![একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাচ্ছে বিজেপি, কংগ্রেস জোটের চমক](uploads/2024/06/04/Modi_Rahul-1717517459.jpg)
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল বুথফেরত সমীক্ষাকে ভুল প্রমাণ করেছে। বিজেপির যে ভূমিধস বিজয়ের প্রত্যাশা করা হয়েছিল, তা হয়নি। বরং একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাচ্ছে দলটি। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখা গেছে সব স্থানে। দিন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, ভারতের জনসাধারণ ফলাফলের মাধ্যমে প্রমাণ করে দিয়েছে যে তারা নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহকে চায় না।
তিনি ওই সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, ‘আমাদের এবারের লড়াই ছিল ভারতের সংবিধান বাঁচানোর লড়াই।’
আনন্দবাজার পত্রিকার তথ্যানুসারে, সর্বশেষ ফল অনুযায়ী বিজেপি এগিয়ে ছিল ২৪০টি আসনে। কংগ্রেসের দখলে ছিল ৯৮টি আসন। অন্যরা পেয়েছে ২০৫টি।
এনডিটিভির তথ্যানুসারে, রাত ৯টা পর্যন্ত বিরোধী জোট ইন্ডিয়া এগিয়ে ছিল ২৩২ আসনে। অন্যদিকে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ এগিয়ে ছিল ২৯২ আসনে। আর বিজেপি এককভাবে এগিয়ে ছিল ২৪১টি আসনে।
লোকসভায় ৫৪৩ আসনের মধ্যে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার জন্য প্রয়োজন অন্তত ২৭২টি আসন।
ভারতে ভোট গণনা শুরু হয় দেশটির স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৪ জুন) সকাল ৮টা থেকে। ধীরে ধীরে স্পষ্ট হতে থাকে- বিজেপির অবস্থান গতবারের তুলনায় অনেকটাই নড়বড়ে। বিভিন্ন আসনে তাদের এগিয়ে থাকার খবর এলেও, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার দুর্দান্ত ফলাফল ছিল চোখে পড়ার মতো।
ভারতের মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ৯৭ কোটি হলেও লোকসভা নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৬৪ কোটির বেশি। প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যায়, নরেন্দ্র মোদির বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট এগিয়ে রয়েছে।
নির্বাচনের আগে থেকেই বিজেপি জোটের লক্ষ্য ছিল চারশর বেশি আসনে জয়লাভ করা। তবে বিকেল ৫টা নাগাদ বিজেপির সে আশা যে পূরণ হচ্ছে তা পরিপূর্ণভাবে স্পষ্ট হয়ে যায়। মূলত উত্তর প্রদেশের ফলাফলের কারণেই পিছিয়ে পড়ে তারা। ওই এক রাজ্য থেকেই ৮০ জন আইনপ্রণেতা লোকসভায় যাবেন।
বেলা ৩টা পর্যন্ত উত্তর প্রদেশে ৪০টিরও বেশি আসনে এগিয়ে থাকতে দেখা যায় সমাজবাদী পার্টি ও ইন্ডিয়াকে। অথচ ২০১৪ ও ২০১৯ সালেও পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। ২০১৪ সালে উত্তর প্রদেশ জিতে নিয়েছিল বিজেপি। আর ২০১৯ সালে দলটি সে ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছিল।
দুটি আসন থেকে জয়ী রাহুল
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবারের লোকসভা নির্বাচনে কেরালা ও উত্তর প্রদেশের দুটি আসন থেকে নির্বাচন করেছেন। সর্বশেষ ভোটের ফলাফলে দেখা গেছে, দুই আসনেই জয়ী হয়েছেন তিনি। কেরালার দক্ষিণাঞ্চলের আসন ওয়েনাড়ে রাহুল পেয়েছেন ৬ লাখ ৪৭ হাজার ৪৪৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার (সিপিআই) প্রার্থী অ্যানি রাজা পেয়েছেন ২ লাখ ৮৩ হাজার ২৩ ভোট। দুজনের ভোটের ব্যবধান ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৪২২।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও তিনি ওই আসন থেকে জয় পেয়েছিলেন। উত্তর প্রদেশের রায়বেরেলি থেকেও প্রায় ৪ লক্ষাধিক ভোটে জয়ী হলেন রাহুল। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দীনেশ প্রতাপ সিং-কে ওই বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে দিলেন রাহুল। ২০১৯ সালে এই দীনেশ প্রতাপ সিংকে ১ লাখ ৬৭ হাজার ১৭৮ ভোটে হারিয়ে দেন রাহুলের মা সোনিয়াকে। রাহুল গান্ধী এবার সেই মার্জিন ছাপিয়ে গড়লেন রেকর্ড!
বারানসিতে মোদির জয়
নির্বাচনে উত্তর প্রদেশের বারানসি থেকে জিতেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, তার প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ৬ লাখ ৯২ হাজার ১৭০টি। ওই আসনে তার বিপরীতে দাঁড়িয়েছিলেন কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা অজয় রায়। তিনি পেয়েছেন ৪ লাখ ৬০ হাজার ৪৫৭টি ভোট। মোদি তাকে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫১৩ ভোটে পরাজিত করেছেন। সূত্র: বিবিসি, আনন্দবাজার, এনডিটিভি ও রয়টার্স।