![কোভিডের নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে উদ্বেগ,
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কতা](uploads/2023/12/21/1703172728.corona new varrientkk.jpg)
করোনাভাইরাসের নতুন একটি সাবভ্যারিয়েন্ট ‘জেএন.১’ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। একে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ হিসেবে শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, এই ভ্যারিয়েন্ট দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। ইতোমধ্যে ভারত, চীন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বহু দেশে এর সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে এতে স্বাস্থ্যে ঝুঁকির পরিমাণ কম।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই সংক্রমণ রোধে কিছু পরামর্শ দিয়েছে। এগুলো হলো জনবহুল এলাকায় মাস্ক পরতে হবে, হাঁচি-কাশির সময় মুখ বন্ধ রাখতে হবে, যাতে সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে। এ ছাড়া নিয়মিত হাত পরিষ্কার করা, কোভিড ও ফ্লু টিকা-সম্পর্কিত পরামর্শ মেনে চলা, অসুস্থ হলে বাসায় থাকা এবং লক্ষণ দেখা দিলে পরীক্ষা করাতে হবে।
ভারতে দেড় বছর আগে অমিক্রম ওয়েভ দেখা দিয়েছিল। তারপর এই ভাইরাস সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক প্রধান বিজ্ঞানী ড. সৌম্য স্বামীনাথান ও ন্যাশনাল ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন কোভিড টাস্কফোর্সের কো-চেয়ারম্যান ড. রাজিব জয়াদেভান সবাইকে সতর্ক করেছেন। তারা বলেছেন, নতুন শনাক্ত হওয়া জেএন.১ অমিক্রনের সাবভ্যারিয়েন্ট। এতে ভারতে আবারও কোভিড-১৯-এর ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে।
গত বুধবার এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তারা বলেছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো অসুস্থতায় আক্রান্ত রোগীদের পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে শতকরা ৩০ ভাগই কোভিড পজিটিভ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, ভাইরাসটির নতুন সাবভ্যারিয়েন্টে জনস্বাস্থ্যে ঝুঁকি নিম্নস্তরের এবং বর্তমানে যে টিকা রয়েছে তাতে সুরক্ষা নিশ্চিত করা যাবে। কিন্তু এই শীতে কোভিড ও অন্যান্য সংক্রমণের বিষয়ে সতর্ক করেছেন তারা।
অনলাইন বিবিসি বলছে, উত্তর গোলার্ধে ফ্লু, রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস (আরএসভি) এবং শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়ার মতো ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে ভাইরাস কোভিড সৃষ্টি করছে তা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অব্যাহতভাবে পরিবর্তন হচ্ছে। মাঝেমধ্যেই তা নতুন ভ্যারিয়েন্টের জন্ম দিচ্ছে। কিছু সময়ের জন্য বিশ্বে প্রাধান্য বিস্তার করেছে অমিক্রন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, জেএন.১ সাবভ্যারিয়েন্ট বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অতি দ্রুততার সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) মতে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাওয়া ভ্যারিয়েন্ট এটি। এতে শতকরা ১৫ থেকে ২৯ ভাগ সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য নিরাপত্তাবিষয়ক এজেন্সি বলেছে, ল্যাবে পরীক্ষায় বর্তমানে শতকরা প্রায় ৭ ভাগ মানুষের শরীরে কোভিড পজিটিভ পাওয়া যাচ্ছে। এর ফলে এই ভ্যারিয়েন্টসহ অন্য ভ্যারিয়েন্টগুলোর বিষয়ে অব্যাহতভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। শীতে এই ভ্যারিয়েন্টটি দ্রুততার সঙ্গে সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে। বিএ.২.৮৬ ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় স্পাইক প্রোটিনে নতুন করে বিবর্তন দেখা দিচ্ছে।
এ অবস্থায় ড. সৌম্য স্বামীনাথান কোভিডকে একটি সাধারণ ঠাণ্ডাজনিত রোগ হিসেবে এড়িয়ে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ মাঝেমধ্যেই মানুষ এই ভাইরাসে মারাত্মক অসুস্থ হন। অনেক সময় এই রোগ থেকে দীর্ঘস্থায়ী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এতে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এমনকি মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা দেখা দেয়। ভারতীয় ওই দুই বিশেষজ্ঞ জোর দিয়ে বলেছেন, জেএন.১ অধিক সংক্রমণযোগ্য। তবে এতে আক্রান্ত হলে সবাইকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে না। কারণ, ভারতে প্রায় সবাইকেই টিকা দেওয়া হয়েছে।