![সোনালীর সঙ্গে একীভূত হচ্ছে বিডিবিএল](uploads/2024/05/12/bdbl & sonalikk-1715535917.jpg)
আপত্তি সত্ত্বেও বিডিবিএলকে (বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড) দেশের শীর্ষ রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা হচ্ছে। রবিবার (১২ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ওই দুই ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মার্জার বা একীভূতকরণ-সম্পর্কিত এক সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন।
সোনালী ব্যাংক এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার পর বিডিবিএল নামক ব্যাংকটির অস্তিত্ব হারিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত মার্চে ব্যাংক একীভূতকরণের উদ্যোগ নেওয়ার পর এটি ব্যাংক একীভূতকরণে দ্বিতীয় সমঝোতা চুক্তির ঘটনা। তবে এটি সরকারি পর্যায়ে দুই ব্যাংকের একীভূতকরণে সাম্প্রতিক সময়ের প্রথম উদ্যোগ। এর আগে বেসরকারি এক্সিম ও পদ্মা ব্যাংক একীভূতকরণ চুক্তি স্বাক্ষর করে।
সোনালী ব্যাংক বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের এন হামিদুল্লাহ মিলনায়তনে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ সংশ্লিষ্ট দুই ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও শীর্ষ কর্মকর্তারা।
সমঝোতা চুক্তিতে সোনালী ব্যাংক পিএলসির পক্ষে ব্যাংকের এমডি ও সিইও মো. আফজাল করিম এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসির পক্ষে এমডি ও সিইও মো. হাবিবুর রহমান গাজী স্বাক্ষর করেন।
চুক্তি স্বাক্ষর পরবর্তী ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সোনালী ব্যাংক পিএলসির চিফ সিইও মো. আফজাল করিম বলেন, এ একীভূতকরণের ফলে উভয় ব্যাংকের গ্রাহকের স্বার্থ শতভাগ সংরক্ষিত হবে। এ ক্ষেত্রে তাদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এ ছাড়া বিশেষ কোনো বিভাগীয় কার্যক্রম না থাকলে এ দুটি ব্যাংকের কেউ চাকরি হারাবেন না, যা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নিশ্চিত করা হয়েছে। এ দুটি ব্যাংক একীভূত হওয়ায় ঋণ প্রদানে সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ অন্যান্য সূচকেও উন্নয়ন ঘটবে বলে আশা করা যায়।
এদিকে চুক্তি স্বাক্ষর শেষে বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয়ের সামনে বিডিবিএল পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান শানীমা নার্গিস সাংবাদিকদের বলেন, “গত ৫ তারিখ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জানানো হয়, ‘১২ তারিখ (রবিবার) সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূতকরণ চুক্তি স্বাক্ষর হবে।’ আমরা এখন একীভূত না হলেও আগামী মার্চে ফোর্সড (জোর করে) একীভূতকরণ করে দেওয়া হতোই। যেহেতু দুটিই সরকারি ব্যাংক, তাই এ একীভূতকরণে কোনো সমস্যা হবে না। বরং দুই ব্যাংক একীভূত হয়ে দীর্ঘমেয়াদে ঋণ বিতরণ করলে বিনিয়োগকৃত পুঁজি থেকে লাভবান হওয়া যাবে।”
বিডিবিএল চেয়ারম্যান বলেন, ২০১০ সালে বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক ও শিল্প ঋণ সংস্থা একীভূত করে বিডিবিএল গঠন করা হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। খেলাপি ঋণ ৫০ শতাংশ থেকে কমে ৩২ শতাংশে নেমে এসেছে। বর্তমানে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ মাত্র ৮৭৪ কোটি টাকা। ব্যাংকটিতে আমানত রয়েছে মাত্র ৩ হাজার কোটি টাকা। নিট সম্পদ রয়েছে ৫ হাজার কোটি টাকার মতো।
প্রসঙ্গত, বিডিবিএল শুরু থেকেই এই একীভূতকরণের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল। ব্যাংকটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে লিখিত আবেদনও করা হয়। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সে দাবিও টিকল না। শেষ পর্যন্ত একীভূতকরণে চূড়ান্ত প্রক্রিয়ার দিকেই এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এমএ/