![সপ্তাহের ব্যবধানে দুবার জলাবদ্ধ সিলেট নগরী](uploads/2024/06/09/Sylhet_Bonna-1717937527.jpg)
মাত্র তিন ঘণ্টার বৃষ্টিতে গতকাল শনিবার (৮ জুন) রাতে সিলেট নগরীর শতাধিক এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ভারী বৃষ্টিতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুবার জলমগ্ন হলো সিলেট নগরী। সেদিন রাত সাড়ে ৯টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলা এ বৃষ্টিতে নগরীর কোথাও হাঁটু আবার কোথাও কোমর সমান পানি দেখা দেয়। এই ভারী বৃষ্টিপাতে জলাবদ্ধ হয়ে মধ্যরাতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে সিলেট নগরীর বাসিন্দাদের। তবে বৃষ্টি কমে যাওয়ায় রবিবার (৯ জুন) সকালে পানি নেমে যায়।
গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে বৃষ্টি শুরু হয়ে চলে রাত ১২টা পর্যন্ত। টানা এই বৃষ্টিতে নগরীর বেশির ভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। পানি ঢুকে পড়ে বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে। পানিতে তলিয়ে যায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিচতলাও। এতে দুর্ভোগে পড়েন রোগী ও তাদের স্বজনরা।
রাত ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত সরেজমিন দেখা গেছে, নগরীর দরগা মহল্লা, পায়রা, চৌহাট্টা, জিন্দাবাজার, কাজল শাহ, মেডিকেল রোড, বাগবাড়ী, কালীবাড়ি, হাওলাদারপাড়া, সোবহানিঘাট, উপশহর, যতরপুর, তেরোরতন, সোনারপাড়া, কেওয়াপাড়া, সাগরদীঘিরপার, পাঠানটুলা, মিয়া ফাজিলচিশত, জালালাবাদ, হাউজিং এস্টেট, শাহী ঈদগাহ, ঘাসিটুলা, হাওয়াপাড়া, মীরাবাজার, শিবগঞ্জ, মাছিমপুর, জামতলা ও তালতলা এলাকায় পানি থইথই করছে। ঘরমুখী মানুষ যানবাহনের অভাবে পানি মাড়িয়ে হেঁটেই বাড়ি ফিরছিলেন। সড়কে পানি বেশি হওয়ায় মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকরা বিপাকে পড়েন। এসব এলাকার বেশির ভাগ বাসায় পানি ঢুকে পড়ে।
এর আগে গত ২ জুন রাতে ভারী বৃষ্টিতে সিলেট নগরীতে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। তখনো পানিতে তলিয়ে যায় নগরের শতাধিক এলাকা। এতে দুর্ভোগে পড়েন এসব এলাকার বাসিন্দারা। সে রাতেও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পানি ঢুকে পড়েছিল।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৩ মিলিমিটার এবং ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ২২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। আর রাত ১২টা থেকে রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয় ৩৪ মিলিমিটার।
নগরীর দরগাহ মহল্লা এলাকার বাসিন্দা একটি প্রকাশনা সংস্থার স্বত্বাধিকারী রাজিব চৌধুরী বলেন, শনিবার রাতে কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই দরগাহ মহল্লা এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। সড়কে হাঁটু সমান পানি জমে। এলাকার বিভিন্ন বাসাবাড়িতেও পানি ঢুকে পড়ে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে এনিয়ে দুবার বাসায় পানি ঢুকল। সিলেটে সবচেয়ে বড় যন্ত্রণার নাম জলাবদ্ধতা।
নগরীর একাধিক বাসিন্দা বলেন, নগরীর ৪২টি ওয়ার্ডের সব নিচু এলাকা তলিয়ে গেছে। অনেকে রাতের খাবার প্রস্তুত করার আগেই রান্নাঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন। এ ছাড়া অনেক বাসাবাড়িতে বৃষ্টির পানির সঙ্গে ভেসে ময়লা-আবর্জনাও ঢুকে পড়েছে। সব মিলিয়ে চরম ভোগান্তি পোহান লোকজন।
এর আগে গত ২৯ মে এক রাতের ঢলে তলিয়ে গিয়েছিল সিলেটের পাঁচ উপজেলা। পুরো জেলায় দেখা দিয়েছিল বন্যা পরিস্থিতি। তবে বন্যার পানি এখন কমে আসছে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির মধ্যে এক সপ্তাহের মধ্যে দুবার ডুবল সিলেট নগর।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর বলেন, রেকর্ড বৃষ্টিপাতের কারণে কিছুক্ষণ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছিল। তবে সকাল হওয়ার আগেই পানি নেমে যায়।