![রমজান উপলক্ষে পাকিস্তানে নিত্যপণ্যের দাম চড়া](uploads/2024/03/12/1710234518.pakisten.jpg)
রমজান মাস উপলক্ষে পাকিস্তানে মুদিসামগ্রী এবং অন্যান্য জিনিসের দাম ব্যাপক বেড়েছে। গত রবিবার পরিচালিত সাপ্তাহিক এক বাজার জরিপে দেখা গেছে, সবজি, রান্নার তেল, ঘি, চিনি, ফলমূল, খেজুর, চা, পানীয়সহ রমজানের বিশেষ পণ্যের দাম বেড়েছে। খবর বিজনেস রেকর্ডারের।
পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা উভয়েই দাম বাড়িয়েছেন এবং ভোক্তাদের কাছ থেকে পণ্যের ইচ্ছামতো দাম নিচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে হতাশ ক্রেতারা বাজার নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বাজার জরিপ অনুযায়ী, পাকিস্তানে এক কেজি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪১৫ রুপিতে। খামারে উৎপাদিত এক ডজন ডিমের দাম ৩০০ রুপি। একইভাবে হাড়সহ গরুর মাংস সরকারনির্ধারিত হারের বিপরীতে প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ৯০০ রুপিতে এবং হাড় ছাড়া মাংস ১ হাজার রুপি কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার রুপিতে এবং কোথাও কোথাও ২ হাজার ২০০ রুপিতে বিক্রি করা হচ্ছে।
ক্রেতাদের অভিযোগ, দোকানদার ও পাইকারি বিক্রেতারা স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত দাম (কৃত্রিম হার) আদায় করছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও মুনাফাখোর ও মজুতদারদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে এবং এই পবিত্র মাসে তাদের (ভোক্তাদের) পরিত্রাণ দিতে খুব একটা ইচ্ছুক নয়।
স্থানীয় বাজারে সবজির দাম বেড়ে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। জরিপে উল্লেখ করা হয়, প্রতি কেজি আদা আগের সপ্তাহের ৯০০ রুপি থেকে বেড়ে ১ হাজার রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। চীনা রসুন প্রতি কেজি ৮০০ রুপিতে এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত রসুন ৬০০ রুপিতে পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ২০০ রুপি এবং টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ রুপিতে।
জরিপে বলা হয়েছে, মটরশুঁটি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২৫০ থেকে ৩০০ রুপিতে, ক্যাপসিকাম ২০০ থেকে ২৫০ রুপি, ঢ্যাঁড়শ ২৫০ রুপি, তরকারি ৬০ রুপি, কাঁচা আলু ১৫০ থেকে ২০০ রুপি, শালগম ৫০ রুপি, বেগুন ১ হাজার রুপি, ধুন্দল ৮০ রুপি, টিন্ডা ১৫০ রুপি এবং লেবুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ রুপিতে।
একইভাবে খুচরা বাজারে কচুর ছড়া কেজিপ্রতি ১৫০ রুপি, করলা ১০০ থেকে ১২০ রুপি, কাঁচামরিচ ১৫০ রুপি, বাঁধাকপি ১৫০ রুপি (কেজি), ক্যাপসিকাম ২০০ রুপি, লাল আলু ৮০ থেকে ১০০ রুপি এবং সাদা আলু ৭০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে।
জরিপে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে ডাল ও অন্যান্য খাদ্যশস্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
জরিপ অনুযায়ী, ভালো মানের চাল (সেলা) কেজিপ্রতি ৩২০ রুপিতে পাওয়া যাচ্ছে। নিম্নমানের চাল পাওয়া যাচ্ছে কেজিপ্রতি ৩০০ রুপিতে। মোটা (টোটা) চাল পাওয়া যাচ্ছে ১৬০ রুপিতে এবং কোথাও কোথাও ১৮০ থেকে ২০০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে।
সমীক্ষায় আরও বলা হয়, মাষকলাই ডাল (ডাল মাশ) কেজিপ্রতি ৫৪০ রুপিতে, মসুর ডাল ৩২০ রুপি, ডাল চিলকা (কালো) ৩২০ রুপি, ডাল চিলকা (সবুজ) ২৬০ রুপি, মুগ ডাল ২৮০ রুপি, ধুতি ডাল ৩০০ রুপি, চনা ডাল (চনা বুট) ২৮০ রুপি, সাদা লবিয়া (ডালজাতীয় শস্য) ৪৫০ রুপি, লাল শিম ৪৪০ রুপি, বেসন ২৮০ রুপি, বড় আকারের সাদা চনা বুট ৩৬০ রুপি, ছোট আকারের সাদা চনা বুট কেজিপ্রতি ৩০০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়া পাইকারি বাজারে দাম আর না কমায় খুচরা বাজারে চিনি প্রতি কেজি ১৫০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা ও পাইকারি বাজারে আটার দামও বেড়েছে। ২০ কেজি আটার বস্তা ২ হাজার ৮০০ রুপি থেকে বেড়ে ২ হাজার ৯০০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। ৮০ কেজির আটার বস্তা ১৩ হাজার রুপি থেকে বেড়ে ১৩ হাজার ৫০০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে স্থানীয় বাজারে মিষ্টান্নসামগ্রী, পানীয়, শিশুদের দুধ, গুঁড়া দুধ, ডায়াপারসহ অন্যান্য পণ্যের দাম আকাশচুম্বী।
স্থানীয় বাজারে ফলের দামও আকাশচুম্বী হয়েছে। জরিপ অনুযায়ী, আপেলের দাম কেজিপ্রতি ৪০০ রুপি, পার্সিমন ১৫০, কলার ডজন ২০০ এবং পেয়ারার কেজি ২০০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া পাকিস্তানের স্থানীয় বাজারে সব ব্র্যান্ড এবং গুণগত মানসম্পন্ন পানীয়র দামও বেশি। কালো চা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ রুপিতে।