![ভোটের মাঠে থাকবেন দেশি ৯৬ সংস্থা ও ৩৪ দেশের পর্যবেক্ষক](uploads/2023/12/23/1703319752.EC.gif)
এবারের নির্বাচনে সারা দেশে ইসির নিবন্ধনপ্রাপ্ত ৯৬টি দেশি সংস্থার ২২ হাজার পর্যবেক্ষক মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল শুক্রবার সংস্থাটির কয়েকটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের এবারের সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আবেদন করেছেন ২২৭ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক। এ ছাড়া ইসির পক্ষ থেকেও ৩৪ দেশ ও ৪টি সংস্থাকে ভোট দেখতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভোট আয়োজনকারী সংস্থাটির সচিব মো. জাহাংগীর আলম খবরের কাগজকে বলেন, ‘সম্প্রতি ৯৬টি দেশি সংস্থাকে পাঁচ বছরের জন্য আমরা নিবন্ধন দিয়েছি। সেসব সংগঠনের মধ্য থেকে ২১ হাজার ৯৬৯টি আবেদন জমা পড়েছে। সেই আবেদনগুলো বর্তমানে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। শিগগিরই বিষয়টি অনুমোদনের জন্য কমিশনে উত্থাপন করা হবে। এর পরই চূড়ান্ত হবে কোন সংস্থার কতজন কোন আসনে ভোট দেখার অনুমোদন পেলেন।’
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী নিবন্ধিত দেশি সংস্থাগুলো হলো মানবাধিকার ও সমাজ উন্নয়ন সংস্থা, সেবা সোশ্যাল ফাউন্ডেশন, অগ্রদূত সংস্থা, অ্যাক্টিভিটি ফর রিফরমেশন অব বেসিক নিডস, হাইলাইট ফাউন্ডেশন, মুভ ফাউন্ডেশন, ডেমোক্রেসি ওয়াচ, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ, ডিজঅ্যাবিলিটি ইন কোজিশন অ্যাক্টিভিটিস, আজমপুর শ্রমজীবী উন্নয়ন সংস্থা, আব্দুল মমেন মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন, এসডাপ, বিবি আছিয়া ফাউন্ডেশন, লুৎফর রহমান ভূঁইয়া ফাউন্ডেশন, সমাজ উন্নয়ন প্রয়াস, যুব উন্নয়ন সংস্থা, শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র, বঞ্চিতা সমাজ কল্যাণ সংস্থা, কেরানীগঞ্জ হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, এসকে কল্যাণী ফাউন্ডেশন।
সোসাইটি ফর সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট অব রুরাল পিপল, সেতু রুরাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, সোসাইটি ফর ট্রেনিং অ্যান্ড রিহেভিলিটেশন, রুরাল অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট, ডেভেলপমেন্ট হেল্পিং কি, তালতলা যুব উন্নয়ন সংগঠন, স্বাস্থ্য শিক্ষা সেবা ফাউন্ডেশন, বাঁচতে শেখা, ডপস ফাউন্ডেশন, অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অব বাংলাদেশ, ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ভলান্টারি অর্গানাইজেশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট, ক্রিয়েটিভ সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার, জেন্ডার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সোসাইটি, ডেভেলপমেন্ট এডুকেশন অ্যান্ড পিস বেসিক, হিউম্যান রাইটস ভয়েস।
সমাজ উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, রাজবাড়ী উন্নয়ন সংস্থা, ডেভেলপমেন্ট পার্টনার, গরিব উন্নয়ন সংস্থা, সমাহার, সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা, হাফেজ্জি চ্যারিটেবল সোসাইটি ফর বাংলাদেশ, ডেভেলপমেন্ট অব মহিলা সোসাইটি, সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন, সোশ্যাল ইকুয়ালিটি ফর ইফেক্টিভ ডেভেলপমেন্ট, ইন্টিগ্রেটেড সোসাইটি ফর রেগস অব হোপ, সমন্বিত নারী উন্নয়ন সংস্থা, পল্লী একতা উন্নয়ন সংস্থা, সোসাইটি ফর হিউম্যান ইম্প্রুভমেন্ট অ্যান্ড লাস্টিং ডেভেলপমেন্ট, সেঁজুতি হেলথ অ্যান্ড এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, এসো জাতি গড়ি, ওয়েসভা।
সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন, ফোরাম ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, প্রকাশ গণকেন্দ্র, রুরাল অ্যান্ড আরবান ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন, সার্ভিসেস ফর ইকুইটি অ্যান্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট, তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা, হিউম্যান ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি হিডস, রুরাল অ্যাডভান্সমেন্ট কমিটি ফর বাংলাদেশ, গ্রাম উন্নয়ন কর্ম, ইকো কনসার্ন, মুভমেন্ট ফর সোশ্যাল জাস্টিস, গণ-উন্নয়ন কেন্দ্র ও এসো বাঁচতে শিখি (এবাস), ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুওর (ডরপ)।
এ ছাড়া প্রত্যাশা সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা, সোসাইটি ফর রুরাল বেসিক নীড় (স্রাবন), সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন, ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম, রুরাল ভিশন (আরভি), তরফসরতাজ শান্তি সংঘ (টিএসএস) বগুড়া, পিপলস অ্যাসোসিয়েশন ফর সোস্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট (পাশা), পাথওয়ে, এমপাওয়ারমেন্ট থ্রু ল অব দ্য কমন পিপল (এলকপ), জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট, নাইস ফাউন্ডেশন, নারী উন্নয়ন সংস্থা, সুফিয়া হানিফ ফাউন্ডেশন, সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট কমিউনিটি অর্গানাইজেশন (সাকো), সবার তরে আমরা ফাউন্ডেশন (এসটিএএফ) ও বিয়ান মনি সোসাইটিকে নিবন্ধন দিয়েছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি।
অগ্রগতি সেবা সংস্থা (আসেস), আল-কোরআন প্রচার সংস্থা (আকপস) বাংলাদেশ, ইন্টারন্যাশনাল আসফ লিগ্যাল এইড ফাউন্ডেশন, এআরডি (অ্যাসোসিয়েশন ফর রুরাল ডেভেলপমেন্ট), বাংলাদেশ মানবাধিকার সমন্বয় পরিষদ (বামাসপ), রাজারহাট স্বাবলম্বী সংস্থা, সংগতি সমাজ কল্যাণ সংস্থা, উদ্ভাবনী মহিলা সংস্থা, ভলান্টারি অর্গানাইজেশন ফর দ্য নিডি (ভন), দিনাজপুর পল্লী উন্নয়ন প্ৰচেষ্টা (ডিপিইউপি), সেলফ ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (এসডিআই) ও বেডো আর্থসামাজিক কেন্দ্রও পেল ইসির নিবন্ধন।
অন্যদিকে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের অনুমোদনের প্রক্রিয়াও চলছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত ৯টি দেশ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। গত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান মন্ত্রণালয়টির মুখপাত্র সেহেরী সাবরীন। দেশগুলো হলো ভারত, চীন, রাশিয়া, শ্রীলঙ্কা, জাপান, উজবেকিস্তান, মরিশাস, জর্জিয়া এবং ফিলিস্তিন। ওআইসি, কমনওয়েলথ ও আরব পার্লামেন্টের পর্যবেক্ষকরাও নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একটি বিশেষজ্ঞ দল বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছে। তারা ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত এ দেশে অবস্থান করবেন।
এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিভিন্ন দেশ, সংস্থা ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের কাছ থেকে আমরা আবেদন নিয়েছি। নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন এসেছে ২২৭ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক-সাংবাদিকের। তাদের মধ্যে ১৫৬ জন পর্যবেক্ষক ও ৭১ জন সাংবাদিক। এ ছাড়া আমাদের (ইসি) পক্ষ থেকেও ৩৪ দেশ ও ৪টি সংস্থাকে ভোট দেখার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাদের বিমান ভাড়া ব্যতীত সব স্থানীয় ব্যয় নির্বাচন কমিশন বহন করবে।’
অশোক কুমার দেবনাথ আরও জানান, বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের আবেদন পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে যাচাইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে কমিশন। সে অনুযায়ী তারা ভিসা পাবেন।
বাংলাদেশের ভোট পর্যবেক্ষণে একটি কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল পাঠাবে বলে ইসিকে নিশ্চিত করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সেই টিমের চার সদস্য এরই মধ্যে এ দেশে চলেও এসেছেন। এ ছাড়া ভোট পর্যবেক্ষণ এ দেশে আসবে কমনওয়েলথ, যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট।
ইসির জনসংযোগ শাখার পরিচালক মো. শরিফুল আলম জানান, থাইল্যান্ড, নেপাল, ভারত, ব্রিটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস, ইরাক, ফিলিস্তিন, জর্জিয়া, উগান্ডা, নরওয়ে, বুলগেরিয়া ও কঙ্গো থেকে ভোট পর্যবেক্ষণের আবেদন এসেছে। এ ছাড়া এএফপি, এনডিটিভি, নিউইয়র্ক, টাইমস, রয়টার্স, অ্যাসোসিয়েটস প্রেস ইন্ডিয়া, জিজি প্রেস-জাপান, সুইডিশ রেডিও, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দ্য ন্যাশনাল, জাপানের দ্য ইয়োমিউরি শিমবুন, জুঙ্গি ফেইহেইট- সংবাদমাধ্যম থেকে সাংবাদিকরা ভোটের খবর নিতে আসতে চান। একজন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিকও আবেদন করেছেন।
অন্যদিকে ভারত, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্স, জর্জিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কাজাখস্তান, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, মিসর, তুরস্ক, উজবেকিস্তান, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, সেনেগাল, থাইল্যান্ড, আজারবাইজান, মালয়েশিয়া, মরিশাস, তিউনিশিয়া, ব্রুনাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমান, কুয়েত, সৌদি আরব, চীন, জাপান ও সিঙ্গাপুরের নির্বাচন কমিশনকে ভোট দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছে ইসি। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সার্ক এবং ওআইসি মহাসচিব, ফেম্বোসা ও এ-ওয়েব চেয়ারপারসনকেও।