![শরীয়তপুরে বোরো আবাদ শেষ পর্যায়ে](uploads/2024/02/28/1709099755.sariutpur.jpg)
শরীয়তপুরে বোরো আবাদ প্রায় শেষ পর্যায়ে। দেশব্যাপী লাগাতার শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশায় বোরো আবাদ বাধাগ্রস্ত ও বিলম্বিত হলেও শরীয়তপুরে কোনো প্রভাব পড়েনি।
এ বছর জেলায় ২৫ হাজার ৫১০ হেক্টরে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও কৃষি বিভাগ আশা করছে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আরও বেশি জমিতে বোরো আবাদ হবে। এ মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও সময়মতো সার-বীজ পাওয়ায় বোরোর ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষক ও স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, শরীয়তপুর সদরে ৫ হাজার ৩২৩, নড়িয়ায় ৫ হাজার ২২৭, গোসাইরহাটে ৪ হাজার ৩৮০, ভেদরগঞ্জে ৩ হাজার ৮২০, ডামুড্যায় ৩ হাজার ৫০০ ও জাজিরা উপজেলায় ১ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হবে। বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৭৮ হাজার ২২২ টন ধরা হলেও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ধানের ফলন হবে ধারণা করে কৃষি বিভাগ। আবাদ করা বোরোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য জাত হলো ব্রি ধান-২৯, ৫৮, ৭৪, ৮১, ৮৯, ৯২, বিনা-১০, ২৫ ও বঙ্গবন্ধু ধান ১০০। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফলন হয় ব্রি- ৭৪ ধানের, হেক্টরপ্রতি গড়ে ৭ দশমিক ১৫ থেকে ৭ দশমিক ২০ টন উৎপন্ন হয়। জেলায় বোরোর গড় ফলন ৬ দশমিক ৯৫ টন।
শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. রবীআহ নুর আহমেদ বলেন, ‘খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের কথা মাথায় রেখে বোরো ধান আবাদ করা হচ্ছে। মাটির উপযোগিতা যাচাই করে কোন জমিতে কোন জাত আবাদে কৃষক অধিক ফলন পাবেন সে বিষয়ে আমাদের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। একই সঙ্গে কৃষিবান্ধব সরকারের প্রণোদনা, যান্ত্রিকীকরণ ও কারিগরি সহায়তাসহ উন্নত জাতের ব্যবহারে সবসময় কৃষককে সহায়তা ও উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এ মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষক লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও কৃষক বেশি ফলন পাবেন।’
জেলার বার্ষিক ধানের চাহিদা রয়েছে ২ লাখ ৯১ হাজার ৯৪২ টন। বোরোর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৭৮ হাজার ২২২ টন। আউশ আমনের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩২৪ টন, যা জেলার চাহিদার তুলনায় ১৮ হাজার ৬০৪ টন বেশি।
শরীয়তপুর সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের দেওভোগ গ্রামের কৃষক আবু আলেম মুন্সী বলেন, ‘আগে যে পদ্ধতিতে বোরো আবাদ করতাম তাতে খরচ বেশি হলেও ফলন কম পেতাম। কিন্তু গত কয়েক বছর থেকে কৃষি বিভাগের পরামর্শে মাটির উপযোগিতা অনুযায়ী ধানের জাত, লাইনে লাগানো ও জমিতে গাছের ডাল পুঁতে দেওয়ায় গাছের ডালে পাখি বসায় আমাদের কীটনাশক কম লাগছে, জমিতে আগাছাও কম হচ্ছে। ফলে আগের তুলনায় উৎপাদন ব্যয় কমেছে বেড়েছে ফলনও।’
নড়িয়া উপজেলার নশাসন ইউনিয়নের মালতকান্দি গ্রামের কৃষক রুবেল মালত বলেন, ‘এবার টিভি ও পত্রিকায় শীত-কুয়াশায় বোরোর ক্ষতির খবর দেখায় আমরাও একটু চিন্তিত ছিলাম। কিন্তু আল্লাহর রহমতে বীজতলার কোনো ক্ষতি না হওয়ায় আমরা সময়মতো জমিতে ধান লাগাতে পেরেছি। আশা করছি, বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ঝড়-বাদলের আগেই ধান গোলায় তুলতে পারব।’ সূত্র : বাসস