![আখাউড়ায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন](uploads/2024/04/28/1714291761.jpg)
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক ফসল ঘরে তুলবেন- এমনটাই স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পৌর এলাকাসহ উপজেলার ধরখার, মনিয়ন্ধ, মোগড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়নে বিস্তীর্ণ মাঠে এবার বোরো ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
কৃষকরা জানান, এ বছর শিলা-বৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়া ও অতি খরার কারণে ধানখেতে পোকামাকড়ের আক্রমণ ও রোগবালাই কম হয়েছে। ফলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৫ হাজার ৭১৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া ও কৃষকদের পরিচর্যার কারণে নির্ধারিত সময়ে জমির ধান পাকতে শুরু করে। এখন পর্যন্ত ২৫ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে এবার প্রায় ছয় টন ধান উৎপাদিত হবে।
আখাউড়া উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রচুর পরিমাণ বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ব্রি-৮৯, ৯২, ৯৬ ও বঙ্গবন্ধু-১০০ জাতের ধানের আবাদ বেশি হয়েছে। কিছু জমিতে ব্রি-২৮ ও ২৯ জাতের ধান আবাদ করা হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া, রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ না থাকায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে মাঠ থেকে ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। প্রায় ২৫ শতাংশ জমির ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা শেষ হবে।’
রামধননগর গ্রামের কৃষক খলিল মিয়া জানান, চলতি মৌসুমে তিনি পাঁচ একর জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। অনুকূল আবহাওয়া ও কৃষি বিভাগের সার্বিক পরামর্শে তার জমিতে এবার ভালো ফলন হয়েছে।
ধরখার ইউনিয়নের রানীখার গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর মোল্লা বলেন, ‘ধান আবাদে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। ফলনও বাম্পার হয়েছে। আমার জমিতে ধান কাটা শুরু করেছি। আশা করছি ঝড়-বৃষ্টি না হলে আগামী তিন-চার দিনের মধ্যে সব ধান ঘরে তুলতে পারব। শুনেছি বাজারে দাম ভালো। আশা করছি এবার লাভ হবে।’
দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের কৃষক ইয়াকুব বলেন, ‘আমার ছয় বিঘা জমিতে ব্রি-৮৯ জাতের বোরো ধানের চাষ করেছি। শুরুর দিকে পানি না পেলেও পরে যথেষ্ট পানি পেয়েছি। প্রায় জমির ধান পেকে গেছে। কয়েক দিনের মধ্যে ধান কাটা-মাড়াই শুরু করব।’
আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া তাবাসসুম বলেন, উপযুক্ত সময়ে কৃষকরা জমিতে ধান রোপণ করার পাশাপাশি জমিতে সেচসহ পরিচর্যা করেন। তা ছাড়া আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে গিয়ে কাজ করছেন। কৃষকদের সব বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া ও আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার ফলন অনেক ভালো হয়েছে।