![জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির](uploads/2024/04/30/Sahabuddin-1714483788.jpg)
জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, ‘রাজনীতির মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যই হচ্ছে জনকল্যাণ। সরকার ও রাজনীতিবিদদের সব সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে।’
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। খবর বাসসের।
এ সময় রাষ্ট্রপতি দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হয় এবং জনগণের ভোগান্তি বাড়ে এ ধরনের কর্মসূচি পরিহারের অনুরোধ জানান। এ ছাড়া মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে গৃহীত সব পদক্ষেপ বাস্তবায়নেও সবাইকে একযোগে কাজ করার তাগিদ দেন তিনি। রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘জনস্বার্থে গৃহীত সরকারের সব উদ্যোগকে সফল করতে দলমত নির্বিশেষে একযোগে কাজ করুন।’
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন দেশের জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কমিউনিটি ক্লিনিকের টেকসই অগ্রযাত্রায় সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।
কমিউনিটি ক্লিনিকের উদ্যোক্তাদের সার্বিক কার্যক্রমের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন বাঙালির স্বাধীনতার জন্য কাজ করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর দেখানো সেই পথ ধরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিতে কমিউনিটি ক্লিনিকের জনকল্যাণমুখী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেন।’
সরকারের কার্যক্রমের প্রতিটি ক্ষেত্রে জনস্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান ও শিক্ষার পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে চিকিৎসাসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে বহুমুখী কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গোপালগঞ্জের গিমাডাঙ্গায় প্রথম কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম শুরু করেন। এ ক্লিনিকের কার্যক্রম বর্তমানে সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার ‘অনন্য মডেল’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।”
রাষ্ট্রপতি বলেন, কিন্তু ২০০১ সালের নির্বাচনে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর তৎকালীন সরকারের একটি প্রতিহিংসামূলক জনস্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্তে বন্ধ করে দেওয়া হয় প্রান্তিক মানুষের জন্য ওই জননন্দিত স্বাস্থ্যসেবার উদ্যোগ।
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, জাতিসংঘ ‘কমিউনিটি ক্লিনিককে দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এটি সরকারি, বেসরকারি অংশীদারত্বে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় আমাদের সরকারের উদ্ভাবনী নেতৃত্বের প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ১৪ হাজার ১৭৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক অংশীদারত্বের একটি মডেল হিসেবে কাজ করছে। এটি সরকার-জনগণ পার্টনারশিপের এক অনন্য উদাহরণ। তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রদান এবং বৈশ্বিক মহামারি করোনাকালে মহামারি প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে ও গণটিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নে কমিউনিটি ক্লিনিক যে অবদান রেখেছে, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার।
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে আমাদের সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ এমডিজি পুরস্কার, সাউথ-সাউথ পুরস্কার, গ্যাভি পুরস্কার ও ভ্যাক্সিন হিরো পুরস্কারের মতো অনেক সম্মানজনক আন্তর্জাতিক পুরস্কার বাংলাদেশ অর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রীর এই অর্জন বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে আর আমাদের করেছে গর্বিত।’
রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, প্রধানমন্ত্রীর অনন্য উদ্যোগ ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ ছড়িয়ে পড়বে পুরো বিশ্বে এবং মানব কল্যাণে ভূমিকা রাখবে।
কমিউনিটি ক্লিনিক সহায়তা ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব জাহাঙ্গীর আলম, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টির ব্যবস্থাপনা পরিচালক অতিরিক্ত সচিব এ কে এম নুরুন্নবি কবীর এবং কমিউনিটি বেইসড হেলথ কেয়ারের (সিবিএইচসি) লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. কাইয়ুম তালুকদার প্রমুখ।