![আলুর দাম কমলেও পেঁয়াজে ঝাঁজ বেশি](uploads/2024/02/09/1707450531.Potato_Onion.jpg)
দেশে এখন চলছে পেঁয়াজের ভরা মৌসুম। প্রতিবছর এ সময় খাদ্যপণ্যটির দাম নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এবার তা নেই। ভরা মৌসুমেও বেড়ে চলেছে পেঁয়াজের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে যে পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয় তা দিয়ে দেশের চাহিদা পূরণ হয় না। এদিকে প্রতিবেশী দেশ ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রেখেছে। বিকল্প বাজার থেকেও আমদানি হচ্ছে না পেঁয়াজ। এতে ভরা মৌসুমেও পেঁয়াজের দাম না কমে বেড়ে চলছে।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দেশি মুড়িকাটা নতুন পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে দেশি মুড়িকাটা প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা।
রাজধানীর মিরপুর, সেগুনবাগিচা, মালিবাগ, মগবাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, ভালো মানের প্রতি কেজি মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম ছিল ১০০ টাকা। একই সঙ্গে আকারে ছোট এবং একটু নিম্নমানের পেঁয়াজের দাম ছিল কেজিতে ৯০ টাকা। তবে বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের দেখা পাওয়া যায়নি।
মিরপুরের রূপনগর বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আলমগীর হোসেন বলেন, তারা পাইকারি বাজার থেকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৯০ টাকারও বেশি দামে কিনে থাকেন। এর পর বিভিন্ন খরচ যোগ হয়ে প্রতি কেজিতে ৯৫ টাকার বেশি খরচ হয়ে থাকে। এ জন্য এক কেজি পেঁয়াজ ১০০ টাকার কম বিক্রি করলে তারা কোনো লাভ করতে পারেন না।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গতকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি দেশি নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮৫ থেকে ১০০ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়।
এদিকে আশার কথা হচ্ছে, আমদানির খবরে কমছে আলুর দাম। রাজধানীতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি আলুতে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। গতকাল রাজধানীর রামপুরা ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এমন তথ্য জানা গেছে। এক সপ্তাহ আগে বাজারে প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এদিকে এক মাস আগে প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা।
কারওয়ান বাজারের আলু বিক্রেতা লোকমান হোসেন বলেন, বাজারে সরবরাহ অনেক বেড়েছে। গ্রামগঞ্জের মোকামে প্রতি মণ আলু ৮০০ টাকায় নেমেছে, যা মাসখানেক আগে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা মণ ছিল। তিনি বলেন, আমদানির খবরেও আলুর বাজারে বড় প্রভাব পড়েছে। দাম কমে যাচ্ছে। এর মধ্যে এখন ভরা মৌসুম। সব মিলিয়ে বাজারে দীর্ঘ সময় পরে স্বস্তি ফিরছে।
এদিকে টিসিবির তথ্য বলছে, এখনো বাজারে গত বছরের চেয়ে ৪০ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে আলু। গত বছর এ সময় প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল ২২ থেকে ২৮ টাকার মধ্যে।
ভরা মৌসুমেও দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজার নিয়ন্ত্রণে সাম্প্রতিক সময়ে ভারত থেকে আলু আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। গত ১ ফেব্রুয়ারি ৩৪ হাজার টন আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। এর আগে বিভিন্ন আমদানিকারক আলু আমদানির অনুমতি নিয়ে রেখেছেন। যেগুলো ভারত থেকে গত শনিবার দেশে আসা শুরু করেছে।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি জানান, ভারত থেকে প্রতি মেট্রিক টন আলু আমদানি মূল্য পড়েছে ১৫৫ মার্কিন ডলার। সরকার আলু আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহার করে নিলে আরও কম দামে বিক্রি করা যাবে।