূচির কারণে এই অবস্থা তৈরি হচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি পালন করলেও সরকার কিংবা সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা। নতুন নিয়মে পেনশন বাবদ অধ্যাপক ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা প্রায় কোটি টাকা এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা ৩০ থেকে ৬০ লাখ টাকা কম পাবেন। সুযোগ-সুবিধা কমে যাওয়ার কারণে মেধাবীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করতে আগ্রহ হারাবেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

চলতি বছরের ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় প্রত্যয় স্কিমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়-সংশ্লিষ্টদের অন্তর্ভুক্তির প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে মানববন্ধন, অর্ধদিবস কর্মবিরতি, স্মারকলিপি দেওয়াসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক ও কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে স্বতন্ত্র বেতন স্কেল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুপারগ্রেডে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানান তারা।

রবিবার (৩০ জুন) সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালিত হবে। ২০১৫ সালে বেতন গ্রেডে অবনমনের প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালনের ৯ বছর পর আবারও কঠোর কর্মসূচিতে নামলেন শিক্ষকরা। এবার নতুন মাত্রা যোগ করেছে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অংশগ্রহণ। একই ইস্যুতে সম্মিলিত আন্দোলন এবারই প্রথম বলছেন অনেকে। স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় হওয়ায় সব পন্থি (আওয়ামী লীগ ও বিএনপি-জামায়াত) আন্দোলনে সক্রিয় হচ্ছে।

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আখতারুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘প্রত্যয় স্কিমের যারা প্রবর্তক তাদের সঙ্গে বসে সরাসরি আলোচনা করতে চাই। তারা বলুক বর্তমান সিস্টেমের সঙ্গে কতটুকু লাভজনক হবে, কতটুকু ক্ষতি হবে। এটা যদি করা হতো, তাহলে আমাদের মিছিল-মিটিং করতে হয় না। এর চেয়ে কঠিন আর কী হতে পারে, আমরা প্রিয় শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা থেকে বঞ্চিত করছি। এটা শুনেই তো আমাদের সঙ্গে আলাপ করার কথা। কিন্তু এখনো আলাপ করার প্রয়োজন মনে করেনি তারা। এখন টোটালি শাট ডাউন।’ 

তিনি বলেন, সর্বজনীন পেনশনের স্কিমগুলো অকার্যকর হবে। কারণ ব্যক্তি যখন পেনশনে যান, তখন সমসাময়িক বেতন স্কেলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পেনশন নির্ধারণ করা হয়। এটাই নিয়ম সারা বিশ্বে। পেনশন একটা সুরক্ষা বলয়। প্রত্যয় স্কিমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি চরম অবজ্ঞার।

নতুন নিয়মানুযায়ী, সোমবার (১ জুলাই) থেকে স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং অধীনস্থ অঙ্গপ্রতিষ্ঠানে যোগদানকারী নতুন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রত্যয় স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হবেন। সেখানে স্কিমে যুক্ত ব্যক্তির মূল বেতনের ১০ ভাগ বা সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা কেটে জমা করা হবে। উদাহরণস্বরূপ, যার বেতন ১ লাখ টাকা তার ক্ষেত্রে বেতনের ১০ ভাগ হিসাবে (১০ হাজার টাকা) না কেটে ৫ হাজার টাকা কাটা হবে। অন্যদিকে যার বেতন ১০ হাজার টাকা তার ক্ষেত্রে ১০ ভাগ হিসাবে ১ হাজার টাকা কাটা হবে।

সমপরিমাণ অর্থ প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়া হবে। অবসরের পর সেই টাকা থেকে মাসিক পেনশন পাবেন। বিষয়টিকে বৈষম্যমূলক বলছেন আন্দোলনকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। নতুন নিয়ম পর্যালোচনা করে একটি রিপোর্ট তৈরি করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। সেখানে ১৩টি পয়েন্ট উপস্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, বর্তমান নিয়মে শিক্ষকদের কোনো টাকা কাটা হয় না। নতুন নিয়মে টাকা কাটা হবে। বর্তমানে একজন অধ্যাপক এককালীন আনুতোষিক পান ৮০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। নতুন নিয়মে এককালীন কোনো টাকাই পাবেন না। এ ছাড়া নমিনিদের সুযোগ-সুবিধা, বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট, এলপিআর-সংক্রান্ত নির্দেশনা না থাকাসহ নানা অসংগতি তুলে ধরা হয়েছে।

শিক্ষক-কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমানে পেনশন বাবদ এককালীন আনুতোষিক, ছুটি নগদায়ন, বেনোভোলেন্ট ফান্ড বাবদ ২৪ মাসের বেতন, প্রভিডেন্ট ফান্ড হিসাবে কাটা টাকা (সুদ-আসলে), এলপিআর বাবদ ১২ মাসের বেতন সুবিধা পান। সব মিলিয়ে অধ্যাপকরা কোটি টাকার বেশি, কর্মকর্তারা কোটি টাকার কাছাকাছি, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীরা ৫০ থেকে ৬০ লাখ এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা কম পাবেন।

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পর্যায়ক্রমে পদোন্নতি পেয়ে সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক হন। এটা পদোন্নতি হলেও এ জন্য বিজ্ঞাপনসহ নতুনভাবে আবেদন করতে হয়। নতুন নিয়োগ হিসেবে বিবেচিত হয়। কর্মরত কোনো সহযোগী অধ্যাপক যদি অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ পান, তিনি যদি এই স্কিমে যুক্ত হন, তাহলে তিনিও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং সিনেট সদস্য ড. মিজানুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর তুলনায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন কম। যেখানে শিক্ষকদের উচ্চতর বেতন স্কেল কাঠামো নিয়ে ভাবার কথা, সেখানে উল্টো সুযোগ-সুবিধা কমানো হচ্ছে। এর ফলে মেধাবীদের শিক্ষকতায় আসার আগ্রহ কমে যাবে। শিক্ষার মান দ্রুতই খারাপ হবে।’

শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের যুগ্ম মহাসচিব এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুর রহিম খবরের কাগজকে বলেন, ‘আশা করছিলাম আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। আমরা সবার স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে আন্দোলন করছি। বর্তমানে যারা শিক্ষার্থী তারা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক বা কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন তারা নতুন নিয়মে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’ 

বাংলাদেশ আন্তবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুল মোতালেব খবরের কাগজকে বলেন, নতুন নিয়ম কার্যকর হলে শিক্ষকদের মতো কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও কিছু পাবেন না। অনেকটা বেসরকারি চাকরির মতো হয়ে যাবে। এককালীন কোনো সুযোগ-সুবিধাই পাবেন না। কোনো সুরক্ষায় থাকল না। ৩০ জুনের মধ্যে দাবি মানা না হলে তিন দিন লাগাতার কর্মবিরতি পালন করা হবে।

এমপিদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুবিধা বহাল

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ১০:০৭ এএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ১০:২৫ এএম
এমপিদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুবিধা বহাল
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ শুল্কমুক্ত সুবিধা বাতিল করে তার পরিবর্তে শুল্ক বসানোর ঘোষণা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। শেষ পর্যন্ত  চাপের মুখে সেই অবস্থান থেকে সরে এলেন তিনি। অর্থাৎ এমপিরা আগের মতোই গাড়ি আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবেন।

আবার ধনীদের জন্য কর ছাড় দিলেন অর্থমন্ত্রী। বাজেট ঘোষণার সময় ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা না বাড়ালেও ধনীদের কর হার কমিয়ে দিয়েছেন তিনি। সর্বোচ্চ কর হার ৩০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হলেও শনিবার (২৯ জুন) অর্থবিল পাসের সময় তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে আগের মতোই সর্বোচ্চ কর হার ২৫ শতাংশ রইল। এতে ধনীদের কম কর দিতে হবে। এ ছাড়া কালোটাকা সাদা করার সুযোগের প্রস্তাবও পাস করা হয়েছে।

কর প্রস্তাবে এমন বেশ কয়েকটি সংশোধনী এনে শনিবার জাতীয় সংসদে অর্থবিল ২০২৪ পাস করা হয়। বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্যের প্রস্তাবের ভিত্তিতে অর্থমন্ত্রী হাসান মাহমুদ আলী অর্থবিল পাসের আগে নতুন কিছু সংশোধনী আনেন। পরে কণ্ঠভোটে বিলটি সর্বসম্মতি ক্রমে পাস হয়। এর মধ্য দিয়ে বাজেট ঘোষণার  সময় তিনি যেসব কর প্রস্তাব করেছেন তা শনিবার সংসদে পাস হয়েছে। 

উল্লিখিত প্রস্তাবগুলো ছাড়া শনিবার আরও বেশ কয়েকটি সংশোধনী আনেন অর্থমন্ত্রী। যেমন: বাজেট ঘোষণার  সময় অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প স্থাপনে কর অবকাশ সুবিধা প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেন তিনি। কিন্তু ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ক্ষেত্রে সংশোধনী আনা হয়। ফলে অর্থনৈতিক অঞ্চলে আগের মতোই শিল্প স্থাপনে কর অবকাশ সুবিধা অব্যাহত থাকবে। আবার বাজেট ঘোষণার সময় অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প স্থাপনে ব্যবহৃত মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে শূন্য শুল্ক সুবিধা উঠিয়ে দেওয়ার কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু সংশোধনীতে এ ক্ষেত্রে শূন্য শুল্ক বহাল রাখার কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। 

উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে ছোট করদাতাদের স্বস্তি দিতে বাজেটের আগে থেকেই বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছিল। গত ৬ জুন বাজেট ঘোষণার সময় করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর দাবি রাখেননি। বরং তখন সর্বোচ্চ কর হার ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়।

কিন্তু শনিবার অর্থবিল পাসের সর্বোচ্চ কর হার ৩০ শতাংশের প্রস্তাবটি তুলে নেন।

বাজেট ঘোষণার পর কালোটাকা সাদা করার সুযোগ নিয়ে নানা সমালোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত অর্থমন্ত্রী এই সুযোগ দেওয়ায় অনড় থাকলেন। আগামী ১ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এক বছরের জন্য কালোটাকা সাদা করার সুযোগ থেকে গেল।

আপনি ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করা নগদ টাকা ১৫ শতাংশ কর দিয়ে সাদা করতে পারবেন। আবার ফ্ল্যাট-প্লট কিনেও তা বৈধ করতে পারবেন। এ জন্য এলাকাভেদে নির্দিষ্ট হারে কর দিতে হবে। এ ছাড়া কোম্পানিগুলোর নিজেদের এই অপ্রদর্শিত অর্থ ১৫ শতাংশ কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ রয়েছে।

বাজেট ঘোষণার সময় শহর-গ্রাম নির্বিশেষে সারা দেশে বিয়েশাদি অনুষ্ঠানের জন্য কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করলে ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী। এই কর প্রস্তাব সংশোধনী করে এখন থেকে শুধু সিটি করপোরেশন এলাকার কমিউনিটি সেন্টারে বিয়েশাদি অনুষ্ঠান করলেই রিটার্ন জমা দিতে হবে। 

আয়কর ফাইল অডিটের ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হয়। কোনো করদাতা যদি আগের বছরের চেয়ে কমপক্ষে ১৫ শতাংশ বেশি কর দেন তা হলে ওই করদাতার ফাইল অডিট করা হবে না। কোনো পরিবারের সদস্য যদি কাউকে সম্পদ উপহার দেন, তা হলে তাকে উৎসে কর দিতে হবে না। 

আজ বাজেট পাস: শনিবার অর্থবিল-২০২৪ পাসের মধ্য দিয়ে বাজেটে কর প্রস্তাবগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আজ পাস হবে প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট। এর পরে সোমবার (১ জুলাই) থেকে নতুন অর্থবছরে এই বাজেট বাস্তবায়ন শুরু হবে।