![কুমিল্লাকে বাস্তবতা বুঝাল সিলেট](uploads/2024/02/20/1708411714.BPL..jpg)
পচা শামুকেই কি পা কাটল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের? বিপিএলে প্লে-অফ অনেকটাই নিশ্চিত করে রাখা দলটি গতকাল সোমবার হেরে গেল সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ১৭৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে ব্যর্থ হয়েছে তারকা সমৃদ্ধ দলটি। হেরেছে ১২ রানের ব্যবধানে।
অথচ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির পথে ছিলেন লিটন দাস। শেষ পর্যন্ত তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছাতে ব্যর্থ তিনি। তারপরও নামের পাশে ৫৮ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৮৫ রানের ঝকঝকে ইনিংস। কিন্তু অন্য প্রান্তে তাওহিদ হৃদয়, জনসন চার্লস, মঈন আলীরা পারলেন না পরিস্থিতির দাবি মেটাতে। এমনকি টি-টোয়েন্টির ফেরিওয়ালা আন্দ্রে রাসেলও ব্যর্থ। শেষ দিকে যাকে বেশি বেশি স্ট্রাইক দেওয়ার চেষ্টা করেছেন লিটন। ম্যাচ শেষে লিটনের কণ্ঠে তাই হতাশা, ‘ভেবেছিলাম রাসেল ম্যাচ জিতিয়ে দেবে।’
কিন্তু সেটা হয়নি। শেষ বলে আউট হওয়া রাসেল ১৪ বলে করেন ২৩ রান। লিটন থামেন একই ওভারের প্রথম বলে। অথচ তানজিম হাসান সাকিবের করা ওভারটিতে দলটির প্রয়োজন ছিল ২৫ রান। শেষ পর্যন্ত কুমিল্লা থামে ৬ উইকেটে ১৬৫ রানে।
এই হার হয়তো বা খুব বেশি প্রভাব পড়বে না কুমিল্লার প্লে-অফ খেলার সমীকরণে। এমনকি দুই ম্যাচ হাতে থাকায় সেরা দুইয়ের পথটাও খোলা তাদের সামনে। তবে সিলেট স্ট্রাইকার্স কিন্তু একটা সতর্কবার্তাই দিয়ে গেল কুমিল্লাকে। খেলাটা ক্রিকেট। তারায় তারায় খচিত দল নিয়েও এলে এখানে ম্যাচ জেতা কঠিন। সংবাদ সম্মেলনে লিটন তো স্বীকারই করলেন, ‘অধিনায়ক হিসেবে আমার মনে হয় (হারায়) ভালোই হয়েছে। আপনি প্রতিদিন আসবেন, জয় নিয়ে যাবেন। এমন হলে আপনার বডি এমনিতেই রিল্যাক্সড হয়ে যাবে। এটা (হার) বাস্তবতা বুঝার সুযোগ করে দিয়েছে আমাদের। আপনার হাতে বড় খেলোয়াড় আছে। কিন্তু আপনি যদি ঠিকঠাক পারফর্ম করতে না পারেন, তাহলে ম্যাচ জিততে পারবেন না। আজকেই তার প্রমাণ।’
এই ম্যাচ শুরুর আগে সিলেটের পক্ষে বাজি ধরার লোক একেবারেই কম ছিল, এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। এরপরও দলটি জিতল, কারণ তাদের একজন বেনি হাওয়েল ছিলেন। ছয় নম্বরে নেমে যিনি ৩১ বলে ৬২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন ৬ চার ও ৪ ছক্কায়। সঙ্গে কেনার লুইস ২৫ বলে ৩৩, মোহাম্মদ মিঠুন ২০ বলে ২৮ রান করেন। সুবাদে ৫ উইকেটে ১৭৭ রানের পুঁজি পায় টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামা সিলেট। কুমিল্লার হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা সুনিল নারিন ১৬ রান খরচায় নেন ২টি উইকেট। বাংলাদেশের তরুণ লেগি রিশাদ হোসেনও পান ২ উইকেট।
এমনিতে লক্ষ্য তাড়ায় কুমিল্লার শুরুটা ভালো ছিল না। দুই ম্যাচ পর একাদশে ফেরা ইমরুল কায়েস ৫ বলে ফেরেন ৩ রান করে। পাওয়ার প্লের শেষ বলে ফেরেন ছন্দে থাকা হৃদয়। করেন ১৫ বলে ১৭ রান। ৯ ওভার শেষে দলটির রান ছিল ২ উইকেটে ৫৭। আরিফুলের করা দশম ওভারে তিন চার ও এক ছক্কা হাঁকিয়ে লিটন তার পাখা মেলেন। কিন্তু অন্য প্রান্তের ব্যাটাররা ছিল নিষ্প্রভ। ১৩তম ওভারে ৪ ও ১৫তম ওভারে ৬ রান তুলতে পারে দলটি। ১৬তম ওভারে মাত্র ১ রানের বিপরীতে উইকেটও হারায়। ফিরে যান ২১ বলে ১২ রান করা চার্লস। শেষ চার ওভারে তাই ৬০ রানের সমীকরণ দাঁড়িয়ে যায় কুমিল্লার সামনে। একদিকে ভয়ংকর হয়ে ওঠা লিটন ছিলেন। অন্যপ্রান্তে মঈন আলী (০) দ্রুত ফিরে যাওয়ার পর রাসেল এসেছিলেন। তাই আশায় ছিল কুমিল্লার দর্শক। কিন্তু খেলাটা যে ক্রিকেট। বলে কয়ে এখানে হয় না কিছুই। কুমিল্লাও পারেনি। দারুণ ব্যাটিংয়ের পর বল হাতে ১ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা সিলেটের ইংলিশ ক্রিকেটার বেনি হাওয়েল।