![বেনাপোল স্থলবন্দরে স্ক্যানিং মেশিন নষ্ট, বাড়ছে অপরাধ](uploads/2024/02/15/1707974823.Benapole-customs.jpg)
বেনাপোল বন্দরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য ও পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াতে ব্যবহৃত চারটি স্ক্যানিং মেশিনের মধ্যে তিনটি নষ্ট ৫ মাস ধরে। ফলে বাড়ছে স্বর্ণ চোরাচালানসহ নানান অনিয়ম।
বন্দরের দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে কাস্টমস ও বন্দর পেরিয়ে অবাধে স্বর্ণসহ বিভিন্ন অবৈধ পণ্য আটক হচ্ছে ভারতের পেট্রাপোল সীমান্তে। গত চার মাসে ২৫ পাচারকারীকে আটক করা হয়েছে।
জানা গেছে, বেনাপোল সীমান্ত বন্দর দিয়ে বাণিজ্য ও যাত্রী যাতায়াতের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ চারটি স্ক্যানিং মেশিন স্থাপন করে। এর মধ্যে একটি মোবাইল স্ক্যানার স্থাপন করা হয় বন্দরের বাইপাস সড়কে পণ্য প্রবেশদ্বারে। অত্যাধুনিক এই মেশিনটি পণ্যবাহী ট্রাকে আসা রাসায়নিক, মাদক, অস্ত্র ও মিথ্যা ঘোষণার পণ্য শনাক্ত করতে সক্ষম।
এ ছাড়া বেনাপোল চেকপোস্টে ও রেলস্টেশনে আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন কাস্টমস রুটে চোরাচালান রোধে আরও তিনটি স্ক্যানিং মেশিন বসানো হয়। স্ক্যানিং মেশিনগুলো কাস্টমসের পক্ষে পরিচালনা করে আসছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফাইবার অ্যাসোসিয়েটস।
গত পাঁচ মাসের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, স্বর্ণ ও বিভিন্ন চোরাচালান পণ্যসহ ২৪ জন পাচারকারী আটক হয়। এদের মধ্যে তিনজনকে বাংলাদশে কাস্টমস ও বিজিবি সদস্যরা আটক করে এবং ২২ জনকে আটক করেছে পেট্রোপোল বন্দর ও কাস্টমস নিরাপত্তায় নিয়োজিত সীমান্তরক্ষী বিএসএফ।
গত ১১ অক্টোবর মানিক মিয়া নামে একজনকে ৯০ হাজার ইউএস ডলারসহ আটক করে বিজিবি। ২৯ জানুয়ারি ২টি স্বর্ণের বারসহ মেহেদী হাসান নামে একজনকে আটক করে বেনাপোল কাস্টমস এবং পণ্যবহনকারী ট্রাকচালক মহাসিন খান জানান, ‘বন্দরে স্ক্যানিং মেশিনগুলো সচল থাকলে এভাবে চোরাচালান সম্ভব হতো না। জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশ অংশে স্ক্যানিং সচল করা দরকার।
ভারতগামী যাত্রী আল মামুন জানান, এপারে স্ক্যানিং মেশিন বন্ধ থাকায় অবাধে ওপারে মূল্যবান সম্পদ পাচার হয়ে যাচ্ছে। চোরাচালান প্রতিরোধে বাংলাদেশে কাস্টমস অনেকটা অসহায়।
সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী সাজ্জাদুল ইসলাম সৌরভ বলেন, ‘স্ক্যানিং মেশিন নষ্টের সুযোগে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে আমদানি বাণিজ্যের নামে চোরাচালানে অতিরিক্ত পণ্য নিয়ে আসছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। এতে অপরাধ বাড়ছে ও সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে।’
বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন বলেন, ‘স্ক্যানিং মেশিন নষ্ট থাকায় এদেশ থেকে স্বর্ণসহ মূল্যবান সম্পদ পাচার হচ্ছে ভারতে। বাণিজ্য নিরাপদ রাখতে স্ক্যানিং কার্যক্রম চালু করা জরুরি।’
স্ক্যানিং মেশিনে তদারকিতে নিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফাইবার অ্যাসোসিয়েটস বেনাপোল অফিসের ব্যবস্থাপক বনি আমিন জানান, স্ক্যানিং মেশিন মেরামত করতে বড় অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন। চুক্তি অনুযায়ী কাস্টমস তার ব্যয় বহন করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত প্রয়োজনীয় কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তিনটি স্ক্যানিং মেশিনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক রেজাউল করিম জানান, বেনাপোল বন্দর ব্যবহার করে প্রতিদিন ছয় হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন এবং পাঁচ শতাধিক ট্রাকে পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বন্দর ও কাস্টমস ইমিগ্রেশনে স্ক্যানিং পরিচালনা করছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এসব স্ক্যানিং নষ্ট থাকায় চোরাচালানের ঝুঁকি বাড়ছে। দ্রুত স্ক্যানিং ঠিক করার জন্য কাস্টমসকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
অমিয়/