ঢাকা ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪

নিউজিল্যান্ড শিকারে সিলেটতত্ত্ব!

প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:৩০ পিএম
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:৩৪ এএম
নিউজিল্যান্ড শিকারে সিলেটতত্ত্ব!
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ দল নিউজিল্যান্ড সফরে গেলে ভক্তদের খুব একটা খেলা দেখার সুযোগ হয় না সময়ের জটিলতার কারণে। আবার সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ দলের যাচ্ছেতাই পারফরম্যান্সের কারণে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে অনেকেই। তা ছাড়া নিউজিল্যান্ডের মাটিতে নিশ্চিত পরাজয় ধরে নিয়ে সমর্থকদের খেলা দেখার আগ্রহ অবস্থান করে তলানিতে। তবে গতকালের সকালটা ছিল ভিন্ন। এ ভিন্ন সকালের অনুভূতি ঠিক কতজন নিতে পেরেছেন তা নিয়ে অবশ্য সন্দেহ থেকেই যায়।

সিরিজ হার নিশ্চিত হওয়াতে এই ম্যাচ নিয়ে আগ্রহ থাকার কথা নয় কারওই। তাই শীতের সকালের আরামের ঘুম ত্যাগ করে খেলা দেখা পায় কম গুরুত্ব। কিন্তু বাংলাদেশ দল সকাল সকাল বাংলাদেশের মানুষকে একটু অবাকই করে দিয়েছে। হারের বৃত্তে ঘুরতে থাকা দলটা নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধ কন্ডিশনে তুলে নিয়েছে ৯ উইকেটের এক বিশাল জয়। রঙিন পোশাকের ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টানা ১৮ জারের পর টম লাথামদের বিপক্ষে তাদের মাঠে এটিই টাইগারদের প্রথম জয়। যে জয়কে অনেকেই ‘ঐতিহাসিক’ তকমা দিতে চাচ্ছেন। যা কিছু প্রথম তা তো ঐতিহাসিক হবেই।

নেপিয়ারে স্বাগতিকদের ১০ উইকেটের সব কটিই পেয়েছেন বাংলাদেশের পেসাররা। যার শুরুটা করেছিলেন সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার তরুণ পেসার তানজিম হাসান সাকিব। যিনি বাংলাদেশের হয়ে জিতেছেন ২০২০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ শিরোপা। রাচিন রবীন্দ্র, হেনরি নিকোলস ও টম ব্লুন্ডেলের উইকেট নিয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের মাটিতে ম্যাচ জয়ে রাখেন সামনে থেকে ভূমিকা। তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচের নায়কও তিনি। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের তারই আরেক সতীর্থ শরীফুল ইসলামের শিকারও ৩ উইকেট। শেষদিকে সৌম্য সরকারও নেন ৩টি ও মোস্তাফিজ ১টি।

তানজিম সাকিবের ম্যাচ জেতানো এমন পারফরম্যান্স ২০২২ মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে টেস্ট জয়ের মধুর স্মৃতিটা আরেকবার বাংলাদেশি সমর্থকদের মনকে চাঙ্গা করে তুলেছে। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথম কোনো ম্যাচ বাংলাদেশ জিতেছিল গত বছরই। যে জয়ের নায়কও ছিলেন পেসার এবাদত হোসেন চৌধুরী। তার বাড়িও সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায়। এবাদত আবার পরিচিত সিলেটের রকেট নামে। তার রকেটে চড়েই সেই ঐতিহাসিক টেস্ট জিতেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে তার নেওয়া ৬ উইকেটেই কিউইদের বড় রানের লিড নেওয়া থেকে দূরে রাখতে পেরেছিলেন মুমিনুলরা। ৮ উইকেটের জয় পেয়েছিল টাইগাররা। ব্ল্যাকক্যাপসদের মাটিতে তাদের বিপক্ষে টেস্ট ও ওয়ানডেতে প্রথম দুই জয়ে টাইগারদের মূল অস্ত্র সিলেটি পেসারদ্বয়।

নিউজিল্যান্ডকে বধ করার মিশনে সিলেটের প্রভাবকে দূরে রাখা যে মুশকিল সেটি তো চলতি মাসে ঘরের মাঠে শেষ হওয়া টেস্ট সিরিজ দেখলেও বোঝা যায়। তাইজুল ইসলাম যে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের স্মৃতি ফিরিয়েছিল সিরিজের প্রথম টেস্টে ১০ উইকেট নিয়ে সেটির ভেন্যুও ছিল আবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। তাইজুলের বাড়ি রাজশাহী বিভাগের নাটোরে হলেও সিলেটের মাঠেই টিম সাউদিদের নাকানিচুবানি খাইয়েছিলেন তিনি। সে টেস্টে সিলেটের স্থানীয় ক্রিকেটার জাকির হোসেন দলে থাকলেও বলার মতো কিছু করতে পারেননি তিনি। কিন্তু ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের ভেন্যু সিলেট থাকায় নিউজিল্যান্ড শিকারে সিলেটের নামটি চলে আসছে আপনা আপনিই।

 এখানেই শেষ নয়। বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম জয় এসেছিল ২০০৫ সালে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২২৬ রানে। ঐতিহাসিক এই জয়ের নায়ক এনামুল হক জুনিয়রের বাড়িও ছিল সিলেটে। প্রথম ইনিংসে ২৬ ওভারে ৫৫ রান দিয়ে কোনো উইকেট না পেলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ২২.২ ওভারে ৪৫ রান দিয়ে ৬ উইকেট নিয়ে তিনি হয়ে উঠেন ম্যাচের নিয়ামক।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটে সিলেট বিভাগের ক্রিকেটারদের ভূমিকা বেশ বড়। একের পর এক ক্রিকেটার উঠে আসছেন ৩৬০ আউলিয়ার পুণ্যভূমি থেকে। এবাদত হোসেন, তানজিম সাকিব, জাকির হোসেন ছাড়াও আবু জাহেদ চৌধুরী রাহী, নাসুম আহমেদ, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, রেজাউর রহমান রাজা সবাই উঠে এসেছেন সিলেট বিভাগ থেকেই।

একটা সময় দেশের খেলোয়াড় উঠে আসার জন্য সবচেয়ে পরিচিত জায়গা ছিল খুলনা বিভাগ। যেখান থেকে একে একে উঠে এসেছেন সাকিব আল হাসান, মাশরাফি বিন মুর্তজা, মোস্তাফিজুর রহমান, সৌম্য সরকার, আব্দুর রাজ্জাক, আল-আমিন হোসেন, ইমরুল কায়েস, তুষার ইমরান, হাবিবুল বাশার সুমনরা। এদের অধিকাংশই ছিলেন জাতীয় দলের বড় পারফর্মার। সেই হাওয়া এখন লেগেছে সিলেটের পালে?

সেই ক্যারিবীয় দ্বীপেই পরিপূর্ণ দ্রাবিড়

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ১২:০৫ পিএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ১২:০৫ পিএম
সেই ক্যারিবীয় দ্বীপেই পরিপূর্ণ দ্রাবিড়
ছবি : সংগৃহীত

রাহুল দ্রাবিড়, দ্য ওয়াল। ভারতীয় ক্রিকেটে পরিপূর্ণ এক অধ্যায়ের নাম!

ক্রিকেটার দ্রাবিড় তো বটেই, একজন মানুষ দ্রাবিড়ও যে কারও জন্য আদর্শিক ও অনুকরণীয় চরিত্র। আপনি সফল হতে চান? এজন দ্রাবিড়কে দেখুন, তার জীবন দর্শন মেনে চলুন। আর আপনি যদি ব্যর্থ হন, তাহলেও দ্রাবিড়কে দেখুন। খেলোয়াড় ও কোচিং ক্যারিয়ারে জীবনের জয়গানই রচনা করে গেছেন দ্রাবিড়। ক্রিকেট তাকে বঞ্চিত করেনি, জীবনও না।

হ্যাঁ, ক্রিকেট কিংবা জীবন, দুই জায়গাতেই উত্থান-পতন আছে। সাফল্য ব্যর্থতা আছে। কথায় বলে মানুষ শুধু সফলদেরই মনে রাখে। ভুলে যায় ব্যর্থদের। রাহুল দ্রাবিড় জীবনে ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু নিজেকে ভুলতে দেননি কাউকে।

১৬ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে দ্রাবিড় যে সেবা দিয়ে গেছেন, ভারতীয় ক্রিকেট তা মনে রাখতে বাধ্য। আগ্রাসী কোনো পেসারের ১৫০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসা বলও অবলীলায় ডিফেন্স করে দিতেন দ্রাবিড়। শান্ত-সৌম্য ভঙ্গিতেই প্রতিপক্ষকে ভেঙে চুরমার করতেন। দ্রাবিড়ের ডিফেন্স ভেদ করা ছিল যেকোনো বোলারের জন্য কঠিন। তাই তো তার আদুরে নাম হয়ে যায় ‘দ্য ওয়াল’। ওয়ানডে ও টেস্ট- দুই ফরম্যাটেই ১০ হাজারের বেশি রান করেছেন। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম সফল এই ব্যাটারের একটা বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পাওয়া হয়নি।

খুঁজলে এমন অনেককে পাওয়া যাবে, যারা খেলোয়াড় হিসেবে খুব সফল, কিন্তু বিশ্বকাপ জিততে পারেননি। দ্রাবিড়কে তাদের থেকে একটু আলাদাই বলতে হবে। কারণ বিশ্বকাপের সবচেয়ে নিষ্ঠুরতম রূপটা বোধহয় তিনিই দেখেছেন। ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে ট্রফি জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিলেন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হেরে সোনালি ট্রফিতে হাতের পরশ বোলাতে পারেননি। ২০০৭ সালে পরের বিশ্বকাপ আসতে আসতে ভারতীয় দলের নেতৃত্বভার তুলে দেওয়া হয়েছিল দ্রাবিড়ের কাঁধে। ফেভারিট হিসেবেই ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়েছিল তার দল। কিন্তু প্রথমে বাংলাদেশ, পরে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে গ্রুপ পর্বেই স্বপ্নের সলিলসমাধি ঘটেছিল দ্রাবিড়ের ভারতের। দেশটির খেলোয়াড়দের সেবার ফিরতে হয়েছিল রাতের অন্ধকারে পুলিশি প্রহরায়। পোর্ট অব স্পেনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারের পর ভারতীয় ড্রেসিংরুমের বেশ কয়েকটি ছবি এখনো ব্যর্থতার মূর্ত প্রতীক হয়ে আছে। যেগুলোতে দ্রাবিড়ের থমথমে মুখ আর তার শূন্যে চাহনিটাই বলে দেয়, কতটা নিঃস্ব হয়ে পড়েছিলেন তিনি।

১৭ বছর পর সেই ক্যারিবীয় সাগরপাড়েই এবার বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেলেন দ্রাবিড়। খেলোয়াড় নয়, কোচের ভূমিকায়। কিন্তু বিশ্বকাপ তো। যা দ্রাবিড়ের জন্য মরীচিকা হয়েই দাঁড়িয়েছিল! খেলোয়াড় হিসেবে যেমন, কোচ হিসেবেও। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয় একজন দ্রাবিড়ের যেন বৃত্ত পূরণ। যে বৃত্ত সাফল্য-ব্যর্থতার গল্পে ভরা। পরশু বার্বাডোসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ভারত পায় রুদ্ধশ্বাস এক জয়। প্রোটিয়াদের দিকেই ঝুঁকে যাওয়া ম্যাচটা দারুণ নৈপুণ্যে নিজেদের দিকে টানেন হার্দিক পান্ডিয়া, জাসপ্রিত বুমরাহরা। ভারত যখন ফের ম্যাচটা নিজেদের মুঠোতে টানে, তখন রাহুল দ্রাবিড়ের উচ্ছ্বাসটা ছিল চোখে পড়ার মতো। ১৭ বছরের ব্যবধানে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের ড্রেসিংরুমের ধরা পড়া রাহুল দ্রাবিড়কে পাশাপাশি বাঁধিয়ে রাখা যেতেই পারে। জীবনের কোনো এক জায়গায় যিনি চূড়ান্ত ব্যর্থ হলেও হাল ছাড়েননি। নিজের মেধাকে বিলিয়ে দিয়ে গেছেন। পরিশ্রম, নিষ্ঠা আর সততার মধ্যে এগিয়ে চলেছেন। একদিন সবকিছু হারালেও ১৭ বছর পর ঠিক একই জায়গায় পরিপূর্ণ হলেন।

কোচ হিসেবে এই বিশ্বকাপ ট্রফির ছোঁয়াও কি আর খুব সহজে পেলেন দ্রাবিড়? ব্যাট-প্যাড তুলে রাখার পর দীর্ঘ সময় ভারতের ন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমির দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ২০১৮ সালে ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয় করে দ্রাবিড়ের কোচিংয়েই। কিন্তু ২০২১ সালে জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়ে দু-দুবার বিশ্বকাপ জয়ের কাছে গিয়েও ব্যর্থ হন দ্রাবিড়। ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে হারে তার দল। গত বছর ঘরের মাঠে হারে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগেই কোচ দ্রাবিড় বিদায়ের কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন। অর্থাৎ এবার না হলে হয়তো কখনোই হতো না। খেলোয়াড় ও কোচিং মিলিয়ে দীর্ঘ ২৮ বছরের ক্যারিয়ারে একটা বিশ্বকাপ দীর্ঘশ্বাস হয়ে থাকতো দ্রাবিড়ের। ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা তাই ট্রফি জয়ের পর বললেন, ‘আমাদের যে কারও চেয়ে ট্রফিটি তারই (দ্রাবিড়ের) বেশি প্রাপ্য ছিল বলে আমি মনে করি। গত ২০-২৫ বছর ধরে ভারতের ক্রিকেটের জন্য তিনি যা করেছেন, আমার মতে, তার অর্জনের ঝুলিতে এটিই শুধু বাকি ছিল।’ 

সত্যিই তাই। অর্জন আর প্রাপ্তিতে একজন দ্রাবিড় এখন পরিপূর্ণ।

ঘূর্ণিঝড়ে বার্বাডোসে আটকা ভারত দল

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ১১:৩০ এএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ১১:৩০ এএম
ঘূর্ণিঝড়ে বার্বাডোসে আটকা ভারত দল
ছবি : সংগৃহীত

প্রায় দুই দিন হতে চললো ভারত ক্রিকেট দল শিরোপা খরা ঘুচিয়েছে দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে। আসর শেষ হয়ে গেলেও দেশা ফেরা হয়নি রোহিত-কোহলিদের। যার মূল কারণ ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে এখনও বার্বাডোসের ব্রিজটাউনে আটকা দলটি।

তাদের দেশে ফেরাতে এখন বিকল্প ব্যবস্থা নিচ্ছে ভারতের ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। তবে সেটি কতটুকু কার্যকর হবে, নিশ্চিত নয় সেটিও।  

বার্তা সংস্থা এএফপির খবর অনুযায়ী, ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক ক্যাটাগরি ফোর বা চতুর্থ শ্রেণিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে ‘বেরিল’ নামক ঘূর্ণিঝড়টিকে। গতকাল যার সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ১৩০ মাইল। আটলান্টিকে চতুর্থ শ্রেণির ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে এটিই বছরে সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে এল। এর আগে জুন মাসে কখনোই এমন ঘূর্ণিঝড় হয়নি বলেও জানিয়েছে।’

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ভারত দলের ব্রিজটাউন ত্যাগ করার কথা ছিল সোমবার। সেখান থেকে প্রথমে নিউইয়র্ক। এরপর বাণিজ্যিক বিমানে মুম্বাই ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আপাতত সে পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে না ঘূর্ণিঝড়ের কারণে।

ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ ভারতের দেশে ফেরা নিয়ে জানিয়েছে, বার্বাডোসের বিমানবন্দর খোলা থাকবে কি না, প্রাথমিকভাবে সেদিকে তাকিয়ে ছিল বিসিসিআই। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, সে বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে বাণিজ্যিক উড়োজাহাজের বদলে দিল্লি পর্যন্ত সরাসরি চার্টার্ড ফ্লাইটের কথা ভাবছে বিসিসিআই। যদিও ভারতের স্কোয়াডের খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ ও পরিবারের সদস্যদের মিলিয়ে ভারত দলের বহর ৭০ জনের। এতবড় বিমান বার্বাডোসে না থাকায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিমান আনার কথা ভারতের। তবে এর জন্য আগে সচল থাকতে হবে বার্বাডোসের বিমানবন্দর।

অভিষেক ও বিদায়ে বিশ্বজয়

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৯ এএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৯ এএম
অভিষেক ও বিদায়ে বিশ্বজয়
ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বকাপের মঞ্চে শুরু। শেষটাও বিশ্বকাপে। ক্যারিয়ারের শুরুর সঙ্গে শেষের কী চমৎকার মিল! ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ছোট ফরম্যাটের ক্রিকেটে যাত্রা শুরু ভারতের হিটম্যানখ্যাত ড্যাশিং ব্যাটার রোহিত শর্মার। পরশু সেই বিশ্বকাপের মঞ্চেই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিলেন। অনেক রেকর্ড আর সাফল্যের পঙক্তিমালা রচনা করে বিদায়ের জন্য বড় মঞ্চকেই বেছে নিয়েছেন রোহিত। চার-ছক্কার ধুন্ধুমার ক্রিকেটে ভারতের জার্সি গায়ে আর দেখা যাবে না তাকে। পরশু ব্রিজটাউনের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ভারতকে বহুল আকাঙ্ক্ষিত বিশ্বকাপ ট্রফি জিতিয়ে রণে ভঙ্গ দেন তিনি।

২০০৭ সালের পর টি-টোয়েন্টিতে আবারও শিরোপা জয়ের কীর্তি গড়ল ভারত। এই ট্রফি জয়ের সঙ্গেও রয়েছে রোহিতের যোগসূত্র। ২০০৭ সালে ভারত যখন প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়, ওই দলের কনিষ্ঠ সদস্য ছিলেন রোহিত। ১৭ বছর পর ভারতের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ট্রফিজয়ী দলেও আছেন। তবে এবার আর কনিষ্ঠ হিসেবে নয়। দলের গুরুত্বপূর্ণ জ্যেষ্ঠ সদস্য, অধিনায়ক হিসেবে ভারতকে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন ট্রফি উপহার দিলেন হিটম্যান। বলতে গেলে, বিশ্বকাপ জিতে শুরু হয়েছিল টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার, থামলেনও বিশ্বকাপ জিতে।

এমন একজন ক্রিকেটারের বিদায়ে ব্যথিত তার ভক্তরা। ট্রফি জয়ের আনন্দের পাশাপাশি রোহিতের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ছাড়ার কষ্টে কাতর দলীয় সমর্থকরা। বিদায়বেলায় কষ্ট ছুঁয়েছে রোহিতকেও। তবে আবেগকে সংবরণ করে ক্যারিয়ারের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ শেষে রোহিত বলেছেন, ‘এটি আমার শেষ ম্যাচ। এই ফরম্যাটকে বিদায় বলার জন্য এর চেয়ে ভালো সময় আর হতে পারে না। আমি প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করছি। এই ফরম্যাটেই আমার ভারতীয় দলে ক্যারিয়ার শুরু। ভারত বিশ্বকাপে ট্রফি জিতুক, এটি আমি খুব করে চাইছিলাম। বলতে গেলে ভীষণভাবে। আমার জন্য ট্রফি জয়ের মুহূর্তটি খুবই আবেগী এক মুহূর্ত। জীবনে এই শিরোপাটি যেভাবেই হোক পেতে চেয়েছিলাম। আমরা সেটি পেরেছি। খুব খুশি লাগছে।’

ভারতীয় কিংবদন্তি কপিল দেব, মহেন্দ্র সিং ধোনিদের পাশে নিজের নাম যোগ করলেন রোহিত শর্মা। ১৯৮৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কীর্তি গড়ে ভারত। ওই বিশ্বকাপে দলকে নেতৃত্ব দেন কপিল দেব। এরপর ২০০৭ টি-টোয়েন্টি এবং ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ ভারত জেতে ধোনির নেতৃত্বে। ২০২৪ সালে বৈশ্বিক ট্রফি জয়ে আবারও নাম লেখাল ভারত। এবার রোহিতের নেতৃত্বে এবং তার অসাধারণ ব্যাটিং নৈপুণ্যে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। মাঝে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বেশ কয়েকবার ফাইনালে উঠেও ট্রফি জিততে পারেনি ভারত। এমনকি গত বছর ঘরের মাঠে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি থেকে বঞ্চিত হয়। ওই আসরেও ভারতের নেতৃত্বভার ছিল এই রোহিত শর্মারই কাঁধে।

একজন সফল অধিনায়ক হিসেবে ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে আমৃত্যু নাম লেখা থাকবে রোহিত শর্মার। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসেও সফল ব্যাটার হিসেবে অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে উচ্চারিত হবে তার নাম। ছোট ফরম্যাটের ক্রিকেটে অনেক রেকর্ডের মালিক তিনি। ভারতের জার্সিতে ১৫৯ ম্যাচে ১৫১ ইনিংসে ৩২.০৫ গড়ে মোট ৪ হাজার ২৩১ রান সংগ্রহ করেছেন। যাতে সেঞ্চুরি ছিল ৫টি, হাফ সেঞ্চুরির সংখ্যা ৩৭। স্ট্রাইক রেট ১৪০.৮৯। ঝলমলে এক ক্যারিয়ার। টি-টোয়েন্টিতে রোহিত শুধু ভারতের পক্ষেই সর্বোচ্চ রান কিংবা সর্বাধিক ম্যাচ খেলার কীর্তি গড়েননি; বিশ্ব ক্রিকেটে এই দুটি রেকর্ড কিন্তু তারই দখলে। এ ছাড়া রোহিত শর্মা এই ফরম্যাটে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির মালিক (৫টি)। ৩৭টি হাফ সেঞ্চুরি নামের পাশে যোগ করেছেন; যা বিশ্বে ক্রিকেটে চার মারের দিক থেকে তাকে তিনে বসিয়েছে। হিটম্যান রোহিত ছক্কা হাঁকাতে দারুণ পটু। ক্যারিয়ারে মোট ২০৫টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন। বিশ্বে আর কোনো ক্রিকেটার এত ছক্কা হাঁকাতে পারেননি।

রেকর্ডের বরপুত্র রোহিত শর্মার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার নামটা অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে। প্রোটিয়াদের মাটিতেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু করেছেন। ১৯ সেপ্টেম্বর ২০০৭ সালে ডারবানে। তবে ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাট করার সুযোগ পাননি। গৌতম গম্ভীর, বীরেন্দ্র শেহবাগ, যুবরাজ সিং, রবীন উথাপ্পা, মহেন্দ্র সিং ধোনিদের মতো হার্ডহিটার ব্যাটারদের কারণে ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচে ব্যাট করা হয়নি। তবে পরদিনই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপ্ক্ষে সুযোগ পেয়ে যান। আর প্রথম সুযোগেই অপরাজিত ৫০ রান করে বিশ্ববাসীকে নিজের আগমনী বার্তাটা দিয়ে রাখেন। এরপর গত ১৭ বছরে রোহিত ভারতের জার্সিতে কী করেছেন ব্যাট হাতে, সেটা তো সবারই জানা।

দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ক্যারিয়ার শুরু রোহিতের। কাকতালীয়ভাবে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচেও প্রতিপক্ষ ছিল ওই আফ্রিকাই। এবারও জয় রোহিতদের। ফাইনাল ম্যাচে। বিশ্বকাপ মঞ্চে। কিংবদন্তিরা বোঝেন কোথায় কী করতে হয়? কোথায় ইতি টানতে হয়! বড় মঞ্চে বড় সাফল্যে দলকে রাঙিয়ে কিংবদন্তি রোহিতও বলে দিলেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি আর নয়।

রোহিত-কোহলির পর থামলেন জাদেজাও

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৮:৩৯ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৮:৩৯ পিএম
রোহিত-কোহলির পর থামলেন জাদেজাও
ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বকাপ জেতার পর ম্যান অব দ্যা ফাইনালের পুরস্কার গ্রহণ করতে এসে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দেন বিরাট কোহলি। শিরোপা উদযাপন শেষে সংবাদ সম্মেলনে রোহিত শর্মাও জানান অবসরের সিদ্ধান্তের কথা। পুরোপুরি একদিন না পেরোতেই এবার অবসরের ঘোষণা দিলেন ভারতের আরেক ক্রিকেটার। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজা।

রবিবার (৩০ জুন) ইনস্টাগ্রামে অবসরের ঘোষণা দেন জাদেজা। ভারতের হয়ে ৩৫ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার খেলেছেন ৭৪ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।

অবসর বার্তায় জাদেজা লিখেছেন, ‘কৃতজ্ঞ হৃদয়ে আমি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকে বিদায় জানাচ্ছি। গৌরবের সঙ্গে দ্রুতবেগে ছুটে চলা ঘোড়ার মতো আমি সব সময়ই দেশের জন্য সেরাটা দিয়েছি এবং অন্যান্য সংস্করণে সেটা করে যাব। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ অর্জন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, যেটা জয়ের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। সব স্মৃতি, উল্লাস আর বিরামহীন সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ।’

নিজের শেষ বিশ্বকাপটায় খুব একটা ভালো করতে পারেননি জাদেজা। সবমিলিয়ে ৫ ইনিংসে ব্যাট হাতে করেন ৩৫ রান। বল হাতেও ছিলেন সাদামাটা। শিকার করেছেন মাত্র ১টি উইকেট।

ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৭৪ ম্যাচে ৪১ ইনিংসে ব্যাট করে ১২৭.১৬ স্ট্রাইক রেটে ৫১৫ রান করেছেন জাদেজা। আর ৭১ ইনিংসে বল হাতে নিয়ে ৭.১৩ ইকোনমিতে নিয়েছেন ৫৪ উইকেট।

উইকেটের বালু খেয়ে রোহিতের অন্যরকম উদযাপন

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৫:৩০ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৫:৩০ পিএম
উইকেটের বালু খেয়ে রোহিতের অন্যরকম উদযাপন
ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘ ১১ বছর পর আইসিসি শিরোপার খরা কাটানো এবং ১৭ বছর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার পর বাঁধাভাঙা আবেগের জোয়ার দেখা গিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট দলের উল্লাসে। আনন্দের দিনে অশ্রুসিক্ত হয়েছিলেন দলের ক্রিকেটাররা। এসবের মাঝে ভিন্ন এক উদযাপন করতে দেখা গেছে অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে। পিচের মাটি আঙুল দিয়ে খুঁচিয়ে পুরে নিয়েছিলেন মুখে।

এখন পর্যন্ত সবগুলো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলা রোহিত শর্মা ২০০৭ সালের আসরের পর জিতলেন ২০২৪ আসরও। এর আগেরবার ছিলেন দলের সাধারণ সদস্য আর এবার জিতলেন অধিনায়ক হিসেবে। জেতার পর সংবাদ সম্মেলনে দিলেন এই ফরম্যাট থেকে অবসরের ঘোষণাও।

পিচের ওপর বসে বালু মুখে নিয়ে রোহিতের এমন উদযাপন সম্ভবত এটাই প্রমাণ করে যে এই শিরোপা ঠিক কতটা আরাধ্য ছিল ভারতের অধিনায়কের কাছে। যেই উইকেটে খেলে শিরোপা ধরা দিয়েছে সেই উইকেটকে যেন পরম মমতায় নিজের ভেতর পুষে রাখলেন তিনি।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে রোহিতকে কেউ এমন উদযাপন নিয়ে প্রশ্ন না করলেও আইসিসির প্রকাশিত ভিডিও নজর করেছে ভারত তথা সকল ক্রিকেট সমর্থকদের। 

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া রোহিত শিরোপা জয় নিয়ে অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি এটা খুব করে চেয়েছি। ওই মুহূর্তটার কথা ভাষায় প্রকাশ করা খুব কঠিন। আমি তখন কী ভাবছিলাম, সেটা বলতে চাই না। আমি বলতে চাই না, তখন আমার মনের মধ্যে কী চলছিল। কিন্তু আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে এটা খুব আবেগের মুহূর্ত ছিল।’