![জিয়ার ক্ষমতা দখল ও বিএনপির সৃষ্টি অবৈধভাবে : প্রধানমন্ত্রী](uploads/2024/06/26/PM-1719408695.jpg)
বন্দুকের নলের মাধ্যমে রাতের অন্ধকারে বিএনপির জন্ম হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির চেয়ারে নিজেকে আজীবন আসীন করে রাখার বাসনা নিয়ে আইয়ুব খানের অনুকরণে সেনাছাউনিতে বসে দলছুট রাজনীতিবিদদের নিয়ে ওই দল (বিএনপি) গঠন করেন মেজর জিয়া। তিনি যেমন অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেন, তেমনি অবৈধভাবেই বিএনপি সৃষ্টি করেন।’
বুধবার (২৬ জুন) সংসদ অধিবেশনে রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. আসাদুজ্জামান আসাদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরুর পর প্রধানমন্ত্রীর জন্য প্রশ্নের উত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
প্রধানমন্ত্রীর বলেন, ‘খুনি ফারুক-রশিদরা আগে নিজ থেকে জাতির পিতাকে হত্যার পরিকল্পনা করে, যেটা জিয়া জানতেন। অথচ জাতির পিতাই মেজর জিয়াকে ১৯৭২ সালে কর্নেল, ১৯৭৩ সালে ব্রিগেডিয়ার ও একই বছরে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়েছিলেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর তিনি সংবিধান লঙ্ঘন করে একাধারে সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতির পদ দখল করেন। ইতিহাসের এই ঘৃণ্যতম হত্যাকাণ্ডে জিয়ার সংশ্লিষ্টতা ছিল। জিয়া ইনডেমনিটি জারি করে জাতির পিতার খুনিদের রক্ষা করেছেন। তাদের বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে চাকরি দিয়ে পুনর্বাসন করেছেন।’
১৯৭৮ সালের নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সেই নির্বাচন সম্পূর্ণ অবৈধ এবং অসাংবিধানিক ছিল। ব্যাকডেটে সই করে তিনি তার সব প্রমোশন নিয়েছিলেন। ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে বারবার আমাদের পবিত্র সংবিধান কাটাছেঁড়া করেছিলেন। জিয়ার নির্দেশে অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা স্বাধীন দেশের এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। খুনি জিয়ার মানুষ হত্যার নমুনা নিয়ে অ্যান্থনি মাসকারেনহাস তার ‘বাংলাদেশ: এ লিগ্যাসি অব ব্লাড’ লিখেছিলেন, ‘সরকারি হিসাবমতে জিয়া ১৯৭৭ সালের ৯ অক্টোবর পর্যন্ত মাত্র দুই মাসের মধ্যে ১১৪৩ জন সৈনিককে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছিল।’ খুনি জিয়ার উত্তরসূরি স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও একই কায়দায় দেশ শাসন করেছিলেন।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া তার স্বামীকে অনুসরণ করে যুদ্ধাপরাধী নিজামী ও মুজাহিদকে মন্ত্রী বানিয়ে তাদের গাড়িতে উপহার দেন লাখো শহীদের রক্তে ভেজা জাতীয় পতাকা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি রশিদ ও হুদাকে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনে এমপি বানিয়ে খালেদা জিয়া প্রমাণ করেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সঙ্গে তার আত্মার আত্মীয়তা।’
সংসদ নেতা বলেন, ‘একমাত্র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে, তখনই মানুষের উন্নয়ন ও কল্যাণে কাজ করেছে। আমরা জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করি, দেশের উন্নয়ন করি। জাতির পিতার নীতি অনুসরণ করে অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন আমাদের মূল লক্ষ্য।’
তারেক জিয়াকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে
যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার জোর কূটনৈতিক ও আইনি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘তাকে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কিছু আইনগত জটিলতা রয়েছে। তবে সব জটিলতা আইনি প্রক্রিয়ায় নিরসন করে ওই অপরাধীকে দেশে এনে সাজার মুখোমুখি করতে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো কাজ করে যাচ্ছে। আশা করি, এই প্রক্রিয়ায় ফলাফল আমরা অচিরেই দেখতে সক্ষম হব।’
রাশিয়া-চীনসহ উন্নত দেশ থেকে সমরাস্ত্র কেনা হচ্ছে
আওয়ামী লীগের সদস্য হাবিবুর রহমানের এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নকল্পে ফোর্সেস গোল-২০৩০-এর আলোকে রাশিয়া, চীন, তুরস্ক, ভারতসহ সমরাস্ত্র শিল্পে উন্নত বিভিন্ন দেশ থেকে সমরাস্ত্র ক্রয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে, যা ভবিষ্যতে সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বাহিনীগুলোর গঠন ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে ফোর্সেস গোল প্রণয়ন একটি যুগোপযোগী পদক্ষেপ। বর্তমানে ফোর্সেস গোল-২০৩০-এর বাস্তবায়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।