ঢাকা ২১ আষাঢ় ১৪৩১, শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪

চার বছরে ১১৫ মৃত্যু সুখীর সুখ কেড়ে নিল তিতাস গ্যাস

প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০২৪, ১১:১৮ এএম
আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৪, ১২:১২ পিএম
সুখীর সুখ কেড়ে নিল তিতাস গ্যাস
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার তিলকুনী এলাকায় গ্যাস বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত একটি বাড়ি। খবরের কাগজ

‘ঘরের পাশেই ছিল তিতাসের পাইপলাইন। ছিদ্র দিয়ে গ্যাস বের হয়ে চারপাশে গন্ধ ছড়াতে থাকলে জানানো হয় বাড়ির মালিককে। কিন্তু তিনি কোনো উদ্যোগ নেননি। সেখান থেকে ঘরে গ্যাস জমে হলো বিস্ফোরণ। মারা গেলেন সুখীসহ তার আরও দুই বোন। অথচ কিছুদিন আগেও তার সুখের সংসার ছিল।’ কথাগুলো ফরিদা নামে এক গৃহবধূর। তিনি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে গ্যাস বিস্ফোরণে মারা যাওয়া সুখীর প্রতিবেশী। জ্বলন্ত ঘর থেকে বেরিয়ে সুখী তার কাছেই নবজাতক কন্যাকে দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিলেন। এরপর হাসপাতাল থেকে ফেরেন লাশ হয়ে।  
 
সুখীর মতো নারায়ণগঞ্জের আরও বহু মানুষ জ্বলন্ত আগুনে পুড়েছে প্রাণঘাতী গ্যাস বিস্ফোরণে। গত চার বছরে তিতাস গ্যাসের পাইপ লিকেজ আর সিলিন্ডার বিস্ফোরণের আগুনে দগ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১১৫ জন মানুষ। বেশির ভাগ ঘটনায় তিতাসের পুরোনো পাইপলাইনকে দায়ী করা হলেও এ নিয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। বরং লিকেজ মেরামত আর গ্রাহকের ওপর দোষ চাপিয়ে দায় সেরেছেন।

তবে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, এখনো আগ্নিঝুঁকিতে আছে বহুতল ভবন, মার্কেট ও মসজিদসহ সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল। তাই দুর্ঘটনা কমাতে হলে সমন্বয়ের পাশাপাশি সতর্কতা প্রয়োজন।  পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের তথ্য বলছে, সব শেষ চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি সোনারগাঁয়ে গ্যাস বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে আব্দুর রশিদ এক ব্যক্তি মারা যান। তার আগে ৯ ফেব্রুয়ারি নগরীর কাশিপুরে রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানা ক্রোনি অ্যাপারেলস গ্যাস বিস্ফোরণে দগ্ধ হন ১৪ জন। ৫ ফেব্রুয়ারি রূপগঞ্জের একটি বাড়িতে গ্যাস বিস্ফোরণে এক দম্পতির মৃত্যু হয়। আর ২৬ জানুয়ারি সিদ্বিরগঞ্জে গ্যাসের আগুনে দগ্ধ হন ছয়জন। তাদের মধ্যে সুখীসহ তিন নারী হাসপাতালে মারা যান।   

২০২৩ সালে নারায়ণগঞ্জে ১২৮টি গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনার মধ্যে ১১৮টি ঘটে তিতাসের পাইপলাইনের লিকেজ থেকে। এসব ঘটনায় প্রাণ হারান অন্তত ২৭ জন। আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ৮২ জনকে। ২০২২ সালের ১০৪টি গ্যাস বিস্ফোরণে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। তার মধ্যে তিতাসের লাইনের ত্রুটি থেকে বিস্ফোরণ হয় ৬৯টি। এসব ঘটনায় প্রাণ হারান ১৮ জন। ২০২১ সালে ১১৪টি গ্যাস বিস্ফোরণের দগ্ধ হয়ে মারা যান ২০ জন। ২০২০ সালে ১০৬টি গ্যাস বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ৪৪ জনের। এর মধ্যে তল্লায় মসজিদে বিস্ফোরণেই প্রাণ হারান ৩৪ জন। সব মিলিয়ে গত চার বছরে এ জেলায় গ্যাসের আগুনে নারী ও শিশুসহ অন্তত ১১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

এ তো গেল মৃত্যু আর দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান। তবে বাস্তব চিত্র আরও ভয়াবহ। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকায় এখনো ঝুঁকিতে রয়েছে বহুতল ভবন, মার্কেট ও মসজিদসহ সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলো। ফায়ার সার্ভিসের নারায়ণগঞ্জের উপসহকারী পরিচালক ফখরুউদ্দিন আহমেদ খবরের কাজগকে বলেন, ‘ঘটনার পর বিস্ফোরণের কারণ জানতে তদন্ত করে ফায়ার সার্ভিস। বেশির ভাগ ঘটনাতেই দেখা যায়, পাইপ লিজেক থেকে রুমে গ্যাস জমাট বেঁধে দুর্ঘটনা ঘটে।’ 

তিনি বলেন, ‘রুমে গ্যাস জমাট বাঁধার পেছনের কারণ হলো, তিতাসের যে গ্যাস পাইপ রাইজার হয়ে বাসাবাড়ির দিকে সংযোগ যায়, সে সংযোগ পাইপের লিকেজ।’ ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘বাসাবাড়িতে দরজা-জানালা বন্ধ অবস্থায় যখন গ্যাস জমে থাকে তখন লাইট-ফ্যান চালু করতে গেলে বা ম্যাচ দিয়ে রান্নার কাজ করতে গেলে তা স্পার্ক করে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই বসতিরা দগ্ধ হয়ে যান। তাই দুর্ঘটনা কমাতে সব দপ্তরের সমন্বয় প্রয়োজন। এরই মধ্যে অগ্নিনির্বাপণ ও জননিরাপত্তা নেই এমন প্রতিষ্ঠান ও ভবনের তালিকা করেছে ফায়ার সার্ভিস।

সে তালিকার তথ্য বলছে, নারায়ণগঞ্জে ১৩৫টি বহুতল ভবন, ৪২টি মার্কেট, ১৬৩টি মসজিদ ও সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ৭৮টি হাসপাতাল-ক্লিনিকে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। ফলে দুর্ঘটনা ঘটলে হতাহতের আশঙ্কা থেকেই যায়। 

তিতাস গ্যাসের নারায়ণগঞ্জের উপমহাব্যবস্থাপক মামুনার রশীদ বলেন, নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের ৮০ হাজারের বেশি আবাসিক গ্রাহকদের পাইপলাইন দিয়ে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। এ ছাড়া ৪২২টি কলকারখানায় গ্যাস সঞ্চালন চলমান রয়েছে। 

তিনি বলেন, গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন দেখভাল করে ঢাকার আলাদা একটি বিভাগ। ফলে নতুন পাইপ স্থাপন তারাই দেখে। এখানে শুধু গ্রাহকরা পাইপের লিকেজের খবর দিলে তা মেরামত করে দেওয়া হয়। তিতাসের এই কর্মকর্তা দাবি করেন, বাসাবাড়িতে দুর্ঘটনার দায় গ্রাহকের। তিতাস শুধু দেখভাল করে বাইরের পাইপলাইন থেকে রাইজার পর্যন্ত। দুর্ঘটনা কমাতে হলে আগে স্থানীয়দের সচেতন হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। 

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ বি সিদ্দিক বলেন, মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ও ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসন, তিতাস, ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশন,  পুলিশ ও নাগরিক ব্যক্তিত্বদের নিয়ে একটি তদারকি দল গঠন করা প্রয়োজন। যেখানে নিয়ম মানবে না বা আইন ভঙ্গ করবে সেখানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হলে গ্যাস বিস্ফোরণ কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
 
তবে গ্যাস বিস্ফোরণে এত মৃত্যু হলেও তা নিরূপণের কোনো উদ্যোগ নেই, এমনকি দুর্ঘটনার পর মামলা হয়েছে সে সংখ্যাও সীমিত। আর মামলা হলেও তদন্ত বেশি দূর গড়ায় না, তাই দোষীরা শাস্তি পেয়েছে এমন নজিরও কমই। নারায়ণগঞ্জের আদালত পুলিশের ওসি আসাদুজ্জামান খবরের কাজগকে বলেন, গ্যাস বিস্ফোরণে নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা হলে সাধারণত ৩০৪ (ক) ধারা উল্লেখ করা হয়ে থাকে। এ ধারায় সর্বোচ্চ সাজা পাঁচ বছরের জেল। সঙ্গে অর্থদণ্ড করে থাকেন আদালত। 

এদিকে দুর্ঘটনা রোধে তিতাস গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশন, রাজউক ও ডিপিডিসিকে আগে করা সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মৌসুমি হীরা বাইন।  

সিট বাণিজ্য, শিক্ষার্থীকে মারধর আইএইচটি ছাত্রলীগ সভাপতিসহ বহিষ্কার ৬

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৭:৩০ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৭:৩০ পিএম
আইএইচটি ছাত্রলীগ সভাপতিসহ বহিষ্কার ৬
ছবি: খবরের কাগজ

রাজশাহী ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মো. আল আমিন হোসেনকে এক বছরের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সিট-বাণিজ্য ও এক ছাত্রকে মারধরের অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করা হয়। ফলে এ সময়ে তিনি ক্যাম্পাসে প্রবেশ ও ছাত্রাবাসে অবস্থান করতে পারবেন না। একই অভিযোগে আরও পাঁচ ছাত্রলীগ কর্মীকে ছয় মাসের শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দুজনকে তিরস্কার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে এই শাস্তি ১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়েছে। যদিও আইএইচটি কর্তৃপক্ষ গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নোটিশ আকারে বিষয়টি প্রকাশ করেছেন।

বহিষ্কৃতরা হলেন- আইএইচটি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ডেন্টাল অনুষদের আল আমিন হোসেন, ছাত্রলীগ কর্মী ডেন্টাল বি গ্যালারির মাসুদ পারভেজ, ফারহান হোসেন, ল্যাব-এ গ্যালারির শাহরিয়ার নাফিজ ও পারভেজ মোশাররফ এবং রেডিওলোজি-এ গ্যালারির নিলয় কুমার। তাদের মধ্যে আল আমিন হোসেনকে এক বছরের জন্য ও বাকিদের ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

এছাড়া ফার্মেসি বিভাগের সিফাতকে তিরস্কার করে ভবিষ্যতে এমন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য সর্বোচ্চ সতর্ক করা হয়েছে। প্রশাসনকে না জানিয়ে অন্য (ছাত্রলীগ সভাপতি) ব্যক্তির সঙ্গে টাকা লেনদেনের জন্য ফার্মেসি বিভাগের মো. হাসানকে তিরস্কারের পাশাপাশি সর্বোচ্চ সতর্ক করা হয়েছে।

শাস্তির নোটিশে জানানো হয়, শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন হোসেন প্রথম বর্ষের ছাত্র হাসানের কাছ থেকে হোস্টেলে সিট দেওয়ার নামে টাকা নেন। ২৯ এপ্রিল শাস্তিপ্রাপ্ত অপর পাঁচ শিক্ষার্থী (ছাত্রলীগ কর্মী) হাসানকে মারধর করেন। আহত অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ১ মে থেকে আইএইচটি ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে গত ৬ জুন একাডেমিক সভায় শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শাস্তি প্রদানের নোটিশটি গত ১২ জুন স্বাক্ষর করেছেন অধ্যক্ষ।

শাস্তিপ্রাপ্ত ছাত্রলীগ সভাপতি আল আমিন হোসেন বলেন, ‘নোটিশটি ক্যাম্পাস ছুটির কিছুক্ষণ আগে প্রকাশ করা হয় বলে জানতে পেরেছি। তবে ব্যক্তিগতভাবে শাস্তির কোনো চিঠি আমি পাইনি। যদিও ওই বিষয়টি (সিট বাণিজ্য ও শিক্ষার্থীকে মারধর) তখনই মিটমাট হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে কলেজ প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করায় আমাদের শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে।’ এ বিষয়ে আগামী রোববার অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করে কথা বলবেন বলেও জানান তিনি।

আইএইচটি অধ্যক্ষ ডা. ফারহানা হক জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ওই কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন জমার পর একাডেমিক কাউন্সিল সভা হয়। সভায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার এই সিদ্ধান্ত হয়। গেল কয়েকদিন প্রশাসনিক কাজের চাপ থাকায় এই সংক্রান্ত আদেশের নোটিশটি প্রকাশে দেরি হয় বলে জানান তিনি।

 

ফরিদপুরে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ২

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:২৩ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:২৩ পিএম
ফরিদপুরে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ২
ছবি: খবরের কাগজ (ভিডিও থেকে নেওয়া)

ফরিদপুর-ঢাকা মহাসড়কের ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার যুদুনন্দি এলাকায় বাস-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে‌ চারজন। নিহতরা হলেন- পিকআপের ড্রাইভার ও হেলপার। তবে তাদের নাম পরিচয় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা যায়নি। 

শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকেল তিনটার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বিকেল তিনটার দিকে ফরিদপুরের দিকে যাওয়ার পথে গোল্ডেন লাইনের একটি পরিবহনের সঙ্গে ভাঙ্গাগামী একটি পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই পিকআপের ড্রাইভার ও হেলপার নিহত হয়। আর এই ঘটনায় বাসের আরও চার যাত্রী আহত হয়েছে। তাদেরকে উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। উদ্ধারকাজ অংশ নেয় ফায়ার সার্ভিস, হাইওয়ে পুলিশ ও নগরকান্দা থানা পুলিশ। সড়ক দুর্ঘটনার পরে ওই এলাকায় যানজট তৈরি হলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সঞ্জিব দাস/এমএ/

দিনাজপুরে বাস-ট্রাক সংঘর্ষ, নিহত বেড়ে ৬

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৩:১০ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৩:১৯ পিএম
দিনাজপুরে বাস-ট্রাক সংঘর্ষ, নিহত বেড়ে ৬
ছবি : খবরের কাগজ

দিনাজপুরে যাত্রীবাহী বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ২৬ জন। 

শুক্রবার (৫ জুলাই) ভোর ৬টায় সদরের ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়কের পাঁচবাড়ি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

দিনাজপুর কোতোয়ালি থানা-পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ঢাকা থেকে ঠাকুরগাঁওগামী নাবিল পরিবহনের একটি বাস পাঁচবাড়ী এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ট্রাকের চালক ও বাসের সহকারী নিহত হন।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের একটি দল আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে এক শিশুসহ আরও চারজন মারা যান। 

এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক জিল্লুর রহমান জানান, দুর্ঘটনায় নিহত ছয়জনের মধ্যে ঘটনাস্থলে দুইজন এবং হাসপাতালে নিয়ে আসার পরে চারজন মারা যান। আর আহতদের মধ্যে দুইজন আইসিইউতে এবং তিনজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জিন্না আল মামুন খবরের কাগজকে জানান, বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন। 

দিনাজপুর জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ জানান, তিনি দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল এবং আহতদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছেন। নিহত ও আহতদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। 

এএসএম আলমগীর/জোবাইদা/

গাইবান্ধায় ২৮ হাজার পরিবার পানিবন্দি, বিশুদ্ধ পানির সংকট

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০২:৫৩ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৩:০৮ পিএম
গাইবান্ধায় ২৮ হাজার পরিবার পানিবন্দি, বিশুদ্ধ পানির সংকট
ছবি : খবরের কাগজ

গাইবান্ধায় করতোয়া, ঘাঘট, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়েই চলেছে। দুইদিন ধরে ঘাঘট ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ওপরে। অবিরাম বৃষ্টি ও উজানের ঢলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। অবনতি হচ্ছে বন্যা পরিস্থিতির। ২৮ হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তারা খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছেন। বিশেষ করে দুর্গম চরাঞ্চল ও নদীতীরবর্তী এলাকার পরিস্থিতি আরও বেশি করুণ।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ের তথ্য অনুসারে, জেলার চার উপজেলায় ২৭টি ইউনিয়নে বন্যার্ত পরিবারের সংখ্যা ২৮ হাজারেও বেশি। প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিতরণের জন্য ৪০০ মেট্রিক টন (জিআর) চাল ও নগদ ১০ লাখ টাকা মজুত রয়েছে। এর মধ্যে তিন হাজার ৫০টি শুকনো খাবারের প্যাকেট ও ১৬৫ মেট্রিক টন চাল চার উপজেলায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। 

শুক্রবার (৫ জুলাই) গাইবান্ধা পাউবোর নিয়ন্ত্রণকক্ষের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখঘাট পয়েন্টে ২৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৮৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সঙ্গে ঘাঘট নদীর পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ২৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। করতোয়ার পানি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চকরহিমাপুর পয়েন্টে ২৩ সেন্টিমিটার বেড়েছে। 

অন্যদিকে তিস্তার পানি কমতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার পানি সুন্দরগঞ্জ উপজেলাসংলগ্ন রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে ২৬ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৬২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে শুক্রবার (৫ জুলাই) সকাল ৯টা পর্যন্ত গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি ও কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

ফুলছড়ি উপজলোর গুপ্তমনি চর এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার থেকে তার ঘরের ভেতর তিন থেকে চার ফুট পানি। নলকূপ ও শৌচাগার ডুবে গেছে । পানিতে ভেসে গেছে হাঁস-মুরগি। গরু-ছাগল নিয়ে মহাবিপদের মধ্যে আছেন। বুধবার সকাল থেকে বৃস্পতিবার সকাল পর্যন্ত তারা শুকনো খাবার খেয়ে আছেন। বৃষ্টির মধ্যেই নৌকা নিয়ে বালাসিঘাট এলাকায় বাজারে শুকনো খাবার ও পানি কিনতে এসেছেন।

একই গ্রামের সাজু মিয়া জানান, শুধু তারা নয়, তাদের মতো অনেক পরিবার পানিবন্দি। তারা সামান্য খাবার খেয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারছেন না বাড়ি-ঘরে আসবাবপত্র রেখে। এ মুহূর্তে তাদের শুকনো খাবার ও পানি খুবই দরকার।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানান, নদ-নদীর পানি বাড়লেও আপাতত বড় বন্যার আশঙ্কা নেই। ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বাড়ার কারণ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল। এ পানি ঘাঘট নদীতে প্রবেশ করেছে। একই কারণে করতোয়ার পানিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে বৃষ্টির কারণে বাঁধের বিভিন্ন এলাকায় রেইনকাট হয়েছে। সেগুলো মেরামত করা হচ্ছে।

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল জানান, ত্রাণ বিতরণ ও উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য নৌকা, স্পিডবোট প্রস্তুত রয়েছে। জেলা ও উপজেলায় নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে। ইউনিয়নভিত্তিক বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় মেডিকেল টিম, কৃষি টিম, স্বেচ্ছাসেবক টিম এবং লাইভস্টোক টিম গঠন করা হয়েছে।

রফিক খন্দকার/জোবাইদা/

মাদারীপুরে ৭২ লাখ চারা রোপণ ও বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০২:২৬ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০২:৩৫ পিএম
মাদারীপুরে ৭২ লাখ চারা রোপণ ও বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন
ছবি: খবরের কাগজ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশে ৩০ কোটি গাছ রোপণ করার উদ্দেশ্যে মাদারীপুরে ৭২ লাখ বনজ ও ফলদ গাছের চারা রোপণ ও বিতরণ কর্মসূচি উদ্বোধন করা হয়েছে।

শুক্রবার (৫ জুলাই) সকালে গ্রামীণ ব্যাংক মাদারীপুর জোনের উদ্যোগে মস্তফাপুর গ্রামীণ ব্যাংকের আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন তিন জেলার (মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও গোপালগঞ্জ) জোনাল প্রধান। 
এ সময় মাদারীপুর জোনাল ম্যানেজার আ. মান্নান বলেন, ‘আমরা এক একজনকে ৫-৬টি করে গাছের চারা বিতরণ করেছি। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৭২ লাখ চারা বিতরণসহ রোপণ করব। গাছ হলো পরম বন্ধু। আশা করছি আমাদের গ্রামীণ ব্যাংকের যে লক্ষ্যমাত্রা, আমরা তা পূরণ করতে পারব।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন এরিয়া ম্যানেজার আ. রহিম, শাখা ব্যবস্থাপক দীপক কুমারসহ শাখার কর্মকর্তারা। 

রফিকুল ইসলাম/ইসরাত চৈতী/